ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৪, ০১:২২ পিএম
আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৪, ০১:২২ পিএম
সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ
ছবি: খবরের কাগজ

বাসাবো বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে ইফতারি নেওয়ার জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন কিছু নারী-পুরুষ। তাদের অবয়বজুড়ে নিদারুণ ক্লান্তির ছাপ। এরা কেউ গৃহকর্মী, কেউ শ্রমিক, কেউবা আবার কর্মহীন, নিঃস্ব। সারা দিন রোজা রাখার পর বিনামূল্যে একটু ইফতারির আশায় এখানে ভিড় জমান তারা।

২৩ মার্চ এমনই দৃশ্যের দেখা মিলল রাজধানীর বাসাবো বৌদ্ধ মন্দিরের ভেতর। শুনতে অবাক লাগলেও এটিই সত্য। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ যেন এই বৌদ্ধ মন্দির। গৌতম বুদ্ধের আদর্শের ধারক-বাহক এই উপাসনালয় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষসহ সব প্রাণিকুলের সেবায় অবিরাম নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় পবিত্র রমজান মাসের ৩০ দিনই অসহায়, হতদরিদ্র ও নিঃস্ব মুসলিম রোজাদারদের বিনামূল্যে ইফতারি বিতরণ করেন তারা।

ইফতারের আয়োজনে থাকে খেজুর, ছোলা, বুট, মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনিসহ নানা কিছু। যা দিয়ে দুজন মানুষ অনায়াসে ইফতার করতে পারেন। তবে সাহরির জন্য কোনো আয়োজন করা হয় না।

২০১৩ সালে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের উদ্যোগে প্রথম ইফতারসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত রোজার মাসে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ জনের জন্য ইফতারির আয়োজন করা হতো। ঈদ উপলক্ষে বিতরণ করা হতো শাড়ি ও লুঙ্গি। পরে করোনা মহামারির সময় এ কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ ছিল। করোনার পর কার্যক্রম আবার চালু হলেও আর্থিক সমস্যার কারণে তা কিছুটা সীমিত করে ফেলা হয়। কিন্তু মানবিক এসব কাজের জন্য বাইরের কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের কাছ থেকে কোনো রকম সহযোগিতা নেন না তারা। এমনকি সরকারের কাছ থেকেও পান না কোনো অনুদান। সব কার্যক্রমই চলে কেবল সংগঠনের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতায়।

এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি বুদ্ধপ্রিয় মাহাথেরোর সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের উদ্যোগে প্রথম ইফতারি বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। ঈদ উপলক্ষে বিতরণ করা হতো শাড়ি ও লুঙ্গি। পরে করোনা মহামারির সময় এ কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ ছিল। করোনার পর কার্যক্রম আবার চালু হলেও আর্থিক সমস্যার কারণে তা কিছুটা সীমিত করে ফেলা হয়েছে। আগামী বছর থেকে আরও বড় আকারে এ আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সংগঠনটির সহসভাপতি বদন্ত স্বরূপানন্দ ভিক্ষু বলেন, বৌদ্ধ ধর্ম মানবতার ধর্ম। গৌতম বুদ্ধের আদর্শে দীক্ষিত হয়ে আমরা এই মানবসেবার সামান্য প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকি। গৌতম বুদ্ধ আজীবন অসাম্প্রদায়িকতার লালন করেছেন, আমরাও বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ছড়িয়ে দিতে চাই। কিন্তু আগের মতো আয়োজন করতে না পারায় মনে কষ্ট থেকে যায়।

বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের যুব বিভাগের সভাপতি ব্রহ্মাণ্ড প্রতাপ বড়ুয়া জানান, ২০১৯ সাল পর্যন্ত রোজার মাসে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ জনের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হতো। মানবিক এসব কাজের জন্য বাইরের কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের কাছ থেকে কোনো রকম সহযোগিতা নেওয়া হয় না। সব কার্যক্রমই চলে কেবল সংগঠনের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতায়।

