তীব্র তাপপ্রবাহে এসির চাহিদা, সরবরাহ কম । খবরের কাগজ
ঢাকা ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

তীব্র তাপপ্রবাহে এসির চাহিদা, সরবরাহ কম

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ১২:২৭ পিএম
তীব্র তাপপ্রবাহে এসির চাহিদা, সরবরাহ কম
ছবি : সংগৃহীত

দেশজুড়ে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ জনজীবনে শুধু অস্বস্তিই তৈরি করছে না, প্রাণঘাতীও হয়ে উঠেছে। এমন অসহনীয় গরমে একটু স্বস্তি পেতে রাজধানীর মধ্যবিত্ত এবং সচ্ছল মানুষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র (এসি) কিনতে বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছেন। বিক্রেতারা বলছেন, গত কয়েক দিনে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এসি বিক্রি। তবে ক্রেতারা বলছেন, মওকা পেয়ে ব্যবসায়ীরা এসির দাম বেশি রাখছেন।

রাজধানীর বাংলামোটরের সিঙ্গার মেগা শো-রুমে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে এসি কিনতে এসছেন খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, দেশে গত কয়েক বছর ধরে তাপমাত্রা যেমন বাড়ছে তাতে এসি বিলাসদ্রব্য নয় বরং প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। তাই এসি কিনতে এসেছি।

বাসায় বাচ্চাদের গরম থেকে স্বস্তি দেওয়ার জন্য এসি কিনতে এসেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এবারের গরম অসহ্য। বাসায় শিশু ও বয়স্করা কষ্ট পাচ্ছেন। তাই এসি কিনতে এসেছি। তবে এসির দাম তুলনামূলকভাবে বেশি।’

খালেকুজ্জামান এবং রফিকুলের মতো তীব্র গরম থেকে একটু স্বস্তি পেতে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন এসির শো রুমগুলোতে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দেশে বছরে সাড়ে পাঁচ লাখ থেকে ছয় লাখ ইউনিট এসি বিক্রি হয়। এবার বাসাবাড়ির জন্য সাড়ে ৬ লাখ এসি বিক্রি হতে পারে। বাসাবাড়িতে এক থেকে দুই টন এসির চাহিদা বেশি। তবে এখন বেশি বিক্রি হচ্ছে দেড় টন ক্ষমতার বিদ্যুৎসাশ্রয়ী প্রযুক্তির ইনভার্টার এসি।

বর্তমানে দেশে ওয়ালটন, ইলেক্ট্রোমার্ট, ট্রান্সকম, এসকোয়্যার, সিঙ্গার বাংলাদেশ, বাটারফ্লাই, র‌্যাংগ্স, ইলেকট্রা ইন্টারন্যাশনাল, মিনিস্টার, ভিশন, এলজিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, রোজার ঈদের পর থেকে সারা দেশে এসি বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে বিক্রি বেশি বেড়েছে। রাজধানী ঢাকায় এসির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ঢাকার বাইরে জেলা-উপজেলা পর্যায়েও এসির চাহিদা বেড়েছে।

রাজধানীর বাংলামোটর, রামপুরা, বাড্ডা, গুলশান, মতিঝিল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব দোকানেই ক্রেতাদের ভিড়। তবে দেশীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলোতে এসি ক্রেতার সংখ্যা বেশি।

বাংলামোটরে সিঙ্গার মেগা শোরুমের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন বলেন, আগের তুলনায় এসির চাহিদা প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু সরবরাহ কম। গরমের তীব্রতায় মানুষ ধারকর্জ করে হলেও এসি কিনছে শান্তিতে থাকার জন্য।

এসির দাম বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চাহিদা বৃদ্ধি এবং সরবরাহ-সংকটের কারণে গত বছরের তুলনায় এসির দাম প্রায় ১৫ শতাংশ বেড়েছে।

দেশের বাজারে প্রতিবছর ৭ হাজার কোটি টাকার এসি বিক্রি হয়। প্রতিবছর শতকরা ১৫-২০ ভাগ হারে বাজার সম্প্রসারণ হচ্ছে। অর্থাৎ গড়ে শতকরা ১৫ ভাগ বৃদ্ধি ধরলেও প্রতিবছর নতুন চাহিদা সৃষ্টি হচ্ছে ৭৫-৮০ হাজার ইউনিট। উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা জানান, তারা চেষ্টা করছেন দামটা কমিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের জন্য আরও সহজলভ্য করতে।

সমুদ্রে কর্মরত নারীদের সম্মান জানানোর দিন আজ

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১০:৩৩ এএম
সমুদ্রে কর্মরত নারীদের সম্মান জানানোর দিন আজ
প্রতীকী ছবি

