ঢাকা ১৬ বৈশাখ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে নববর্ষ উদযাপন

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৫ পিএম
আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২২ পিএম
অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে নববর্ষ উদযাপন
কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনায় বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উদযাপন করা হয়েছে।
 
রবিবার (১৪ এপ্রিল) এ উপলক্ষে হাইকমিশনের মিলনায়তনে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান।
 
এ সময় হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
 
অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনের কর্মকর্তারা পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন।
 
অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার তার বক্তব্যে বলেন, পহেলা বৈশাখ একটি সর্বজনীন লোকউৎসব হিসেবে বাঙালির অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ২০১৬ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা মানবজাতির অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া বাংলা নববর্ষ উদযাপনে নতুনমাত্রা যোগ করেছে।
 
তিনি বলেন, বহুত্ববাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে প্রচারের মাধ্যমে মঙ্গল শোভাযাত্রা একটি আবহ গড়ে তুলতে অবদান রাখে যেখানে বিভিন্ন ধর্ম ও জাতি নির্বিশেষে সকলে সহাবস্থান করতে পারে।
 
হাইকমিশনার বলেন, পহেলা বৈশাখ ধর্মীয় উগ্রবাদ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। এই উৎসব আমাদের সমাজের বৈচিত্র্যকে আলিঙ্গন করে বিভক্তির উপর ঐক্য ও সহনশীলতার জয়ের সুস্পষ্ট বার্তা পাঠায়। এই উৎসব একটি অন্তর্ভুক্তির পরিবেশ গড়ে তুলতে সাহায্য করে যেখানে বিভিন্ন মতের মানুষ ঐতিহ্য উদযাপন করতে একত্রিত হয়। এটি পরস্পর সহমর্মিতা জাগায় যা ধর্মীয় উগ্রবাদের উত্থান রোধে অপরিহার্য। বিশ্বব্যাপী পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণে বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যে স্বজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায় ও উজ্জীবিত হয়।
 
পরে মঙ্গল শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
 
অমিয়/

বিশ্বসভায় বাংলাদেশ ও বাঙালির জয়গান

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১৮ পিএম
বিশ্বসভায় বাংলাদেশ ও বাঙালির জয়গান
নিউইয়র্কের ক্যাপিটাল হিলে গভর্নর হাউসে বাংলা নববর্ষের স্বীকৃতিস্বরূপ গৃহীত হলো জে২৩৪ নম্বর রেজুলেশন। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ক্যাপিটাল হিলে স্টেট গভর্নর হাউজে ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের স্বীকৃতিস্বরূপ জে২৩৪ নম্বর রেজুলেশন গৃহীত হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) এই রেজুলেশন গৃহীত হওয়ার মধ্য দিয়ে দিনটি বিশ্বসভায় বাংলাদেশ ও বাঙালির জয়গান নতুন মাত্রায় উদ্ভাসিত হলো।

বলা যায়, বাংলা নববর্ষ উদযাপনে নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট এদিন উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল। বাংলা গান ও নাচের সঙ্গে পাঁচ সিনেটরের নাচ ও গানের ভঙ্গিমা সত্যিই বাঙালি সংস্কৃতির জন্য ছিল অভিনব। 

এর আগে বিদেশিদের মধ্যে এ ধরণের মুখরিত হয়ে ওঠার দৃশ্য দেখা যায়নি। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে সিনেটর সেপুলভেদা সবাইকে স্বাগত জানান। দুই শতাধিক বাঙালি ও আমেরিকানের অংশগ্রহণে মিলনমেলায় পরিণত হয় বাংলা নববর্ষ উদযাপন।

সিনেটর সেপুলভেদা তার বক্তব্যে নিউইয়র্ক প্রবাসী বাঙালিদের অবদান তুলে ধরে বাংলা নববর্ষকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের অন্যতম উৎসব হিসেবে চিহ্নিত করেন। 

সিনেটর ফার্নান্দেজ এবং অন্যান্য সিনেটররা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাঙালিদের পক্ষে বক্তব্য দেন এনআরবি ওয়ার্ল্ডওয়াইডের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি বিশ্বজিত সাহা,  মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ড. নজরুল ইসলাম এবং শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়। 

সবাই বিশ্বায়নের যুগে বাংলা সংস্কৃতির জয়গান করেন এবং সিনেটরদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

বিশ্ববাঙালির কাছে এই উদযাপন স্মৃতি হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন রথীন্দ্রনাথ রায়।

অনুষ্ঠানে সিনেটর ফার্নান্দেজের পৃষ্ঠপোষকতায় মধ্যাহ্নভোজ শেষে শুরু হয় সমাবেশ কক্ষ (Assembly chamber) পর্ব। সেখানে বিশ্বজিত সাহা, ড. নজরুল ইসলাম, রথীন্দ্রনাথ রায়, সংগীত পরিচালক মহিতোষ তালুকদার তাপস এবং শিল্পী লুতফুন নাহার লতার উপস্থিতিতে রেজুলেশনটি পাস হয়।

বিকেলে সিনেটকক্ষে পাস হওয়া রেজুলেশন পাঠ এবং সেপুলভেদাসহ সিনেটরদের মন্তব্য ও আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা আনন্দঘন পরিবেশ সৃজন করে। বিশেষত টাইমস স্কয়ারে নববর্ষ উদযাপন কমিটির শিল্পীরা মহিতোষ তাপসের নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলেন।

একক ফোক সংগীত পরিবেশন করেন শাহীন হোসেন। নৃত্য পরিবেশন করেন ভাষা সাহা। 

বাংলা নববর্ষ আন্তর্জাতিক বিশ্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন এটিই প্রথম।

অমিয়/

বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসে আনন্দমুখর পরিবেশে গণশুনানির আয়োজন

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০১ এএম
আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩০ এএম
বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসে আনন্দমুখর পরিবেশে গণশুনানির আয়োজন
বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসে আনন্দমুখর পরিবেশে গণশুনানি আয়োজন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) মানামার হল রুমে এক আনন্দঘন পরিবেশে গণশুনানির আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত মো. রইস হাসান সরোয়ার, এনডিসি।

গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বাহরাইনে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক এবং বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতাসহ দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান এবং এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে দূতাবাস প্রবাসীদের সমস্যাগুলো সরাসরি জানার সুযোগ পায়, যা প্রবাসীদের প্রতি দূতাবাসের সহায়তার মনোভাবকে আরও সুদৃঢ় করে।

রাষ্ট্রদূত মো. রইস হাসান সরোয়ার বলেন, ‘গণশুনানি হলো এক দুর্দান্ত সুযোগ- যেন প্রবাসীরা সরাসরি তাদের সমস্যা আমাদের কাছে তুলে ধরতে পারেন। আমি সবাইকে অনুরোধ করছি, দূতাবাসের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিতে গঠনমূলক পরামর্শ দিন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো সমস্যায় প্রবাসীরা যেন দূতাবাসের অফিসারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেন।’

রাষ্ট্রদূত বাহরাইনের আইনকানুন মেনে চলার এবং বৈধভাবে দেশটিতে অবস্থান করার জন্য সব প্রবাসীকে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আপনারা যেন বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট না করেন, সেই বিষয়েও সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’ এ ছাড়া রেমিট্যান্স প্রেরণে বৈধ চ্যানেল ব্যবহার করার প্রতি গুরুত্ব দেন তিনি।

দূতাবাসের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে গণশুনানির জন্য প্রবাসীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শতাধিক প্রবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত হন। অনুষ্ঠানে প্রবাসীরা তাদের বিভিন্ন সমস্যা রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাদের কাছে তুলে ধরেন, যার জন্য রাষ্ট্রদূত তাৎক্ষণিকভাবে বেশকিছু প্রশ্নের সমাধান দেন।

অনুষ্ঠানের শেষে রাষ্ট্রদূত প্রবাসীদের পরামর্শ দেন, তাদের সমস্যা লিখিত আকারে দূতাবাসে পাঠালে আরও কার্যকরীভাবে সমাধান করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞপ্তি/তাওফিক/ 

ফিনল্যান্ডে বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ উৎসব

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০০ পিএম
ফিনল্যান্ডে বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ উৎসব
ফিনল্যান্ডে বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ উৎসব

ফিনল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রাণের সংস্কৃতি আর উৎসবের ছোঁয়ায় আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩২।

হেলসিঙ্কির নিকটবর্তী এসপো শহরের ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ক্যাম্পাসে আয়োজিত এই বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন করে ফিনল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘প্রত্যাশা’।

