রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার । খবরের কাগজ
ঢাকা ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার

প্রকাশ: ০২ মে ২০২৪, ০৯:১০ পিএম
রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। ছবি : খবরের কাগজ

বহুমুখী প্রতারণার অভিযোগে অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছেন ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। গত বুধবার গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার মিরপুর মডেল থানার মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জাল মৃত্যু সনদ তৈরির অভিযোগে করা মামলায় তার বিরুদ্ধে এই রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন।

মিরপুর মডেল থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা ও পুলিশের উপপরিদর্শক জালাল উদ্দীন বৃহস্পতিবার (২ মে) এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল হোসেন গতকাল মিল্টনকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সাত দিন রিমান্ডের আবেদন করেন। তবে তার আইনজীবীরা রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত মিল্টনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারের পরই তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি পুলিশ। তবে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের একাধিক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি মিল্টন। তার পেছনে কারা ত্রাতা হয়ে কাজ করেছেন তাদেরও নাম বলেননি তিনি। তার টাকার হিসাবেও রয়েছে যথেষ্ট গরমিল। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে মিল্টন সমাদ্দারের বিষয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি জানান, পুলিশ মিল্টনের কাছে জানতে চেয়েছে- তার পাঁচটি ফেসবুক পেজে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের ১৬টি নম্বর দেওয়া ছিল। এ ছাড়া আরও তিনটি বেসরকারি ব্যাংকে চলতি হিসাব খোলা ছিল। সেসব অ্যাকাউন্টে দেশে এবং বিদেশ থেকে যে মোটা অঙ্কের টাকা আসত, সেই টাকা তিনি কোথায় ব্যয় করেছেন? এর উত্তরে মিল্টন জানিয়েছেন, সাভারে তার আশ্রম ও মিরপুরে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ চালাতে তিনি ওই টাকা ব্যয় করেছেন। এরপর ডিবির জানতে চায়, সেখানে যতজনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, সেই হিসাবে বেশি টাকা খরচ হওয়ার কথা নয়। তাহলে বাকি টাকা কোথায়? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

তবে ডিবি পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে মিল্টন এ তার পরিবারের একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছে। সেসব ব্যাংকের লেনদেনের নথি সংগ্রহ করছে পুলিশ। হারুন অর রশীদ বলেন, ‘লাশ দাফনের বিষয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। তার এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আরও যারা জড়িত রয়েছেন, তাদের ধরতে ডিবি পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশের অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে অনেকেই গা-ঢাকা দিয়েছেন।’

ডিবি প্রধান জানান, মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তিনটি মামলা করা হয়েছে। মামলাগুলোতে জাল মৃত্যু সনদ তৈরি, আশ্রমের টর্চার সেলে মারধর করা ও মানব পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। রিমান্ডে তাকে এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

তিনি আরও জানান, রাতের আঁধারে মিল্টন লাশ দাফন করতেন। লাশ দাফনের ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের সনদ নিত না, নিজেই লিখে সই করত। সিলসহ সেই কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। মিল্টনের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না, জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘মিল্টনকে রিমান্ডে আনার পর তার স্ত্রীকেও ডাকা হবে। তবে কোনো ভুক্তভোগী যদি মামলা করেন, তাহলে তার স্ত্রীকেও আমরা গ্রেপ্তার করব।’

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট ডিবির এক কর্মকর্তা জানান, মিল্টন সমাদ্দারের নানা বিষয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরীণভাবে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তে মিল্টনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি টিম সাভারের কমলাপুর এলাকার বাহেরটেকে মিল্টনের আরেকটি আশ্রমে যায়। সেখানকার এলাকাবাসীও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করছেন। এসব বিবেচনায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিবি)। এ ছাড়াও তার লাঠিয়াল বাহিনীর একাধিক সদস্যের নাম পাওয়া গেছে। তাদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে পুলিশ।

 

 

বসুন্ধরা সিটির আতঙ্ক, আইফোন চুরির অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
বসুন্ধরা সিটির আতঙ্ক, আইফোন চুরির অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
আইফোন চুরির অভিযোগে মো. রাসেল প্রকাশ সাগর। ছবি : সংগৃহীত

আইফোন চুরির অভিযোগে মো. রাসেল প্রকাশ সাগর (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বসুন্ধরা সিটির শপিংমলের বেজমেন্টের একটি দোকান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার রাসেল দিনভর বসুন্ধরা সিটি শপিংমলে মোবাইল ফোনের দোকানে ক্রেতা সেজে ঢোকে, এরপর কৌশলে আইফোন চুরি করে পালিয়ে যায়। 

শুক্রবার (১৭ মে) তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসীন এসব তথ্য জানান।

বসুন্ধরা শপিংমলের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা জানান, ‘সাগর রীতিমতো আতঙ্কে পরিণত হয়েছিল। সে শুধু আইফোন চুরি করে। পরে তা বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করে দেয়।’ 

