ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

পাইয়ের মান গণনায় বিশ্ব রেকর্ড গণিতের রহস্য ‘পাই’

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম
আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম
গণিতের রহস্য ‘পাই’

পাই (π) গণিতের গুরুত্বপূর্ণ একটি ধ্রুবক, যা বৃত্তের পরিধি ও ক্ষেত্রফলের সঙ্গে সম্পর্কিত। এর মান প্রায় ৩.১৪১৫৯। ইউক্লিডীয় জ্যামিতিতে যেকোনো বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাতকে এই ধ্রুবক দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

পাই একটি অমূলদ সংখ্যা অর্থাৎ এটিকে দুটি পূর্ণসংখ্যার ভগ্নাংশ আকারে প্রকাশ করা যায় না। অন্যভাবে বলা যায় এটিকে দশমিক আকারে সম্পূর্ণ প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তার মানে আবার এই নয় এটিতে কিছু অঙ্ক পর্যাবৃত্ত বা পৌনঃপুনিক আকারে আসে। বরং দশমিকের পরের অঙ্কগুলো দৈবভাবেই পাওয়া যায়। পাই কেবল অমূলদ তা নয়, এটি একই সঙ্গে একটি তুরীয় সংখ্যা। অর্থাৎ এটিকে কোনো বহুপদী সমীকরণের মূল হিসেবেও গণনা করা যায় না।

গ্রিক বর্ণ পাই, গ্রিক শব্দ ‘পেরিমেত্রোস’ থেকে এসেছে। সম্ভবত ১৭০৬ সালে উইলিয়াম জোনস প্রথম এটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে লেওনার্ড অয়লার এটিকে জনপ্রিয় করেন। পাইকে গণিতে ব্যবহারের সময় ইংরেজি পাই হিসেবে উচ্চারণ করা হয়, যদিও এর গ্রিক উচ্চারণ পি। এটিকে কোনো কোনো সময় বৃত্তীয় ধ্রুবক, আর্কিমিডিসের ধ্রুবক অথবা রুডলফের সংখ্যাও বলা হয়।

১৪ মার্চ বিশ্বব্যাপী পাই দিবস হিসেবে পালিত হয়। এই দিনটি নির্ধারণ করা হয়েছে পাই এর প্রথম তিনটি অঙ্ক (৩.১৪) ও এর সঙ্গে ‘π’ প্রতীকের মিল ধরে।

পাই গণিত, বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের একটি মৌলিক ধারণা। এটি বিভিন্ন গাণিতিক সূত্র, ভৌত নীতি এবং প্রকৌশল নকশায় ব্যবহৃত হয়। পাইয়ের রহস্যময় প্রকৃতি গণিতবিদ এবং বিজ্ঞানীদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণার বিষয়বস্তু হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। গণিতের ইতিহাস জুড়ে, নির্ভুলভাবে পাইয়ের মান নির্ণয়ের ব্যাপক চেষ্টা করা হয়েছে।

এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কম্পিউটার স্টোরেজ কোম্পানি সলিডিগম এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় মানের পাই গণনায় করে রেকর্ড গড়েছে। পাইয়ের ১০৫ ট্রিলিয়ন ডিজিট পর্যন্ত মান গণনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কয়েক হাজার স্মার্টফোনের সমান কম্পিউটিং শক্তি ব্যবহার করে এই মান নির্ণয় করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই ডেটা সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে ১ পেটাবাইট বা ১০ লাখ গিগাবাইট স্টোরেজ ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন ডিভাইস। টানা ৭৫ দিন সময় লেগেছে এই মান বের করতে।

গত ১৪ মার্চ পাই দিবসে ১০৫ ট্রিলিয়নের ঘর পর্যন্ত দশমিক স্থানের অঙ্ক বের করেছে ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত সলিডিগম। নতুন আবিষ্কৃত ১০৫ ট্রিলিয়ন সংখ্যাটা আসলে কত বড়? ১ হাজার বিলিয়নে হয় এক ট্রিলিয়ন। এক বিলিয়ন মানে ১০০ কোটি। সুতরাং ১ ট্রিলিয়ন মানে ১ লাখ কোটি। আপনি যদি ১০ আকারের ফন্ট ব্যবহার করে ১০৫ ট্রিলিয়ন টাইপ করেন, তাহলে ৩৭০ কোটি কিলোমিটার দীর্ঘ হবে এ লাইন। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে লাইন শুরু হলে ইউরেনাস এবং নেপচুনের মাঝামাঝি কোথাও গিয়ে থামবে। নতুন আবিষ্কৃত মানের শেষ সংখ্যাটি হলো ৬।

