বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সুখী, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশ হিসেবে বিশ্বদরবারে সম্মান অর্জন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলছে।
বুধবার (২৮ মার্চ) জেনেভায় বিশ্ব মেধাস্বত্ব সম্পদ সংস্থার (WIPO) সদর দপ্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মিশন আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্পিকার।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দারিদ্র্য হার হ্রাস, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন, বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সর্বক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করে ২০২১ সালের মধ্যে প্রতিশ্রুত ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন বাস্তবে রূপ দিয়েছে।
স্পিকার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা অভিকল্প বাস্তবায়নে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
সংবর্ধনা সভায় উপস্থিত অতিথিদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান স্পিকার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে জাতিসংঘের জেনেভা কার্যালয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি সুফিউর রহমান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সদীপ্ত পদচারণা ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের ঈর্ষণীয় সাফল্য সম্বন্ধে সবাইকে অবহিত করেন। তিনি বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব ও পরিবেশ-দায়িত্বশীল ও জ্বালানি সাশ্রয়ী উৎপাদন ব্যবস্থা ও অর্থনীতির বিষয়টির ওপর আলোকপাত করেন। বহুপাক্ষিক কূটনীতি এবং শান্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশের প্রয়াস ও অবদান তুলে ধরেন।
মানবিক কারণে ১.১ মিলিয়ন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে সহায়তা করতে তিনি বিশ্বসম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করেন।
মিশন আয়োজিত দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার শুরুতে মিশন প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান।
তারপর মিশনের কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ কম্যুনিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে নিরবচ্ছিন্ন গণতন্ত্র চর্চা এবং অর্থনৈতিক অভিযাত্রার সুফল পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশের জনগণ। অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রযাত্রা বাস্তবায়নে দেশকে বহুমুখী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ভঙ্গুরতা মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা।
এ সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং দেশ ও জনগণের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
সংবর্ধনা সভায় সংসদের চিফ হুইপ, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, সরকারি কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা যোগ দেন।
প্রায় ৪০০ অতিথি মনোমুগ্ধকর এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে পাঁচজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ফুলের তোড়া দিয়ে সম্মান জানানো হয়।
ইসরাত চৈতী/অমিয়/