ওসি মহসীন বলেন, ‘তার মূল টার্গেট বসুন্ধরা শপিংমলের মোবাইল দোকানগুলো। এসব দোকানে প্রচুর ফোন থাকে, আবার ভিড়ও থাকে। এমন ভিড়ে ক্রেতা সেজে দোকানে ঢোকে রাসেল। এরপর অন্য ক্রেতার চাপে সেলসম্যান একটু অন্য মনস্ক হলেই আইফোন নিয়ে পালিয়ে যায় সে। শুক্রবার ক্রেতা সেজে অ্যাপল গ্যাজেট নামে একটি দোকানে যায় রাসেল। পরে কৌশলে আইফোন নিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তাকে দেখে ফেলেন সেলসম্যান। পরে তাকে আটক করা হয়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘গত কিছুদিন ধরে বসুন্ধরা শপিংমলের বিভিন্ন ফোনের দোকানে চুরি হচ্ছিল। ক্রেতা সেজে এসব দোকান থেকে আইফোন চুরির ঘটনা ঘটে। তাই রাসেল বসুন্ধরা সিটির আতঙ্কে পরিণত হয়েছিল। অন্তত চারটি দোকানে ক্রেতা সেজে চুরির প্রমাণ মিলেছে রাসেলের বিরুদ্ধে।’

খাজা/এমএ/

৯৭৭ সেট টপ বক্সসহ ৪ চোরাকারবারি গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ০৮:২৮ পিএম
৯৭৭ সেট টপ বক্সসহ ৪ চোরাকারবারি গ্রেপ্তার
ছবি : সংগৃহীত

রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎকারী চার চোরাকারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৪। গতকাল বুধবার (১৫ মে) রাজধানীর কাফরুল ও নিউমার্কেট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৯৭৭টি অ্যান্ড্রয়েড সেট টপ বক্স জব্দ করা হয়। 

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. রফিকুল ইসলাম (৪৫), মো. আনোয়ার হোসেন (২৭), মো.আরিফুল ইসলাম (২৬) ও আলামীন আহম্মেদ (২৩)।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) র‌্যাব-৪ এর (মিডিয়া) শাখার সহকারী পরিচালক এএসপি জিয়াউর রহমান চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, রাজধানীর কাফরুল ও নিউমার্কেট এলাকায় একটি সক্রিয় চোরাকারবারি দল বেশ কিছুদিন ধরে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৯৭৭টি অ্যান্ড্রয়েড সেট টপ বক্স অবৈধভাবে বিক্রি করে আসছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার বিকেলে র‌্যাব-৪ এর একটি দল ও বিটিআরসি কাফরুল ও নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। ওই সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সর্বমোট ৯৭৭টি চোরাই অবৈধ অ্যান্ড্রয়েড সেট টপ বক্স জব্দ করা হয়।

তিনি আরও জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে বিটিআরসির লাইসেন্স ও আমদানি নিষিদ্ধ বিভিন্ন বেতার যন্ত্রসামগ্রী তথা সেট টপ বক্স বিক্রি করে আসছিল। তারা অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল। জব্দ হওয়া অ্যান্ড্রয়েড সেট টপ বক্সের আনুমানিক বাজার মূল্য ৩০ লাখ টাকা। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে।

মাদক কারবারি লাবনীসহ গ্রেপ্তার ৭

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ০৭:২০ পিএম
মাদক কারবারি লাবনীসহ গ্রেপ্তার ৭
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে মাদক কারবারি চক্রের হোতা লাবনী আক্তারসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৪। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার ৭৬৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এ তথ্য জানান র‍্যাব-৩-এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. শামীম। 

গ্রেপ্তাররা হলেন- লাবনী আক্তার (৩৬), তার প্রধান সহযোগী মো. আক্তার হোসেন (৩৪), মো. মনিরুল্লাহ ড্যানি (৩২), মো. মোক্তার হোসেন (৩৬), মো. আল আমিন মোহসিন (৩৯), মো. মিলন মিয়া (৪৫) ও রুপা বেগম (২৮)।

এএসপি মো. শামীম জানান, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার ৭৬৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, লাবনী আক্তার মাদক কারবারি চক্রের মূল হোতা। দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি অভিনব পদ্ধতিতে অবৈধ ইয়াবা ট্যাবলেট উখিয়া সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে কিনে নিয়ে আসে। এরপর এসব মাদক রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছে। তারা যাত্রী সেজে ও পণ্যবাহী গাড়িতে মালামাল পরিবহনের আড়ালে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাদক কেনাবেচা করত। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান এএসপি।

নকল ওষুধ তৈরির অভিযোগে গ্রেপ্তার ২

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০৬:২৮ পিএম
নকল ওষুধ তৈরির অভিযোগে গ্রেপ্তার ২
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ তৈরির সরঞ্জামসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০। গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তরা হলেন মো. আলী আকবর (২০) ও মো. দুর্জয় (২০)।

বুধবার (১৫ মে) র‍্যাব-১০-এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ও সহকারী পুলিশ সুপার এম জে সোহেল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ২ হাজার ৩৫০ পিস ভেজাল ওষুধ এবং ভেজাল ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহৃত ২৫টি পাঞ্চস্টিক, ৮০ কেজি ট্যাবলেট ও পাউডার জব্দ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ভেজাল ওষুধ প্রস্তুতকারী চক্রের সদস্য। তারা বেশ কিছুদিন ধরে মেসার্স বোটানিক ল্যাবরেটরিজ (ইউনানি) ওষুধ কোম্পানির নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরি করে দেশের নানা এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল। ফলে কোম্পানির সুনাম বিনষ্ট ও ক্ষতি সাধন করে আসছে। তা ছাড়া তাদের উৎপাদিত নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রির ফলে জনসাধারণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

‘ইন্স্যুরেন্সে চাকরির আড়ালে জঙ্গি সংগঠনের কর্মী’

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০৮:৫০ পিএম
‘ইন্স্যুরেন্সে চাকরির আড়ালে জঙ্গি সংগঠনের কর্মী’

আলফা ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি গোপনে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার রিক্রুটার হিসেবে কাজ করতেন রানা শেখ ওরফে আমির হোসাইন। সদস্য সংগ্রহ করে ইতোমধ্যে তিনজনকে সংগঠনে রিক্রুট করে প্রশিক্ষণের জন্য বান্দরবানে কুকি-চিনের আস্তানায় পাঠান তিনি। এমনকি প্রশিক্ষণের খরচ বাবদ কুকি-চিনের কাছে লক্ষাধিক টাকাও পাঠান এই রানা। 

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। 

এর আগে গতকাল সোমবার (১৩ মে) রাজধানীর কল্যাণপুর ও গাবতলী এলাকা থেকে ওই জঙ্গি সংগঠনের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) লালবাগ বিভাগ। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রানা শেখ ওরফে আমির হোসাইন, মশিউর রহমান ওরফে মিলন তালুকদার ও হাবিবুর রহমান। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি স্মার্টফোন ও দুটি বাটনফোন উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব ডিভাইস থেকে তাদের প্রশিক্ষণের ভিডিও ছবি উদ্ধার করা হয়।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার মশিউর রহমান প্রথমে ইসলামিক শাষণতন্ত্র আন্দোলনের সদস্য ছিলেন। ২০০২-০৩ সালে হুজির সদস্য হিসেবে ময়মনসিংহে আব্দুর রউফের মাদ্রাসায় সামরিক ও আন আর্মড কমব্যাট বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন। ২০১৩ সালে অপরাপর হুজি নেতাদের সঙ্গে গ্রেনেডসহ ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার হয়ে সাড়ে চার বছর সাজা খাটেন। আর হাবিবুর রহমান ছিলেন সংগঠনের নতুন রিক্রুট। তিনি আলফা ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কর্মী হিসেবে আমির হোসেনের অধীনে কাজ করতেন। আমির হোসেন একই মতবাদে দীক্ষিত করে তাকে ইতোমধ্যে জঙ্গি সংগঠনে রিক্রুট করে বান্দবানে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

ডিবিপ্রধান বলেন, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি), আনসার আল ইসলাম ও জামাআতুল মুজাহিদীনের (জেএমবি) মুক্তিপ্রাপ্ত এবং পলাতক বেশ কিছু সদস্য মিলেমিশে একটি নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠীতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ গঠন করেন।

পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ধারাবাহিক তৎপরতায় সফল জঙ্গি অভিযানের কারণে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনটি সমতল এড়িয়ে পার্বত্য জেলাগুলোতে প্রশিক্ষণের জন্য সুযোগ খুঁজছিল। পার্বত্য বান্দরবান, খাগড়াছড়িতে বসবাসকারী বম সম্প্রদায়ের বিভ্রান্ত সন্ত্রাসীদের দ্বারা গঠিত কুকি-চিনদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় শারক্বীয়ার।

পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের অভিযানে এদের অনেক সদস্যকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সংগঠনটিতে ৫৩ জনের মতো সদস্য ছিলেন। এর মধ্যে ৪৯ জনই ইতোমধ্যে ধরা পড়ে গেছে। গ্রেপ্তার রানা বর্তমানে সংগঠনের প্রধান রিক্রুটার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। সারা দেশ থেকেই তাদের সদস্য রিক্রুটের পরিকল্পনা ছিল। আমরা তাদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে হয়তো আরেকটা গ্রুপকে পাহাড়ে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হতো। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের ৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে। তাদের সঙ্গে জড়িত আর কারা আছে জানার চেষ্টা করব। জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।’