মহাবিশ্ব বা মহাজাগতিক জটিল কোনো হিসাব-নিকাশ করতে পাইয়ের এ রকম বড় মান দরকার পড়ে না। মহাবিশ্বের জন্য সর্বোচ্চ দশমিকের পরে পাইয়ের ৪০ ঘর পর্যন্ত মান-ই যথেষ্ট। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এখন পর্যন্ত দশমিকের পরে ১৫ ঘর পর্যন্ত মান ব্যবহার করেছে পাইয়ের। নতুন কম্পিউটার প্রোগ্রাম এবং ডেটা স্টোরেজ সিস্টেমগুলো পরীক্ষা করার জন্য একটি বেঞ্চমার্ক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সংখ্যাটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

১৯৮৯ সালে ১০০ কোটি ঘরের পাইয়ের মান নির্ণয় সম্ভব হয়েছে। পৃথিবীর প্রথম অ্যানালগ কম্পিউটার এনিয়াকের সাহায্যে ১৯৪৯ সালে ৭০ ঘণ্টার চেষ্টায় পাইয়ের মান পাওয়া গিয়েছিল ২ হাজার ৩৭ ঘর পর্যন্ত। এরপর হাজার থেকে লাখে যেতে সময় লেগেছে ১৩ বছর। ততদিনে কম্পিউটার আরও উন্নত হয়েছে। ১৯৮৯ সালে ১০০ কোটি ঘরের পাইয়ের মান নির্ণয় সম্ভব হয়েছে। কোটি থেকে এখন ট্রিলিয়নে পৌঁছে গেছে পাইয়ের মান। বুঝতেই পারছেন কম্পিউটারের অগ্রগতির চিত্রটা কেমন ঊর্ধ্বমুখী। কম্পিউটার আসলে কতটা উন্নতি করল, তা বোঝা যায় পাইয়ের মান দেখে।

কম্পিউটারে তো ট্রিলিয়ন ঘর পর্যন্ত পাইয়ের মান বের করা গেছে। তবে  মানুষ এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭০ হাজার ঘর পর্যন্ত পাইয়ের মান মুখস্থ করতে পেরেছে। এটি করেছে ভারতের ভেলোর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (ভিআইটি) রাজবীর মিনা। যিনি সর্বোচ্চ ৭০ হাজার ঘর পর্যন্ত পাইয়ের মান মুখস্থ বলতে পারেন।

ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী কম্পিউটার আবিষ্কার হলে হয়তো পাইয়ের আরও বড় মান পাওয়া যাবে। সে জন্য হয়তো ব্যবহার করতে হবে সুপার কম্পিউটার বা কোয়ান্টাম কম্পিউটার। পাইয়ের মান লিখে যেহেতু শেষ করা যাবে না, তাই সবচেয়ে বড় মান নির্ণয় করার লড়াইটা চলবে সম্ভবত আজীবন।

জাহ্নবী

হীরার ভাণ্ডারের সন্ধান ভিনগ্রহে

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৬ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৬ পিএম
হীরার ভাণ্ডারের সন্ধান ভিনগ্রহে
প্রতীকী ছবি

মহামূল্যবান রত্ন হীরা। মাটি খুঁড়লেই হীরার খনি। জমা রয়েছে মাটির অনেক গভীরে। যেখান থেকে হীরা আনার পথ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে সেই গভীরতায় পৌঁছানোর সাধ্য নেই কারও। সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ বুধের অভ্যন্তরে রয়েছে হীরার পুরু পাত। চীনের বেজিংয়ে সেন্টার ফর হাই-প্রেশার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অ্যাডভান্সড রিসার্চের বিজ্ঞানী ইয়ানহাও লিং এবং তার দল এক গবেষণাপত্রে এ তথ্য জানিয়েছেন।

