চুরির মামলার তদন্তে অস্ত্রের সন্ধান, গ্রেপ্তার ৫ । খবরের কাগজ
ঢাকা ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

চুরির মামলার তদন্তে অস্ত্রের সন্ধান, গ্রেপ্তার ৫

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৫ পিএম
চুরির মামলার তদন্তে অস্ত্রের সন্ধান, গ্রেপ্তার ৫
ছবি : খবরের কাগজ

রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামবাগ এলাকায় ঈদুল ফিতরের ছুটিতে গত ১২ এপ্রিল একটি বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন। মামলার তদন্তে নেমে চোর চক্রের দুই নারীসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার চোরদের জিজ্ঞাসাবাদে অস্ত্র চুরি ও বিক্রির তথ্য পায় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তারা হলেন- মো. রাজীব হোসেন রানা (২৮), মো. শাহীন (৪০), মো. আবুল হাসান সুজন (২৫), মো. পারভেজ নুর (৩৮) ও মানিক চন্দ্র দাস (৩৬)। এ ঘটনায় জড়িত আরও দুজন পলাতক।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকার চকবাজার থানার পূর্ব ইসলামবাগ এলাকার একটি বাড়িতে গত ১২ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে চুরির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে চুরির ঘটনায় জড়িত দুই নারীসহ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই চক্রের মূল হোতা ২২ মামলার আসামি মামুন।’

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘মামুনের অন্যতম সহযোগী তার মা হাসিনা। তারা স্থানীয়ভাবে চোর হিসেবে পরিচিতি। চুরি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গিয়ে চক্র গড়ে তোলে মামুন। কারাগারে গড়ে তোলা ১০ থেকে ১২ জনের চক্রটি স্থানীয়ভাবে মামুন বাহিনী হিসেবে পরিচিত। তারা নানা কৌশলে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে চুরি করে আসছিল।’

পুলিশ জানায়, চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারে আসামিদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে নেমে অস্ত্রের কারবারের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পান তদন্তকারী কর্মকর্তা। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মামুনের চক্রের একটি অংশের সদস্য রাজীব হোসেন রানাসহ (২৮) চক্রের তিন সদস্য প্রায় এক বছর আগে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকার একটি বাসায় চুরি করে। ওই বাসা থেকে টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকারের সঙ্গে বেশ কিছু অস্ত্রও চুরি হয়। এই অবৈধ অস্ত্রের মালিক শাহিন এ কারণে থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। পরবর্তী সময়ে শাহিনকে গ্রেপ্তার করলে গত ২২ এপ্রিল থকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৫ দিন অভিযান চালিয়ে ৫টি অস্ত্র ও ৩৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

‘ইন্স্যুরেন্সে চাকরির আড়ালে জঙ্গি সংগঠনের কর্মী’

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০৮:৫০ পিএম
‘ইন্স্যুরেন্সে চাকরির আড়ালে জঙ্গি সংগঠনের কর্মী’

আলফা ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি গোপনে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার রিক্রুটার হিসেবে কাজ করতেন রানা শেখ ওরফে আমির হোসাইন। সদস্য সংগ্রহ করে ইতোমধ্যে তিনজনকে সংগঠনে রিক্রুট করে প্রশিক্ষণের জন্য বান্দরবানে কুকি-চিনের আস্তানায় পাঠান তিনি। এমনকি প্রশিক্ষণের খরচ বাবদ কুকি-চিনের কাছে লক্ষাধিক টাকাও পাঠান এই রানা। 

