![শিল্পকলায় লালন সাঁই ও উকিল মুন্সীকে স্মরণ](uploads/2024/05/29/Shilpokola_Academy-1716996507.jpg)
লালন ফকির বাংলার লোকায়ত দর্শনের মহানায়ক। তিনি মানুষকে সব সময় মানুষ হিসেবেই দেখেছেন। সেখানে কোনো জাতি-গোত্র বা ধর্মের বিভাজন তিনি করেননি।
প্রাবন্ধিক বক্তা ড. আবু ইসহাক হোসেন বুধবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক স্মরণ অনুষ্ঠানে ফকির লালন সাঁইজির মাহাত্ম্য তুলে ধরেন এভাবে। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের ৬২ জন মনীষীর জীবন ও কর্ম নিয়ে অনুষ্ঠান; ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ পঞ্চম দিনের আয়োজনে স্মরণ করা হয় ফকির লালন সাঁইজি ও উকিল মুন্সীকে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রদর্শিত হয় লালন সাঁইজির জীবন ও দর্শনের উপর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র।
পরে ‘একুশ শতকে লালন ফকিরের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।
লেখক, গবেষক, এবং লালন রিসার্চ অ্যান্ড কালচারাল ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও প্রাবন্ধিক ড. আবু ইসহাক হোসেন ফকির লালন সাঁইজিকে নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, ‘ধর্মের মূল উদ্দেশ্য মিলন, বিভাজন নয়- এই সত্যটাকে জেনে মিলনের সাধনার মাধ্যমে ধর্মচর্চায় মোক্ষ লাভ হয়। ধর্ম-বিবাদ বা ধর্ম-বিভেদে নিরঞ্জন প্রাপ্তি ঘটে না। সত্তার সাধনায় তখন শব্দ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। সত্তার প্রেম যদি ঠিক থাকে তবে যে শব্দেই তাকে ডাকা হোক না কেনো সেই শব্দেই তিনি ভক্তের দ্বারে এসে বাধা পড়েন।’
আলোচনা শেষে বাউল সম্রাট লালন সাঁইজির গান পরিবেশন করেন বিশিষ্ট লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন ও সমীর বাউল।
দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রদর্শিত হয় বাউল সাধক উকিল মুন্সীর জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র। পরে বাউল সাধক উকিল মুন্সীকে নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক রেজা। প্রবন্ধের শিরোনাম ‘গীতিকবি উকিল: মানবতীর্থের পরিব্রাজ’। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট লোকসংগীত শিল্পী আকরামুল ইসলাম।
প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ড. তারেক রেজা উকিল মুন্সীকে নিয়ে তার প্রবন্ধে বলেন, ‘আষাঢ় মাইসা ভাসা পানি ও লিলুয়া বাতাস গান দুটি চমৎকার শিল্পসংহতি লাভ করেছে। হাওয়ার সঙ্গে কথোপকথনের ব্যাপারটিও এখানে পেয়েছে ভিন্নতর মাত্রা।’
আলোচনা শেষে উকিল মুন্সীর গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী মোহাম্মদ মানিক ও রোকসানা আক্তার রুপসা।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল ১০টায় চিত্রশিল্পী শফিউদ্দিন আমেদ ও আলোকচিত্রশিল্পী রশিদ তালুকদার স্মরণে জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে সুরকার ও সংগীতপরিচালক সমর দাস এবং লোকশিল্পী ও সাধক মনমোহন দত্ত লবচন্দ্র স্মরণে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে।
জয়ন্ত সাহা/সালমান/