ঢাকা ১০ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
English

ভক্সওয়াগেন গাড়িতে চ্যাটজিপিটি

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:০১ এএম
ভক্সওয়াগেন গাড়িতে চ্যাটজিপিটি

পৃথিবীজুড়ে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটে চলেছে। এবার গাড়িতেও এই প্রযুক্তি হচ্ছে। জার্মান গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভক্সওয়াগেন তাদের গাড়িতে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, নির্দিষ্ট মডেলের গাড়িতে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চ্যাটজিপিটি যুক্ত করা হবে।

ভক্সওয়াগেন গাড়িতে বিল্ট-ইনভাবে চ্যাটজিপিটি যুক্ত করবে। ব্যবহারের জন্য নতুন করে আর চ্যাটজিপিটি ইনস্টল করতে হবে না। চ্যাটজিপিটি ব্যবহারের জন্য বারবার লগইন করতে হবে না। শুধু চালক ‘হেই আইডিএ’ উচ্চারণ করলে সাড়া দেবে চ্যাটজিপিটি। গাড়িতে ব্যবহৃত চ্যাটজিপিটিতে তথ্যের আদান-প্রদান করা যাবে। চাইলে যেকোনো তথ্য মুছে ফেলা যাবে। যা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যকে নিরাপদ করবে।

কোম্পানিটির তথ্যমতে, ‘ইন-কার ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট’ হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির চ্যাটজিপিটি চ্যাটবট গাড়িতে কাজ করবে। যার মাধ্যমে চালকরা সহজে গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশের কার্যকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবে। এ ছাড়া গাড়িতে বিভিন্ন যন্ত্রাংশের পরিবর্তন বা মেরামতের প্রয়োজন হলে তার দিকনির্দেশনাও দেবে এই প্রযুক্তি।

পরিবেশের সঙ্গে গাড়ির তাপমাত্রার নিয়ন্ত্রণে শীতাতপ ব্যবস্থা চালু বা বন্ধ করার নির্দেশনা দেবে এই প্রযুক্তি। চ্যাটজিপিটি রাস্তায় চলার সময় বিভিন্ন তথ্য দিয়ে চালককে সহায়তা করবে। ইউরোপের ভক্সওয়াগেন ব্যবহারকারীরা প্রাথমিকভাবে এ সুবিধা ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রে একই ধরনের সুবিধা চালুর পরিকল্পনা করেছে।

বর্তমানে গাড়িতে অ্যালেক্সা ও গুগলে ভয়েস কমান্ডের মতো বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার করে গাড়িতে আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে। যা অটোমোবাইল ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

কলি

বৈদ্যুতিক সেমি ট্রাক উৎপাদনে এমএএন ট্রাকস

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১১:০০ এএম
বৈদ্যুতিক সেমি ট্রাক উৎপাদনে এমএএন ট্রাকস

বাণিজ্যিক যানবাহন খাতে বড় অগ্রগতি আনছে জার্মান ট্রাক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এমএএন ট্রাকস। প্রতিষ্ঠানটি তাদের জার্মানির মিউনিখ কারখানায় শুরু করেছে বৈদ্যুতিক সেমি ট্রাকের ধারাবাহিক উৎপাদন।

পাঁচ বছর আগেও বৈদ্যুতিক সেমি ট্রাক ছিল একটি ভবিষ্যতের ধারণা। ধারণা করা হতো, বেশির ভাগ যাত্রীবাহী গাড়ি বৈদ্যুতিক হওয়ার পর হয়তো ভারী পণ্য পরিবহনে এ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হবে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি দ্রুত বদলেছে। বর্তমানে একাধিক ট্রাক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের লাইনআপে শুধু একটি নয়, বরং বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক ভারী পণ্যবাহী যানের মডেল রয়েছে। এমনকি বৈদ্যুতিক ট্রাকের জন্য বিশেষভাবে চার্জিং স্টেশনও তৈরি হচ্ছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো এমএএন ট্রাকস, যারা তাদের বৈদ্যুতিক মডেলগুলোর পূর্ণাঙ্গ উৎপাদন শুরু করেছে।