কেবল ইফতারি নয়, শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণসহ বছরব্যাপী বিভিন্ন মানবিক কর্মসূচি চলে এই সংগঠনের উদ্যোগে। মানুষ মানুষের জন্য সর্বদা এগিয়ে আসবে- গৌতম বুদ্ধের এই শিক্ষাই সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান তারা।

একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. মাহবুবুল হক মারা গেছেন

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪০ এএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪০ এএম
একুশে পদকপ্রাপ্ত ড. মাহবুবুল হক মারা গেছেন
ড. মাহবুবুল হক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত, ভাষাবিদ, গবেষক ও প্রাবন্ধিক ড. মাহবুবুল হক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মাহবুবুল হক ১৯৪৮ সালের ৩ নভেম্বর ফরিদপুরের মধুখালিতে জন্মগ্রহণ করেন। তবে শৈশব থেকে বেড়ে ওঠেছেন চট্টগ্রামে। 

তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৭০ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৯৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকতা করেছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে।

শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রায়োগিক বাংলা ও ফোকলোর চর্চা, গবেষণা, সম্পাদনা, অনুবাদ ও পাঠ্যবই রচনা করে পরিচিতি লাভ রয়েছে ড. মাহবুবুল হকের।

প্রবন্ধে অবদানের জন্য তিনি ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। গবেষণায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করেন।

অমিয়/

কথায় গানে বাতিঘরের ২০ বছর

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৪ পিএম
আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫২ এএম
কথায় গানে বাতিঘরের ২০ বছর
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। ছবি: খবরের কাগজ

গল্প, কবিতা, উপন্যাস, অনুবাদ- সাহিত্যের সব শাখার বরেণ্য লেখকরা জড়ো হলেন বিকেলে। এসেছিলেন এ প্রজন্মের সব নন্দিত কবি, গল্পকার, অনুবাদকরা। শুভেচ্ছা আশীর্বাদ জানাতে এসেছিলেন অগ্রজ প্রকাশকরা। লেখক, প্রকাশকের অভূতপূর্ব মিলনমেলা হয়ে উঠেছিল চেইন বুক শপ বাতিঘরের ২০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠান।

ঢাকার বাংলামোটরে চেইন বুক শপ বাতিঘরের ‘মুক্ত আলাপ ও গান’ আয়োজনে মুখর ছিল শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে। 

আয়োজনের মধ্যমণি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা ভয়ংকর জায়গা। এখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়ালে তাকে পালিশ করতে অনেক লোক দাঁড়িয়ে যায়। সেখানে লাইব্রেরি করা তো খুবই কঠিন।’

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা শহরে লাইব্রেরি থাকলেও সেগুলো কেন চলে না, তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘শহরে শহরে লাইব্রেরিগুলো চলছে না। কারণ পাঠক হেঁটে গিয়ে বই পড়তে চায় না। আমরা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে যখন বই পড়া কর্মসূচি শুরু করেছিলাম, তখন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম মানুষের হাতে বই ধরাব। ইতোমধ্যে দুই কোটি পাঠকের হাতে বই ধরিয়েছি। কিন্তু এর পেছনেও অনেক লোক লেগে গেছে। মানুষ এত ক্ষুদ্রমনা!’

সারা দেশে ২০০টি বইমেলার আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে একটি বড় বইমেলা হয়, সেটি ঢাকায়। কিন্তু সারা দেশকে বঞ্চিত রেখে শুধু রাজধানীকে বৈভবপূর্ণ করে জাতি সম্পূর্ণ হতে পারে না। এই বইমেলা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।’

প্রকাশকদের উদ্দেশে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘যারা বইয়ের দোকান করে, তাদের প্রকাশক হওয়ার দরকার নেই। আবার যারা প্রকাশক, তাদের বইয়ের দোকান করার দরকার নেই। চেইন বুক শপকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলেই তারা যেন প্রকাশনায় যুক্ত হয়।’