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। 

এর আগে গতকাল সোমবার (১৩ মে) রাজধানীর কল্যাণপুর ও গাবতলী এলাকা থেকে ওই জঙ্গি সংগঠনের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) লালবাগ বিভাগ। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রানা শেখ ওরফে আমির হোসাইন, মশিউর রহমান ওরফে মিলন তালুকদার ও হাবিবুর রহমান। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি স্মার্টফোন ও দুটি বাটনফোন উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব ডিভাইস থেকে তাদের প্রশিক্ষণের ভিডিও ছবি উদ্ধার করা হয়।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার মশিউর রহমান প্রথমে ইসলামিক শাষণতন্ত্র আন্দোলনের সদস্য ছিলেন। ২০০২-০৩ সালে হুজির সদস্য হিসেবে ময়মনসিংহে আব্দুর রউফের মাদ্রাসায় সামরিক ও আন আর্মড কমব্যাট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন। ২০১৩ সালে অপরাপর হুজি নেতাদের সঙ্গে গ্রেনেডসহ ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার হয়ে সাড়ে চার বছর সাজা খাটেন। আর হাবিবুর রহমান ছিলেন সংগঠনের নতুন রিক্রুট। তিনি আলফা ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কর্মী হিসেবে আমির হোসেনের অধীনে কাজ করতেন। আমির হোসেন একই মতবাদে দীক্ষিত করে তাকে ইতোমধ্যে জঙ্গি সংগঠনে রিক্রুট করে বান্দবানে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

ডিবিপ্রধান বলেন, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি), আনসার আল ইসলাম ও জামাআতুল মুজাহিদীনের (জেএমবি) মুক্তিপ্রাপ্ত এবং পলাতক বেশ কিছু সদস্য মিলেমিশে একটি নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠীতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ গঠন করেন।

পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ধারাবাহিক তৎপরতায় সফল জঙ্গি অভিযানের কারণে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনটি সমতল এড়িয়ে পার্বত্য জেলাগুলোতে প্রশিক্ষণের জন্য সুযোগ খুঁজছিল। পার্বত্য বান্দরবান, খাগড়াছড়িতে বসবাসকারী বম সম্প্রদায়ের বিভ্রান্ত সন্ত্রাসীদের দ্বারা গঠিত কুকি-চিনদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় শারক্বীয়ার।

পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের অভিযানে এদের অনেক সদস্যকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সংগঠনটিতে ৫৩ জনের মতো সদস্য ছিলেন। এর মধ্যে ৪৯ জনই ইতোমধ্যে ধরা পড়ে গেছে। গ্রেপ্তার রানা বর্তমানে সংগঠনের প্রধান রিক্রুটার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। সারা দেশ থেকেই তাদের সদস্য রিক্রুটের পরিকল্পনা ছিল। আমরা তাদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে হয়তো আরেকটা গ্রুপকে পাহাড়ে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হতো। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের ৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে। তাদের সঙ্গে জড়িত আর কারা আছে জানার চেষ্টা করব। জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।’

এনএসআইএ চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৬

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০১:১৯ পিএম
এনএসআইএ চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৬

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থায় (এনএসআই) চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারকচক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

সোমবার (১৩ মে) গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মহানগর ডিবির উপ-কমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. লিয়ন ইসলাম (২৫), মো. হুমায়ুন কবির প্রিন্স (৩৬), মো. মোজাহিদুল ইসলাম (২৩), রাজিয়া সুলতানা (২২), মোছা. রিপা আক্তার (২১) ও মোছা. রিখা মনি (১৭)।

উপ-কমিশনার জানান, দুই নারী ভুক্তভোগীর অভিযোগে এনএসআই ও ডিবি যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। প্রতারকচক্রটি ফেসবুকে এনএসআই-এ চাকরির ভুয়া বিজ্ঞাপন দিয়ে, নিজেদের এনএসআই সদস্য পরিচয় দিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বেকার তরুণ-তরুণীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত। তাদের এনএসআই হিসেবে প্রশিক্ষণ দিয়ে ভুয়া আইডি কার্ড ও নিয়োগপত্র দিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় পোস্টিং ও বদলির অর্ডার দিত। তারপর চক্রটি নিজেদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিবর্তন করে নিত।

তিনি আরও জানান, অভিযানে প্রশিক্ষণ মডিউল বই, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ইলেকট্রিক শকিং ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে। 

গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

পলাশ/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ১১:২০ এএম
স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

নাটোরের লালপুরে স্কুলছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় সাব্বির নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে আরও ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

সোমবার (১৩ মে) দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন। 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান জানান, ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর দুই মেয়েকে বাড়িতে রেখে বাবা-মা রাজশাহীতে যান। রাতে সাব্বির দূরদূরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে।

ওই ঘটনায় ভিকটিমের বাবা সাদেকুল আলম বাদী হয়ে পরের দিন লালপুর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করে।

তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে বিচারক এই রায় দেন।

কামাল মৃধা/ইসরাত চৈতী/অমিয়/    

কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে শিক্ষিকাকে বিয়ে, যুবক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ০৬:২১ পিএম
কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে শিক্ষিকাকে বিয়ে, যুবক গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার নাজির হোসেন। ছবি : খবরের কাগজ

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে স্কুলশিক্ষিকাকে বিয়ে করে প্রতারণা ও ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রবিবার (১২ মে) সন্ধ্যায় তানোর থানা মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার নাজির হোসেন (৩৭) উপজেলার কলমা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে ওই শিক্ষিকাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন। পরে প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে রবিবার দুপুরে তানোর থানায় মামলা দায়ের করেন ওই শিক্ষিকা।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তানোর উপজেলার মালশিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকার সঙ্গে এক বছর আগে ফেসবুকে পরিচয় হয় নাজির হোসেনের। তিনি নিজেকে খুলনা মোংলাবন্দর কাস্টসম অফিসার ও অবিবাহিত হিসেবে পরিচয় দেন। ওই স্কুলশিক্ষিকা ডিভোর্সপ্রাপ্ত হওয়াও তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন সময় লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় নাজির। সর্বশেষ ওই শিক্ষিকার কাছ থেকে জমি ও পুকুর এবং মোটরসাইকেল কেনার নামে গত ৩ মার্চ তানোর ভূমি অফিসের সামনে ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। বিভিন্ন কৌশলে সব মিলে প্রায় ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে নাজির।

ভুক্তভোগী ওই স্কুলশিক্ষিকা বলেন, ‘গত ২০ এপ্রিল কাজি অফিসে গিয়ে সরল বিশ্বাসে নাজিরকে বিয়ে করি। তার কথায় বিয়ের দিনই আমার বাবার বাড়িতে একা চলে আসি। কিন্তু ২৫ এপ্রিল নাজির ডাকযোগে আমাকে স্কুলে ও বাবার বাড়ির ঠিকানায় তালাকের চিঠি পাঠান।’

তিনি আরও বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানতে পারি নাজির আগেও দুটি বিয়ে করেছেন। এলাকায় সে প্রতারক বলে পরিচিত। সবকিছু জানার পর ১৮ লাখ টাকা চাইলে নাজির আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরে বাধ্য হয়ে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি।’

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, ‘নাজির হোসেন ওই স্কুলশিক্ষিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিভিন্ন সময় তার কাছ থেকে লাখ লাখ হাতিয়ে নেয়। থানায় মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এনায়েত করিম/সালমান/

চাকরির প্রলোভনে ভারতে নিয়ে হাতিয়ে নিত কিডনি, গ্রেপ্তার ৩

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ০১:৪০ পিএম
চাকরির প্রলোভনে ভারতে নিয়ে হাতিয়ে নিত কিডনি, গ্রেপ্তার ৩
গ্রেপ্তার তিনজন। ছবি: সংগৃহীত

দরিদ্র মানুষকে চাকরির প্রলোভনে ভারতে নিয়ে টাকার লোভসহ নানা কৌশলে হাতিয়ে নিত কিডনি। চক্রটি এখন পর্যন্ত দেশ থেকে ১০জন ব্যক্তিকে ভারতে নিয়ে তাদের কিডনি হাতিয়ে নিয়েছে।

সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি থানায় চক্রটির বিরুদ্ধে রবিন নামে এক ভুক্তভোগী মামলা করেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ধানমন্ডি থানা পুলিশ এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।

গত ১০ ও ১১ মে ধানমন্ডি ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে থেকে ও বাগেরহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, মো.রাজু হাওলাদার (৩২), শাহেদ উদ্দীন (২২) ও মো.আতাহার হোসেন বাপ্পী (২৮)। 

এ ঘটনায় পলাতক রয়েছেন মো. মাছুম (২৭), শাহীন (৩৫) ও সাগর ওরেফ মোস্তফাসহ (৩৭) ১০-১২ জন।

