![জাপানি গাড়ি নির্মাতাদের থাইল্যান্ডে বড় বিনিয়োগ](uploads/2024/01/05/1704435592.atu-jabe-2.jpg)
জাপানি গাড়ি নির্মাতারা থাইল্যান্ডে ইভি উৎপাদনে বড় ধরনের বিনিয়োগ করছে। আগামী পাঁচ বছরে জাপানি গাড়ি নির্মাতারা থাইল্যান্ডে ৪৩০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে।
থাই সরকারের মুখপাত্র চাই ওয়াচারোকি জানিয়েছেন, জাপানের প্রধান গাড়ি নির্মাতারা পরবর্তী পাঁচ বছরে থাইল্যান্ডে ১৫০ বিলিয়ন বাথ বা ৪ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। এই বিনিয়োগ থাইল্যান্ডের বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) উৎপাদনে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করবে।
জাপানি নির্মাতারা দশকের পর দশক ধরে থাই গাড়িশিল্পে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। তবে সম্প্রতি চীনা ইভি নির্মাতারাও সেখানে বড় আকারে বিনিয়োগ করছে। থাইল্যান্ডের অর্থনীতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি; দেশটি এই অঞ্চলের বৃহত্তম গাড়ি উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক।
সম্প্রতি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন জাপান সফর শেষে সরকারের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। থাই সরকারের মুখপাত্র চাই ওয়াচারোকি বলেছেন, টয়োটা মোটর ও হোন্ডা মোটর প্রায় ৫০ বিলিয়ন বাথ করে বিনিয়োগ করবে। ইসুজু মোটরস ৩০ বিলিয়ন ও মিতসুবিশি মোটরস ২০ বিলিয়ন বাথ বিনিয়োগ করবে।
এই বিনিয়োগে বৈদ্যুতিক পিকআপ উৎপাদনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ বিষয়ে টয়োটা, হোন্ডা, ইসুজু ও মিতসুবিশির কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
চাই ওয়াচারোকি জানিয়েছেন, জাপানি গাড়ি নির্মাতারাদের এই বিনিয়োগ দেশের সরকারের অভ্যন্তরীণ জ্বালানি ইঞ্জিনচালিত গাড়ি থেকে ইভিতে রূপান্তর হওয়ার নীতিকে ত্বরান্বিত করবে। থাইল্যান্ড ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের বার্ষিক ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন গাড়ির উৎপাদনের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ইভিতে রূপান্তর করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
তারা ইভি উৎপাদনে আরও বেশি বিনিয়োগ ও রূপান্তরকে উৎসাহিত করতে প্রণোদনা প্রস্তুত করছে। থাইল্যান্ড সরকারে কর কমানো ও ভর্তুকি নীতি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি চীনা গাড়ি নির্মাতাকারীকে আকৃষ্ট করতে পেরেছে। যার মধ্যে চীনের ইভি নির্মাতা বিওয়াইডি ও গ্রেট ওয়াল মোটর দেশটিতে নতুন উৎপাদন সুবিধায় ১.৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
থাইল্যান্ডের বাজারে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগকারী দেশের নাম জাপান। কেবল টয়োটা ও এর বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাই কর্মীর সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৭৫ হাজার।
জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অরগানাইজেশনের (জেট্রো) তথ্য বলছে, জাপানের এফডিআইয়ের বড় অংশই প্রবেশ করে থাইল্যান্ডের বাজারে। তবে থাইল্যান্ডের গাড়ির বাজারে জাপানের এ একচেটিয়া অধিকারের জায়গায় কিছুটা কৌশলগত পরিবর্তন এসেছে।
আর এ পরিবর্তনের পেছনে মূল ভূমিকা রাখছে চীন। গত কিছুদিনে থাইল্যান্ডে বেড়েছে চীনের বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির (ইভি) উৎপাদন। আর এটিই জাপানের গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলোকে চাপে ফেলেছে। এখন পর্যন্ত থাইল্যান্ডের গাড়ির বাজারে ইভির অবদান মাত্র ১ শতাংশ।
খাতসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ ধরনের বড় বিনিয়োগ থাইল্যান্ডের গাড়ি খাতকে শক্তিশালী করবে। সঙ্গে সামনের দিনে দেশটির গাড়িশিল্পে চীন ও জাপানের বিনিয়োগ প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে। এই বিনিয়োগ থাইল্যান্ডের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে এবং ইভি উৎপাদন খাতে নেতৃত্বদানে ভূমিকা রাখবে।
এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইভি উৎপাদনের বৃদ্ধিতেও অবদান রাখবে। জাপানি গাড়ি নির্মাতাদের এই বিনিয়োগ থাইল্যান্ডের ইভি উৎপাদনে গতি আনবে। যার ফলে আগামী দিনে দেশটি ইভি উৎপাদনে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগী হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স
কলি