হংকংয়ে ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক ব্যক্তির কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। গত শুক্রবার হংকং পুলিশ বাহিনী এক প্রেস বিফিংয়ে প্রতারণার বিষয়টি জানিয়েছে।
২৯ জানুয়ারি হংকং পুলিশ একটি কোম্পানির এক কর্মীর কাছে থেকে অভিযোগ পায়, ‘কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ছদ্মবেশে কেউ তাকে কোম্পানির অর্থ স্থানান্তর করতে প্রতারিত করেছে।’ পুলিশ অভিযোগের তদন্ত শুরু করে।
পুলিশ ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে, জটিল প্রতারণার মাধ্যমে ওই কর্মীকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণে ফাঁসানো হয়েছে। যেখানে তিনি ভেবেছিলেন, ভিডিও কনফারেন্সে তার প্রতিষ্ঠানের আরও কয়েকজন কর্মীও রয়েছেন। আসলে সবাই ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি নকল চেহারা।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারকরা তাকে একটি ভিডিও কনফারেন্সে আমন্ত্রণ জানায়। সেখানে অংশগ্রহণকারীদের প্রতিষ্ঠানের আসল কর্মকর্তাদের মতো দেখাচ্ছিল। ছদ্মবেশে থাকা প্রতারকরা ফার্মের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিষ্ঠানের আড়াই হাজার কোটি টাকা পাঠাতে নির্দেশ দেয়।
প্রতারিত ব্যক্তিটি সেই নির্দেশ অনুসারে টাকা পাঠায়। তিনি প্রতারকদের নির্দেশিত পাঁচটি স্থানীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠান। অ্যাকাউন্টগুলোতে ১৫ বারে এই বড় অঙ্কের লেনদেন সম্পন্ন করেন। পরে কোম্পানির সঙ্গে এক সপ্তাহ পরে যোগাযোগ করলে বুঝতে পারে, সে প্রতারণার শিকার হয়েছে। হংকংয়ে এই প্রথম ডিপফেক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এত বড় অঙ্কের প্রতারণা ঘটনা ঘটেছে।
রাস্ট্রীয় গণমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, কর্মীটি কোম্পানির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তার কাছ থেকে গোপন লেনদেনের প্রয়োজনের বিষয়ে জানতে পারেন। অর্থ পাঠানোর পরে কর্মীটি কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানতে পারেন।
বাহিনী আরও জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তের পরে মামলাটি সাইবারক্রাইম ইউনিট পরিচালনা করছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, তবে তদন্ত চলছে।
হংকং পুলিশের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র সুপার ব্যারন চ্যান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি প্রতারক আগে থেকে ভিডিও ডাউনলোড করেছিল। তারপরে ভিডিও কনফারেন্সে ব্যবহার করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে নকল কণ্ঠস্বর যোগ করেছিল।’
এই ধরনের ডিপফেক স্ক্যামের শিকার হওয়া এড়াতে হংকং পুলিশ সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
এ.জে/জাহ্নবী