![ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : বছরের ‘৮ মাসই’ ক্লাস বন্ধ](uploads/2023/11/28/1701158075.1700285908.islami-university.jpg)
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বছরে ছুটি থাকে ১৭৪ দিন। এ ছাড়া ভর্তি পরীক্ষাকেন্দ্রিক ছুটি আরও চার দিন। এই দুই ছুটির যোগফল দাঁড়ায় প্রায় ছয় মাস (১৭৮ দিন)! এ ছাড়া জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য চলতি বছরের এপ্রিলে সপ্তাহের সোমবার অনলাইনে ক্লাস করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ বিভাগে অনলাইনে ক্লাস হয় না। ফলে সোমবারকে শিক্ষার্থীরা অঘোষিত ছুটি ধরে নেন। ছুটির সংখ্যা বাড়ে আরও ৫২ দিন। অঘোষিত এই হিসাবসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে ছুটি থাকছে ২৩০ দিন। অর্থাৎ প্রায় আট মাস! সঙ্গে রয়েছে কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ক্ষমতাবলের ৮-১০ দিনের ছুটি।
বিশ্ববিদ্যালয় আট মাস ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীরা সর্বসাকুল্যে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে চার মাস। এর মধ্যে তাদের দুই সেমিস্টার পরীক্ষা দিতে হয়। এক সেমিস্টার পরীক্ষা হতে গড়ে এক মাস সময় লাগে। ফলে দুই সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ হতে লাগে অন্তত দুই মাস। সবমিলিয়ে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক পড়াশোনার সুযোগ পায় মাত্র দুই মাস।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বছরে এতদিন ক্লাস বন্ধের ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা, গবেষণা ও জ্ঞান চর্চা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মনে করছেন তারা।
গোলাম রব্বানী নামে এক শিক্ষার্থী খবরের কাগজকে বলেন, ‘সোমবার অনলাইন ক্লাসের দিনটি যেন অঘোষিত বন্ধের দিনে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ বিভাগেই ক্লাস হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এমন কোনো সিদ্ধান্ত যেন না নেয়, যা আমাদের সুন্দর জীবন গঠনে প্রতিবন্ধকতা তৈরির করে।’
এ বিষয়ে আইন বিভাগের প্রফেসর ড. শাহজাহান মণ্ডল খবরের কাগজকে বলেন, উৎপাদনশীলতার সবচেয়ে বড় জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়। এতদিন ক্লাস বন্ধ থাকায় আমাদের সাংবিধানিক শিক্ষার অধিকার ব্যাহত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘সোমবার অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার দিনকে অঘোষিত ছুটি বলা যাবে না। তবে এটি সীমিত আকারে ছুটির মতো হয়ে গেছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলেছি, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্দোলন, অবরোধে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে। সুতরাং সোমবার সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা চালু করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিলে এটি আবার চালু হবে।’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যে ছুটি আছে সেখানে হাত দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে অনলাইনে ক্লাসের বিষয়টি অঘোষিত ছুটি কি না, এটা দেখব। এ ছাড়া সোমবার সশরীরে ফের ক্লাস চালুর ব্যাপারে শিক্ষক, ডিনদের নিয়ে আলোচনায় বসব।