
প্রবন্ধ : ভাব ও কাজ
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন: ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে লেখক ভাবের বাঁশিবাদককে নিঃস্বার্থ হতে বলেছেন কেন?
উত্তর: ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে লেখক ভাবের বাঁশিবাদককে নিঃস্বার্থ হতে বলেছেন। কারণ তার আদর্শ অনুসরণ করে যেন অন্যরা ভাব ও কাজের সমন্বয় সাধনে তৎপর হয়।
একটি কাজের জন্য ভাবের প্রয়োজন। লেখক ভাবের বাঁশিবাদককেই নিঃস্বার্থ ও পরোপকারী গুণসম্পন্ন হতে বলেছেন। কারণ তার আদর্শ অনুসরণ করে যেন অন্যরা ভাব ও কাজের সমন্বয় সাধনে তৎপর হতে পারে। তার মতে কাজহীন ভাবের কোনো মূল্য নেই। যিনি ভাবের বাঁশি বাজাবেন তিনি তা নিজের স্বার্থে বাজাবেন না। তিনি পরের জন্য ত্যাগ স্বীকার করবেন। মানবকল্যাণে তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও আত্মনিবেদন হবে ঋষিতুল্য, যাতে অন্যরা তাকে অনুসরণ করে।
প্রশ্ন: ‘ভাবকে জাগিয়ে তুলবেন মানুষের কল্যাণের জন্য’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘ভাবকে জাগিয়ে তুলবেন মানুষের কল্যাণের জন্য’ কথাটির মধ্য দিয়ে মানবকল্যাণে মানুষকে জাগিয়ে তোলার কথা বোঝানো হয়েছে।
‘ভাব’ মানুষের জাগরণের উপকরণ। মানুষের মনকে জাগিয়ে তুলতে ভাবের প্রয়োজন। আর সেই মানুষকে তার নিজের, পরিবারের, রাষ্ট্রের ও জাতির জন্য যথাযথভাবে গড়ে তুলতে হলে তাকে কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হয়। শুধু ভাব দিয়ে কখনো কারও উন্নতি হয় না। মানুষের পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্তির মন্ত্রে দীক্ষিত করতে হয়, তাদের ভাব দিয়ে জাগিয়ে কর্ম দিয়ে এগিয়ে নিতে হয়। সেক্ষেত্রে কেউ যদি আত্মস্বার্থে সাধারণ মানুষকে জাগাতে চায় তাহলে তারা হয়তো জাগে, কিন্তু তাতে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কল্যাণ হবে না। এ কারণে মানুষকে জাগাতে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে সমষ্টির স্বার্থের জন্য প্রশ্নোক্ত বাক্যটিতে এ বিষয়টিই প্রকাশ করা হয়েছে।
আরো পড়ুন : ভাব ও কাজ প্রবন্ধের ২টি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর, ১ম পর্ব
প্রশ্ন: ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে লেখক তরুণদের দেশের প্রাণশক্তি বলেছেন কেন?
উত্তর: যুবকরা আমাদের আশা-ভরসাস্থল বলে লেখক তাদের এ দেশের প্রাণশক্তি বলেছেন।
যুগে যুগে তরুণরাই বিভিন্ন অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। ত্যাগ স্বীকার করেছে, অধিকার আদায় করেছে। এ কারণে একটি দেশে মুক্তি, উন্নতি ও জাতির কল্যাণ সাধনে তরুণরাই প্রধান ভরসাস্থল। তাদের ঐক্যবদ্ধ কর্মপ্রচেষ্টার ফলেই দেশের অগ্রগতি সাধিত হয়। তারাই মানুষকে অধিকার সচেতন করে তোলে স্বাধীনতার জন্য, শোষণ-শাসন থেকে মুক্তির জন্য। তারাই সত্যিকার দেশকর্মী। লেখক তাই তরুণদেরই যথাযথ কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নতি সাধনের কথা বলেছেন। এ কারণেই তিনি তাদের দেশের প্রাণশক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
প্রশ্ন: ‘সামনের দেয়ালকে ভাঙতে হলে একেবারে তার ভিত্তিমূলে শাবল মারতে হবে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘সামনের দেয়ালকে ভাঙতে হলে একেবারে তার ভিত্তিমূলে শাবল মারতে হবে’ বলতে মানুষের মুক্তি ও উন্নতির পথের অন্তরায়গুলো দূর করে অন্যায়ের ভিত্তিমূলে প্রতিবাদের শাবল মারার কথা বোঝানো হয়েছে।
সাধারণভাবে আমরা দেখি যে, ভালো কাজের মধ্যে যেমন সমর্থন পাওয়া যায়, তেমনি বিপরীত প্রতিক্রিয়া ও কার্যক্রমও লক্ষ করা যায়। সমাজের এক শ্রেণির মানুষ চেষ্টা করে যাতে কাজটা না করা যায়। আমরা লোকভয়, লোকলজ্জা এবং নানা সমস্যা সংকট বিবেচনা করে পিছপা হই। প্রকৃতপক্ষে তা করা উচিত নয়। আমাদের উচিত সর্বশক্তি নিয়ে তাদের হীনশক্তির মূলে আঘাত করে প্রতিবাদ করে নিজেদের অধিকার, স্বাধীনতা এবং যাবতীয় প্রাপ্য বুঝে নেওয়া। তাতেই আমাদের সার্বিক কল্যাণ সাধিত হতে পারে।
লেখক : সিনিয়র শিক্ষক, বাংলা
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা
কবীর