সহস্রাধিক প্রবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে পুরো ক্যাম্পাস পরিণত হয় এক টুকরো বাংলাদেশে। ডাক-ঢোলের তালে, বৈশাখী আল্পনায় রাঙিয়ে, আর বাহারি পোশাকে সজ্জিত হয়ে প্রবাসীরা নতুন বাংলা বছরকে বরণ করে নেয় প্রাণভরে।

উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। স্থানীয় প্রবাসী শিল্পীদের পরিবেশনায় গান, কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য ও দেশীয় সুরে ফিরে আসে বাংলার মাটি ও মানুষের গল্প। বৈশাখ বরণের নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয় গানের গানে, যা শ্রোতাদের আবেগে ছুঁয়ে যায়।

অনুষ্ঠানজুড়ে জমে ওঠে প্রাণবন্ত আড্ডা, বহুদিন পর পরিচিতজনকে কাছে পাওয়ার আনন্দ, আর স্মৃতির পাতা উল্টে দেখার মুহূর্ত।

আবৃত্তির ফাঁকে ফাঁকে চলছিল হাস্যরস আর প্রাণখোলা কথোপকথন।

খাবারের স্টলগুলো ছিল ভোজনরসিকদের অন্যতম আকর্ষণ। পান্তা-ইলিশ, দেশীয় পিঠা, বিরিয়ানি, ভর্তা, মিষ্টান্নসহ নানা রকমের দেশি খাবার ছিল স্টলে, যা দেশের স্বাদ ফিরিয়ে এনেছিল প্রবাসীদের জিভে ও মনে।

এবারের বর্ষবরণ উৎসব দর্শকসংখ্যার দিক থেকে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। সহস্রাধিক অংশগ্রহণকারী প্রাণভরে উপভোগ করেছেন এই আয়োজন, যা প্রবাসের মাটিতে বাঙালি সংস্কৃতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

আয়োজক সংগঠন ‘প্রত্যাশা’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী বছর থেকে আরও বড় পরিসরে ও নিয়মিতভাবে এ ধরনের আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও উৎসবমুখর আনন্দের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এই আয়োজন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলেও তারা জানান।

মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান, আটক ১৬৫ বাংলাদেশি

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫১ পিএম
আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৪ পিএম
মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান, আটক ১৬৫ বাংলাদেশি
ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের বিশেষ অভিযানে বিভিন্ন দেশের ৫০৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে ১৬৫ জনই বাংলাদেশি।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদ মাধ্যম নিউ স্ট্রেট টাইমস।

এক প্রতিবেদনে সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, কুয়ালালামপুরের মেদান ইম্বির একটি ব্যবসায়িক এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়। ইমিগ্রেশন বিভাগের সদর দপ্তর এবং নেগেরি সেম্বিলান ইমিগ্রেশন বিভাগের বিভিন্ন পদের ১৮৫ জন ইমিগ্রেশন অফিসারের একটি বাহিনী এবং জাতীয় নিবন্ধন বিভাগসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার সহায়তায় এই যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। 

প্রতিবেদন বলছে, গ্রেপ্তার ৫০৬ জনের মধ্যে ৪৪৮ জন পুরুষ এবং ৫৮ জন নারী। গ্রেপ্তার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে ১৬৫ জন বাংলাদেশি ছাড়াও নেপালের রয়েছেন ১২৪ জন। তবে আটক বাংলাদেশিদের সবাই পুরুষ। নারীদের মধ্যে ৪০ জন ইন্দোনেশিয়ান এবং বাকি ১৮ জন হলেন নেপালের নাগরিক।

দেশটির অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক ওয়াইবিএইচজে দাতো জাকারিয়া বিন শাবান অভিযান পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই অভিযানে মোট ৮৯৫ জন ব্যক্তির ডকুমেন্টস পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে ৭৪৯ জন অভিবাসী নাগরিক এবং ১৪৬ জন স্থানীয় নাগরিক ছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ৫০৬ জন অভিবাসী নাগরিককে অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের সন্দেহে আটক করা হয়েছে। তাদের সকলের বয়স ২৫ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে। 

তিনি আরও বলেন, পরিচয়পত্র না থাকা, পাসের শর্ত লঙ্ঘন, অতিরিক্ত সময় ধরে থাকা, অভিবাসন আইন লঙ্ঘন, মেয়াদহীন ভিসা ইত্যাদি অভিযোগে আটক করা হয় তাদের।