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বইয়ের দোকান পরিচালনা করা বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ। সেখানে ২০ বছর ধরে বুক শপ পরিচালনা ও প্রকাশনার মাধ্যমে বইপ্রেমীদের আকৃষ্ট করার জন্য বাতিঘরকে অভিনন্দন জানাতে হয়। তবে বাতিঘরকে শুধু ব্যবসায়িক সাফল্য দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না। বাতিঘর একটি সামাজিক উদ্যোগ, এটিকে সামাজিক ব্যবসা হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে। এটি জ্ঞানপিপাসু মানুষের আকর্ষণের জায়গা হয়ে থাকুক।’ 

লেখক-গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, বাতিঘর বই বিক্রেতা, নাকি প্রকাশনা এ নিয়ে দ্বিধা রয়েছে। কখনো মনে হয়, বাতিঘরে প্রকাশনা কম গুরুত্ব পাচ্ছে। আসলে প্রকাশক হিসেবে টিকে থাকা খুব চ্যালেঞ্জের। সে চ্যালেঞ্জ বাতিঘর একা মোকাবিলা করবে, নাকি আরও সব প্রকাশনার সঙ্গে মিলে করবে, তাও দেখার বিষয়। কথা হলো, পাঠক যদি থাকে তাহলে লেখকও থাকবে, প্রকাশকও থাকবে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, এই কংক্রিটের শহরে বাতিঘর হলো মরূদ্যান। ওয়াটারস্টোনের মতো একটি চেইন বুক শপ হবে এই ঢাকায়, সেখানে বই পড়ার অভ্যাস ফিরে আসবে, বইয়ের জন্য এত টাকা বিনিয়োগ হবে, এটিই তো ছিল অবিশ্বাস্য।

কথাসাহিত্যিক নাসরীন জাহান, আলতাফ পারভেজ, কবি ও প্রাবন্ধিক এজাজ ইউসুফী, ইফতেখারুল ইসলাম, মোহিত কামাল, লেখক কিযী তাহনিন, কবি-সাংবাদিক সোহরাব হাসান, লেখক-অনুবাদক মোজাফফর হোসেন, লেখক অরুণ বিশ্বাস শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়াও সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ, অনুপম প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মিলন কান্তি নাথ, ভাষাচিত্র প্রকাশক খন্দকার সোহেল এই মিলনমেলায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। 

‘নানা প্রভাববলয়ে আত্মসমর্পণ করছে সাহিত্য’, অভিমত সাহিত্যিক-প্রকাশকদের

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ১১:১৯ পিএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৭ এএম
‘নানা প্রভাববলয়ে আত্মসমর্পণ করছে সাহিত্য’, অভিমত সাহিত্যিক-প্রকাশকদের
ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরিবর্তিত সমাজব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে সাহিত্য নানাভাবে প্রভাববলয়ের কাছে আত্মসমর্পণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী ও প্রকাশকরা। প্রভাবাচ্ছন্ন প্রক্রিয়া-সৃষ্ট সাহিত্যকে তারা উল্লেখ করছেন হলুদ সাহিত্য নামে। এমন সাহিত্যকে তারা সমাজ ধ্বংসের অন্যতম উপকরণ হিসেবেও চিহ্নিত করেন।

শুক্রবার (১২ জুলাই) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে সময় প্রকাশন আয়োজিত হুমায়ূন কবিরের প্রবন্ধ ‘হলুদ সাহিত্যের ছলচাতুরী ও অন্যান্য প্রবন্ধ’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন। সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমদের সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় আলোচক ছিলেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। অনুষ্ঠানে লেখক হুমায়ূন কবিরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আলম খোরশেদ, দীপু মাহমুদ, মোহিত কামালসহ আরও অনেকে।  

