![সুরা ইখলাস পড়ার গুরুত্ব ও ফজিলত](uploads/2024/04/18/1713412487.sura-ikhlas.jpg)
ইসলাম কল্যাণের ধর্ম। ইসলাম মানুষের জন্য সবকিছু সহজ করে দিয়েছে, কঠিন কিছু রাখেনি। অল্প আমলে রেখেছে অধিক সওয়াব। সহজ আমলের সওয়াব বড় করে দিয়েছে। কোরআনের ছোট্ট সুরা ইখলাস। খুব বেশি আয়ান এতে নেই। কিন্তু এর ফজিলত অনেক বেশি। আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, “রাসুল (সা.) তাঁর সাহাবিদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের কেউ কি এক রাতে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তেলাওয়াত করা দুঃসাধ্য মনে করো?’ এ প্রশ্ন তাদের জন্য কঠিন ছিল। তারা বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের মধ্যে কার সাধ্য আছে এমনটি করার?’ তিনি বললেন, ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’, অর্থাৎ সুরা ইখলাস কোরআনুল কারিমের এক-তৃতীয়াংশ।” (বুখারি, হাদিস: ৪৭২৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা কোরআনকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। এর পর ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’-কে করেছেন কোরআনের ভাগসমূহের একটি।’ (মুসলিম, হাদিস: ৮১১)
কত সহজ একটি আমল! ছোট্ট একটি সুরা। তেলাওয়াত করতে এক মিনিটও লাগে না। ছোট্ট এই সুরা কোরআনের তিন ভাগের এক ভাগ, কথাটি শুনে সাহাবিরা বিস্মিত হবেন; তা জানতেন রাসুল (সা.)। তিনি একবার বলেছেন, “তোমরা জমায়েত হও, আমি তোমাদের সামনে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ পাঠ করব। ফলে যাদের পক্ষে সম্ভব তারা জমায়েত হলো। এরপর রাসুল (সা.) বের হয়ে এলেন এবং তেলাওয়াত করে আবার ঘরে গেলেন।’ তখন আমাদের একজন অন্যজনকে বলতে লাগল, ‘মনে হয় আসমান থেকে (এখনই) কোনো সংবাদ এসেছে আর সে জন্যই তিনি ঘরে প্রবেশ করেছেন।’ পরে রাসুল (সা.) বের হয়ে এসে বললেন, আমি তোমাদের বলেছিলাম যে, ‘তোমাদের সামনে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ পাঠ করব। শোনো, সুরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।” (মুসলিম, হাদিস: ৮১২)
সাহাবিরা সুরা ইখলাসের গুরুত্ব বুঝলেন। তারা এটি বেশি করে পাঠ করতেন। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, “এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ পড়তে শুনলেন। সে বারবার তা মুখে উচ্চারণ করছিল। (তিনি মনে করলেন এভাবে বারবার পাঠ করা যথেষ্ট নয়) পরদিন সকালে তিনি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বিষয়টি খুলে বললেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘সে সত্তার শপথ, যার হাতে আমার জীবন। এ সুরা হচ্ছে সমগ্র কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।” (বুখারি, হাদিস: ৪৭২৬)
সুরাটি অসামান্য মূল্যবান হওয়ার অন্যতম কারণ হলো, এই সুরায় আল্লাহর গুণ বর্ণনা করা হয়েছে। আয়েশা (রা.) বলেন, “রাসুল (সা.) এক সাহাবিকে একটি মুজাহিদ দলের প্রধান করে জিহাদে পাঠালেন। নামাজে তিনি যখন তার সাথিদের ইমামতি করতেন, তখন সুরা ইখলাস দিয়ে নামাজ শেষ করতেন। মুজাহিদরা সেই অভিযান থেকে ফিরে রাসুল (সা.)-এর খেদমতে বিষয়টি আলোচনা করলে তিনি বললেন, ‘তাকেই জিজ্ঞাসা করো কেন সে এই কাজ করেছে।’ এরপর তারা তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তর দিলেন, এ সুরায় আল্লাহতায়ালার গুণাবলি রয়েছে। আর তাই এ সুরা তেলাওয়াত আমার বড় পছন্দ।’ তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাকে জানিয়ে দাও, আল্লাহতায়ালাও তাকে পছন্দ করেন।” (বুখারি, হাদিস: ৪৭২৬)
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক