ঢাকা ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪

প্রামাণ্যচিত্রে মুক্তিযুদ্ধ তুলে ধরেন কাওসার চৌধুরী

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৪, ০১:০১ পিএম
প্রামাণ্যচিত্রে মুক্তিযুদ্ধ তুলে ধরেন কাওসার চৌধুরী
প্রামাণ্যচিত্র শুটিংয়ের একপর্যায়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত নির্মাতা কাওসার চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে ধরতে হয়নি বটে; কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য জোগান দিয়ে অনন্য ভূমিকা পালন করেছিলেন সেদিনের ১৬ বছর বয়সী এক তরুণ। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম মুক্তির অন্যতম বীর মুক্তিযোদ্ধা কাওসার চৌধুরীর সে লড়াই এখনো অব্যাহত। প্রামাণ্যচিত্রে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা সংরক্ষণ করে তা রেখে যেতে চান নতুন প্রজন্মের জন্য, যে প্রজন্ম শতবর্ষ পর এ ইতিহাস পাঠে ব্রতী হবে।

একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণীজন কাওসার চৌধুরী এসেছিলেন খবরের কাগজ কার্যালয়ে। আলাপচারিতায় তার মুক্তিযুদ্ধে যোগদান, প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা হয়ে ওঠা আর অভিনয় জীবন নিয়ে বিস্তারিত উঠে আসে।

তার বয়ানে প্রথমে উঠে আসে একাত্তরের স্মৃতিকথা। একাত্তরে ছিলেন আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থী। পরিবারের সঙ্গে চট্টগ্রামের মোগলটুলীর নবী কলোনিতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ২৫ মার্চের ভয়াল কালরাত, ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত সাড়ে ৮টা। জানা গেল, যুদ্ধজাহাজ ‘বাবর’ থেকে চট্টগ্রামে গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। সে রাতে ঘরহারা মানুষের আর্তনাদ শুনলেন রাতভর। আগ্রাবাদ হোটেলের কাছে তৎকালীন জিন্নাহ রোডে রাত দেড়টার দিকে বেবিট্যাক্সি করে কে যেন বঙ্গবন্ধুর দেওয়া স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করতে শুরু করলেন। ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম আক্রমণ করে পাকিস্তানি আর্মি, শুরু হয় গণহত্যার নৃশংসতম অধ্যায়।

কাওসার চৌধুরীর পরিবারসহ আরও অনেক পরিবার তখন কর্ণফুলী পাড়ি দিয়ে প্রথমে শিকলবাহা, পরে আনোয়ারা হয়ে চলে যান মাতারবাড়ী, নিজ বাড়িতে। বড় ভাই মাহবুব কামাল চৌধুরী তখন নন-কমিশনড র্যাংকে ফ্লাইট সার্জেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে। মার্চের শেষভাগে বাড়ি ফিরে আসেন। গ্রামের তরুণদের মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন তিনি। কাওসার বয়েজ স্কাউটের সদস্য ছিলেন, তা ছাড়া বাবার টু-টু বোর রাইফেলও নিয়মিত চালাতেন। তবে মুক্তিযুদ্ধে তাকে অস্ত্র ধরতে হয়নি। 

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা আক্রান্ত হয় ১৯৭১ সালের ৬ মে। প্রথমে আক্রমণ হয় মহেশখালীর আদিনাথ মন্দিরে। সেখানে আশ্রিত অনেক হিন্দু পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়, লুণ্ঠিত হয় ধনসম্পদ। সেদিন মাতারবাড়ীর উল্টো দিকে ঝাপুয়া এলাকা থেকে মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হয় মাতারবাড়ীর দিকে। আতঙ্কে দ্বীপ ছেড়ে পালাতে হয় অনেক গ্রামবাসীকে। 

চট্টগ্রামে ফিরে এসে কাওসার চৌধুরীর সঙ্গে দেখা হয় চট্টগ্রাম কমার্স কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি তোহা গাজীর সঙ্গে। তার সঙ্গে খাগড়াছড়ির রামগড় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের সাব্রুম এলাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেদিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘রামগড়ে পৌঁছানোর পর আমাদের কাজ হলো শরণার্থীদের পথ চিনিয়ে সীমান্তের ওপারে পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু আমি যেদিন পার হব সীমান্ত, সেদিন প্রচণ্ড আক্রমণ শুরু হলো। আমাকে আবার চট্টগ্রামে ফিরে যেতে হলো।’ 

চট্টগ্রামে ফিরে মুক্তিযোদ্ধা শিবিরে ইনফরমার হিসেবে যুক্ত হলেন। পাশাপাশি নানা অপারেশনে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী হিসেবে গোলাবারুদও বহন করেছেন। কোনো যোদ্ধার ম্যাগজিনে গুলি ফুরিয়ে গেলে তা আবার লোড করে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তার। অস্ত্র হাতে না নিয়েও রণাঙ্গনের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা লড়াই করে গেছেন ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সেদিন মুক্ত হয় বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। 

মহান মুক্তিযুদ্ধের পর কাওসার চৌধুরী নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যুক্ত হন। নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন। আলোকচিত্রের প্রতি ছিল তার দারুণ দুর্বলতা। তিনি তখন অত্যাধুনিক সব ক্যামেরা ব্যবহার শুরু করেন। তবে তার প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের হাতেখড়ি হলো বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা আলমগীর কবীরের হাত ধরে। তার প্রতিষ্ঠান থেকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর দেশের রাজনীতিতে ঘটে যায় নাটকীয় পটপরিবর্তন। 

সামরিক শাসক এরশাদ ক্ষমতা দখল করে নিলেন, তখন গণতন্ত্র মুক্তির দাবিতে উত্তাল জনতার নানা অধ্যায় কাওসার চৌধুরীকে আকৃষ্ট করল। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন নিউজ এজেন্সির সঙ্গে কাজ করার সুযোগ মিলেছিল তখন। পরে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে ক্যামেরাপারসন হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যান তিনি।

বিবিসির হয়ে কাজের মাঝেই কাওসার চৌধুরী একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ শুরু করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, বীরাঙ্গনাদের স্মৃতিকথা নিয়ে তিনি একে একে নির্মাণ করলেন ‘সেদিনের কথা বলতে এসেছি’, ‘বধ্যভূমিতে একদিন’। নব্বইয়ের দশকে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে উত্তাল সময়ের গল্প নিয়ে নির্মাণ করেছেন ‘গণ আদালত’। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও আর্কাইভিংয়ের জন্য তিনি এ বছর রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্মারক উৎস আর বধ্যভূমি খুঁজে বেড়ানোর কাজটি এখনো করে চলেছেন ৬৯ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা কাওসার চৌধুরী। এখনো ক্যামেরা, সহকারী, প্রোডাকশন ইউনিট নিয়ে তিনি ছুটে বেড়ান দেশের নানা প্রান্তে। 

একাত্তরের বধ্যভূমিগুলো যখন একে একে আবাসন প্রকল্পের ভিড়ে হারিয়ে যায়, তা ভীষণ পীড়া দেয় তাকে। আলাপচারিতায় বললেন, ‘বাহাত্তরে যে বধ্যভূমিগুলো শনাক্ত করা হয়েছিল, তার অধিকাংশ এখন ভরাট হয়ে গেছে। রায়েরবাজার বধ্যভূমির পাশে ছিল ডিম্বাকৃতির ইটভাটা। তার পাশে খাল, পরে বসিলা গ্রাম। সেই ইটভাটার একটি পিলার তো অন্তত রাখা যেত। তাহলে নতুন প্রজন্ম জানতে পারত, তখন কেমন ছিল রায়েরবাজার।’

বেশ কিছু বধ্যভূমি দখলের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ধর্মীয় অনুভূতির কারণে সেখানে সাংঘাতিক কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। ঢাকার মুসলিম বাজারে যে বধ্যভূমি পাওয়া গিয়েছিল, তার ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল মসজিদ। পরে তার পাশে একটি কুয়া খুঁড়তে গিয়ে সেখানে কঙ্কাল আর হাড়গোড় পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টিরা সেদিন সোচ্চার হয়েছিলেন বলে এ বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিস্মারক নির্মাণ করা গেছে। জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম রংপুরের ঘাঘট নদীর তিরে যে স্থানে গণহত্যা করেছিলেন, সেখানে বাড়িঘর হয়ে গেছে। অনেক বধ্যভূমি শনাক্ত করার পর জমির মালিকানা দাবি করে কেউ কেউ এসে বলে এ জমি তার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। যেহেতু এই মামলাগুলো ফৌজদারি মামলা না, তাই এসব মামলা দীর্ঘদিন ধরে চলতেই থাকে।’

জন্মদিনে সহকর্মীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত কথাসাহিত্যিক-সম্পাদক মোস্তফা কামাল