সৌরজগতের সবচেয়ে ছোট গ্রহ বুধ। গ্রহটির কেন্দ্র এর মোট আয়তনের তুলনায় বিশাল। এ গ্রহের মোট ভরের তুলনায় কেন্দ্র প্রায় তিন-চতুর্থাংশ। অন্যদিকে পৃথিবীর কেন্দ্র তার ভরের তুলনায় মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। অদ্ভুত বটে! ইয়ানহাওয়ের মতে, পৃথিবীর চেয়ে অনেকটা কম পরিমাণে হলেও বুধ গ্রহে চৌম্বকক্ষেত্রের উপস্থিতি রয়েছে। চৌম্বকক্ষেত্রের পাশাপাশি সেখানকার উচ্চ তাপমাত্রা এবং উচ্চ চাপ থাকার কারণে কার্বনের উপস্থিতিও অত্যধিক। সেই তাপমাত্রা ও চাপে গ্রাফাইটে পরিণত হয়ে যায় কার্বন।

বিজ্ঞানীদের দাবি, লাভার সমুদ্র ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হয়ে শক্ত হয়ে যায়। বুধ গ্রহের প্রায় ৪৮৫ কিলোমিটার গভীরে হীরার একটি মোটা পাতের উপস্থিতির সম্ভাবনা রয়েছে।  ইয়ানহাও জানিয়েছেন, এই পাতটি ১৫ কিলোমিটার পুরু হতে পারে। তবে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে সেই হীরা খনন করা অসম্ভব হবে। সূত্র: আনন্দ বাজার

/আবরার জাহিন

বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও অমূল্য রত্ন হীরা

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪০ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪০ পিএম
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও অমূল্য রত্ন হীরা
ছবি: সংগৃহীত

হীরা পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু। হীরা-জহরত মণি-মাণিক্যের প্রতি মানুষের আকর্ষণ সম্ভবত চিরন্তন। সবসময়ই এটি থাকে সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে হীরার দাম নিয়ে সবার মধ্যেই রয়েছে কৌতূহল। জেনে নেওয়া যাক বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও চোখধাঁধানো কিছু হীরা সম্পর্কে।

কোহিনুর
হীরা সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান আছে এমন যেকোনো ব্যক্তি ‘কোহিনুর’ হীরার নাম শুনেছেন। এই হীরক খণ্ডটির যেমন রত্নমূল্য আছে, তেমনি এর সঙ্গে অনেক ঐতিহাসিক রাজনৈতিক ঘটনাও জড়িত। জানা যায়, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত ও প্রাচীনতম হীরক খণ্ড থেকে তৈরি হয়েছে। কোহিনুর শব্দের অর্থ আলোক পর্বত। উপমহাদেশের গর্ব ১০৫ দশমিক ৬ ক্যারেটের এই হীরা। এখনো এটি ব্রিটেনের প্রয়াত রানি এলিজাবেথের মুকুটে শোভা পাচ্ছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিশুদ্ধ হীরা হিসেবে মানা হয়। একটা সময় পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় হীরা ছিল এটি। তবে এর উজ্জ্বলতা ও গুণমান বাড়াতে পুনরায় কাটিং করা হয়। এতে করে এটি রূপান্তর হয় ৮৬ ক্যারেটে। তবে এর ঐতিহ্য ও বিশুদ্ধতার জোর এতই বেশি যে, এর দাম অনুমান করা কঠিন।

পিংক স্টার
অতি দুর্লভ প্রকৃতির গোলাপি রঙের হীরা ‘পিংক স্টার’। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দামি হীরা এটি। ১৯৯৯ সালে আফ্রিকার এক খনিতে এটি পাওয়া যায়। এটিকে কেটে চকচকে করতে সময় লেগেছে দুই বছর। ডিম্বাকার পিংক স্টার হীরাটি ৫৯ দশমিক ৬ ক্যারেট। বিবিসির তথ্যমতে, এত বড় গোলাপি হীরা পৃথিবীর ইতিহাসে আর কখনো দেখা যায়নি।
এই হীরা ২০১৭ সালে হংকংয়ে এক নিলামে তোলা হয়। যেখানে এটি ৭ কোটি ১০ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছে। নিলামে মাত্র পাঁচ মিনিট দর হাঁকাহাঁকির পরই এটি বিক্রি হয়ে যায়। পৃথিবীতে নিলামে বিক্রি হওয়া মূল্যবান পাথরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে দামি।

