ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির কথা বলে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৫

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৪, ০৭:৩৭ পিএম
আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪, ০৭:৩৭ পিএম
বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির কথা বলে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৫
ছবি : সংগৃহীত

বৈদেশিক মুদ্রা ডলার ও রিয়াল বিক্রির কথা বলে সহজ-সরল মানুষকে টার্গেট করে প্রতারণা করত একটি চক্র। এ চক্রের দলনেতাসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে রামপুরা থানা পুলিশ। ঈদ সামনে রেখে বেশ তৎপর হয়ে উঠছিল চক্রটি। 

পুলিশের তথ্যমতে, চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিত মোটা অঙ্কের টাকা। পূর্ব রামপুরা ও মৌলভীরটেক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন মো. মহসিন (৩৫), মো. সুলতান (৫৭), মো. আনোয়ার (৫৭), মো. শওকত আলী (৬০) ও মো. কালাম (৬১)।

শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার রাতে রামপুরা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ডলার, রিয়াল ও বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক মুদ্রা দেখিয়ে এবং বিক্রির কথা বলে প্রতারণা করা একটি চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই চক্রটি সাধারণ সহজ-সরল মানুষদের টার্গেট করে প্রতারণার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়। দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের এলাকায় অবস্থান করে প্রতারণা করত। চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দলনেতাসহ অন্য সদস্যদের নামে বিভিন্ন থানায় চার-পাঁচটি মামলা রয়েছে।’ আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

খাজা/

তানোরে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:০৮ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২৩ এএম
তানোরে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা

রাজশাহীর তানোরে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রী সাথী বেগমের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী আয়াতুল্লাহর (২৬) বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় সাথীর বাবা বাদী হয়ে তানোর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) আয়াতুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গৃহবধূ সাথী দুই সন্তানের জননী। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার হাকরইল গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে। আয়াতুল্লাহ তানোর উপজেলার নয়টিপাড়া গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে।

পুলিশ জানায়, আয়াতুল্লাহর পরকীয়া প্রেম নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও ঝগড়া চলছিল। বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে এর জেরে আয়াতুল্লাহ বাজার থেকে পেট্রল এনে স্ত্রীর শরীরে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ সময় প্রতিবেশীরা তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ঢাকায় নেওয়ার পথে সাথীর মৃত্যু হয়।

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘পরকীয়ার জেরে আয়াতুল্লাহ তার স্ত্রীর শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

এনায়েত করিম/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

আদালতে স্বীকারোক্তি বাস ডিপোতে আগুন দিতে ৪ লাখে চুক্তি

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৪০ এএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৪০ এএম
বাস ডিপোতে আগুন দিতে ৪ লাখে চুক্তি
চট্টগ্রামের নতুনপাড়ায় বিআরটিসি বাস ডিপোতে আগুন দেওয়ার জন্য দুই শ্রমিক লীগ নেতার মধ্যে ৪ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল বলে স্বীকারোক্তি দেন শ্রমিক লীগ নেতা মো. সোহেল। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়কের নতুনপাড়া এলাকায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাস ডিপোতে আগুন দেওয়ার জন্য দুই শ্রমিক লীগ নেতার মধ্যে ৪ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল। 

বুধবার (২৪ জুলাই) চট্টগ্রামে আদালতের কাছে স্বীকারোক্তি দেন শ্রমিক লীগ নেতা মো. সোহেল। ৪ লাখ টাকার চুক্তিতে সোহেলকে এই কাজে নিয়োগ দিয়েছিলেন আরেক শ্রমিক লীগ নেতা দিদারুল আলম। চুক্তি অনুসারে বাস ডিপোতে আগুন দেওয়ায় চারটি বাস পুড়ে যায়। এই কাজের জন্য সোহেল অগ্রিম হিসেবে পান মাত্র ৫০০ টাকা।

গত মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসেন মোহাম্মদ জুনায়েদের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সোহেল। আদালত সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দিতে সোহেল বলেছেন, নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানা শ্রমিক লীগ সভাপতি দিদারুল আলমের নির্দেশেই অক্সিজেনের বিআরটিসি বাস ডিপোতে আগুন দেন তিনি। এর আগে গত সোমবার বিআরটিসি বাস ডিপোর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সোহেলকে গ্রেপ্তার করে হাটহাজারী থানা পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরের দিন গ্রেপ্তার করা হয় শ্রমিক লীগ নেতা দিদারুল আলমকে।

