![প্রেমের উপহার](uploads/2024/02/13/1707811686.ron-jab.jpg)
সব ছেলেই জানে, প্রেমিকার জন্য উপযুক্ত উপহার খুঁজে বের করা কতটা কষ্টকর। কতটা পরিশ্রম এবং খরচের কাজ। বিশেষ করে, বিশেষ দিনগুলোয়। আর বিশেষ দিনেরও তো শেষ নেই। প্রথম দেখা, প্রথম হাত ধরা, প্রথম ফুচকা খাওয়া, প্রথম চুমু খাওয়া। এর মধ্যে গোদের ওপর ক্যানসার হয়ে আছে জন্মদিন এবং ভালোবাসা দিবস।
চকলেট, ফুল আর শো পিস কিনতে কিনতে যখন নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করার টাইম চলে আসছে, সেদিনই ম্যাগাজিনে আর্টিকেলটা পড়লাম, ‘আপনার বান্ধবীর কাছে সবচেয়ে দামি উপহার আপনার করা প্রশংসা।’
ব্যাপারটা কতটা কাজ করবে, আদৌ করবে কি না, সেটি নিয়ে সংশয়। সেদিন ছিল আমাদের একটি বিশেষ দিন। কেন বিশেষ দিন সেটি বলা যাবে না।
যাই হোক, আমি জাস্ট একটা লাল গোলাপ নিয়ে হাজির হলাম। ফুলটি তার হাতে দিয়ে বললাম, ‘রাস্তা দিয়ে আসার সময় ফুলটি দেখে তোমার কথা মনে পড়ল। সত্যি কথা বলতে কী, একটা জিনিস কখনোই খেয়াল করিনি। ফুল আর তোমার মধ্যে কোনোই পার্থক্য নেই। তুমি ফুলের মতোই কোমল, স্নিগ্ধ আর নরম।’
বিস্ফোরিত হলো, মেয়েটির চোখ দুটো। গোলাপের রক্তিমতা এল, দুপাশের গালে। আরেক বিশেষ দিনে ১০ লাইনের একটা প্রশংসা বাক্য লিখে নিয়ে গেলাম। মেয়েটা প্রথমে হাসল এরপর চোখে জল এল।
দিন দিন আমার টাকা জমতে লাগল। টাকা জমিয়ে জমিয়ে একটা ল্যাপটপ কিনে ফেললাম। এভাবে আর কিছুদিন চললে একটা ল্যাপটপের শো রুম দিতে পারব।
১৪ ফেব্রুয়ারি চলে এল। বিশেষ দিন, বিশেষ প্রশংসা বাক্য লাগবে। পাবলিক লাইব্রেরিতে গিয়ে কবিতা, গান, কোটেশন সবকিছুর মিশ্রণে প্রশংসা বাক্য তৈরি করলাম।
সেটা আগাগোড়া পড়ে মনে হলো, ঐশ্বরিয়া কিংবা জেনিফার লোপেজ পর্যন্ত এসব শুনলে আমার পিছু নিত। সেদিন সেই প্রশংসা বাক্য পুরোটা সে শুনল, মন দিয়ে।হাসল, গান করল। আমি ল্যাপটপের শো রুমের নাম কী দেওয়া যায় মনে মনে ভাবতে লাগলাম। সেদিনই রাতে, মানে ১৪ ফেব্রুয়ারির রাতে মেয়েটা একটা মেসেজ পাঠাল আমাকে।
‘তোমার এত দিনের এত প্রশংসা আসলে আমার চোখ খুলে দিয়েছে। আমার মনে হচ্ছে আমি মডেলিং বা এই ধরনের পেশায় নাম লেখাতে পারি। তোমার সঙ্গে সম্পর্কটা রক্ষা করে চলা আমার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। সরি।’
পুরো মেসেজটা দুবার পড়ে আমার দুঃখ না কষ্ট না, যেটা প্রথমেই মনে এল, ‘মেয়েটা আমার এত দিনের সব কথা বিশ্বাস করেছে?’
কলি