ধানমন্ডি থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র দেশের দরিদ্র মানুষকে ভালো চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে ভারতে নিয়ে নানা কৌশলে তাদের কিডনি হাতিয়ে নিত। ভুক্তভোগী রবিনকে ভারতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রথমে দিল্লির ফরিদাবাদ এলাকায় নেওয়া হয়। পরে তাকে নানা কৌশলে কিডনি বিক্রির জন্য রাজি করায়। চুক্তি অনুযায়ী চক্রটি তাকে ছয় লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলে দেয় তিন লাখ টাকা।

রবিবার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ মহিদ উদ্দিন।

মহিদ উদ্দিন বলেন, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের কোনো এক তারিখে মিরপুর-১০নং শাহ আলী মার্কেটের পেছনে চায়ের দোকানে রবিন তার এক বন্ধুর সঙ্গে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি সংসারের অভাব অনটন নিয়ে কথাবার্তা বলছিলেন। এই কথাবার্তা চলাকালে পাশে বসা অভিযুক্ত পলাতক আসামি মাছুমও চা পান করছিলেন। এসব কথাবার্তা শুনে মাছুম নিজ থেকেই ভিকটিমকে বলেন, ভারতে তার ব্যবসা আছে এবং ওই প্রতিষ্ঠানে সে রবিনকে চাকরি দিতে পারবে। একপর্যায়ে মাছুমের সঙ্গে মোবাইল নম্বর আদান-প্রদান করেন রবিন। এরপর মাছুমের সঙ্গে নিয়মিত কথা হতো রবিনের। একপর্যায়ে ভারতে গিয়ে চাকরির বিষয়ে রাজি হন রবিন।

তিনি বলেন, পরবর্তী সময় মাছুম ভিকটিম রবিনকে বলেন, ভারতে তার প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য যেতে হলে ডাক্তারি কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে ভিকটিমকে নিয়ে যায় মাছুম। সেখানে ভিকটিমের সঙ্গে গ্রেপ্তার আসামি মো. রাজু হাওলাদারের পরিচয় হয়। পরে আসামিরা ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তার পাসপোর্ট নিয়ে নেয় ভারতের ভিসার জন্য।

ভিসা পাওয়ার পর ভিকটিমকে মাছুম ও মো. রাজু হাওলাদার গ্রেপ্তার আসামি শাহেদ উদ্দিন (২২) ও মো. আতাহার হোসেন বাপ্পীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। তারা একে অপরের ব্যবসায়িক পার্টনার। বাংলাদেশ ও ভারতে যৌথভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে বলে ভিকটিমকে জানায় আসামিরা। 

পরবর্তী সময় ভিকটিমকে ভারতের দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে রিসিভ করে পলাতক আসামি শাহীন (৩৫) ও সাগর। তারা ভিকটিমের পাসপোর্ট নিয়ে নেয়। পরে দিল্লি থেকে ভিকটিমকে ফরিদাবাদ নামে একটি এলাকায় রাখা হয়। 

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে অর্থের প্রলোভন ও বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে গত ৪ মার্চ ভারতের গুজরাট কিডনি অ্যান্ড স্পেশালাইজড হসপিটালে অস্ত্রোপরের মাধ্যমে ভিকটিমের একটি কিডনি নেওয়া হয়। 

হাসপাতালে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন মাধ্যমে ভিকটিম জানতে পারেন তার কিডনি আসামিরা দালাল চক্রের কাছে প্রায় ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছে। এক পর্যায়ে দালাল চক্র ভিকটিমকে কিছু টাকা দেওয়ার কথা বলে। বাংলাদেশে অবস্থান করা চক্রের অন্য সদস্যরা ভিকটিমের স্ত্রী ইশরাত জাহানের বিকাশ নম্বরে তিন লাখ টাকা দেয়। দেশে ফিরে ভিকটিম বুঝতে পারেন বড় দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে তিনি কিডনি হারিয়েছেন। 

এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে এ পর্যন্ত আমরা জানতে পেরেছি চক্রটি এখন পর্যন্ত ভারতে নিয়ে ১০ জনের কিডনি হাতিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া তাদের পাইপলাইনে আরও পাঁচ থেকে ছয়জন আছে বলে জানতে পেরেছি।