দ্য স্যানকি ডায়মন্ড
হালকা হলুদাভ বর্ণের হীরা ‘দ্য স্যানকি’। এই হীরক খণ্ডের মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি। এটি কখনো বিক্রি হয়নি। তাই এর অর্থমূল্যও জানা যায়নি। তবে এটি অমূল্য রত্ন। এই হীরা ৫৫ দশমিক ২৩ ক্যারেট। এটি ভারতের মোগলদের প্রিয় ছিল। এখন এটি ফ্রান্সের ল্যুভর জাদুঘরের ফ্রেঞ্চ ক্রাউন জুয়েল কালেকশনে শোভা পাচ্ছে। এটি এতটাই দুর্লভ যে এখনো এর দাম নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

দ্য কলিন্যান
বিশ্বের বৃহত্তম রত্ন ‘দ্য কলিন্যান’ হীরা। এটি ১৯০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রান্সভালের প্রিমিয়ার খনিতে আবিষ্কৃত হয়েছিল। এই হীরক খণ্ডটি ৩ হাজার ১০৬ দশমিক ৭৫ ক্যারেটের। স্যার থমাস কিউলিনানের নামে নামকরণ করা হয়েছে, যিনি খনিটি আবিষ্কার করেছিলেন। এটি ৯টি বড় আকারে ও প্রায় ১০০টি ছোট আকারে কাটা হয়েছিল। এটি এখনো ব্রিটিশ রয়্যালটির রাজকীয় সংগ্রহে রয়েছে।

ডি বিয়ারস সেন্টেনারি ডায়মন্ড
পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ হীরাগুলোর মধ্যে একটি ‘ডি বিয়ারস সেন্টেনারি ডায়মন্ড’। এই হীরার নামকরণ করা হয়েছে দে বিয়ারস কনসোলিডেটেড মাইনসের নামানুসারে। এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বর্ণহীন হীরা। এটা এতটাই নিখুঁত যে জেমলজিক্যাল ইনস্টিটিউট অব আমেরিকা একে গ্রেড ডি-তে অন্তর্ভুক্ত করেছে। অর্থাৎ এর ভেতরে এবং বাইরে পুরোটাই নিখুঁত। খনি থেকে পাওয়ার পরে এই হীরাটির ওজন ছিল ৫০০ ক্যারেটের ওপরে। হার্ট শেপে কাটতে গিয়ে এর ওজন দাঁড়ায় ২৭৩ দশমিক ৮৫ ক্যারট। ৫০০ ক্যারেট থেকে কেটে প্রায় অর্ধেক করে ফেলার পেছনে কারণ এর রং ও স্বচ্ছতাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। সবচেয়ে মজার বিষয় এই হীরাটিকে কাটতে অভিজ্ঞ কাটিং দলকে ১৫৪ দিন ব্যয় করতে হয়েছে। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারে এই স্বচ্ছ সাদা হীরার দাম ১০০ মিলিয়ন ডলার। 

দ্য হোপ ডায়মন্ড
রহস্যময় হীরা ‘দ্য হোপ’। এটিও অমূল্য। খালি চোখে একে খুব নীল দেখালেও অতি বেগুনি রশ্মিতে একে বেগুনি দেখা যায়। এর ওজন ৪৫ দশমিক ৫২ ক্যারেট। ধারণা করা হয়, এটি প্রায় ১১২ ক্যারেটের একটি হীরক খণ্ড থেকে কাটা হয়েছে। হোপ ডায়মন্ড পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত হীরা। মোনালিসার ছবির পর এটিই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শিল্পকর্ম, যা সবচেয়ে বেশি মানুষ পরিদর্শন করেছে। প্রথমে হীরাটি ছিল ভারতের এক মন্দিরে। হীরাটি এখন ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রিতে প্রদর্শনীর জন্য রাখা আছে। নীলাভ বেগুনি বর্ণের এই হীরাকে অভিশপ্ত বলে মনে করা হয়।

দ্য রিজেন্ট ডায়মন্ড
হীরার জগতে ‘দ্য রিজেন্ট’ প্রকৃত অর্থেই রত্ন হিসেবে পরিচিত। এটি স্থান পেয়েছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজমুকুট ও রত্নভাণ্ডারে। এই হীরার দাম ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার।

