পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে খবরের কাগজের ঈদসংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে রবিবার (৭ এপ্রিল)। পত্রিকাটির প্রকাশনার ছয় মাসের মধ্যে ঈদসংখ্যা বাজারে এল। গতকাল শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে বর্ণিল এক অনুষ্ঠানে ঈদসংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন বিশিষ্ট কবি, কথাসাহিত্যিক ও সংস্কৃতিজনরা।
খবরের কাগজের এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট লেখক-অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সংস্কৃতিজন ড. আতিউর রহমান ও মঞ্চসারথি আতাউর রহমান, খবরের কাগজের প্রকাশক ও সম্পাদক কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামাল তাদের নিয়ে ঈদসংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন।
অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘পৃথিবীতে এই পর্যন্ত ১৮টি সভ্যতা এসেছে। মানবসভ্যতা যাযাবর, এই সভ্যতা সব জায়গায় থাকে না। এক জায়গায় আসে, ১০০-২০০ বছর আগে। এই পত্রপত্রিকার মধ্যে মানবসভ্যতার অগ্রযাত্রার তথ্য লুকিয়ে থাকে।
ড. আতিউর রহমান বলেন, খবরের কাগজের ঈদসংখ্যা সত্যি একটি বৈচিত্র্যময় ঈদসংখ্যা। খবরের কাগজের মূল পত্রিকায় যেমন তারুণ্যের দ্যুতি রয়েছে, তেমনি তার ছাপ পড়েছে ঈদসংখ্যায়। খবরের কাগজ হোক সমাজের প্রতিবিম্ব।
আতাউর রহমান বলেন, ‘নাটক করতে করতে আমি একদিন লেখক হয়ে গেছি। আমার কবিতার বইও বের হয়েছে। আমি মনে করি, পৃথিবীতে একটি জিনিস টিকে থাকে, সেটি হলো লিখিত শব্দ। আমি আঙুলের ছাপে যা রেখে গেলাম, সেটি চিরঞ্জীব হয়ে থাকে।’
অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘৪৮০ পৃষ্ঠার ঈদসংখ্যায় নানা বিষয় বৈচিত্র্যময়তার সঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে। পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশক মোস্তফা কামালের মধ্যে যে নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য দেখেছি, তা বিরল। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে, সততার সঙ্গে পত্রিকাটি এগিয়ে নিয়ে চলছেন।’
খবরের কাগজের কপি এডিটর কবি হাসান হাফিজের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কথাসাহিত্যিক ইসহাক খান, সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. তৌহিদ হোসেন, কথাসাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী, সুরমা জাহিদ, রেজানুর রহমান, দীপু মাহমুদ, শাহনাজ মুন্নী, মনি হায়দার, অদিতি ফাল্গুনী, স্বকৃত নোমান, মাসউদ আহমাদ, মৃত্যুঞ্জয় রায়।
দীপু মাহমুদ বলেন, ‘ঈদসংখ্যার অঙ্গসৌষ্ঠব দেখে মনে হয়েছে, আলাদা মমতা আছে। সবে ৬ মাস বয়স হয়েছে পত্রিকাটির। এর মধ্যে যে ঈদসংখ্যাটি বাজারে এনেছে খবরের কাগজ, তাতে আলাদা দরদ আছে। আশা করব, এই দরদ দীর্ঘদিন এ অবস্থায় থাকবে।’ মৃত্যুঞ্জয় রায় বলেন, বানানরীতি, শব্দচয়ন, গ্রাফিকসের কাজ সবকিছুতেই পরিশ্রমের ছাপ রয়েছে। এই ঈদসংখ্যাটি এক কথায় একটি কমপ্লিট ওয়ার্ক। ইসহাক খান বলেন, ‘খবরের কাগজ কোনো দিন ইতিহাস হয়ে গেলে আমরা যারা প্রথম ঈদসংখ্যার লেখক, তারাও ইতিহাসের অংশ হয়ে যাব।’
ঈদসংখ্যার লেখক কবিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিমল গুহ, ফারুক মাহমুদ, নাসির আহমেদ, আসাদ মান্নান, মারুফ রায়হান, জুলফিকার নিউটন, রেজাউদ্দিন স্টালিন, তুষার দাশ, সেলিম মাহমুদ, গোলাম কিবরিয়া পিনু, টোকন ঠাকুর, শাহীন রেজা, সেলিম মাহমুদ, তপন বাগচী, শিহাব শাহরিয়ার, মনির মহিউদ্দিন, ওবায়েদ আকাশ, পিয়াস মজিদ, রোমেন রায়হান। উপস্থিত ছিলেন অন্যপ্রকাশের অন্যতম স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম।
কবি বিমল গুহ বলেন, ছয় মাসের পত্রিকাটির ঈদসংখ্যা অসাধারণ হয়েছে। গোলাম কিবরিয়া পিনু বলেন, সম্পাদক মহোদয় নিজেই ফোন করে লেখা চেয়েছিলেন। তিনি মর্যাদার সঙ্গে লেখাটি ছেপেছেন। শিল্পসৌকর্যমণ্ডিত এই ঈদসংখ্যাটি প্রকাশনাও কিন্তু কম চ্যালেঞ্জিং নয়। মারুফ রায়হান বলেন, নান্দনিকতা, উৎকর্ষে এই ঈদসংখ্যাটি প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ার মতো। এই ঈদসংখ্যাটি নিয়ে খবরের কাগজ সাহিত্য সমাজে ছোটখাটো ঢেউ তুলবে। কবি ফারুক মাহমুদ বলেন, ‘এক কথায় মুগ্ধ হয়েছি। কাগজটি ভালো হচ্ছে টের পাচ্ছি।’ কবি পিয়াস মজিদ বলেন, ‘বয়সে নতুন হলেও এই ঈদসংখ্যায় পরিণত বয়সের ছাপ রয়েছে। বৈচিত্র্য রয়েছে। উপন্যাস যদিও ঈদসংখ্যার প্রাণ, তবুও ঈদসংখ্যায় ইতিহাসবিদ আবদুল মমিন চৌধুরীর সাক্ষাৎকার দেখে ভালো লাগছে।’
অনুষ্ঠানে খবরের কাগজের উপ-সম্পাদক এনাম আবেদীন, উপ-সম্পাদক ও ঈদসংখ্যার সম্পাদক ড. এমদাদ হাসনায়েন, প্রধান বার্তা সম্পাদক খালেদ ফারুকী, চিফ রিপোর্টার তৌফিক মারুফ, সহকারী সম্পাদক ড. সারিয়া সুলতানা, ফিচার সম্পাদক খালেদ আহমেদ, বিজ্ঞাপন বিভাগের জিএম মো. মাসুদুর রহমান, সার্কুলেশন বিভাগের ডিজিএম মাসুদ কবির পাভেল, জনসম্পদ বিভাগের প্রধান মিন্টুভূষণ রায়, ব্র্যান্ড অ্যান্ড অ্যাক্টিভেশন আতিয়া সুলতানা, সম্পাদকীয় বিভাগের সানজিদ সকাল, শেহনাজ পূর্ণা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।