জমিদারদের জুলুম অত্যাচারে অতিষ্ঠ প্রজারা। জমিদারদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। অত্যাচারের সেই কাহিনী নিয়ে প্রখ্যাত সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের জমিদার দর্পণ নাটকটি ১৮৭৩ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজবাড়ী শিল্পকলা একাডেমিতে নতুন করে জমিদার দর্পণ নাটকটির মঞ্চায়ন হয়। রাজবাড়ীর শিল্পকলা একাডেমিতে নাটকটি দেখতে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ও রাজবাড়ী জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় জমিদার দর্পণ নাটকটির নির্দেশনা দেন ফকির জাহিদুল ইসলাম রুমন। অভিনয় করেন জেলার সাতটি নাট্য দলের ৪০ জন নাট্যকর্মী। জেলা শিল্পকলা একাডেমি রেপার্টরি নাট্যদল, রাজবাড়ী থিয়েটার, মঙ্গলনাট, স্বদেশ নাট্যাঙ্গন, গহণ থিয়েটার, প্রত্যাশা থিয়েটার, রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থিয়েটার ও শেরে বাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে নাটকটি দেখতে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জয়ন্তী রুপা রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল জব্বার।
জমিদার দর্পণ নাটকটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত। অত্যাচারী ও চরিত্রহীন জমিদারের অত্যাচারে গরিব কৃষক আবু মোল্লার স্ত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার কাহিনী এ নাটকের মূল উপজীব্য। জমিদারের লাম্পট্য জীবন, শোষণ, প্রজা নিপীড়ন ও অর্থের প্রভাবে বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ সবই উঠে এসেছে এ নাটকে।
নাট্যকর্মী ও সাংবাদিক সৌমিত্র শীল চন্দন বলেন, রাজবাড়ীতে একটা সময় অনেক থিয়েটার ছিল। অনেক মঞ্চ নাটক হত। মাঝে কিছু দিন শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। তবে এই নাটকটি দেখতে দর্শকদের যে সারা পড়েছে তা খুবই ইতিবাচক। এর মধ্যমে রাজবাড়ীর নাট্যচর্চার নতুনভাবে মোর নেবে।
নাটকে অংশ নেয়া রাজবাড়ী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সিঁথি সান্যাল বলেন, নাটকটির গল্প দেড়শ বছর আগের। আমরা টানা দুই মাস রিহার্সেল করেছি। সব মিলিয়ে ঐতিহাসিক নাটকটিতে কাজ করতে পেরে আমি অনেক খুশি।
রাজবাড়ী জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার পার্থপ্রতিম দাস বলেন, এ নাটকের প্রতি দর্শকের ভালোবাসা ছিল চোখে পড়ার মতো। আমাদের এখানে আসন সংখ্যা ছিল সীমিত। এজন্য অনেকে দেখতে পারেনি। এটি ছিল আমাদের প্রথম মঞ্চায়ন। আগামীতে আরও মঞ্চায়ন করা হবে।
নাটকটির নির্দেশক ফকির জাহিদুল ইসলাম রুমন বলেন, তৎকালীন সময়ে জমিদাররা সাধারণ মানুষকে অত্যাচার করত আবার বর্তমান সময়ে এই সাধারণ মানুষই নানাভাবে নিপীড়িত হচ্ছে, আমরা দুটি সময়কে এক মোহনায় নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। তিনি আরও বলেন, এ রকম গবেষণামূলক নাটক সাধারণ মানুষের মনে দাগ কাটবে। এজন্য এ রকম নাটক আরও হওয়া উচিত।
সুমন/জোবাইদা/