২০২৩ সালে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু মডেল তৈরি ও সরবরাহের পর এবার পূর্ণ উৎপাদনে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ডিজেলচালিত ট্রাকের পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে ব্যাটারিচালিত সংস্করণও। এমএএন ২০২১ সালে তাদের মিউনিখে একটি ই-মোবিলিটি সেন্টার তৈরি ও চালু করেছে।

উৎপাদন প্রক্রিয়া
এমএএন জানিয়েছে, বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১০০টি ট্রাক তৈরি করার সক্ষমতা রয়েছে। একেকটি ট্রাক তৈরি হতে সময় লাগছে প্রায় আট ঘণ্টা। এই বৈদ্যুতিক ট্রাকে থাকছে ছয়টি মডুলার নিকেল-ম্যাঙ্গানিজ-কোবাল্ট (এনএমসি) ব্যাটারি, মোট সক্ষমতা ৫৩৪ কিলোওয়াট-আওয়ার। একবার চার্জে এটি ৩১০ মাইল পর্যন্ত চলতে পারে। অতিরিক্ত ব্যাটারি প্যাক যুক্ত করলে এই রেঞ্জ বেড়ে দাঁড়াবে ৪৬০ মাইলে। প্রতি ৬২ মাইল চালাতে প্রয়োজন পড়ছে গড়ে ৯৭ কিলোওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ।

গ্রাহক সাড়া ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
উৎপাদন শুরুর আগেই ২০০টি প্রি-সিরিজ ট্রাক গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করেছে এমএএন। এই ট্রাকগুলো ইতোমধ্যে ২০ লাখ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে। নতুন করে আরও ৭০০টি ট্রাকের অর্ডার এসেছে।

প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী বোর্ড সদস্য মাইকেল কোব্রিগার বলেন, ‘ডিজেল ও বৈদ্যুতিক ট্রাক একই লাইনে উৎপাদন হওয়ায় বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত মানিয়ে নেওয়া যায়। একই সঙ্গে গ্রাহকদের অর্ডার অনুযায়ী গাড়িগুলো ঠিক সেই ক্রমে তৈরি করা সম্ভব।’

এই দশকে বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য কারখানাগুলো রূপান্তরে এক বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছে এমএএন। এর মধ্যে কয়েক বছরে ৪০০ মিলিয়ন ইউরো ইতোমধ্যে গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে।

চলতি বছরের শেষ নাগাদ ১ হাজার বৈদ্যুতিক ট্রাক সরবরাহের লক্ষ্য রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। শুধু লজিস্টিকস নয়, শহরাঞ্চলের বর্জ্য সংগ্রহসহ বিভিন্ন পৌর সেবার উপযোগী ট্রাকও তৈরি করছে তারা।

বৈদ্যুতিক ড্রাইভট্রেনসহ এমএএনের প্রথম উৎপাদিত মডেলগুলো অবশ্য বৈদ্যুতিক সেমি ট্রাক ছিল না। বেশ কয়েক বছর আগে পোল্যান্ডের স্টারাকোভাইচে এমএএন বৈদ্যুতিক সিটি বাস তৈরি শুরু করেছিল। এই বাসের সংখ্যা এখন ইউরোপ জুড়ে ২ হাজার ৫০০।

চ্যালেঞ্জ
যদিও এই খাতে অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো, তবে পুরো ইউরোপে ২০৩৫ সালের মধ্যে বৈদ্যুতিক ট্রাকের সংখ্যা মোট ভারী ট্রাকের ১৫ শতাংশে পৌঁছাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। গ্রাহক ও দেশভেদে বাহন বেছে নেওয়ার হার বেশ ভিন্ন রকম। তাই আপাতত এটি সব পণ্য পরিবহনকারী বা পৌর পরিষেবাগুলোর জন্য একটি সমাধান নয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈদ্যুতিক ট্রাক ব্যবহারে এখনো বড় বাধা চার্জিং অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা। তবে নির্ধারিত রুটে নিয়মিত চলাচলকারী ট্রাক ও বাসে এই সীমাবদ্ধতা তুলনামূলক কম।

এমএএনের এই উদ্যোগ ভারী যানবাহনের বৈদ্যুতিকীকরণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এমএএন ট্রাকস এখন তাদের বৈদ্যুতিক মডেলগুলো আইসিই সংস্করণের পাশে তৈরি করছে, তবে তাদের এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে।

