![ঘনজ্যামিতিতে প্রশ্নের উত্তরে একক লিখবে](uploads/2024/02/12/1707719243.a3.jpg)
উচ্চতর গণিত
এসএসসি পরীক্ষার্থীরা শুভেচ্ছা নিও। নিশ্চয় উচ্চতর গণিতে তোমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। সিলেবাস ও মানবণ্টন অনুযায়ী উচ্চতর গণিতে চর্চা যদি সঠিক হয়, তবে তোমাদের প্রত্যাশা পূরণ হবেই। উচ্চতর গণিত বহুনির্বাচনি প্রশ্নে মোট ২৫ প্রশ্ন থাকবে। সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সব অধ্যায় থেকে এ প্রশ্নগুলো থাকবে। প্রতিটি বহুনির্বাচনি প্রশ্নের নম্বর থাকবে ১। বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় সময়ের দিকে খেয়াল রাখবে।
সহজ স্তরের MCQ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তুমি ১০ থেকে ৪০ সেকেন্ড সময় ও সৃজনশীল প্রশ্নে ১ থেকে ৪ মিনিট সময় ব্যয় করে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবে।
মধ্যম স্তরের MCQ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তুমি ৪০ থেকে ৬০ সেকেন্ড সময় ও সৃজনশীল প্রশ্নে ৫ থেকে ১০ মিনিট এবং
কঠিন স্তরের MCQ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তুমি ৬০ থেকে ৯০ সেকেন্ড সময় ও সৃজনশীল প্রশ্নে ১১ থেকে ১৫ মিনিট সময় ব্যয় করে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবে।
উচ্চতর গণিতে সৃজনশীল অংশে তোমাদের মোট ৮টি প্রশ্ন থেকে উত্তর করতে হবে ৫টি প্রশ্নের। প্রতিটি সৃজনশীল প্রশ্নের নম্বর ১০। পরীক্ষায় ৫টি প্রশ্নের জন্য নম্বর থাকবে ৫০।
পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতে সৃজনশীল প্রশ্ন ৩টি বিভাগ থেকে ৫টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। তা হলো-
‘ক’ বিভাগ (বীজগণিত) থেকে ৩টি,
‘খ’ বিভাগ (জ্যামিতি, স্থানাঙ্ক জ্যামিতি, ঘন জ্যামিতি ও ভেক্টর) থেকে ৩টি এবং
‘গ’ বিভাগ (ত্রিকোণমিতি ও সম্ভাবনা) থেকে ২টি প্রশ্ন থাকবে।
৮টি সৃজনশীল প্রশ্নের মধ্যে প্রত্যেক বিভাগ থেকে ন্যূনতম একটি করে মোট ৫টির উত্তর দিতে হবে।
উচ্চতর গণিতে যে অঙ্ক তুমি সবচেয়ে ভালো পারো সে অঙ্কের উত্তর শুরুতে দেবে। কোনো প্রশ্নের উত্তর অসমাপ্ত রাখবে না। সুন্দর ও স্পষ্ট করে লিখবে। মাঝখানের পাতা খালি রাখবে না। খাতা সাইনপেন দিয়ে রঙিন করবে না।
মনে রাখবে সৃজনশীল প্রশ্ন বইয়ের কোনো প্রশ্ন থেকে হুবহু থাকবে না, তেমনি প্রশ্নের ধরনও বইয়ের বাইরে থেকে হবে না। প্রশ্নের উত্তর তোমাকে উদ্দীপকের আলোকেই করতে হবে। পাঠ্যবইয়ের প্রতিটি সূত্র, উদাহরণ, কাজ ও অনুশীলনীর অঙ্ক খুব ভালো করে আয়ত্ত করতে হবে। ফলে উদ্দীপক যে ধরনেরই হোক না কেন তুমি উত্তর করতে পারবে।
কোনো প্রশ্নের উত্তর যদি তুমি তা শেষ করতে না পারো অথবা সময় না থাকে তবে ওই প্রশ্নটি কেটে দেবে না। কারণ, একটি প্রশ্নের কয়েকটি ধাপ থাকে এবং প্রতিটি ধাপের জন্য ১ নম্বর করে বরাদ্দ থাকে। তুমি ২টি ধাপ করলে ২ নম্বর পাবে, তিনটি ধাপ করলে ৩ নম্বর পাবে। আর চারটি ধাপ সম্পূর্ণ করলে অর্থাৎ পুরো প্রশ্নটি সম্পূর্ণ করলে ৪ নম্বর পাবে।
‘ক’ বিভাগের প্রশ্ন নম্বর ১, ২ ও ৩ আসবে বীজগণিত অংশের প্রথম অধ্যায়ের সেট ও ফাংশন, দ্বিতীয় অধ্যায়ের বীজগণিতীয় রাশি, পঞ্চম অধ্যায়ের সমীকরণ, ষষ্ঠ অধ্যায়ের অসমতা, সপ্তম অধ্যায়ের অসীম ধারা, নবম অধ্যায়ের সূচকীয় ও লগারিদমীয় ফাংশন ও দশম অধ্যায়ের দ্বিপদী বিস্তৃতি থেকে।
