আইসিসির যে কোনো আসর মানেই বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের আকাশচুম্বী প্রত্যাশা। কিন্তু ২২ গজের সেনানিরা খুব কম সময়ই জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছেন। দুই/একবার বাদ দিলে প্রত্যাশার ধারের কাছেও যেতে পারেননি। যে কারণে দেশ ছাড়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দেশবাসীকে কোনো রকম প্রত্যাশা না করার আহ্বান জানালেও পরোক্ষণেই তিনি জানান তারা প্রত্যাশা রাখবেন। তাদের সেই প্রত্যাশা ভালো খেললে পূরণ করা সম্ভব বলেও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কের বলা কথার উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হলো খবরের কাগজের পাঠকদের জন্য।
দল নির্বাচনে কী ইনপুট ছিল?
দল নির্বাচনের বিষয়টা নিয়ে আমরা অনেক আগে থেকেই আলোচনা করছিলাম। তিন নির্বাচক এবং কোচ। শুধু জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে যে শুরু হয়েছে তা না। এর আগে থেকেই আমাদের মধ্যে কথাবার্তা চলত। আমরা কোন কম্বিনেশনে যাব। ইনপুট যদি বলেন আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং প্রত্যেকটা মিটিংয়ে আমি ছিলাম, কোচ ছিলেন পাশাপাশি তিন নির্বাচক তো ছিলেন। আমাদের সবার সম্মিলিত সিদ্ধান্ত এটা।
সাইফউদ্দিন নেই কিন্তু তানজিম সাকিব আছেন?
সাইফউদ্দিন এবং সাকিবের ক্ষেত্রে আসলে সাকিবের বলের পেসটা সাইফউদ্দিনের চেয়ে একটু বেশি। সাইফউদ্দিনের কাছ থেকে আমরা যা আশা করছিলাম সেখানে মনে হয় একটু কমবেশি ছিল। বিস্তারিত বলতে চাই না। দুজনই খুব ক্লোজ ছিল। সাকিবের ওপর আমাদের আত্মবিশ্বাসটা কিছুটা বেশি ছিল। ওভারল এবং কন্ডিশন বিবেচনা করে আমাদের মনে হয়েছে সাকিব বেটার অপশন হবে।
কেন লিটন দলে?
লিটন আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। যদিও কয়েকটা সিরিজ ভালো যায়নি। এটা আমি বিশ্বাস করি এটা হতে পারে। শেষ মুহূর্তে আমরা কেউই চাইনি নতুন একজন দলে চলে আসুক। এ রকম বড় টুর্নামেন্টের আগে তার জন্য হয়তো কঠিন হবে। এ জন্য আমরা অভিজ্ঞতাকে মূল্য দিয়েছি। আমি আশা করি লিটন ভালো করবে ইনশাআল্লাহ।
প্রত্যাশা না রাখার আহ্বান জানানোর পর এখনকার প্রত্যাশা কী?
আমি যে কথাটা বলেছিলাম তারপরেও বাংলাদেশের সবাই প্রত্যাশা করবেই। আমি নিজেও প্রত্যাশা করি এবং প্রত্যেকটা প্লেয়ার প্রত্যাশা করবে আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলব। যদি ছোট ছোট পরিকল্পনা নিয়ে আগাই, কীভাবে গ্রুপ পর্বটা পার করব তাহলে পরিকল্পনা করা সহজ হয়। আমাদের গ্রুপ খুব একটা দুর্বল তা বলব না। যদি এটা পার করতে পারি তখন আবার আলাদাভাবে পরিকল্পনা করতে পারব। টি-টোয়েন্টিতে আমি বিশ্বাস করি ছোট দল বড় দল বলে কিছু নেই। নির্দিষ্ট দিনে যদি আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি তাহলে যেকোনো দলকে হারানো সম্ভব।
তাসকিন নিয়ে কী আশা?
এমন আশা করছি না তাসকিন থাকবে না। আশা করছি তাসকিন সুস্থ হয়ে যাবে। প্রথম ম্যাচ থেকেই পাওয়া যাবে। দলের অন্যতম সেরা বোলার এবং মূল বোলার বলব। না থাকতে পারলে যে ব্যাকআপ অপশন আছে তা নিয়ে এগুতে হবে। আমার মনে হয় সে প্রথম ম্যাচ থেকেই খেলতে পারবে ইনশাআল্লাহ।
অনেক দিন পর দলে লেগ স্পিনার...
আলহামদুলিল্লাহ্ আমাদের খুব ভালো একজন লেগ স্পিনার আছে। সে প্রায় সব ম্যাচেই পারফর্ম করছে বোলিং এবং ব্যাটিংয়ে। সে অন্যতম সেরা ফিল্ডার আমার মনে হয়। সেরাটা দিতে পারলে দল অনেক এগুবে। বাড়তি কোনো চাপ দিতে চাচ্ছি না। সে যা করতে পারে, তা করতে পারলে দলের জন্য ভালো কিছু হবে।
শান্ত ও লিটনের খারাপ পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে
লিটন এবং আমার কথা যা বললেন আমার মনে হয় না এটা খুব ভালো উইকেটে আমরা খেলেছি ইভেন চট্টগ্রামেও। অবশ্যই রানে থাকলে দলের জন্য ভালো। আমরা শেষ মুহূর্তে চাইনি নতুন কেউ চলে আসুক। আমরা চেয়েছি যে দলটা আমাদের থাকবে তা নিয়ে বিশ্বকাপে যাব।
রিয়াদের খেলার ধরন কী হবে?
রিয়াদ ভাই যেভাবে ফিরেছে ওনার যে কাজটা আছে এর ফলে দল অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। ফিনিশিং রোলে এটা আমাদের জন্য বাড়তি সুযোগ যে আমরা ভালো একটা স্কোর দাঁড় করাব। তরুণদের জন্য অবশ্যই অনুপ্রেরণা যে কীভাবে এ রকম পরিস্থিতি থেকে কামব্যাক করা যায়।
সাকিব-রিয়াদের সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপ নিয়ে দলের পরিকল্পনা কী?
শেষ বিশ্বকাপ কিনা জানি না। আমরা অবশ্যই চাইব এটা তাদের ভালো একটা মেমোরি দেওয়া। অবশ্যই এটা আমাদের দায়িত্ব। উনাদের যে রোলটা আছে, উনারা যদি তা করতে পারে অবশ্যই দল উপকৃত হবে। উনাদের অভিজ্ঞতা যা আছে তা যদি প্রত্যেকটা প্লেয়ারের মধ্যে ছড়িয়ে দেন তাহলে আমরা অনেক ভালো অবস্থানে থাকব।
এবার ভালো কোনো ফল হবে কি?
আশা তো করছি। নির্দিষ্ট দিনে সবার দায়িত্ব পালন করাটা জরুরি। আমি আশা করি সবাই সবার জায়গা থেকে তা করবে। আমার যেসব জায়গায় কাজ করার দরকার সেগুলো আমি করছি। আশা করি আমি ভালোভাবেই কামব্যাক করব বিশ্বকাপে।
বোলিং ইউনিটের ওপর প্রত্যাশা কেমন?
আমাদের বোলিং ডিপার্টমেন্ট আগের থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। বোলাররা ভালো করলে জেতার সম্ভাবনা থাকে বেশি। টি-টোয়েন্টিতে বোলাররা বেশি ম্যাচ জেতায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজে আশা করি স্পিন সহায়ক হবে। স্পিনে আমাদের ভালো ভ্যারিয়েশন আছে।