সমুদ্র এলাকায় কর্মরত নারীদের কৃতিত্বকে সম্মান জানাতে প্রতিবছর মে মাসের ১৮ তারিখ ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর উইমেন ইন মেরিটাইম’ পালন করা হয়। ২০২২ সালে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কর্তৃক প্রথম এই দিবসটি ঘোষণা করা হয়। তার পর থেকে প্রতিবছর ১৮ মে দিনটি আন্তর্জাতিকভাবে পালন করা হয়। এই বছর দিবসটি বিশ্বব্যাপী সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর মনোনিবেশ করবে। সেই সঙ্গে এই শিল্পে লিঙ্গভেদে পরিবর্তনশীল মনোভাব তুলে ধরবে।

দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য- ‘সেফ হরাইজনস: উইমেন শেপিং দ্য ফিউচার অব মেরিটাইম সেফটি’। এই প্রতিপাদ্যটির মাধ্যমে নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নতিতে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে তুলে ধরা হয়েছে। তা সে নাবিক, সামুদ্রিক পেশাজীবী বা যেকোনো নেতৃত্বের ভূমিকায় হোক না কেন। 

শুক্রবার (১৭ মে) এ উপলক্ষে আইএমওর লন্ডনের হেডকোয়ার্টারে একটি সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট মেরিটাইম পেশাজীবী, নাবিক ও মেরিটাইম নেতারা। তারা অনুষ্ঠানে একজন নারীর দৃষ্টি দিয়ে সমুদ্রে নিরাপত্তার পুনর্বিন্যাস নিয়ে কথা বলেন। সেই সঙ্গে লিঙ্গভিত্তিক বিবেচনায় সমুদ্রে নিরাপত্তার জন্য একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে আইএমওর মহাসচিব আর্সেনিও ডমিনগুয়েজ বলেন, সবার কল্যাণের জন্য মেরিটাইমশিল্পে নারীশিক্ষা এবং পেশাগত উন্নয়নে বিনিয়োগের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন করা, নারীদের বিভিন্ন উদ্ভাবনের দিকে ধাবিত করা এবং এ শিল্পে নারীদের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করতে সর্বদা সচেষ্ট। 

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের তথ্যের ভিত্তিতে সামগ্রিক সামুদ্রিক কর্মশক্তির মাত্র ২৯ শতাংশ নারী। যেখানে নারী নাবিকদের বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার অনুপাত ২ শতাংশেরও কম। 

কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো আইএমও জেন্ডার ইকুয়ালিটি পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কারটি উইমেন ইন্টারন্যাশনাল শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সাইপ্রাসের ডেসপিনা প্যানাইওতোউ থিওডোসিউর কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) হলো জাতিসংঘের একটি বিশেষায়িত সংস্থা, যা জাহাজের নিরাপত্তা ও জাহাজের দ্বারা সামুদ্রিক এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ প্রতিরোধের জন্য দায়ী। আইএমও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যকে সমর্থন করে।

আবারও বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা, মাসের শেষে বাড়তে পারে তাপমাত্রা

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
আবারও বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা, মাসের শেষে বাড়তে পারে তাপমাত্রা
ছবি : খবরের কাগজ

আগামী সোমবার (২০ মে) থেকে দেশের অধিকাংশ বিভাগের অনেক জায়গায় বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থা চলতে পারে তিন-চার দিন। ফলে বিদায় নেবে তাপপ্রবাহ। আর মাসের শেষ দিকে তাপমাত্রা বাড়তে পারে।

আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক খবরের কাগজকে বলেন, বজ্রবৃষ্টির প্রবণতা শুরু হলে তিন থেকে চার দিন থাকতে পারে। মাসের শেষ দিকে আবারও তাপমাত্রা বাড়তে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। লঘুচাপ তৈরি হলে পরিস্থিতি বোঝা যাবে। 

গতকাল শুক্রবার (১৭ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, আবহাওয়ার ৪৪ স্টেশনের মধ্যে তিন স্থানে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে সিলেটে ১০ মিলিমিটার। যে কারণে এখানকার তাপমাত্রাও কম। অন্যদিকে অধিকাংশ স্টেশনের তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা বৃহস্পতিবার ছিল ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পাবনার ইশ্বরদীতে। তুলনামূলক তাপমাত্রা কম ছিল চট্টগ্রাম বিভাগের স্টেশনগুলোতে। তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, চাঁদপুর ও ফেনী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। 

বেশি বৃষ্টি হওয়ার আগ পর্যন্ত তাপপ্রবাহ থাকার আশঙ্কায় হিট অ্যালার্ট গতকাল সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য বাড়ানো হয়েছে। তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ঢাকা বিভাগের পশ্চিমাঞ্চলসহ রংপুর, রাজশাহী এবং খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ ১৭ মে সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, দেশের পূর্বাঞ্চল তথা চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে বজ্রবৃষ্টি শুরু হতে পারে। পর্যায়ক্রমে তা দেশের সর্বত্র বিস্তার লাভ করতে পারে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। একই সঙ্গে দেশের পূর্বাংশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং তা অন্যত্র প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। 

