ঢাকা ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দোজখের আগুন থেকে মুক্তি প্রার্থনা

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২১ পিএম
দোজখের আগুন থেকে মুক্তি প্রার্থনা
প্রতীকী ছবি। ইন্টারনেট

রমজানের শেষ দশ দিন দোজখের আগুন থেকে মুক্তি প্রার্থনার অন্যতম সেরা সময়। রাসুলুল্লাহ (সা.) মাহে রমজানের বিদায়ের দিনগুলোতে দোজখের আগুন থেকে পরিত্রাণ লাভে বেশি বেশি প্রার্থনার তাগিদ দিয়েছেন। শেষ দশ দিনে ইতেকাফ পালন এবং বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধানের কথা বলেছেন। 

গুরুত্বপূর্ণ এ দশ দিনে দোজখের আগুন থেকে মুক্তি লাভের প্রার্থনার মধ্যে রয়েছে বিশেষ তাৎপর্য। দোজখের আগুন একটি প্রলম্বিত এবং অসহনীয় দহন যন্ত্রণার উৎস। সাধারণ জ্ঞান ও উপলব্ধির অতীত এ যন্ত্রণা। এর ব্যাপ্তিও অকল্পনীয়। আল্লাহ বলেন, ‘... অতঃপর যারা (তাদের প্রতিপালককে) অস্বীকার করে, তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে আগুনের পোশাক, তাদের মাথার ওপর ঢেলে দেওয়া হবে ফুটন্ত পানি। যা দিয়ে তাদের পেটে যা আছে তা ও তাদের চামড়া গলিয়ে দেওয়া হবে। উপরন্তু তাদের (শাস্তির) জন্য থাকবে লোহার মুগুর। যখনই তারা যন্ত্রণার চোটে তার থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে, (তখনই) তাদেরকে তার ভেতরে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, (আর বলা হবে, আগুনে) পোড়ার শাস্তি আস্বাদন করো।’ (সুরা হজ, আয়াত: ১৯-২২)

পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আসলে তারা কিয়ামত অস্বীকার করে, আর যারা কিয়ামত অস্বীকার করে, তাদের জন্য আমি প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুন। আগুন যখন তাদের বহু দূরবর্তী স্থান থেকে দেখবে, তখন তারা শুনতে পারে তার ক্রুদ্ধ গর্জন ও হুঙ্কার। যখন তাদের একসঙ্গে বেঁধে জাহান্নামের কোনো সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন সেখানে তারা মৃত্যুকে ডাকবে।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত: ১১-১৩)

দোজখের দহন যন্ত্রণা তাদের জন্য যারা কুফরি করে, যারা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে পাপাচারে লিপ্ত, যারা কিয়ামতকে অস্বীকার করে এবং সর্বোপরি যারা দোজখের শাস্তিকে স্বীকার করে না। দোজখের শাস্তি এই পার্থিব জীবনের কর্মকাণ্ডের তথা ঈমান-আমলের ফলাফলে নির্ধারিত হয়ে থাকে। তাই পার্থিব জীবনযাপনে এর উপলব্ধি জাগ্রত হওয়া আবশ্যক। 

পরকালের উবলব্ধি বা আকুতি কোনো কাজে আসবে না। দোজখের আগুনের তীব্রতা এবং ভয়াবহতা থেকে দোজখবাসীর পরিত্রাণ লাভের একান্ত আকুতিও ব্যর্থ হয়ে যাবে। সেই জ্বলন্ত ও সর্বভুক অগ্নি থেকে নাজাত বা মুক্তি লাভের জন্য মাহে রমজানের শেষ দশ দিনের প্রার্থনায় কুফরি, পাপাচার আর ঈমানের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার দৃঢ়চিত্ত সংকল্প সবার মধ্যে পরিব্যাপ্ত হোক । 


লেখক: সাবেক সচিব ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান, এনবিআর 

 

পবিত্র হজ আজ, ‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাত

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০৯:১৮ এএম
পবিত্র হজ আজ, ‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাত
ছবি: সংগৃহীত

মিনায় হজযাত্রীদের অবস্থানের মাধ্যমে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে গতকাল বুধবার। আজ বৃহস্পতিবার ৯ জিলহজ (৫ জুন) পবিত্র হজের দিন। এদিন ফজরের নামাজ আদায় করে তারা রওনা দেবেন আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে। এ সময় তাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হবে ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক লা শারিকা লাক।’ অর্থাৎ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।’ 

আজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে থেকে তারা এবাদত-বন্দেগি করবেন।

এদিকে আগামী শনিবার বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।

পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা চলে পাঁচ দিন। গতকাল ৮ জিলহজ মিনায় অবস্থানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে এ আনুষ্ঠানিকতা। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে মক্কা থেকে হজযাত্রীরা তাঁবুর শহর মিনার উদ্দেশে রওনা হন। তারা মক্কায় নিজ নিজ রুম থেকে ইহরাম বেঁধে মিনায় পৌঁছান। মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। গতকাল জোহর থেকে আজ ফজর পর্যন্ত (সারা দিন-সারা রাত) মিনায় অবস্থান করে মোট পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করবেন তারা। এ ছাড়া এখানে তাকবির, তাসবিহ, দোয়া এবং কোরআন তিলাওয়াতে সময় কাটান তারা। এরপর ফজরের নামাজ পড়ে রওনা হন আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে।

মূলত আরাফাতের দিবসকে (৯ জিলহজ) ধরা হয় মূল হজ হিসেবে। আজ ভোর থেকেই হজযাত্রীরা আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন। তাদের সমস্বরে উচ্চারিত ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের আকাশ-বাতাস। দুপুরে হজের খুতবা শুনবেন তারা। তারপর এক আজানে হবে জোহর ও আসরের নামাজ। এই ময়দানেই আরাফাত পাহাড়ে দাঁড়িয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তার বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই স্মৃতি ও রীতিকে লালন করেন বিশ্বের সব মুসলিম। এদিন বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মুসলিম রোজা পালন করেন। 

সূর্যাস্তের পর তারা আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করে যাত্রা করবেন মুজদালিফার পথে। সেখানে আবার তারা এক আজানে আদায় করবেন মাগরিব ও এশার নামাজ। আজ রাতে মুজদালিফায় তারা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করবেন। এ সময় তারা মুজদালিফা থেকে পাথর সংগ্রহ করবেন জামারায় প্রতীকী শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য। এরপর আগামীকাল শুক্রবার সকালে সূর্যোদয়ের পর জামারায় প্রতীকী বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। পরে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করবেন। কোরবানি করে মাথা মুণ্ডন করবেন। এহরাম খুলে পরবেন সাধারণ পোশাক। আবার কাবাঘর তাওয়াফ করবেন। সাফা-মারওয়ায় সাতবার সাঈ (চক্কর) করবেন। এরপর আবার ফিরে যাবেন মিনায়। এর পরদিন এবং তার পরদিন অর্থাৎ টানা দুই দিন দ্বিতীয় ও ছোট শয়তানকে পাথর মারার মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।  

মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে যাবেন বাংলাদেশের হজযাত্রীরা

বাংলাদেশি হজযাত্রীদের হজ ব্যবস্থাপনা মনিটরিং দলের নেতা ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এবং ধর্মসচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিকও গতকাল মিনায় অবস্থান করেছেন। গতকাল বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

এ বছর সারা বিশ্ব থেকে প্রায় ১৪ লাখ ৭০ হাজার হজযাত্রী হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। স্থানীয় হজযাত্রী মিলে এই সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি হজযাত্রীর সংখ্যা ৮৬ হাজার ৯৫৮ জন। সূত্র: বাসস, সৌদি গেজেট

হাজি সাহেদের নিজ দেশে কোরবানি করার বিধান কী?

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ১০:০০ পিএম
হাজি সাহেদের নিজ দেশে কোরবানি করার বিধান কী?
হাজি সাহেবদের হজ আদায়ের ছবি। সংগৃহীত

অনেক হাজি সাহেব দেশে তার কোরবানির ব্যবস্থা করে যান। এটাকে তারা জরুরি মনে করেন। অথচ হাজি সাহেব হজ্বের সফরে থাকার কারণে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়। হাঁ এরপরও যদি কেউ নফল কোরবানি দিতে চায় তবে সেটার অবকাশ আছে। (কাযি খান ৩/৩৪৪; বাদায়ে উস-সানায়ে ৪/১৯৫; আদ্দুরূল মুখতার ৬/৩১৫)

 

লেখক: লেখক ও সাংবাদিক

আকিকা না দিলে কোরবানি দেওয়া যাবে কী?

