![কোথাও ঘুরতে গেলে রোজা রাখতে হবে?](uploads/2024/04/01/1711963710.17.jpg)
রোজা অবস্থায়ও অনেক মানুষকে নানা কারণে ঘুরতে যেতে হয়। ভ্রমণে থাকতে হয়। আগের তুলনায় এখন ভ্রমণ অনেকটা সহজ হয়েছে বটে; কিন্তু ভ্রমণে কষ্ট বা ক্লান্তি থাকেই। ঘুরতে গিয়ে বা ভ্রমণে থাকা অবস্থায় অনেকের পক্ষে রোজা রাখা কষ্টকর হয়ে পড়ে। এই কষ্ট থেকে বাঁচতে ভ্রমণে রোজা না রাখার অনুমতি আছে কি না, চলুন সে সম্পর্কে জেনে নিই—
প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর রোজা রাখা ফরজ। বিশেষ কিছু প্রয়োজনের কারণে রমজানে রোজা না রেখে অন্য সময়েও তা আদায়ের সুযোগ আছে। এই প্রয়োজনের অন্যতম একটি হলো ভ্রমণ বা সফর। মুসাফিরের জন্য ভ্রমণকালে রোজা না রাখার অনুমতি আছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমাদের মাঝে কেউ যদি অসুস্থ থাকে অথবা ভ্রমণে থাকে, সে রমজানের পর অন্য কোনো সময়ে কাজা করে নেবে। আল্লাহতায়ালা তোমাদের ওপর সহজ করতে চান। তিনি চান না তোমাদের ওপর কঠিন করতে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)
সফরে রোজা না রাখা বৈধ হওয়ার শর্ত হলো, সফরের দূরত্ব ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার হতে হবে। সফরে বা ভ্রমণে থাকা অবস্থায়ও যদি কোনো ব্যক্তি রোজা পালন করে, তবে তা-ই উত্তম। আর বেশি কষ্ট হলে বা ইচ্ছা করলে রোজা ছাড়তে পারবে; এই রোজা পরে সুবিধামতো নিকটতম সময়ে কাজা আদায় করে নিতে হবে। প্রিয় রাসুল (সা.) কোনো এক রমজানে রোজা অবস্থায় মক্কার পথে যাত্রা করলেন। কাদিদ নামের একটি স্থানে পৌঁছার পর তিনি রোজা ছেড়ে দিলে লোকেরা সবাই রোজা ছেড়ে দিলেন। (বুখারি, হাদিস: ১৮২০)
হানাফি মাজহাব মতে, সফর অবস্থায় নিয়ত করে রোজা রাখা শুরু করলে, তা ভাঙা জায়েজ নয়। কেউ ভেঙে ফেললে গুনাহগার হবে। তবে কাফফারা দিতে হবে না। শুধু কাজা করবে। (রাদ্দুল মুহতার, ২/৪৩১)
তাবেয়ি আসিম (রহ.) বলেন, আনাস (রা.)-কে সফরকালে রোজা রাখার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, ‘যে রোজা রাখবে না সে অবকাশ গ্রহণ করল। আর যে রোজা রাখল সে উত্তম কাজ করল।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)
লেখক: শাইখুল হাদিস, সিরাজনগর মাদরাসা নরসিংদী; সদস্য, তানযীম ফতোয়া বোর্ড নরসিংদী