হোন্ডার ‘সুপার ইভি’ ধারণা মডেল

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১০:১৬ এএম
হোন্ডার ‘সুপার ইভি’ ধারণা মডেল
হোন্ডা আসন্ন ‘গুডউড ফেস্টিভ্যাল অব স্পিড’-এ তাদের নতুন এক বৈদ্যুতিক গাড়ির ধারণা মডেল উন্মোচন করতে চলেছে। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হোন্ডা আসন্ন ‘গুডউড ফেস্টিভ্যাল অব স্পিড’-এ তাদের নতুন এক বৈদ্যুতিক গাড়ির ধারণা মডেল উন্মোচন করতে চলেছে। ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট সাসেক্সে আয়োজিত বার্ষিক মোটরস্পোর্টস উৎসবটি চলতি বছরের ১০ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ১৩ জুলাই পর্যন্ত চলবে।

হোন্ডা তাদের যে ‘সুপার ইভি’ ধারণা মডেলটি প্রদর্শন করতে যাচ্ছে, তা আগের ‘হোন্ডা ই’ মডেল থেকে অনুপ্রাণিত। ধারণা করা হচ্ছে, এই গাড়িটি সম্পূর্ণ উৎপাদন পর্যায়ে গেলে হ্যাচব্যাক এ-সেগমেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এটি হবে হোনডে (হুন্দাই) আই১০, ফিয়াট ৫০০ই ও আসন্ন রেনো টুইংগোর প্রতিদ্বন্দ্বী।

বাংলাদেশে আসবে কি?
বাংলাদেশের বাজারে এই গাড়ি আসবে কি না, এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো খবর নেই। হোন্ডা এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবরণ প্রকাশ করেনি। তবে যুক্তরাজ্যে পরীক্ষামূলকভাবে গাড়িটি চালাতে দেখা গেছে, যা থেকে কিছু প্রাথমিক তথ্য জানা গেছে।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই ইভি পাওয়া যাবে অপেক্ষাকৃত কম দামে। এতে থাকবে উন্নত সক্ষমতার ব্যাটারি, যা একবার চার্জে ডব্লিউএলটিপি রেটিং অনুযায়ী ৩০০ কিলোমিটারের বেশি পথ চলতে পারবে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বৈদ্যুতিক যানবাহনের বাজারে অবস্থান আরও মজবুত করতে হোন্ডা আগামী বছরগুলোতে সাতটি নতুন ইভি মডেল উন্মোচনের পরিকল্পনা করেছে। এ জন্য তারা তৈরি করছে নতুন প্ল্যাটফর্ম, উন্নত ব্যাটারি প্রযুক্তি এবং আধুনিক মোটর সিস্টেম। এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী আরও ১৩টি হাইব্রিড গাড়ি চালুর লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি, যার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত।

বাইকের ইঞ্জিন অয়েল বদলাবেন কখন

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম
বাইকের ইঞ্জিন অয়েল বদলাবেন কখন
ইঞ্জিন অয়েল সঠিক সময়ে পরিবর্তন না করলে ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

ভালো মাইলেজ এবং দীর্ঘস্থায়ী ইঞ্জিনের জন্য সময়মতো ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইঞ্জিন অয়েল সঠিক সময়ে পরিবর্তন না করলে ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে, যা সরাসরি বাইকের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলে। তবে কত দিন পরপর ইঞ্জিন অয়েল বদলাতে হবে, তা নিয়ে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। এটি বাইকের মডেল, ইঞ্জিনের ধরন ও ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।

সাধারণত নতুন বাইকের প্রথম সার্ভিসে ৫০০ থেকে ৭৫০ কিলোমিটার চলার পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন। এটি ইঞ্জিনের প্রাথমিক ঘর্ষণজনিত ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে।

যদি বাইকে সিনথেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা হয়, তা হলে সাধারণত ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার পরপর এটি পরিবর্তন করা যেতে পারে। সিনথেটিক অয়েল সাধারণ মিনারেল অয়েলের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হয়।

পুরোনো বাইকের ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ হাজার কিলোমিটার পরপর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন। এতে পুরোনো ইঞ্জিনের কার্যকারিতা বজায় থাকবে ও ভালো মাইলেজ পাওয়া যাবে।

