পার্বত্য চুক্তিবিরোধী পাহাড়ি আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপ) খাগড়াছড়িতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। তাদের চার নেতাকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) পুরো জেলায় সকাল-সন্ধ্যা এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। এদিন পর্যটকবাহী একটি গাড়িতে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া অবরোধকারীরা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আগুন দেন।
অবরোধের শুরুতে সোমবার ভোরে জেলার মাটিরাঙা ও মানিকছড়ি সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে, রাস্তায় গাছের বড় বড় গুঁড়ি ফেলে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন পিকেটাররা। খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের গাছবান এলাকায় গাছ কেটে বিছিয়ে দেওয়া হয় সড়কের ওপর। এ ছাড়া মানিকছড়ির পিছলাতলা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী সিএনজিতে আগুন দেন অবেরোধ সমর্থকরা।
এদিন সকালে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার পথে দীঘিনালা-সাজেক সড়কের শুকনাছড়ি এলাকায় পর্যটকবাহী একটি গাড়িতে গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কোনো হতাহত হয়নি। একই স্থানে পর্যটকবাহী একটি প্রাইভেট কার, একটি পিকআপ ও একটি মাহেন্দ্র ভাঙচুর করা হয়েছে। অবরোধে জেলা থেকে দূরপ্লাল্লার কোনো যাত্রীবাহী কিংবা পণ্যবাহী পরিবহন ছেড়ে যায়নি। বন্ধ ছিল আন্তউপজেলার সব ধরনের যান চলাচল।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও অবরোধে জেলার কোথাও বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
গত ১১ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলার সীমান্তবর্তী পানছড়ি উপজেলার দুর্গম লোগাং ইউনিয়নের অনিলপাড়া এলাকায় ইউপিডিএফের চার নেতা দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনায় নিহত বিপুল চাকমার চাচা নিরুপম চাকমা বাদী হয়ে গত বুধবার পানছড়ি থানায় অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এর আগে গত রবিবার পানছড়ি উপজেলায় হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে দিনব্যাপী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ইউপিডিএফ নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা এক মাস পানছড়ি বাজার বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।