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০৮:০০ পিএম
আকিকা না দিলে কোরবানি দেওয়া যাবে কী?
কোরবানির গরুর ছবি। সংগৃহীত

অনেকের ধারণা, আকীকা না দিলে কোরবানি দেওয়া যায় না। তাই অনেকে কোরবানিই করে না। আবার অনেকের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও কোরবানি না দিয়ে আকীকা দেয়। অথচ এটি একেবারেই অমূলক। একটির সঙ্গে অপরটি শর্তযুক্ত নয়। তাই কোন কারণে আকীকা দেওয়া না হলেও ওয়াজিব কোরবানি অবশ্যই দিতে হবে। (কাযি খান ৩/৩৫৪)

 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

কোরবানি কবুল হওয়ার সাত শর্ত

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০৫:০০ পিএম
কোরবানি কবুল হওয়ার সাত শর্ত
প্রতীকী ছবি । সংগৃহীত

কোরবানি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যুগে যুগে সমস্ত উম্মতের ওপর কোরবানি করার বিধান ছিল। তবে আমাদের ওপর যে কোরবানি ওয়াজিব, তা জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নাত। এই কোরবানি আল্লাহতায়ালার নিকট কবুল হওয়ার জন্য কিছু শর্তের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। এমন কয়েকটি শর্ত নিম্নরূপ-

১. বিশুদ্ধ নিয়ত: কোরবানির অন্যতম প্রধান শর্ত হলো বিশুদ্ধ নিয়ত। মুসলমানদের কোরবানি কেবল আল্লাহর সান্নিধ্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করতে হবে। নিয়ত হলো কাজের আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ, যা কোরবানির পূর্ণতার জন্য অপরিহার্য। 
আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘এগুলোর (কোরবানির পশুর) গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না। কিন্তু পৌঁছে তাঁর নিকট তোমাদের মনের তাকওয়া।’ (সুরা হজ, ৩৭) 
সুতরাং লোক দেখানো মনোভাব, গোশত খাওয়া, নিজের আভিজাত্যের প্রকাশ প্রভৃতি নিয়তে কোরবানি বৈধ হবে না।

২. হারাম পরিহার: কোরবানি করতে হবে হালাল সম্পদ থেকে। হারাম মিশ্রিত সম্পদের বিনিময়ে ক্রয়কৃত পশুর কোরবানি আল্লাহর নিকট কবুল হবে না। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা পবিত্র। তিনি কেবল পবিত্র জিনিসই কবুল করেন।’ (মুসলিম, ২৩৯৩) 
কোরবানিতে শরিক নেওয়ার ক্ষেত্রেও তাই সতর্ক থাকতে হবে। যদি কারও ব্যাপারে নিশ্চিত জানা যায় যে, সে হারাম সম্পদ থেকে কোরবানি করছে, তা হলে এমন ব্যক্তির সঙ্গে এক পশুতে কোরবানি করা যাবে না। শরিয়তের দৃষ্টিতে এমন লোকের কোরবানি এবং তার সঙ্গে অন্য শরিকদের কোরবানিও কবুল হবে না।

৩. পশুর প্রকার: কোরবানির পশু হতে হবে ‘বাহিমাতুল আনআম’ অর্থাৎ গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যেন তারা আল্লাহর দেওয়া চতুষ্পদ জন্তু জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা হজ, ৩৪) 
চতুষ্পদ জন্তুর অন্তর্ভুক্ত হলো উট, গরু, মহিষ, বকরি, ভেড়া ও দুম্বা। এগুলো ব্যতীত অন্য কোনো প্রকার পশু দ্বারা কোরবানি বৈধ হবে না। (কাজিখান, ৩/৩৪৮) 

৪. পশুর বয়স: কোরবানি বৈধ হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট বয়সের পশু জবাই করা আবশ্যক। হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা মুসিন্না (৫ বছর বয়সী উট, ২ বছর বয়সী গরু এবং ১ বছর বয়সী বকরি) ব্যতীত জবাই করো না। যদি তা সম্ভব না হয় তা হলে ৬ মাস বয়সী ভেড়া বা দুম্বা।’ (সহিহ মুসলিম, ১৯৬৩)। সুতরাং উটের বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর, গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর, বকরি, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে এক বছর বয়সী হতে হবে। তবে ছয় মাসের ভেড়া ও দুম্বা যদি এতটা হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে এক বছর বয়সী মনে হয়, তা হলে এমন ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। তবে বকরি যতই হৃষ্টপুষ্ট হোক, তা এক বছর বয়সী হওয়া বাধ্যতামূলক। (বাদায়েউস সানায়ে, ৪/২০৫)