শহরের যানজটে বাইক চালালে বারবার ব্রেক কষতে হয়, গিয়ার পরিবর্তন করতে হয় এবং ক্লাচ চাপতে হয়। এতে ইঞ্জিনের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এ কারণে শহরে ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতি ৩ হাজার কিলোমিটার পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা ভালো।

অন্যদিকে হাইওয়েতে বাইক দীর্ঘক্ষণ একটানা চলে। ফলে ইঞ্জিনের ওপর চাপ কম পড়ে। এই অবস্থায় ৪ থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত বাইক চালানোর পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা যেতে পারে।

ভালো মানের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলে ইঞ্জিনের আয়ু বাড়ে এবং বাইকের মাইলেজও ভালো থাকে। মনে রাখবেন, ইঞ্জিনের সঠিক পরিচর্যা বাইকের দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্সের চাবিকাঠি।

ভারতে গাড়ি উৎপাদনে আগ্রহী নয় টেসলা

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ১১:০৫ এএম
ভারতে গাড়ি উৎপাদনে আগ্রহী নয় টেসলা
ছবি: সংগৃহীত

বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা ভারতে গাড়ি তৈরিতে আগ্রহী নয় বলে জানিয়েছেন ভারতের শিল্পমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। সম্প্রতি ভারত সরকার ইলেকট্রিক ভেহিকেল (ইভি) বিষয়ক নতুন একটি নীতি ও নির্দেশিকা জারির পর তিনি এই মন্তব্য করেন।

চলতি বছরের মার্চে আন্তর্জাতিক ইভি নির্মাতাদের জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা ঘোষণার পরও এই প্রথম ভারত সরকার প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে যে, তারা টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের কাছ থেকে বিনিয়োগ টানতে পারেনি।

তবে কুমারস্বামী নিশ্চিত করেছেন, টেসলা ভারতে দুটি শোরুম খুলবে, যেখানে আগ্রহী ক্রেতারা গাড়ি দেখে কিনতে পারবেন। ভারতে গাড়ি তৈরি না করলেও ইলন মাস্কের কোম্পানির গাড়ি দেশটিতে বিক্রির জন্য থাকবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

তিনি আরও বলেন, ‘মার্সিডিজ–বেনজ, ভক্সওয়াগেন, হোনডে (হুন্দাই) ও কিয়া ভারতে ইভি তৈরিতে আগ্রহ দেখালেও টেসলার কাছ থেকে তেমন কিছু আশা করছি না।’

ভারতের আরেক কর্মকর্তা দেশটির সংবাদ সংস্থা ‘প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া’কে জানিয়েছেন, টেসলার একজন প্রতিনিধি প্রথম ধাপের বৈঠকে অংশ নিলেও, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে অনুপস্থিত ছিলেন।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, টেসলা যদি ভারতে কারখানা তৈরি করে, তবে সেটা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অন্যায় হবে। এর পরপরই এই খবর প্রকাশিত হলো।

বছরের পর বছর ভারতের বাজারে প্রবেশের জন্য টেসলা একাধিকবার আলোচনা করেছে। টেসলার মূল পরিকল্পনা ছিল ভারতে কারখানা খোলা। তবে ২০২২ সালে সেই আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। কারণ ভারত সরকার জানিয়েছিল, টেসলাকে কারখানা খুলতে হলে গাড়ি ভারতে তৈরি করতে হবে। অন্যদিকে টেসলা বলেছিল, তারা প্রথমে ভারতে গাড়ি রপ্তানি করে সেখানকার ইভি চাহিদা যাচাই করতে চায়।

২০২৩ সালে মাস্ক বলেন, ভারতের বাজারে বিনিয়োগের জন্য তিনি সঠিক সময় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। চলতি বছরের শুরুতে ওয়াশিংটন ডিসিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মাস্কের সাক্ষাৎ হয়েছিল। সেই সাক্ষাতে দুজনে প্রযুক্তি ও নতুন উদ্ভাবনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।

