![ধূমকেতু কেন বিভিন্ন রঙের হয়?](uploads/2024/02/02/1706853261.b.jpg)
ধুলা, বরফ ও গ্যাসের তৈরি এক ধরনের মহাজাগতিক বস্তু ধূমকেতু। এটি একটি সৌরজাগতিক বস্তু, যা সূর্যের খুব কাছ দিয়ে পরিভ্রমণ করার সময় কমা (একটি পাতলা, ক্ষণস্থায়ী বায়ুমণ্ডল) এবং কখনো লেজ প্রদর্শন করে। ধূমকেতুর নিউক্লিয়াসের ওপর সূর্যের বিকিরণ ও সৌরবায়ুর প্রভাবের কারণে এমনটি ঘটে। ধূমকেতু নিউক্লিয়াস বরফ, ধুলা ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাথুরে কণার দুর্বল সংকলনে গঠিত হয়। এর প্রস্থ কয়েকশ মিটার থেকে দশ কিলোমিটার এবং লেজ দৈর্ঘ্যে কয়েকশ কোটি কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। মানুষ প্রাচীনকাল থেকে ধূমকেতু পর্যবেক্ষণ করে আসছে।
ধূমকেতুর কমা ও লেজে বিভিন্ন রঙের আলো ঝিলমিল করে। তবে এই রং ধূমকেতুর বিভিন্ন উপাদানের ওপর নির্ভর করে। ধূমকেতুর নিউক্লিয়াস থেকে বের হয়ে আসা বিভিন্ন ধরনের গ্যাস ও ধূলিকণা সূর্যের আলোয় বিভিন্নভাবে প্রতিফলিত করে। এই প্রতিফলিত আলোর রং ধূমকেতুর রং হিসেবে দেখি।
ধূমকেতুর রঙের বৈশিষ্ট্য বুঝতে হলে, আলোর রঙের বিষয়ে একটু ধারণা থাকতে হবে। আলো বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তড়িচ্চুম্বকীয় তরঙ্গের সমষ্টি। দৃশ্যমান বর্ণালি বা আলোক বর্ণালি হচ্ছে তড়িচ্চুম্বকীয় বর্ণালির সেই অংশ যা মানুষের চোখে দৃশ্যমান হয়। মানুষের চোখ ৩৮০ থেকে ৭৮০ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যে সাড়া দেয়। আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হলে রং লাল আর কম হলে নীল দেখায়। এর মধ্যে কমলা, হলুদ, সবুজ, নীলসহ আরও অনেক রং রয়েছে। এই বিভিন্ন রঙের আলো মিশে সাদা আলো দেখা যায়।
ধূমকেতুর নিউক্লিয়াস থেকে বের হয়ে আসা গ্যাস ও ধূলিকণা সূর্যের আলোকে বিভিন্নভাবে প্রতিফলিত করে। কিছু গ্যাস ও ধূলিকণা নির্দিষ্ট রঙের আলোকে শোষণ করে, কিছু প্রতিফলিত করে। এই প্রক্রিয়ার ফলে ধূমকেতুর কমা ও লেজের রং পরিবর্তন হয়। কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস নীল রঙের আলোকে শোষণ করে। তাই এই গ্যাস বেশি থাকা ধূমকেতু নীল রঙের হয়। আবার সায়ানাইড গ্যাস লাল রঙের আলোকে শোষণ করে। তাই এই গ্যাস বেশি থাকা ধূমকেতু লাল রঙের হয়। ধূলিকণাগুলো সাধারণত সাদা রঙের আলোকে প্রতিফলিত করে। তাই এই ধূলিকণা বেশি থাকা ধূমকেতু দেখতে সাদা রঙের হয়। ধূমকেতুর রং অন্যান্য কারণেও পরিবর্তন হতে পারে।
এ.জে/ জাহ্নবী