৫. পশুর স্বাস্থ্য: কোরবানির পশু হৃষ্টপুষ্ট হওয়া উত্তম। (মুসনাদে আহমাদ, ৬/১২৩) কোরবানির পশুতে তাই এমন কোনো ত্রুটি থাকা চলবে না, যা তার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে বা তার মূল্য ও গুণগতমান কমিয়ে দেয়। সুতরাং পশুটি যেন অন্ধ বা একচোখা না হয়, স্পষ্ট কোনো রোগে আক্রান্ত না হয়, এমন পঙ্গু না হয় যে হাঁটতে অক্ষম, কিংবা এতটাই দুর্বল না হয় যে তার শরীরে মজ্জা থাকে না, অর্ধেকের বেশি যেন লেজ ও কান কাটা না হয়, মুখের অধিকাংশ দাঁত যেন অবশিষ্ট থাকে, শিং যেন গোঁড়া থেকে ভেঙে না যায় (তবে জন্মগতভাবে শিং না উঠলে সমস্যা নেই)। এসব শর্ত ঠিকঠাক আছে এমন পশু দ্বারাই কেবল কোরবানি করা বৈধ। (জামে তিরমিজি, ১৪৯৭) 

৬. কোরবানির সময়: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোরবানি করা আবশ্যক। কোরবানির সময় শুরু হয় ঈদুল আজহার নামাজের পর থেকে এবং তা অবশিষ্ট থাকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত। (হিন্দিয়া: ৫/২৯৫) এর আগে বা পরে কোরবানির পশু জবাই করলে তা দ্বারা কোরবানি আদায় হবে না। 
হজরত বারা ইবনে আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ঈদের দিন আমরা প্রথমে নামাজ আদায় করব, অতঃপর ফিরে এসে কোরবানি করব। যে ব্যক্তি এভাবে আদায় করবে, সে আমাদের নিয়মমতো করল। আর যে নামাজের আগেই জবাই করল, এটা তার পরিবারের জন্য গোশত হবে। কোরবানি হবে না। (বুখারি, ৯৬৫)

৭. কোরবানির পদ্ধতি: কোরবানির পশু অবশ্যই ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী জবাই করতে হবে। জবাইকারীর মুসলমান হওয়া এবং আল্লাহর নামে জবাই করা আবশ্যক। এ ছাড়া ব্যবহৃত ছুরি বা যন্ত্রপাতি ধারালো হতে হবে, যাতে পশুর কষ্ট কম হয়। কোরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করা উত্তম। তবে অন্যকে দিয়েও জবাই করাতে পারবে। এক্ষেত্রে কোরবানিদাতা পুরুষ হলে জবাইয়ের সময় সেখানে উপস্থিত থাকা উত্তম। (মুসনাদে আহমাদ, ২২৬৫৭)

 

 লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ

প্রতিভাগে গোশতকে সমান সমান তিন ভাগ করা কী জরুরি?

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৫, ০২:০০ পিএম
প্রতিভাগে গোশতকে সমান সমান তিন ভাগ করা কী জরুরি?
কোরবানির গোশতের ছবি। সংগৃহীত

অনেকে কোরবানির গোস্ত তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজে রেখে, এক ভাগ আত্নীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও এক ভাগ ফকির মিসকিনকে দেওয়া জরুরি মনে করেন। অথচ এভাবে বণ্টন করা জরুরি নয়, তবে উত্তম। কেউ এতে ত্রুটি করলে কোন গুনাহ হবে না এবং কোরবানিরও কোন ক্ষতি হবে না। কেউ কেউ পুরো পশুই ফ্রীজে ঢুকিয়ে রাখে, কিছুই দান করে না। এটাও ঠিক নয়, অনুত্তম। (সুরা হজ ৩৬; বাদায়েউস্ সানায়ে ৪/২২৪; আলমগিরী ৫/৩০০)

লেখক: আলেম,গবেষক ও সাংবাদিক