 

আমেরিকার তিন রাজ্যে হত্যা করা হবে ৫ লাখ প্যাঁচা

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম
আমেরিকার তিন রাজ্যে হত্যা করা হবে ৫ লাখ প্যাঁচা
ছবি: সংগৃহীত


বিলুপ্তির হাত থেকে বিপন্ন প্রজাতির স্পটেড বা দাগযুক্ত প্যাঁচাকে বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্রের বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা একটি বিতর্কিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তারা আগামী তিন দশকে ব্যারেড প্রজাতির প্রায় ৫ লাখ প্যাঁচা মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছেন।

গত সপ্তাহে ইউএস ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের প্রকাশিত কৌশলের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ওরেগন, ওয়াশিংটন এবং ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের বনাঞ্চলে স্পটেড প্যাঁচার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এ ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা। পশ্চিম উপকূলের ঘন জঙ্গলে প্রায় ৫ লাখ ব্যারেড প্যাঁচা গুলি করে মেরে ফেলবেন প্রশিক্ষিত শুটাররা।

আমেরিকান এক সংস্থার প্রকাশিত নথি থেকে জানা গেছে, আগামী তিন দশকে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ ব্যারেড প্যাঁচা গুলি করে মেরে ফেলা হবে। পূর্ব আমেরিকা থেকে আগত এই আক্রমণকারী প্রজাতিরা পশ্চিমা অঞ্চলে ঢুকে পড়ায় তাদের সঙ্গী হিসেবে থাকা বিপন্ন স্পটেড প্যাঁচার বাস্তুসংস্থান দখল করে নিচ্ছে। ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের ছোট প্যাঁচা, উত্তরের স্পটেড প্যাঁচা ও ক্যালিফোর্নিয়ার স্পটেড প্যাঁচাগুলো আক্রমণকারী ব্যারেড প্যাঁচার কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে।

স্পটেড প্যাঁচা এবং ব্যারেড প্যাঁচা উভয়ই উত্তর আমেরিকার স্থানীয় প্রজাতি। ব্যারেড প্যাঁচা বড় এবং আক্রমণাত্মক। তারা স্পটেড প্যাঁচার খাদ্য এবং আবাসস্থল দখল করছে। ফলে স্পটেড প্যাঁচার সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, কিছু এলাকায় এগুলো বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। ব্যারেড প্যাঁচার বংশবৃদ্ধির হার বেশি হওয়ায়, এদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের অরেগন রাজ্যের তত্ত্বাবধায়ক কেসিনা লি বলেন, ‘কয়েক দশকের সহযোগিতামূলক সংরক্ষণ প্রচেষ্টার পরও উত্তরের স্পটেড প্যাঁচা বিপদে পড়ছে। এগুলো ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। স্পটেড প্যাঁচাগুলো নিজের সমগোত্রের প্যাঁচার কাছেই দুর্বল হয়ে পড়ছে।

এক প্রজাতির পাখিকে বাঁচাতে আরেক প্রজাতিকে হত্যা করার পদ্ধতি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ ও সচেতন মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। এই পদ্ধতি পশ্চিমা উপকূলে সামুদ্রিক মাছ রক্ষায় সি লায়ন মেরে ফেলার সঙ্গে মিল রয়েছে।

কিছু সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই পদ্ধতিকে মেনে নিয়েছেন, আবার কেউ কেউ মনে করেন, এটি প্রয়োজনীয় বনাঞ্চল সংরক্ষণ থেকে দৃষ্টি এড়ানোর একটি কৌশল। আগামী বসন্তে বন্দুক দিয়ে গুলি করে ব্যারেড প্যাঁচা হত্যা করা শুরু হতে পারে। মেগাফোনের সাহায্যে রেকর্ড করা ব্যারেড প্যাঁচার ডাক বাজিয়ে পাখিগুলোকে আকৃষ্ট করা হবে, পরে তাদের গুলি করা হবে। মৃত পাখি গুলোকে ঘটনাস্থলেই মাটি চাপা দেওয়া হবে।

/আবরার জাহিন

ধূমপান না করেও ফুসফুসের ক্যানসারে জটিলতা কেন?

