সড়ক-মহাসড়কে গতিসীমা নির্ধারণ হচ্ছে । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

সড়ক-মহাসড়কে গতিসীমা নির্ধারণ হচ্ছে

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ১২:৪৯ পিএম
সড়ক-মহাসড়কে গতিসীমা নির্ধারণ হচ্ছে
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়

দেশব্যাপী সড়ক-মহাসড়ক, এক্সপ্রেসওয়ে ও মহানগরীর সড়কে মোটরযানের গতিসীমা নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ইতোমধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে খসড়া প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই সে খসড়া চূড়ান্ত হলে সড়ক-মহাসড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা কত হবে, তা নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে মন্ত্রণালয়।

বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, দেশের সব জাতীয় মহাসড়কে যানবাহনের গতিসীমা সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। আর ঢাকা শহরের জন্য গতিসীমা হবে সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার।

বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার গতকাল রবিবার খবরের কাগজকে বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর ধারা ৪৪-এর উপধারা-১ অনুযায়ী বিভিন্ন শ্রেণির সড়কে মোটরযানের গতিসীমা নির্ধারণ করা হচ্ছে। যেকোনো সময় এটি প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হবে। নীতিমালায় দেশের সব ধরনের সড়কে গাড়ির গতিবেগ কোথায় কেমন হবে তা বলা হয়েছে। সড়কের আশপাশের পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এমনকি গ্রামীণ সড়কেও গতিসীমা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। এটি নির্ধারণ হলে অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণে বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করবে।’

বিআরটিএ বলছে, এখনো সারা দেশে রাস্তাভেদে গতিসীমা নির্ধারণ করা আছে। তবে সব ক্ষেত্রে সেই গতিসীমা মানা হয় না। জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে গতিসীমা থাকলেও অন্যান্য সড়কে থাকে না।

সড়ক-মহাসড়কে ও মহানগরীর সড়কে মোটরযানের গতিসীমা নিয়ে গত সপ্তাহে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে একাধিক সভা হয়েছে অংশীজনদের সঙ্গে। তবে বিআরটিএ কর্মকর্তারা জানান, যদিও গতিসীমা নীতিমালা ছয় মাস আগেই মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে সেটি নিয়ে বিভিন্ন সময় কাজ করাতে প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করতে সময় লাগছে।

এর আগে সব শ্রেণির সড়কে মোটরযানের গতিসীমা নির্ধারণের জন্য গতিসীমা ম্যাপ তৈরি করা হয়। এ ম্যাপে মহাসড়কের কোন অংশে গাড়ির সর্বোচ্চ গতি কত হবে, তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হক বলেন, তবে জাতীয় মহাসড়ক ও এক্সপ্রেসওয়েতে ৮০ কিলোমিটার মানে সব সময়ই ৮০ কিলোমিটার থাকবে তা নয়। অবস্থা অনুযায়ী গতিসীমা পরিবর্তন করতে হবে।

জাতিসংঘ বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী মহানগরের সড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৩০ কিলোমিটার। আর এটিকে সামনে রেখেই রাজধানীর গতিসীমা নির্ধারণ করার চিন্তা ছিল। তবে বিমানবন্দরসহ কিছু সড়কে এত কম গতিতে গাড়ি চালানো সম্ভব নয় বিধায় ঢাকার ওই ‘প্রাইমারি সড়কে’ গতিসীমা সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার করা হয়েছে বলে জানান বিআরটিএর শীর্ষ কর্মকর্তাদের একজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই কর্মকর্তা বলেন, ২০২২ সাল থেকে গতিসীমা নির্ধারণের এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। বাংলাদেশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), সিটি করপোরেশন, পৌরসভার মতো সংস্থাগুলো সাধারণত সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণ করে। তাই প্রতিটি সংস্থা তাদের আওতায় থাকা সড়কের ম্যাপ তৈরি করেছে।