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ১০:১৪ পিএম
জন্মদিনে সহকর্মীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত কথাসাহিত্যিক-সম্পাদক মোস্তফা কামাল
দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল তার জন্মদিনে অফিস সহকর্মীদের সঙ্গে কেক কাটেন। ছবি : খবরের কাগজ

দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক ও প্রকাশক এবং জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামালের জন্মদিন উদযাপিত হয়েছে আজ ৩০ মে। খবরের কাগজের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে সব বিভাগের কর্মীরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় সাংবাদিকদের কেউ গান গেয়ে, আবার কেউ আবৃত্তি করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। সহকর্মীদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন মোস্তফা কামাল। 

অনুষ্ঠানে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের আন্ধারমানিক গ্রামে জন্ম নেওয়া আলোকিত মানুষ মোস্তফা কামালকে নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পত্রিকার মাল্টিমিডিয়া বিভাগ থেকে প্রস্তুত করা এই প্রামাণ্যচিত্রে তার জন্ম, জন্মভিটা, বেড়ে ওঠা, পিতা-মাতার সান্নিধ্য, পারিবারিক পরিচয়, একাধারে সফল সাংবাদিক ও লেখক হয়ে ওঠার চিত্র তুলে ধরা হয়।

অব্যাহতভাবে সাংবাদিকতায় অবদান রেখে যাওয়া এবং একই সঙ্গে সাহিত্যের নানা শাখা নাটক, উপন্যাস, গল্প, শিশুসাহিত্য, রম্যরচনা, কবিতা, কলাম, সায়েন্স ফিকশন নিয়ে লেখা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে কর্মীদের প্রশংসায় ভাসেন মোস্তফা কামাল। জবাবে তিনি বলেন, ‘এর জন্য একসময়ে আমার মায়ের, আর এখন স্ত্রীর বড় ভূমিকা রয়েছে।’

খবরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক তৌফিক মারুফের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক ও সম্পাদক মোস্তফা কামালের সহধর্মিণী মিনু আফরোজ ও খবরের কাগজের প্রধান বার্তা সম্পাদক খালেদ ফারুকী। অনুষ্ঠানে মোস্তফা কামালের জন্মদিন উপলক্ষে আজই লেখা পত্রিকার কপি এডিটর ও জাতীয় প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কবি হাসান হাফিজের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন চন্দনা বিশ্বাস। এ ছাড়া সংগীত পরিবেশ করেন অঞ্জন আচার্য ও শাহনাজ পারভীন এলিস। 

পরে মোস্তফা কামাল জন্মদিনের কেক কাটেন এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে পত্রিকার সব কর্মীর এবং তাদের পরিবারের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করেন। খবরের কাগজের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই স্বল্প সময়ে খবরের কাগজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। নতুন পত্রিকাটি এ সময়ে যতখানি এগিয়েছে, আর পিছপা হওয়ার কোনো কারণ নেই।’ এ সময় তিনি পত্রিকার সব কর্মীকে যার যার ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

জন্মদিন উপলক্ষে দিনভর শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনেকে সশরীরে সাক্ষাৎ করে, আবার অনেকে সামাজিকমাধ্যমেও তাকে শুভেচ্ছা জানান। 

সম্পাদকের স্কেচ এঁকে উপহার দেন শিল্পী নিয়াজ চৌধুরী তুলি। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং তত্বাবধানে ছিলেন ব্র্যান্ড অ্যান্ড অ্যাক্টিভেশন বিভাগের ইনচার্জ আতিয়া সুলতানা।

প্রসঙ্গত, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামাল বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ইতিহাস, ঐতিহ্য ও রাজনীতি আশ্রিত উপন্যাস নির্মাণে মোস্তফা কামাল বাংলাদেশে অনন্য ও নিজস্ব জায়গা করে নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে লিখেছেন একের পর এক উপন্যাস। বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষে কলকাতার স্বনামধন্য আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হয়েছে তার রচিত ঐতিহাসিক উপন্যাস ‘বঙ্গবন্ধু’। তার বিখ্যাত উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে অগ্নিকন্যা, অগ্নিপুরুষ ও অগ্নিমানুষ। বাঙালির জীবনে কালো অধ্যায় ১৯৭৫ সালের পটভূমিও তিনি তুলে এনেছেন উপন্যাসে। ব্যতিক্রমী এই উপন্যাসটির নাম ‘১৯৭৫’। গত একুশের বইমেলায় তার লেখা ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস ‘কারবালা উপাখ্যান’-এর তিনটি মুদ্রণ প্রকাশিত হয়েছে। 