বিআরটিসি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়কের নতুনপাড়ার বিআরটিসি ডিপোতে ৯৬টি সরকারি বাস রয়েছে। গত শনিবার (২১ জুলাই) রাত ১২টার দিকে ডিপোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শেডসংলগ্ন চারটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। আগুনে একটি বিআরটিসি বাসের ১৬টি আসন এবং আরেকটির ৮টি পুড়ে যায়। বাকি দুটি বাসের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় রবিবার চট্টগ্রাম বিআরটিসি ডিপোর ম্যানেজার মো. জুলফিকার বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় খবরের কাগজকে বলেন, ‘ডিপোর সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনা করে কালো শার্ট ও লুঙ্গি পরিহিত এক যুবকের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। সেই বাসে আগুন দিয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে আমরা তাকে নগরের বায়েজীদ বোস্তামী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করি। তার বাসস্থান থেকে একটি কালো শার্ট ও লুঙ্গিও জব্দ করা হয়। এগুলো মামলার আলামত হিসেবে কাজে আসবে।’

ওসি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল স্বীকার করেছেন, গত শুক্রবার বিকেলে নতুনপাড়া সিএনজি স্টেশনের সামনে দিদারুল আলম তার সঙ্গে দেখা করেন। একপর্যায়ে তাকে আগুন দেওয়ার চুক্তি করে অগ্রিম ৫০০ টাকা দেন এবং বাকি টাকা অর্থাৎ ৪ লাখ টাকা কাজের পর দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। 

জানা যায়, গ্রেপ্তার দুই শ্রমিক লীগ নেতা দিদারুল ও সোহেলকে গত মঙ্গলবার আদালতে পাঠায় পুলিশ। দিদারুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, দিদারুলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা আছে। ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাটহাজারীর নতুনপাড়া এলাকায় আবদুল হালিম ওরফে রুবেল নামের একজনকে ছুরিকাঘাতে খুন করার অভিযোগে দিদারুলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে আছে। বিআরটিসি বাসে সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়ার দ্বন্দ্বে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে জানা গেছে।

এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ এবং সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। সারা দেশে নির্বিচারে বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হচ্ছে। অথচ বিআরটিসি বাস ডিপোতে আগুন দিয়েছে শ্রমিক লীগের নেতা। যার তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।

পুলিশের বেশে পণ্যবাহী গাড়িতে ডাকাতি করত তারা

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম
আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম
পুলিশের বেশে পণ্যবাহী গাড়িতে ডাকাতি করত তারা
ছবি : খবরের কাগজ

দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে পুলিশের বেশে পণ্যবাহী গাড়ি ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডাকাতির পৃথক ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রবিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

সম্প্রতি নারয়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি ডিমের গাড়ি ডাকাতির ঘটনায় পাঁচজনকে ও সাভারের চান্দিনায় ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরার পথে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে ডাকাতির ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলো- আসলামুল হক আসলাম ওরফে বেলাল (৩৭), রমজান শেখ ওরফে কালু (৪০), মেহেদী শেখ হিরা (৩৩), জমির খান (৩৬) ও মো. জহিরুল ইসলাম চকিদার (৫০)। অপর দলটি হলো- জাহাঙ্গীর আলম (৪২), মো. মিরন ওরফে সুজন (৫০), মো. মেহেদী হাসান রাজীব (৩০), আব্দুল মতিন (৪২), বাদল মুন্সী (৪৫) ও সাগর ইসলাম (২৪)।

তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মডেলের পাঁচটি গাড়ি, পুলিশের ওয়্যারলেস, জ্যাকেট জব্দ করা হয়েছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘তারা মহাসড়কে ডিবি পুলিশের পোশাক পরে লেজার লাইটের সংকেত দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি থামিয়ে চালক ও হেল্পরের হাত-পা বেঁধে গাড়িসহ পণ্য ডাকাতি করত। এই চক্রটি ধারাবাহিকভাবে মূল্যবান যেকোনো পণ্যবাহী গাড়ি দেখলেই সংকেত দিত। সম্প্রতি রূপগঞ্জে ডিমবাহী গাড়ি থামিয়ে চালকের হাত-পা বেঁধে ডাকাতির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই চক্রটি ডাকাতি করা পণ্য বিক্রি করত। পাশাপাশি ডাকতি করে নেওয়া গাড়ি দিয়ে তারা আবার ডাকাতি করত।’