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৪:৪৮ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৪:৪৮ পিএম
ধূমপান না করেও ফুসফুসের ক্যানসারে জটিলতা কেন?
ছবি; সংগৃহীত

ধূমপান ফুসফুসের ক্যানসারের অন্যতম প্রধান কারণ হলেও, অধূমপায়ীদের ক্ষেত্রেও এ রোগটি কেন দেখা দেয়, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে আসছেন। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকা’ ও ‘ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউট’ এর গবেষক দল এ বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেছেন। তাদের গবেষণা অনুসারে, ‘নন-স্মল সেল লাং ক্যানসার (এনএসসিএলসি)’ নামক ক্যানসারের চিকিৎসা ব্যর্থতার পেছনে বিশেষ ধরনের ‘জেনেটিক মিউটেশন’ ও ‘জিনোম ডুপ্লিকেশন’ দায়ী হতে পারে।

এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত বিজ্ঞান জার্নাল ‘ন্যাচার কমিউনিকেশনস’-এ। গবেষণায় দেখা গেছে, ফুসফুসের ক্যানসার কোষে বিশেষ ধরনের ‘জেনেটিক মিউটেশন’ থাকলে, সেই কোষগুলোর জিনোম দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ফলে এসব ক্যানসার কোষের চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়ে। যুক্তরাজ্যে ক্যানসারে আক্রান্তদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসার তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এটি ক্যানসারে মৃত্যুরও প্রধান কারণ।

এনএসসিএলসির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ‘এপিডার্মাল গ্রোথ ফ্যাক্টর রিসেপ্টর জিন (ইজিএফআর)’-এর মিউটেশন। যুক্তরাজ্যে ‘এনএসসিএলসি’তে আক্রান্ত ১০-১৫ শতাংশ রোগীর মধ্যে, বিশেষ করে অধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে, এই ইজিএফআর মিউটেশন দেখা যায়। এই মিউটেশন ক্যানসার কোষ দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

১৫ বছরেরও আগে ইজিএফআরকে লক্ষ করে ‘ইজিএফআর ইনহিবিটর্স (EGFR Inhibitors)’ নামে নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল। তবে এই চিকিৎসা সব রোগীর ক্ষেত্রে সমানভাবে কার্যকরী নয়। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে টিউমারের আকার ছোট হলেও, অন্যদের বিশেষ করে ‘পি-৫৩’ জিনের রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তেমন ভালো হয় না। যে কারণে তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও কম থাকে। আর এখন পর্যন্ত এ ভিন্নতার কারণগুলো অস্পষ্ট ছিল। এই রহস্য উন্মোচনের জন্য গবেষকরা সর্বশেষ ইজিএফআর ইনহিবিটার ‘ওসিমার্টিনিব’-এর ওপর করা গবেষণার ডেটা আবার বিশ্লেষণ করেছেন। তারা শুধু ইজিএফআর মিউটেশন যুক্ত রোগীদের তুলনায় ইজিএফআর ও পি-৫৩ উভয় জিনের মিউটেশনযুক্ত রোগীদের ডেটাও পরীক্ষা করেছেন।

‘ইউসিএল ক্যানসার ইনস্টিটিউট’-এর ক্লিনিকাল অনকোলজিস্ট পরামর্শক ড. ক্রিস্পিন হিলি বলেছেন, ‘এই গবেষণা থেকে আমরা দেখতে পেয়েছি, মিউটেশন ও জিনোমিক প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে রোগীদের শনাক্ত করা সম্ভব। যারা ইজিএফআর ইনহিবিটার থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন। ফলে তাদের আরও ভালো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।’

/আবরার জাহিন

ভিনগ্রহে পচা ডিমের গন্ধযুক্ত রাসায়নিকের সন্ধান

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৪:৪৬ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম
ভিনগ্রহে পচা ডিমের গন্ধযুক্ত রাসায়নিকের সন্ধান
এক্সোপ্ল্যানেট এইচডি ১৮৯৭৩৩বি। ছবি: সংগৃহীত

