বিশ্বকাপের আগে জিম্বাবুয়ে সিরিজকে বলা হচ্ছে প্রস্তুতি পর্ব। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের বিশ্বকাপ দলে থাকা নিশ্চিত। দলে জায়গা নিশ্চিত হলেও সাকিব নেই জিম্বাবুয়ে সিরিজের চট্টগ্রাম পর্বে। তবে দিন কয়েক আগে এক অনুষ্ঠানে তিনি জানান, বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগ টি-টোয়েন্টি সংস্করণে হতে পারত। এমন কিছু সম্ভব নয় জানিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, এই যে আপনারা এখন এটা নিয়ে কথা বলছেন, প্রশ্ন করছেন, এটার জন্যই ও বলে গেছে।’
বিশ্বকাপের আগে শেষ সময়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত দলগুলো। বাংলাদেশ দলও আছে একই পথে। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলে। এই সিরিজ শেষেই দল উড়াল দিবে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে সরাসরি বিশ্বকাপের লড়াইয়ে নামবে টাইগাররা। বিশ্বকাপের আগে এমন দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচ খেলা যে বিশ্বকাপের জন্য আদর্শ প্রস্তুতি নয় সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। একই ধারণা বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনেরও। তার মতে, বিশ্বকাপের প্রস্তুতি যা নেওয়ার তা আগেই হয়েছে। বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে প্রস্তুতির আর কোনো সুযোগ নেই।
তার কথায়, ‘আমি এটাকে প্রস্তুতি হিসেবে দেখি না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজটা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি না। এটা আমাদের এফটিপির খেলা। এটার সঙ্গে প্রস্তুতির কোনো সম্পর্ক নাই। আমরা ইউএসএতে খেলতে চাচ্ছি ওদের কন্ডিশন, উইকেট সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য।’
পাপন জানান, বিশ্বকাপের যা প্রস্তুতি নেওয়ার সেটা বিপিএল ও শ্রীলঙ্কা সিরিজ এবং আগের সিরিজেই হওয়ার কথা। বিষয়টি নিয়ে পাপনের মন্তব্য, ‘দুই সপ্তাহ আগে প্রস্তুতির কিছু নাই। যা করার তা আগেই শুরু করার কথা ছিল। আমি মনে করি, আমরা যে কয়টা সিরিজ খেলি, এই যে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে পুরা সিরিজটা খেললাম, এইবারের বিপিএলটা জমজমাট হলো, ভালো খেলা হয়েছে। এটাতেই প্রস্তুতি হওয়ার কথা।’
বিসিবি সভাপতির মতে জিম্বাবুয়ে সিরিজ প্রস্তুতির অংশ না হলেও ব্যাটারদের পারফরম্যান্স তার কপালে যোগ করেছে চিন্তার ভাঁজ। সিরিজের প্রথম দুই টি- টোয়েন্টিতে দল জিতলেও মনে ধরেনি বাংলাদেশের ব্যাটিং। পাপনের ভাষ্য, ‘আমরা দুটো ম্যাচ জিতেছি কনভিন্সিংলি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এটা যেমন সত্যি তেমনি ব্যাটিংটা ভালো লাগেনি। ব্যাটিং দেখে খুবই ভয় লাগছে।’
সাম্প্রতিক সময়ে আইপিএলে রানবন্যাও তুলনায় এনেছেন বিসিবি সভাপতি। তার মতে, আইপিএলের ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে বিরাট ফারাক। আইপিএলের বড় স্কোরের ম্যাচ বিসিবি সভাপতির মনে ঢুকিয়ে দিয়েছে ভয়। পাপন বলেন, ‘এইবারের আইপিএল দেখে বুঝতে পারছি না হচ্ছেটা কী। মানে ২৫০-৬০ করলেও জিততে পারে না। আর আমরা কী করছি? ২৪০-৪৫ (১৪০-৪৫) করতেই হিমশিম খাচ্ছি বলে মনে হয়। আসলে হিমশিম খাই নাই। বাট মনে হয় কেমন জানি একটা … ওরা যেভাবে খেলছে এই খেলার সঙ্গে একটা বিরাট গ্যাপ।’
বিশ্বকাপে ভালো খেলতে ক্রিকেটারদের উপায়ও বাতলে দেন বিসিবি সভাপতি। তার মতে এখন ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে হবে। ফর্ম কিংবা রান হচ্ছে কি না এমন কিছু বিবেচনায় রাখা যাবে না। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো টি-টোয়েন্টি খেলতে হলে এখন সাহস করেই খেলতে হবে। এখন রান হলো কী হলো না, ফর্ম আছে কি নাই এসব চিন্তা করে লাভ নাই। এখন খেলতে হবে হাত খুলে। হাত খুলে না খেললে ইনিশিয়ালি বড় রান করাটা কঠিন।’