হারুন আরও বলেন, ‘আমাদের ধারাবাহিক অভিযানে সাভারের চান্দিনায় এক ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার পথে ডাকাতির শিকার হন। এই ঘটনায় করা মামলার তদন্তে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই সকল মামলা তদন্ত করতে গিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির ঘটনা বেশ কয়েকটি মামলা শনাক্ত করা হয়েছে। সে সকল ঘটনায় এই দুই ডাকাত দলের সদস্যরা জড়িত।’

ভুক্তভোগীদের করা মামলায় দেখা গেছে, এই ডাকাত দলের সদস্যরা প্রতিদিনই কোনো না কোনো মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি ডাকাতি করত।

অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, আমরা বলতে চাই দেশের কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটলে অবশ্যই মামলা করবেন। কারণ মামলা হলে তখন এই সব চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশ কাজ করতে পারবে। গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাত দলের প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে পাঁচ থেকে ১২টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। তারা সবাই পেশাদার ডাকাত দলের সদস্য।

অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মতিঝিল বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেপ্তাররা নিজেদের আড়াল করতে অত্যন্ত কৌশলী। তারা নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করত। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

খাজা/জোবাইদা/অমিয়/

এক প্রক্সিপ্রার্থীর খোঁজে এসে ধরা আরেক প্রক্সিপ্রার্থী

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫৮ এএম
আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪, ১১:১৮ এএম
এক প্রক্সিপ্রার্থীর খোঁজে এসে ধরা আরেক প্রক্সিপ্রার্থী
অভিযুক্ত কাউসার আলী। ছবি: খবরের কাগজ

নিজেই অন্তত তিনটি সরকারি চাকরির পরীক্ষায় অন্যের হয়ে প্রক্সি দিয়েছেন। বেশিরভাগ সময়ে দক্ষ প্রক্সিপ্রার্থীও খুঁজে দিয়েছেন জয়পুরহাট জেলার কাউসার আলী। গেল ১০ বছর থেকে সরকারি বিভিন্ন গ্রেডের চাকরির পরীক্ষায় প্রক্সিকাণ্ডে জড়িত এই কাউসার। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রক্সিপ্রার্থী খুঁজতে এসে শিক্ষার্থীদের হাতে ধরা পড়ছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফলিত পুষ্টি ও খাদ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী দাবি করা এই অভিযুক্ত। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল টিম তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

জানা যায়, শিক্ষক নিবন্ধন লিখিত পরীক্ষার জন্য জয়পুরহাট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক রেজার জন্য ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে ‘প্রক্সি’ পরীক্ষার্থী খুঁজে দেওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন কাউসার। সবই ঠিক ছিল কিন্তু প্রক্সিদাতার সঙ্গে দেনদরবারে না মেলায় তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে আনা হয় বলে দাবি অভিযুক্ত কাউসার আলীর।

তিনি বলেন, ‘শনিবার এনটিআরটিসির লিখিত পরীক্ষা ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে এক প্রক্সিপ্রার্থীর খোঁজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি। সোলায়মান রবিন নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথাও হয়। সবই ঠিক ছিল, কিন্তু এখানে আসার পর তারা আগে টাকার দাবি করে। আমি বলেছি পরীক্ষা শেষে টাকা দেব। কিন্তু আগে দেওয়ার জন্য জোর করে। পরে দাবিতে রাজি না হলে, শিক্ষার্থীদের কাছে আমাকে তুলে দিয়ে সটকে পড়ে।’

সাংবাদিক সমিতিতে কাউসারকে আনেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছিলেন লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের কর্মসংস্থান সম্পাদক পল্লব রানা পারভেজ।

পল্লব বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার বন্ধু বিজয় একাত্তর হল ও যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষার্থী পিয়ার সাকিব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যেতে বলে এবং সে বলে সেখানে এক প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্যকে ধরা হয়েছে। কয়েকজনকে নিয়ে যেন সেখানে যাই। পরে সেখানে গিয়ে কাউসার নামে ওই লোকের ফোনে ৫০০-এর বেশি চাকরি পরীক্ষার প্রবেশপত্র পাই। পরে আর বোঝার বাকি নেই সে প্রক্সি বা প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্য। পরে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সাংবাদিক সমিতিতে তাকে নিয়ে আসি।’