সেট ও ফাংশনের (অনুশীলনী ১.১ ও ১.২) সমতুল সেট, সেট প্রক্রিয়ার ধর্মাবলির যৌক্তিক প্রমাণ, অন্বয়, ফাংশন, ফাংশনের ডোমেন ও রেঞ্জ, এক-এক ফাংশন, সার্বিক ফাংশন ও এক-এক সার্বিক ফাংশন, বিপরীত ফাংশন বেশি করে অনুশীলন করবে।
বীজগণিতীয় রাশির (অনুশীলনী ২) ভাগশেষ উপপাদ্য ও উৎপাদক উপপাদ্যের ব্যাখ্যা, বহুপদীর উৎপাদকে বিশ্লেষণ, সমমাত্রিক রাশি, প্রতিসম রাশি এবং চত্র-ক্রমিক রাশির উৎপাদকে বিশ্লেষণ এবং মূলদ ভগ্নাংশকে আংশিক ভগ্নাংশে প্রকাশ বেশি করে অনুশীলন করবে।
অসীম ধারার (অনুশীলনী ৭) উদাহরণ-২, ৩ ও ৪ এবং অনুশীলনীর-১২ ও ১৫ নম্বর প্রশ্ন বেশি করে অনুশীলন করবে।
সূচকীয় ও লগারিদমীয় ফাংশন (অনুশীলনী ৯.১ ও ৯.২) এ ভিত্তি, ঘাত এবং লগের ক্ষেত্রে সংখ্যার লগ ও ভিত্তি যেন একই হয়ে না যায় সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
দ্বিপদী বিস্তৃতি (অনুশীলনী ১০.১ ও ১০.২)-এ পৃষ্ঠা ২২৮ এর উদাহরণ-২, ৪ এবং পৃষ্ঠা ২৩১-এর উদাহরণ-৬, ৭, ১০, ১০, ১২ ও ১৫ নম্বর প্রশ্ন একটু বেশি করে অনুশীলন করবে।
‘খ’ বিভাগের প্রশ্ন নম্বর ৪, ৫ ও ৬ আসবে জ্যামিতি অংশের তৃতীয় ও চতুর্থ অধ্যায়ের জ্যামিতি ও জ্যামিতি অঙ্কন, একাদশ অধ্যায়ের স্থানাঙ্ক জ্যামিতি, দ্বাদশ অধ্যায়ের সমতলীয় ভেক্টর ও ত্রয়োদশ অধ্যায়ের ঘন জ্যামিতি থেকে।
জ্যামিতি বেশি নম্বর পেতে যা খেয়াল রাখবে-
উপপাদ্য ও সম্পাদ্যের সাধারণ নির্বচন না লিখলেও কোনো ক্ষতি নেই।
মনে রাখবে উপপাদ্যের বিশেষ নির্বচনের পরে চিত্র অঙ্কন করবে না। চিত্রের পর বিশেষ নির্বচন লিখবে।
জ্যামিতির উপপাদ্যের বিকৃত চিত্রাঙ্কন করলে নম্বর পাবে না।
সম্পাদ্যের চিত্র যেন সঠিক হয় সে দিকে খেয়াল রাখবে। অঙ্কনের প্রয়োজনীয় চিহ্ন না থাকলে নম্বর পাবে না।
জ্যামিতি অনুশীলন করার সময় খাতায় সঠিক চিত্র এঁকে বারবার অনুশীলন করবে।
সম্পাদ্য বা উপপাদ্য একই পৃষ্ঠায় সম্পূর্ণ লেখা হলে ভালো। তা না হলে বাম পৃষ্ঠায় উত্তর শুরু করে ডান পৃষ্ঠায় উত্তর লেখা শেষ করবে।
স্থানাঙ্ক জ্যামিতির ক্ষেত্রে ত্রিভুজের ক্ষেত্রফলে নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বিন্দুগুলোর স্থানাঙ্ক অবশ্যই ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে নিয়েছ কি না, তা খেয়াল রাখবে।
ঘনজ্যামিতিতে প্রশ্নের উত্তরে সঠিক ‘একক’, আসন্ন উত্তরে ‘প্রায়’ লিখবে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সাইড নোট দেবে।
‘গ’ বিভাগের ৭ এবং ৮ নম্বর প্রশ্ন আসবে ত্রিকোণমিতি অংশের অষ্টম অধ্যায়ের ত্রিকোণমিতি ও চতুর্দশ অধ্যায়ের সম্ভাবনা থেকে।
ত্রিকোণমিতির প্রশ্নের সমাধান সহজে করার জন্য তোমাকে সূত্রের সঠিক প্রয়োগ এবং বিভিন্ন কোণের অনুপাতের মানগুলোর সঠিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে মনোযোগী হতে হবে।
সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ছক্কা, মুদ্রা, বল সংক্রন্ত সমস্যা ও উদাহরণ ৯ ভালো করে অনুশীলন করবে।
যা মনে রাখবে-
বাসা থেকে রওনা হওয়ার আগে কলম, পেন্সিল, ক্যালকুলেটর, প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড ইত্যাদি নিয়েছো কি না, তা চেক করে পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রের দিকে রওনা হবে।
পরীক্ষার প্রথম দিন প্রায় এক ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে গিয়ে তোমার সঠিক আসন খুঁজে আসন গ্রহণ করতে হবে।
লেখক:
সিনিয়র শিক্ষক ও মাস্টার ট্রেইনার
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
জাহ্নবী