মোস্তফা কামালের শৈশব-কৈশোর কেটেছে বেশ বৈচিত্র্যময় গ্রামীণ পরিবেশে। দেখেছেন অনেক ভাঙা-গড়া। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের সাক্ষী হয়েছে তার শিশু-কিশোর মন। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইংরেজি সাহিত্য ছিল তার বিষয়।

লেখকের প্রথম উপন্যাসের নাম ‘পাপের অধিকার’। প্রথম গল্প ‘বীরাঙ্গনার লড়াই’। প্রথম বিদ্রুপাত্মক ও রম্য বই ‘পাগল ছাগল ও গাধাসমগ্র’। প্রথম নাটকের নাম ‘প্রতীক্ষার শেষ প্রহর’। প্রথম গবেষণামূলক বই ‘আসাদ থেকে গণ-অভ্যুত্থান’। সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখায় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতায় বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

কথাসাহিত্যের পাশাপাশি সাংবাদিকতায়ও বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। এর আগে মোস্তফা কামাল দৈনিক কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সাংবাদিক হিসেবে তিনি আফগানিস্তানে যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি, নেপালে রাজতন্ত্রবিরোধী গণ-অভ্যুত্থান, পাকিস্তানে বেনজির ভুট্টো হত্যাকাণ্ড ও শ্রীলঙ্কায় তামিল গেরিলা সংকট কভার করে ব্যাপক আলোচিত ও প্রশংসিত হন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করেছেন।

কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামালের জন্মদিন আজ

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ১১:৫১ এএম
কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামালের জন্মদিন আজ
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামালের জন্মদিন আজ ৩০ মে। তিনি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামে আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন। প্রায় তিন দশক ধরে লেখালেখিকে ধ্যানজ্ঞান করে নিয়েছেন বেশ কয়েকটি আলোচিত উপন্যাসের এই স্রষ্টা।

সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার স্বচ্ছন্দ বিচরণ। উপন্যাস, গল্প, শিশুসাহিত্য, রম্যরচনা, কবিতা, কলাম, সায়েন্স ফিকশন লিখে চলেছেন দুহাতে। নন-ফিকশন লেখালেখির জগতে গবেষণা ও রাজনৈতিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনায়ও তিনি রেখেছেন মেধা ও মনীষার স্বাক্ষর। শিশু-কিশোরদের উপযোগী গল্প-উপন্যাসও লিখেছেন সাবলীল উপস্থাপনায়। তার লেখা টিভি নাটকও দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে।

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও রাজনীতি আশ্রিত উপন্যাস নির্মাণে মোস্তফা কামাল বাংলাদেশে অনন্য ও নিজস্ব জায়গা করে নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে লিখেছেন একের পর এক উপন্যাস। বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষে কলকাতার স্বনামধন্য আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হয়েছে তার রচিত ঐতিহাসিক উপন্যাস ‘বঙ্গবন্ধু’। তার বিখ্যাত উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে অগ্নিকন্যা, অগ্নিপুরুষ ও অগ্নিমানুষ। বাঙালির জীবনে কালো অধ্যায় ১৯৭৫ সালের পটভূমিও তিনি তুলে এনেছেন উপন্যাসে। ব্যতিক্রমী এই উপন্যাসটির নাম ‘১৯৭৫’। গত একুশের বইমেলায় তার লেখা ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস ‘কারবালা উপাখ্যান’-এর তিনটি মুদ্রণ প্রকাশিত হয়েছে। 

মোস্তফা কামালের শৈশব-কৈশোর কেটেছে বেশ বৈচিত্র্যময় গ্রামীণ পরিবেশে। দেখতে হয়েছে অনেক ভাঙাগড়া। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের সাক্ষী হয়েছে তার শিশু-কিশোর মন। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইংরেজি সাহিত্য ছিল উচ্চশিক্ষার বিষয়।

লেখকের প্রথম উপন্যাসের নাম ‘পাপের অধিকার’। প্রথম গল্প ‘বীরাঙ্গনার লড়াই’। প্রথম বিদ্রুপাত্মক ও রম্য বই ‘পাগল ছাগল ও গাধাসমগ্র’। প্রথম নাটকের নাম ‘প্রতীক্ষার শেষ প্রহর’। প্রথম গবেষণামূলক বই ‘আসাদ থেকে গণ-অভ্যুত্থান’। সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখায় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতায় বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

