![দোজখের আগুন থেকে মুক্তি প্রার্থনা](uploads/2024/04/01/1711963379.22.jpg)
রমজানের শেষ দশ দিন দোজখের আগুন থেকে মুক্তি প্রার্থনার অন্যতম সেরা সময়। রাসুলুল্লাহ (সা.) মাহে রমজানের বিদায়ের দিনগুলোতে দোজখের আগুন থেকে পরিত্রাণ লাভে বেশি বেশি প্রার্থনার তাগিদ দিয়েছেন। শেষ দশ দিনে ইতেকাফ পালন এবং বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধানের কথা বলেছেন।
গুরুত্বপূর্ণ এ দশ দিনে দোজখের আগুন থেকে মুক্তি লাভের প্রার্থনার মধ্যে রয়েছে বিশেষ তাৎপর্য। দোজখের আগুন একটি প্রলম্বিত এবং অসহনীয় দহন যন্ত্রণার উৎস। সাধারণ জ্ঞান ও উপলব্ধির অতীত এ যন্ত্রণা। এর ব্যাপ্তিও অকল্পনীয়। আল্লাহ বলেন, ‘... অতঃপর যারা (তাদের প্রতিপালককে) অস্বীকার করে, তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে আগুনের পোশাক, তাদের মাথার ওপর ঢেলে দেওয়া হবে ফুটন্ত পানি। যা দিয়ে তাদের পেটে যা আছে তা ও তাদের চামড়া গলিয়ে দেওয়া হবে। উপরন্তু তাদের (শাস্তির) জন্য থাকবে লোহার মুগুর। যখনই তারা যন্ত্রণার চোটে তার থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে, (তখনই) তাদেরকে তার ভেতরে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, (আর বলা হবে, আগুনে) পোড়ার শাস্তি আস্বাদন করো।’ (সুরা হজ, আয়াত: ১৯-২২)
পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আসলে তারা কিয়ামত অস্বীকার করে, আর যারা কিয়ামত অস্বীকার করে, তাদের জন্য আমি প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুন। আগুন যখন তাদের বহু দূরবর্তী স্থান থেকে দেখবে, তখন তারা শুনতে পারে তার ক্রুদ্ধ গর্জন ও হুঙ্কার। যখন তাদের একসঙ্গে বেঁধে জাহান্নামের কোনো সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন সেখানে তারা মৃত্যুকে ডাকবে।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত: ১১-১৩)
দোজখের দহন যন্ত্রণা তাদের জন্য যারা কুফরি করে, যারা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে পাপাচারে লিপ্ত, যারা কিয়ামতকে অস্বীকার করে এবং সর্বোপরি যারা দোজখের শাস্তিকে স্বীকার করে না। দোজখের শাস্তি এই পার্থিব জীবনের কর্মকাণ্ডের তথা ঈমান-আমলের ফলাফলে নির্ধারিত হয়ে থাকে। তাই পার্থিব জীবনযাপনে এর উপলব্ধি জাগ্রত হওয়া আবশ্যক।
পরকালের উবলব্ধি বা আকুতি কোনো কাজে আসবে না। দোজখের আগুনের তীব্রতা এবং ভয়াবহতা থেকে দোজখবাসীর পরিত্রাণ লাভের একান্ত আকুতিও ব্যর্থ হয়ে যাবে। সেই জ্বলন্ত ও সর্বভুক অগ্নি থেকে নাজাত বা মুক্তি লাভের জন্য মাহে রমজানের শেষ দশ দিনের প্রার্থনায় কুফরি, পাপাচার আর ঈমানের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার দৃঢ়চিত্ত সংকল্প সবার মধ্যে পরিব্যাপ্ত হোক ।
লেখক: সাবেক সচিব ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান, এনবিআর