২০০৫ সালে আবিষ্কৃত হয়েছে ‘এইচডি ১৮৯৭৩৩ব’ নামের ভিনগ্রহ। আগে থেকে এই গ্রহের বিশেষ অবস্থার জন্য পরিচিতি রয়েছে। জুপিটার বা বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে আকারে কিছুটা বড় এই গ্যাসীয় গ্রহের তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি। এর রং কোবাল্ট নীল। এখানে নিরবচ্ছিন্ন ঝড়ের কারণে গলিত কাচের বৃষ্টি হয়। তবে এই কাচের বৃষ্টি প্রচণ্ড ঝোড়ো হাওয়ায় অনুভূমিকভাবে বয়ে চলে, যার গতি প্রতি ঘণ্টায় ৮ হাজার ৪৮ কিলোমিটার। এখন এর সঙ্গে যোগ হলো আরও একটি বিশেষত্ব, যা হচ্ছে পচা ডিমের গন্ধযুক্ত রাসায়নিকের সন্ধান। বিশ্বজগতের এ রহস্যময় গ্রহ সম্পর্কে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে এই নতুন তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রথমবারের মতো পচা ডিমের গন্ধের জন্য দায়ী হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে পাওয়া গেছে। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের নতুন তথ্যে এইচডি ১৮৯৭৩৩বি গ্রহ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। এই গ্রহ আমাদের সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত, এ জাতীয় গ্রহগুলোকে এক্সোপ্ল্যানেট (exoplanet) বলা হয়।

এই গবেষণার প্রধান লেখক জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞানী গুয়াংওয়ে ফু বলেন, ‘হ্যাঁ, এই দুর্গন্ধ নিঃসন্দেহে গ্রহটির কুখ্যাতি আরও বাড়িয়ে দেবে। এটি এমন একটি গ্রহ যেখানে মানুষ যেতে চাইবে না, তবে গ্রহবিজ্ঞান সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান সমৃদ্ধ করতে এটি গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

এক্সোপ্ল্যানেট এইচডি ১৮৯৭৩৩বি

এইচডি ১৮৯৭৩৩বি গ্রহ ‘হট জুপিটার’ নামে পরিচিত। এটি সৌরজগতের বৃহস্পতির মতো গ্যাসীয় জায়ান্ট গ্রহ। তবে এটি তার নক্ষত্রের অনেক কাছে থাকায় বৃহস্পতির চেয়ে অনেক বেশি গরম। গ্রহটি সূর্যের চেয়ে তার নক্ষত্রের চারদিকে ১৭০ গুণ কাছে ঘুরে। এটি তার নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করতে মাত্র দুদিন সময় নেয়। যেখানে বৃহস্পতির সূর্যের চারদিকে একবার প্রদক্ষিণ সম্পূর্ণ করতে ১২ বছর লাগে।

গ্রহটির নক্ষত্রমুখী অংশের তাপমাত্রা প্রায় ৯৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৭০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট), যা আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে নিকটতম গ্রহ বুধের চেয়েও ১৩ গুণ বেশি। এমন ঘটনা খুবই বিরল বলে জানান গুয়াংওয়ে ফু। এই গ্রহটি পৃথিবী থেকে ৬৪ আলোকবর্ষ দূরে ‘ভল্পেকুলা’ নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত। এক আলোকবর্ষ হলো আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে।

গুয়াংওয়ে ফু আরও বলেন,‘ এত কাছে অবস্থানের কারণে গ্রহটি উজ্জ্বল এবং এর বায়ুমণ্ডলের বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ সহজ। এই গবেষণায় পাওয়া হাইড্রোজেন সালফাইডের মতো উপাদান অন্য অনেক দূরবর্তী গ্রহে শনাক্ত করা অনেক কঠিন হয়ে উঠত। আমাদের অনুমান ছিল, এটা শুধু বৃহস্পতি গ্রহে থাকতে পারে। তবে প্রথমবারের মতো সৌরজগতের বাইরে এটি শনাক্ত করা গেছে। আমরা এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজছি না। কারণ এই গ্রহ অনেক গরম। তবে এতে হাইড্রোজেন সালফাইড পাওয়ার বিষয়টি অন্যান্য গ্রহে এই অণু খুঁজে পাওয়া ও বিভিন্ন ধরনের গ্রহ কীভাবে গঠিত হয়, সে সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে।’

বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘ন্যাচার (Nature)’-এ নতুন গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করেছেন গবেষকরা। সূত্র: রয়টার্স