তিনি আরও বলেন, অভিযান এবং পরিদর্শনের সময় কিছু বিদেশি নাগরিক ছিলেন যারা ঘর, টয়লেট, স্টোররুম এবং অন্যান্য স্থানে লুকিয়ে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন। পরিচয়পত্র না থাকা, পাসের শর্ত লঙ্ঘন, অতিরিক্ত সময় ধরে থাকা, অচেনা কার্ডধারী, অভিবাসন আইন লঙ্ঘন ইত্যাদি অভিযোগে তাদের আটক করা হয়।

এমএ/

ফিনল্যান্ডে কাজের বাজারে ধস, চরম দূরাবস্থায় বাংলাদেশি প্রবাসীরা

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫০ পিএম
ফিনল্যান্ডে কাজের বাজারে ধস, চরম দূরাবস্থায় বাংলাদেশি প্রবাসীরা

বর্তমানে ফিনল্যান্ডে কর্মসংস্থানের বাজার গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপীয় অর্থনৈতিক মন্দা, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধজনিত মূল্যস্ফীতি এবং প্রযুক্তি ও পরিষেবা খাতে স্বয়ংক্রিয়তার ব্যাপক প্রসার-এ সবকিছু মিলিয়ে দেশের শ্রমবাজারে নেমে এসেছে স্থবিরতা। এ সংকটে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন বিদেশি শ্রমিকরা, বিশেষত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।

বেকারত্বের হার ও বাস্তব চিত্র

ফিনল্যান্ডের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শুরুতে দেশের মোট বেকারত্বের হার ৮ দশমিক ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। হেলসিঙ্কি, ভান্তা, এসপু এবং তুর্কু শহরে নির্মাণ, পরিচ্ছন্নতা, রেস্টুরেন্ট, ডেলিভারি ও লজিস্টিক খাতে কর্মরত অনেক অভিবাসী শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এ অবস্থা আরও ভয়াবহ। 

এক প্রবাসী মোহাম্মদ সুমন মুন্সী বলেন, ‘কাজ নেই বাড়িভাড়া, খরচ সব সামলানো অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে।’

সমস্যা কোথায়?

১. অভ্যন্তরীণ নিয়োগ হ্রাস: অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ফিনিশ প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নিয়োগে সতর্ক হয়ে পড়েছে।

২. অস্থায়ী কর্মীদের ছাঁটাই: চাকরির নিশ্চয়তা নেই এমন অনেক বিদেশি, বিশেষ করে বাংলাদেশিরা অস্থায়ী চুক্তির আওতায় ছিলেন।

৩. ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা: অনেক বাংলাদেশি প্রবাসী ফিনিশ বা সুইডিশ ভাষায় দক্ষ না হওয়ায় চাকরির বিকল্প খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়ছেন।

৪. আইনগত জটিলতা: চাকরি হারালে রেসিডেন্স পারমিট নবায়নের বিষয়টি নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে।

বাংলাদেশি কমিউনিটির অবস্থা

ফিনল্যান্ডে বসবাসরত আনুমানিক ১৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশির বেশিরভাগই সেবা খাতের সঙ্গে যুক্ত। তাদের বড় একটি অংশ কাজ হারানোর পর বেকার ভাতা বা সরকারি সহায়তা পেতে সমস্যায় পড়েছেন। অনেক প্রবাসী মানসিক চাপে ভুগছেন। আর্থিক অনিশ্চয়তা, পরিবারে টাকা পাঠাতে না পারা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছেন তারা।

মার্চ মাসের কিছু বাস্তব ঘটনা

হেলসিঙ্কির বিভিন্ন কোম্পানিতে মার্চে ৩০০ বাংলাদেশি শ্রমিককে ছাঁটাই করেছে। তুর্কু শহরে কয়েকটি পরিচ্ছন্নতা প্রতিষ্ঠানের ১২০ অভিবাসী কর্মীকে জানানো হয়েছে, কাজের ঘণ্টা অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। দুটি জনপ্রিয় ফুড ডেলিভারি প্ল্যাটফর্মের বেশিরভাগ রাইডারদের ঘণ্টা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়ার অভিবাসী।

ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা

অনেকে ভেবেছিলেন ফিনল্যান্ডে স্থায়ীভাবে কাজ করে পরিবার ও ভবিষ্যতের জন্য নিরাপত্তা গড়বেন। কিন্তু বাস্তবতা এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন। রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে, কাজ না থাকলে নতুন আবেদন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। অনেকেই হয়ত বাধ্য হবেন দেশে ফিরে যেতে।

পপি/