কথাসাহিত্যের পাশাপাশি সাংবাদিকতায়ও বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক ও প্রকাশক। এর আগে মোস্তফা কামাল দৈনিক কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সাংবাদিক হিসেবে তিনি আফগানিস্তানে যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি, নেপালে রাজতন্ত্রবিরোধী গণ-অভ্যুত্থান, পাকিস্তানে বেনজির ভুট্টো হত্যাকাণ্ড ও শ্রীলঙ্কায় তামিল গেরিলা সংকট কভার করে ব্যাপক আলোচিত ও প্রশংসিত হন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করেছেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক।

গল্পকার ফোরাম চট্টগ্রামের নজরুল জন্মজয়ন্তী ও বই আলোচনা

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ০৯:২৬ এএম
গল্পকার ফোরাম চট্টগ্রামের নজরুল জন্মজয়ন্তী ও বই আলোচনা

লেখালেখি একটি ঐশ্বরিক বিশেষ ক্ষমতা। লেখকের লেখায় ফুটে ওঠে সমাজের অসংগতি, কুসংস্কার, দুর্নীতি এবং সহজ ও কল্যাণমুখী চিন্তার বিস্তার। একজন লেখক সমাজ ও জাতির বিবেকের কন্ঠস্বর এবং আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী ও বই আলোচনা অনুষ্ঠানে আলোচনায় এমন মন্তব্য ওঠে আসে।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ক্লাব কলেজিয়েট মিলনায়তনে কথাশিল্পী ও শিক্ষাবিদ আনোয়ারা আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় ‘গল্পকার’ ফোরাম চট্টগ্রাম আয়োজিত ছয়জন লেখকের সদ্য প্রকাশিত ছয়টি বইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠান ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী।

অনুষ্ঠানের শুরুতে নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী সুতপা চৌধুরী মুমু। বাঁশি বাজিয়ে শোনান কবি বিপ্রতীপ অপু।

গল্পকারের সম্পাদক মুহাম্মদ মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ‘গল্পকার’ ফোরাম চট্টগ্রামের সদস্যসচিব কথাশিল্পী আলমগীর শিপন।

শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কবি ও কথাশিল্পী সাঈদুল আরেফীন। 

বই আলোচনায় কথাশিল্পের নানা আঙিক, জীবন ঘনিষ্ঠ চরিত্র ও ভাবনার কথকথা, গল্প বিষয়ক ধ্যাণ ধারনায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিবেশের চিত্রও ফুটে ওঠে বক্তাদের কথনে।

অনুষ্ঠানে শামসুদ্দীন শিশির সম্পাদিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম ও বস্তু সংস্কৃতি’ নিয়ে আলোচনা করেন ড. আজাদ বুলবুল। 

সুভাষ সর্ববিদ্যার গল্পগ্রন্থ ‘প্রমোশন’ নিয়ে আলোচনা করেন ছন্দা দাশ। 

অরুপ পালিতের গল্পগ্রন্থ ‘তোমায় দেখেছিলাম’ নিয়ে আলোচনা করেন হাফিজ রশিদ খান। 

ড. আজাদ বুলবুলের গল্পগ্রন্থ ‘উপদ্রুত উপত্যকা’ নিয়ে আলোচনা করেন মাঈন উদ্দিন জাহেদ। 

মিনহাজুল ইসলাম মাসুম সম্পাদিত ‘নির্বাচিত সায়েন্স ফিকশন’ নিয়ে আলোচনা করেন আলী আসকর। 

মিলন বনিকের গল্পগ্রন্থ ‘একাত্তরের দশরথ ও অন্যান্য গল্প’ নিয়ে আলোচনা করেন ইলিয়াস বাবর।

অমিয়/

শিল্পকলায় লালন সাঁই ও উকিল মুন্সীকে স্মরণ

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৪, ০৯:২৮ পিএম
শিল্পকলায় লালন সাঁই ও উকিল মুন্সীকে স্মরণ
ছবি : খবরের কাগজ

লালন ফকির বাংলার লোকায়ত দর্শনের মহানায়ক। তিনি মানুষকে সব সময় মানুষ হিসেবেই দেখেছেন। সেখানে কোনো জাতি-গোত্র বা ধর্মের বিভাজন তিনি করেননি।