হুমায়ূন কবিরের  ‘হলুদ সাহিত্যের ছলচাতুরী ও অন্যান্য প্রবন্ধ’ প্রবন্ধগ্রন্থে ৮০ পৃষ্ঠায় ৪টি বিষয়ে ৮টি নিবন্ধ সংকলিত হয়েছে। 

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘হলুদ সাহিত্য বলতে আমি বুঝি, যেখানে উদ্দেশ্যমূলক প্রচার আছে। যার মধ্যে সত্য নেই কিন্তু সত্যের ভান আছে। সেখানে আলোচ্য বিষয় হলো সাহিত্য ও সত্যের মধ্যে সম্পর্ক কী? চিন্তার মধ্যে যে দুর্বলতা রয়েছে, সে প্রশ্নও রয়েছে হলুদ সাহিত্যে। আমরা বিশেষ করে বিশ্বসাহিত্য উচ্চারণ করছি। এই বিশ্বসাহিত্যের কত আনা সবুজ, কত আনা হলুদ, কত আনা কালো? এসব আলোচনা করলে অনেক সমস্যা বেরিয়ে আসবে।’

মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘বইটিতে ৮টি প্রবন্ধ রয়েছে। প্রবন্ধগুলোর মধ্যে বর্তমানময়তা রয়েছে। প্রতিটি প্রবন্ধ যাপিতজীবন ও স্থান-কালের সঙ্গে নিজের অবস্থান বাস্তবতার কাঠামোতে বর্ণনা করেছেন প্রাবন্ধিক।

প্রাবন্ধিক হুমায়ূন কবির পেশায় চিকিৎসক। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে বিপ্লবোত্তর ইরানে কাটিয়েছেন দুই বছর। ওই সময়ে তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা উপন্যাস ‘পারস্য পরবাসে’ ইতোমধ্যেই বিপুলভাবে আলোচিত।

জয়ন্ত/এমএ/

প্রবর্তিত হচ্ছে ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার’

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫৩ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম
প্রবর্তিত হচ্ছে ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার’
ছবি: সংগৃহীত

বহুমাত্রিক লেখক প্রয়াত শান্তনু কায়সারের স্মৃতিতে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘ঐতিহ্য’ এবং ‘শান্তনু কায়সার স্মৃতি পাঠাগার ও চর্চা কেন্দ্র, সাজনমেঘ’-এর যৌথ উদ্যোগে প্রবর্তিত হতে যাচ্ছে ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার’। শান্তনু কায়সারের সাহিত্যচর্চার পাঁচটি ক্ষেত্র- কবিতা, কথাসাহিত্য (গল্প/ উপন্যাস), প্রবন্ধ-গবেষণা, নাটক এবং অনুবাদ বিষয়ে উদ্ভাবনাময়, মৌলিকতামণ্ডিত এবং প্রতিশ্রুতিবান বাংলা ভাষায় রচিত পাণ্ডুলিপির জন্য এ পুরস্কার প্রদান করা হবে।

গত ২৮ মে ২০২৪ তারিখ পুরানা পল্টনস্থ ঐতিহ্য কার্যালয়ে ঐতিহ্য’র প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান নাইম এবং শান্তনু কায়সারের পরিবারের পক্ষে তার কনিষ্ঠ পুত্র রাসেল রায়হানের মধ্যে এ সংক্রান্ত যৌথ আলোচনায় ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার’ প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

ঐতিহ্য’র কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাকিবুজ্জামান জানিয়েছেন, প্রতি বছর পাঁচটি বিষয়ে জমাকৃত পাণ্ডুলিপির মধ্যে পুরস্কারের জন্য গঠিত বিচারকদের বাছাই করা সেরা তিনটি পাণ্ডুলিপির (পাঁচটি ক্ষেত্রের যে কোনও ক্ষেত্রের তিনটি সেরা পাণ্ডুলিপি) লেখককে প্রতিটি ৫০ হাজার টাকা অর্থমূল্যের এ পুরস্কার, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হবে। সেরা তিনটি পাণ্ডুলিপি পরবর্তী বছর অমর একুশে বইমেলায় ‘ঐতিহ্য’ থেকে বই আকারে প্রকাশিত হবে।