শনিবার (১৮ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায়; রবিবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এই বৃষ্টিতে তাপপ্রবাহ বিদায় নিতে পারে।

প্রসঙ্গত, এপ্রিলের টানা তাপপ্রবাহের পর মে মাসের শুরুতে বজ্রবৃষ্টিতে বিদায় নেয় তাপপ্রবাহ। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আবার তাপমাত্রা বেড়ে দেশের অধিকাংশ জেলায় বিরাজ করে তাপপ্রবাহ। তবে এবার তাপপ্রবাহ তীব্র হয়নি। মাঝারিতে সীমাবদ্ধ ছিল।

যুক্তরাজ্য থেকে অবৈধদের ফেরত নেবে বাংলাদেশ

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১২:৪৫ এএম
যুক্তরাজ্য থেকে অবৈধদের ফেরত নেবে বাংলাদেশ
ছবি : সংগৃহীত

অবৈধ প্রবাসীদের ফেরাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। লন্ডনে ব্রিটিশ হোম অফিসে স্বরাষ্ট্রবিষয়ক প্রথম জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে এ চুক্তি সই হয়। 

শুক্রবার (১৭ মে) লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য প্রথমবারের মতো স্বরাষ্ট্রবিষয়ক যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক আয়োজন করে। বৈঠকে এসওপি সই হয়। অবৈধ অভিবাসনবিরোধী ব্রিটিশ মন্ত্রী জেমস টমলিনসন মাইনরস কেসি ও যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম জেডব্লিউজি বৈঠকের উদ্বোধন করেন। 

অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের হোম অফিসের সহযোগিতায় লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নির্দিষ্টসংখ্যক অনথিভুক্ত বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে। এর ফলে এ মুহূর্তে যুক্তরাজ্যে অনথিভুক্ত বাংলাদেশিদের সংখ্যা কম।’ 

এসওপিতে স্বাক্ষর ছাড়াও স্বরাষ্ট্রবিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে দক্ষ ও উচ্চ মেধাবী জনবল নেওয়াসহ সুশৃঙ্খল অভিবাসনের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেছে। একই সঙ্গে পারস্পরিক আইনি সহায়তা, প্রত্যর্পণ, আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থি মোকাবিলা নিয়ে আলোচনা করেছে।  

জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খায়রুল কবির মেনন ও যুক্তরাজ্যের হোম অফিসের ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্টের মহাপরিচালক বাস জাভিদ নেতৃত্ব দেন। 

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশ ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধি এবং লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

 

 

 

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আঘাত হানবে বাংলাদেশে!

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১২:৩৫ এএম
ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আঘাত হানবে বাংলাদেশে!
ছবি : সংগৃহীত

মে মাস মানেই যেন ঘূর্ণিঝড়ের মাস। দেড় দশক আগে ২০০৯ সালের ১৫ মে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানে আইলা। এরপর ২০১৯ সালে তাণ্ডব চালায় ফণী। এ ছাড়া ২০২০ সালের ১৩ মে আছড়ে পড়ে ঘূণিঝড় আম্ফান। আর ২০২১ সালের ২৬ মে ইয়াস আঘাত হানে। এবার এই মে মাসেই আবার ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে ভারতের দিল্লির আবহাওয়া দপ্তর ‘মৌসম ভবন’। আর এ ঝড়ের নাম হবে ‘রেমাল’।

গত কয়েক বছরে একাধিক ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে ব্যাপক। তাই স্বাভাবিকভাবেই ফের ঘূর্ণিঝড় আসতে পারে, এই খবর কানে আসার পর থেকেই অনেকের কপালে দেখা গিয়েছে চিন্তার ভাঁজ। সত্যিই কি বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে? ফের চলবে তাণ্ডব? গত বৃহস্পতিবার এই নিয়ে বিরাট আপডেট দিল মৌসম ভবন।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগর তো বটেই, আরব সাগরেও একটি নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২২ মে নাগাদ আরব সাগর এবং ২৩ মে নাগাদ বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। কারণ নিম্নচাপের শক্তি বৃদ্ধির জন্য যে শর্তগুলো রয়েছে, তার মধ্যে বেশ অনেক শর্তই অনুকূল রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় তৈরির জন্য যেমন সাগরের পানির তলার তাপমাত্রা ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে হয়। কমপক্ষে ৫০ মিটার গভীরতা অবধি এই তাপমাত্রা থাকতে হয়। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে একেবারে এই ধরনের তাপমাত্রাই রয়েছে। সাগরের পানির তাপমাত্রা ৩০-৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি রয়েছে। এই গরম পানিকেই ঘূর্ণিঝড়ের ‘চালিকাশক্তি’ বলে মনে করা হয়। আবহাওয়া দপ্তর জানায়, দফায় দফায় নিম্নচাপের শক্তিবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ মের পর থেকে তা গভীর নিম্নচাপের আকার নেবে। 

দিল্লির মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির কার্যক্রম তৈরি হতে পারে আগামী সপ্তাহেই, যা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো- সেটি কি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে? ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে কোথায় আছড়ে পড়বে?

মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২৩ মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে, যা ২৪ মের পরে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। পরে সেটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে, যা এগিয়ে যেতে পারে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে।

কলকাতার আলীপুর আবহাওয়া দপ্তরের আঞ্চলিক কর্মকর্তা সোমনাথ দত্ত জানিয়েছেন, আপাতত কোনো লক্ষণ তৈরি হয়নি। ফলে এই মুহূর্তে একেবারেই হলফ করে বলা যাবে না যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে। আগে লক্ষণ তৈরি হোক বঙ্গোপসাগরে, তারপরই বোঝা যাবে যে আদৌও সেটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে কি না। 

ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে কি পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়বে? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে শেষ পর্যন্ত যদি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও উত্তরসংলগ্ন আন্দামান সাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় এবং উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর এগিয়ে যায়, তাহলে সেটির সম্ভাব্য গন্তব্য হবে মায়ানমার এবং সংলগ্ন বাংলাদেশ, যা পশ্চিমবঙ্গ থেকে অনেকটাই দূরে। ফলে পশ্চিমবঙ্গের ওপর ঘূর্ণিঝড়ের তেমন প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এর আগে গত ১৪ মে মৌসম ভবন জানিয়েছিল বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’, যা মে মাসের শেষের দিকে উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর নামকরণ করেছে ওমান। আরবিতে যার অর্থ বালি। অবশ্য এই নামে ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার দূরে একটি শহরও রয়েছে। এবার ধেয়ে আসতে পারে সেই ‘রেমাল’। তবে কতটা ভয়াবহ হবে সেই ঝড়, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ গণমাধ্যমে বলেন, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় মূলত বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে ও শেষ হয়ে যাওয়ার পরে। বাংলাদেশের ওপর মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু হয় সাধারণত ৩০ মের পর থেকে ৭ জুনের মধ্যে। 

তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে ঘূর্ণিঝড় মৌসুম মার্চ মাসে শুরু হলেও এখন পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড়-নিম্নচাপ কিংবা লঘুচাপও সৃষ্টি হয়নি। তাই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট পরিমাণে শক্তি জমা হয়েছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি যেহেতু ২০ মের পরে সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাই এটি খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি ও শক্তিশালী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় চারটি প্রধান উপাদানের মধ্যে ইতোমধ্যে তিনটির উপস্থিতি রয়েছে মধ্য ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে।

বিভিন্ন আবহাওয়া মডেল বিশ্লেষণ করে এই আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ জানান, ২০ থেকে ২৭ মের মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের প্রবল আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।

এদিকে ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ২০ মে থেকে এই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ স্পষ্ট হতে পারে। তবে কোথায়, কত গতিতে এটি আঘাত হানতে পারে- তা এখনই বলা যাচ্ছে না। অনুমান করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের মধ্যে কোথাও এটি আছড়ে পড়তে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ২৪ মে রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে উপকূল এলাকায়। বৃষ্টি চলতে পারে ২৬ মে পর্যন্ত। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে না যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১১:২৫ পিএম
র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে না যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এই কথা জানান।

প্রেস ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেন, বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সঙ্গে একটি বৈঠক শেষে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেছেন, র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হোয়াইট হাউস এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট কাজ করছে- এমন দাবি কী সত্য?

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘এমন দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে না। নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করা হয়েছে আচরণ পরিবর্তন এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে।’

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়, স্টেট ডিপার্টমেন্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরে এলে তার সঙ্গে নৈশভোজের পর সালমান এফ রহমান মিডিয়াকে ব্রিফ করেন।

এতে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘জাস্টিস ডিপার্টমেন্টকে হোয়াইট হাউস থেকে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বলা হয়েছে। আমরা র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুর খুনি রশিদ চৌধুরীকে ফেরানোর কথা বলেছি। লু আমাদের জানিয়েছেন, এ বিষয় দুটি তাদের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টে আছে। তাদের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট স্বাধীন। তারা বলেছে, এটি পুশ করছে, সাপোর্ট দিচ্ছে। লু বলেছেন, হোয়াইট হাউস থেকেও জাস্টিস ডিপার্টমেন্টকে বলা হয়েছে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে।’

এর আগে, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করে র‌্যাবের পাশাপাশি সংস্থার সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।