প্রাবন্ধিক বক্তা ড. আবু ইসহাক হোসেন বুধবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক স্মরণ অনুষ্ঠানে ফকির লালন সাঁইজির মাহাত্ম্য তুলে ধরেন এভাবে। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের ৬২ জন মনীষীর জীবন ও কর্ম নিয়ে অনুষ্ঠান; ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ পঞ্চম দিনের আয়োজনে স্মরণ করা হয় ফকির লালন সাঁইজি ও উকিল মুন্সীকে।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রদর্শিত হয় লালন সাঁইজির জীবন ও দর্শনের উপর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র।

পরে ‘একুশ শতকে লালন ফকিরের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।

লেখক, গবেষক, এবং লালন রিসার্চ অ্যান্ড কালচারাল ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও প্রাবন্ধিক ড. আবু ইসহাক হোসেন ফকির লালন সাঁইজিকে নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, ‘ধর্মের মূল উদ্দেশ্য মিলন, বিভাজন নয়- এই সত্যটাকে জেনে মিলনের সাধনার মাধ্যমে ধর্মচর্চায় মোক্ষ লাভ হয়। ধর্ম-বিবাদ বা ধর্ম-বিভেদে নিরঞ্জন প্রাপ্তি ঘটে না। সত্তার সাধনায় তখন শব্দ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। সত্তার প্রেম যদি ঠিক থাকে তবে যে শব্দেই তাকে ডাকা হোক না কেনো সেই শব্দেই তিনি ভক্তের দ্বারে এসে বাধা পড়েন।’

আলোচনা শেষে বাউল সম্রাট লালন সাঁইজির গান পরিবেশন করেন বিশিষ্ট লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন ও সমীর বাউল। 

দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রদর্শিত হয় বাউল সাধক উকিল মুন্সীর জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র। পরে বাউল সাধক উকিল মুন্সীকে নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক রেজা। প্রবন্ধের শিরোনাম ‘গীতিকবি উকিল: মানবতীর্থের পরিব্রাজ’। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট লোকসংগীত শিল্পী আকরামুল ইসলাম।

প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ড. তারেক রেজা উকিল মুন্সীকে নিয়ে তার প্রবন্ধে বলেন, ‘আষাঢ় মাইসা ভাসা পানি ও লিলুয়া বাতাস গান দুটি চমৎকার শিল্পসংহতি লাভ করেছে। হাওয়ার সঙ্গে কথোপকথনের ব্যাপারটিও এখানে পেয়েছে ভিন্নতর মাত্রা।’

আলোচনা শেষে উকিল মুন্সীর গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী মোহাম্মদ মানিক ও রোকসানা আক্তার রুপসা।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল ১০টায় চিত্রশিল্পী শফিউদ্দিন আমেদ ও আলোকচিত্রশিল্পী রশিদ তালুকদার স্মরণে জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে সুরকার ও সংগীতপরিচালক সমর দাস এবং লোকশিল্পী ও সাধক মনমোহন দত্ত লবচন্দ্র স্মরণে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে।

জয়ন্ত সাহা/সালমান/

রুষ্ট প্রকৃতিকে শান্ত করতে সংগীত-নৃত্য

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৪, ১১:১৪ পিএম
রুষ্ট প্রকৃতিকে শান্ত করতে সংগীত-নৃত্য
ছবি : সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় রিমালে বিপর্যস্ত বাংলার উপকূল। সমুদ্রতীরবর্তী গ্রামগুলো এখনো পানিবন্দি। পানিবন্দি হয়ে বিপাকে পড়েছেন নগরের বাসিন্দারা। এই রুষ্ট প্রকৃতিকে শান্ত করতে, শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যে প্রকৃতিবন্দনা করলেন শিল্পীরা। 

মঙ্গলবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় ছিল শিল্পকলা একাডেমির আয়োজিত শাস্ত্রীয়সংগীত ও নৃত্য উৎসবের চতুর্থ দিন। এদিন জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে আয়োজনের শুরুতে রাগনির্ভর সমবেত সংগীতে বাংলার ষড়ঋতুর রূপবৈচিত্র্য তুলে ধরেন অষ্টপ্রহরের শিল্পীরা। শহিদুজ্জামান স্বপনের কথা ও সুরে এ সংগীতায়োজন করেছেন বিনোদ রায়। 