রাকিবুজ্জামান জানান, প্রতি বছর অধ্যাপক শান্তনু কায়সারের জন্মদিন ৩০ ডিসেম্বর একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ পুরস্কার ঘোষণা ও প্রদান করা হবে। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট নবীন বা প্রবীণ লেখক ‘শান্তনু কায়সার স্মারক বক্তৃতা’ প্রদান করবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ ত্রিশ বছর অথবা এর নিম্নে যে কোনও বয়সী জন্মসূত্রে বাংলাদেশি কবি-লেখককরা এ পুরস্কারে জন্য আবেদন করতে পারবেন। ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’-এর জন্য ১৫ জুলাই থেকে পাণ্ডুলিপি আহ্বান করেছেন আয়োজকরা। পাণ্ডুলিপি জমাদানের শেষ তারিখ ১৫ নভেম্বর। পাণ্ডুলিপির পৃষ্ঠা বা শব্দসংখ্যার কোনো সীমারেখা নেই। [email protected] ই-মেইল ঠিকানায় ‘ঐতিহ্য-শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪-এর জন্য পাণ্ডুলিপি জমা দেওয়া যাবে। পাণ্ডুলিপি ওয়ার্ড ফাইল বা ও পিডিএফ ফরমেটে মেইল করতে হবে অথবা ডাকযোগে হার্ডকপি পাঠাতে হবে ঐতিহ্য শান্তনু কায়সার সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪, ঐতিহ্য, ৩/১-এইচ পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০)। 

ইতোমধ্যে বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে এমন রচনা পাণ্ডুলিপি আকারে জমা দেওয়া যাবে না। কোনো ধরণের চৌর্যবৃত্তি বা প্ল্যাজারিজম আশ্রয় নিলে পুরস্কার ঘোষিত হলেও অভিযোগ পাওয়া মাত্র বাতিল হবে। পুরস্কারের জন্য যেকোনো ধরনের সুপারিশ বা অনুরোধ পুরস্কারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।

জয়ন্ত/এমএ/

কবি মাকিদ হায়দার মারা গেছেন

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ১১:৩০ এএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৪ এএম
কবি মাকিদ হায়দার মারা গেছেন
কবি মাকিদ হায়দার

কবি মাকিদ হায়দার মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 

বুধবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে আটটায় উত্তরার নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন সত্তর দশকের অন্যতম এই কবি।

তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
 
মাকিদ হায়দারের ছেলে আসিফ হায়দার সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, কবি দীর্ঘদিন নানা রোগে ভুগছিলেন। তাকে বিকেলে পাবনায় পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হবে।

মাকিদ হায়দার ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পাবনা জেলার দোহারপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হাকিমউদ্দিন শেখ ও মা রহিমা খাতুন। তারা সাত ভাই ও সাত বোন। তিনি ছেলেদের মধ্যে ষষ্ঠ। তার ভাই রশীদ হায়দার, জিয়া হায়দার, দাউদ হায়দার, জাহিদ হায়দার, আবিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার সবাই দেশের সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত।

তার উল্লেখযোগ্য লেখার মধ্যে রয়েছে, ‘রোদে ভিজে বাড়ি ফেরা’ ‘আপন আঁধারে একদিন’ ‘রবীন্দ্রনাথ: নদীগুলা’ ‘বাংলাদেশের প্রেমের কবিতা’ ‘যে আমাকে দুঃখ দিলো সে যেনো আজ সুখে থাকে’ ‘কফিনের লোকটা’ ‘ও প্রার্থ ও প্রতিম’ ‘প্রিয় রোকানালী’ ‘মমুর সাথে সারা দুপুর’।

মাকিদ হায়দার ২০১৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তাছাড়া বিভিন্ন সাহিত্য পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন তিনি।

অমিয়/