গত বছর আন্তর্জাতিক গাড়ি নির্মাতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ভারত ইভির আমদানি শুল্ক কমিয়েছিল। তবে সেই সুবিধা পেতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ ও তিন বছরের মধ্যে ভারতে গাড়ি উৎপাদন শুরু করতে হবে। এর আগে মাস্ক বলেছিলেন, ভারতে গাড়ি আমদানির ওপর উচ্চ কর থাকায় তাদের ব্যবসা করা কঠিন। দেশটির সরকার কর কমিয়ে সাহায্য করেছে, যা তাদের ভারতে আসতে উৎসাহিত করবে। বর্তমানে ভারতের ইভি বাজারে টাটা মোটর্স শীর্ষস্থানে রয়েছে। টাটা বাজারের প্রায় ৬০ শতাংশ দখল করে আছে। ২২ শতাংশ শেয়ার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এমজি মোটর।

/আবরার জাহিন

নতুন নামে নতুন রূপে ক্রসওভার ‘টয়োটা বিজেড’

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
নতুন নামে নতুন রূপে ক্রসওভার ‘টয়োটা বিজেড’
টয়োটা বিজেড। ছবি: সংগৃহীত

জাপানি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা তাদের বৈদ্যুতিক ক্রসওভারের নতুন সংস্করণ ‘টয়োটা বিজেড’ নিয়ে আসছে। আগের নাম ‘টয়োটা বিজেড৪এক্স’ বাদ দিয়ে ২০২৬ সালে ‘টয়োটা বিজেড’ নামে আসছে নতুন মডেলটি। টয়োটা তাদের ইলেকট্রিক গাড়ির নতুন সংস্করণে শুধু নাম নয়, বদলে ফেলেছে অনেক কিছু। গাড়িটির উন্নত ব্যাটারি, বাড়তি রেঞ্জ ও অভ্যন্তরীণ নকশায় এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।

বদলেছে ভেতরের দিক
নতুন বিজেড সংস্করণটি বাইরের দিক থেকে ২০২৫ সালের বিজেড৪এক্স-এর মতো দেখালেও ভেতরে রয়েছে বড় পরিবর্তন। গাড়িটিতে থাকছে ১৪ ইঞ্চির মাল্টিমিডিয়া টাচস্ক্রিন। আগের থেকে ভালোভাবে দেখার জন্য নতুন স্ক্রিনটি আরও উঁচু অবস্থানে স্থাপন করা হয়েছে। পুরোনো স্ক্রিনে ভলিউম বাড়ানো-কমানোর জন্য নিচে ছোট ছোট বাটন ছিল, যা চলন্ত অবস্থায় ব্যবহার করা কঠিন ছিল। তাই আরও ভালোভাবে ভলিউম নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা নব যুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি আগের ছোট বাটনের পরিবর্তে এখন বড় ডায়াল দিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

বিজেড৪এক্সের ডিজিটাল গেজ ক্লাস্টারটি খুব নিচু ছিল। তবে নতুন সংস্করণে গেজ ক্লাস্টারও উঁচুতে স্থানান্তর করা হয়েছে, যা দেখতে সহজ হয়েছে। পুরোনো নকশা বাদ দিয়ে নতুন ডিজাইন এখন অনেকটা পরিষ্কার ও প্রিমিয়াম লুক তৈরি করেছে।

শক্তিশালী ব্যাটারি
২০২৬ সালের বিজেড মডেলে থাকছে মোট চারটি সংস্করণ। মূল আকর্ষণ হচ্ছে এর একটি সংস্করণে থাকছে ৭৪.৭ কিলোওয়াট-আওয়ার ব্যাটারি, যা সর্বোচ্চ প্রায় ৫০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত রেঞ্জ দিতে পারে। অল-হুইল ড্রাইভ সংস্করণে এই রেঞ্জ কিছুটা কমে ২৭৮ মাইল হবে। এ ছাড়া একটি ফ্রন্ট-ড্রাইভ এক্সএলই ট্রিমে ৫৭.৭ কিলোওয়াট আওয়ার ব্যাটারি যুক্ত করা হয়েছে। এই সংস্করণের রেঞ্জ হবে ২৩৬ মাইল, যার হর্সপাওয়ার হবে মাত্র ১৬৮। এই সংস্করণটি তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যাবে।

স্পেক শিট অনুযায়ী, বিজেড৪এক্স মডেলের এইডব্লিউডি সংস্করণে প্রতি ঘণ্টা ০ থেকে ৬০ মাইল গতিতে পৌঁছাতে ৬.৫ সেকেন্ড লাগত। সেখানে নতুন বিজেড মডেলের ৩৩৮ হর্সপাওয়ারের এইডব্লিউডি সিস্টেমে এটি ৪.৯ সেকেন্ডে সম্ভব হবে।

অফ-রোড সক্ষমতা
২০২৬ সালের শুরুর দিকে বাজারে আসবে ‘২০২৬ বিজেড উডল্যান্ড এডিশন’। এতে থাকবে সর্বোচ্চ ৩৭৫ হর্সপাওয়ার সক্ষমতা, ৮.৩ ইঞ্চি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এবং ৩ হাজার ৫০০ পাউন্ড ওজন বহনের ক্ষমতা। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের কথা মাথায় রেখে এটি তৈরি করা হয়েছে।

চার্জিং
নতুন বিজেড মডেলের সব সংস্করণে যুক্ত হচ্ছে টেসলার ডিজাইন করা নর্থ আমেরিকান চার্জিং সিস্টেম (এনএসিএস) পোর্ট, যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে হাজার হাজার ডিসি ফাস্ট চার্জিং স্টেশন ব্যবহার করা যাবে। তবে আগের কম্বাইন্ড চার্জিং সিস্টেম (সিসিএস) পোর্ট ব্যবহারকারী চার্জারগুলোর জন্য ফ্রি অ্যাডাপ্টার পাবেন।

ব্যবহার আরও সহজ
২০২৬ সালের মডেলটিতে স্টিয়ারিং হুইলে এবার যুক্ত হয়েছে রিজেনারেটিভ ব্রেকিং কন্ট্রোল প্যাডেল, যা আগে ছিল না। এক প্যাডেল দিয়ে ব্রেকিং শক্তি বাড়ানো যাবে, অন্যটি দিয়ে কমানো যাবে। বিজেড৪এক্সের সেন্টার কনসোলে ওয়্যারলেস ফোন চার্জিংয়ের জন্য একটি পোর্ট ছিল। তবে নতুন বিজেড মডেলে ফোন চার্জিংয়ের দুটি পোর্ট রয়েছে। গিয়ার শিফটারের অবস্থানও বদলে চালকের আরও কাছে আনা হয়েছে।

দাম
‘২০২৫ বিজেড৪এক্স’-এর দাম শুরু হয়েছিল ৩৮ হাজার ২০৫ মার্কিন ডলার থেকে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তবে নতুন বিজেড মডেলের দাম কী হবে, তা জানা যাবে এই গ্রীষ্মে এক্সএলই ও লিমিটেড ট্রিমগুলো শোরুমে এলে। বিজেড৪এক্স জাপান ও চীনে তৈরি করে টয়োটা।

উল্লেখ্য, বিজেড৪এক্স মডেলটি তিন বছর ধরে বাজারে ছিল। এ সময়ে এর কিছু ত্রুটিও ধরা পড়ে। গাড়িটি ২০২২ সালে বাজারে এলে নড়বড়ে হাব বোল্টের কারণে চাকা খুলে যাওয়ার মতো বিব্রতকর ঘটনায় রিকল করা হয়েছিল। ২০২২ সালে গাড়িটি মাত্র ১ হাজার ২০০ ইউনিট বিক্রি হয়েছে। তবে বিজেড৪এক্স যথেষ্ট ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৯ হাজার ৩২৯ ইউনিট এবং ২০২৪ সালে আরও ১৮ হাজার ৫৭০ ইউনিট বিক্রি হয়েছে।

তবে ২০২৪ সালে বিএমডব্লিউ আই৪, ক্যাডিলাক লাইরিক ও রিভিয়ান আর১এসের মতো উচ্চমূল্যের বিলাসবহুল ইভিগুলো বিজেড৪এক্সের চেয়ে অনেক বেশি বিক্রি হয়েছে। একইভাবে মাস্টাং ম্যাক-ই, নিশান আরিয়া ও হোন্ডা প্রলগের মতো মূলধারার ইভিগুলোও এগিয়ে ছিল। তাই টয়োটার এখনো পুরোপুরি বৈদ্যুতিক গাড়ির বিভাগে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, টয়োটা এবার তাদের ‘বিয়ন্ড জিরো’ কৌশলকে আরও বাস্তবমুখী ও ব্যবহারবান্ধব করতে নানা দিক থেকে চেষ্টা করছে। ২০২৬ সালের নতুন বিজেড সেটাই প্রমাণ করে।