জড়িত থাকার অভিযোগ ঢাবি-জবিসহ ৯ শিক্ষার্থীর
সাংবাদিকদের সঙ্গে অভিযুক্ত কাউসারের আলাপচারিতায় উঠে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বগুড়ার সরকারি আজিজুল কলেজের শিক্ষার্থীদের নাম। যারা কি না এই প্রক্সিচক্রে বেশ সক্রিয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থী আলী আব্বাস ও ইফরাত হোসাইন, বিজয় একাত্তর হলের সোলাইমান রবিন ও ইকবাল হোসাইন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীর রাকিব হাসান।

এ ছাড়া আজিজুল হক কলেজের বাংলা বিভাগের আজিজুল, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের রায়হান, ভুগোল বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী শিমুল, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আবুজর গিফারির নামের কথা জানান কাউসার। 

প্রাথমিক চুক্তি ২০ হাজার, টিকলে লাখ টাকা
কাউসারের হোয়াটসঅ্যাপে শত শত চাকরির প্রবেশপত্র মিলেছে। কাউসার জানায়, প্রক্সির এই চুক্তিতে প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকার চুক্তি হয়। যেটিকে টিএ/ডিএ বলছেন তিনি। এ সময়ে পরীক্ষার প্রবেশপত্রও জমা রাখা হয়। টিকলে প্রক্সিপ্রার্থী পাবেন এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা।

জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবির কুয়াতপুরের বাসিন্দা কাউসার বলেন, ‘রেলওয়ের পয়েন্টসম্যান, খালাসি ও ময়মনসিংহ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২-এর মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার পদে ভিন্ন তিনজনের পরীক্ষায় প্রক্সিপ্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছিলাম। গত ২৮ জুন রেলওয়ের পয়েন্টসম্যান পদের পরীক্ষায় ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে অংশ নিয়েছিলাম। এ ছাড়া গত ৪ মে অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২-এর মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার পদের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রিলিমিনারিতে বগুড়া আজিজুল হক কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আমিনুলের মাধ্যমে মুহাম্মদ বুলবুল ইসলাম নামের একজন প্রার্থীর পরীক্ষায় বসিয়েছিলাম। ওই পরীক্ষায় প্রিলিতে পাস হয়েছিল।’

ফোনে প্রশ্ন চেয়ে কাউসারকে একাধিক কল, পুলিশে সোপর্দ
ঢাবি সাংবাদিক সমিতিতে অবস্থানকালে কাউসারের কাছে একাধিক জায়গা থেকে ফোনকল আসে এবং যে কলগুলোতে এনটিআরসিএর বিভিন্ন পরীক্ষার নিয়োগ লিখিত পরীক্ষায় গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন পাওয়ার কথা বলা হয়। পরে প্রক্টরিয়াল টিমকে পুরো বিষয়টি জানানো হলে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘শুক্রবার রাতেই আমরা অভিযুক্তকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করি। সে এখন পুলিশ হেফাজতে আছে। তার দেওয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তা ছাড়া আটক ওই ব্যক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থীর নাম বলেছে, সেসবেরও খোঁজ নিয়ে যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ওইসব হলের প্রাধ্যক্ষদের কাছে নাম পাঠানো হয়েছে।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হয় শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর রহমানের সঙ্গে। মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে ফোনকল ও বার্তা পাঠানো হলে তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

আরিফ জাওয়াদ/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৫

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৮ পিএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৮ পিএম
গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৫
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (মতিঝিল) বিভাগ।

শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুরে ডিবি মতিঝিল বিভাগের অবৈধ অস্ত্র জব্দ ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. এরশাদুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত বুধবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মতিঝিল থানার এজিবি কলোনি এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ ডাকাত সদস্যকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি ডিবির জ্যাকেট, দুটি চাকু, দুটি ডিবি পুলিশ লেখা স্টিকার, একটি প্লাস্টিকের খেলনা পিস্তল, একটি লেজার লাইট, দুটি মোবাইল এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দুটি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার ডাকাত সদস্যরা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন মহাসড়কের নির্জন স্থানে টার্গেট ব্যক্তি ও পণ্যবাহী গাড়ি আটকে ডাকাতি করে আসছিল। অভিযুক্ত সবাইকে মতিঝিল থানায় ডাকাতির মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।