আয়োজনের সংগীত-পর্বে মেরাজুল জান্নাত সোনিয়া পরিবেশন করেন রাগ ‘মুলতানি’। বিশ্বজিৎ জোদ্দার শোনান রাগ ‘বেহাগ’। চন্দ্র সাহা পরিবেশন করেন রাগ ‘কেদার’। টিংকু শীল পরিবেশন করেন রাগ ‘ভিন্ন ষড়জ’। সৌমিতা বৌস পরিবেশন করেন রাগ ‘মালকোষ’। ইয়াকুব আলী খান পরিবেশন করেন রাগ দরবারী।

এ সন্ধ্যায় মণিপুরী এবং ওড়িশী নৃত্যের যুগলবন্দি পরিবেশনায় ‘নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্র’ পরিবেশন করে ‘তাণ্ডব-লাস্য’। সাত মাত্রার তেওড়া তালে আধারিত ‘তাণ্ডব- লাস্য’ নৃত্য প্রযোজনাটি প্রতিযোগিতামূলক আঙ্গিকে পরিবেশিত হয়। তেওড়া তালে ‘তাণ্ডব-লাস্য’ রচনা করেছেন গুরু বিপিন সিংহ। ওড়িশী নৃত্যভঙ্গি সংযোজন করেন তামান্না রহমান। 

‘তাণ্ডব’ পরিবেশনায় ছিলেন- মাহমুদুল হাসান রিপন, ঐন্দ্রিলা আকতার বীথি, নূরবানু মুক্তা এবং আরিবা ইবনাত ছোঁয়া। মণিপুরীতে ‘লাস্য’ অংশে মানোমী তানজানা অর্থী এবং ওড়িশী নৃত্যে তামান্না রহমান পারফর্ম করেন।

এদিন কত্থকে তাল দীপচণ্ডীতে ‘কৃষ্ণ বর্ণন’ পরিবেশন করেন ফিফা চাকমা। কত্থকে ধ্রুপদ পরিবেশন করেন মো. হানিফ। ‘সাংকারা আতি প্রাচান্দ্র’ শিরোনামের এই নৃত্য প্রযোজনাটি তাল চৌতালে নিবদ্ধ। কত্থকে ঐশী দাস একা পরিবেশন করেন শুদ্ধ নৃত্য তিনতাল এবং বিন্দাদীন মহারাজজীর রচিত ঠুমরি।

নৃত্য পর্বে শাস্ত্রীয় নৃত্য কত্থক পরিবেশনায় নৃত্যাঞ্চল মঞ্চস্থ করে ‘কৃষ্ণ বন্দনা’ এবং ‘তারানা’। 

রাগ হংসধ্বনি, তাল একতালিতে বেনজীর সালামের দল নৃত্যছন্দ শাস্ত্রীয় নৃত্য ওড়িশী পরিবেশনায় মঞ্চস্থ করে ‘হংসধ্বনি পল্লবী’। তাল ত্রিতাল ও রাগ মালকোষে কত্থক নৃত্য সম্প্রদায় পরিবেশন করে ‘তারানা’। ঠাট, আমোদ, তেহাই, টুকরা, পড়ন, সরগম ও লাড়ি- কত্থকের নানা আঙ্গিকে নির্মিত হয়েছে এই নৃত্য প্রযোজনা। প্রথমে বিলম্বিত লয়ে শুরু হয়ে, শেষে দ্রুত লয়ে শেষ হয় এ পরিবেশনা।

তাল তানচপ ও মেনকূপে প্রিয়াংকা সাহা মণিপুরী নৃত্য পরিবেশন করেন ‘রাধা অভিসার’।

রাগ হাংসানান্দানাম, তাল আদিতে নৃত্যবতী ভরতনাট্যম নৃত্যে চিত্রায়িত হয় রামায়ণের পৌরাণিক কাহিনি। রাম-সীতার প্রণয়লীলার সঙ্গে প্রজাপালক রাম ও তার রাজ্য শাসনের নানা কাহিনি বিধৃত হয় এই নৃত্যনাট্যে।

সবশেষে শিল্পকলা একাডেমির শাস্ত্রীয় সংগীত কোর্সের প্রশিক্ষণার্থীরা পরিবেশন করেন রাগ ‘ভূপালি’।

শিল্পকলা একাডেমি জানিয়েছে, শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যের এই উৎসব আগামী ৩১ মে পর্যন্ত চলবে। উৎসবটি মঙ্গলবার শেষ হওয়ার কথা ছিল।

জয়ন্ত/এমএ/