বিআরটিএ সূত্র বলছে, মহাসড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হলেও সড়কের সব জায়গায় এই গতিতে গাড়ি চলতে দেওয়া যাবে না। সড়কের পাশে যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা অফিস-আদালত রয়েছে, সেখানে যানবাহনগুলোকে গতি কমানোর নির্দেশক দেওয়া হবে। হাটবাজার এলাকার জন্যও আলাদা গতিসীমা নির্ধারণ করা হবে। গতিসীমা আরোপের ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক এসব বিষয় ছাড়াও সড়ক অবকাঠামোর বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হবে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ‘খুব দ্রুত প্রজ্ঞাপন হয়ে যাবে। হয়তো এক-দুই দিন সময় লাগবে।’

মহাসড়কে ৮০ ও ঢাকা মহানগরে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৪০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন যদি হয় তাহলে সেটিই দেখতে পাবেন।’

তবে সড়ক-মহাসড়কে গতিসীমা নির্ধারণ করা হলেও পরিবহনচালকরা তা মেনে চলছেন কি না, তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেট নেই পর্যাপ্ত। সংস্থাটির এনফোর্সমেন্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা মহানগরীতে ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট বহাল থাকার কথা থাকলেও এখন কাজ করছেন মাত্র পাঁচজন। চট্টগ্রামে তিনজনের স্থলে একজন, খুলনায় একজন, ময়মনসিংহে একজন রয়েছেন। সিলেট, রংপুর ও বরিশালে বিআরটিএর কোনো ম্যাজিস্ট্রেট নেই।

এনফোর্সমেন্ট বিভাগ শূন্য পদে নিয়োগের আবেদন জানিয়ে ছয় মাস ধরে চিঠি চালাচালি করলেও আশানুরূপ সাড়া মিলছে না বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, বিআরটিএর অভিযানে ঢাকায় সিটি করপোরেশন, ডিএমপি, ডিটিসিএর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে। বাইরে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা সহায়তা করছেন। বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বাড়ানো হবে শিগগির। তাতে সংস্থাটির কার্যক্রমেও গতি বাড়বে।

এর আগে ২০১৫ সালে দেশের মহাসড়কগুলোতে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে দিয়েছিল জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল। ২০১৫ সালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কাউন্সিল সভায় অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন চলাচল ঠেকাতে গাড়িতে ‘স্পিড গভর্নর’ নামের একটি যন্ত্রও বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে পরবর্তী সময়ে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি।

সড়কে গতিসীমা নীতিমালা নিয়ে জানতে চাইলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, ‘কোন সড়কে গতিসীমা কত হবে তা কিন্তু সরকার নির্ধারণ করে দেয় না। নির্দিষ্ট এলাকার সড়কে গতি কত হবে তা ওই এলাকার সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীরাই ঠিক করে দেবেন। এখন সড়কের কোনো সেকশনে গতি কমাতে হলে সড়কের শ্রেণিভেদ অনুযায়ী তার গতিসীমা ঠিক করতে হবে। আমাদের সড়ক আধুনিকায়ন করা হয়েছে গতি বাড়ানোর জন্য। এখন সেই সড়কে হুট করে গতিসীমা কমিয়ে দিলে তাতে গণপরিবহন চলাচলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।’

বুয়েটের অধ্যাপক ও অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘আমাদের দেশে যেসব এক্সপ্রেসওয়ে করা হচ্ছে, সেগুলোর জ্যামিতিক নকশার সঙ্গে গতি নির্ধারণের বিষয়টি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এক্সপ্রেসওয়ে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে গাড়িগুলো চলতে পারে। এখন সেই গতিসীমা কমিয়ে আনা হলেও সড়ক কাঠামোর কারণে সেই গতি সহজে কমিয়ে আনা যাবে না। অনেক গাড়িচালক মামলার ফাঁদে পড়বেন।’

অধ্যাপক হাদিউজ্জামানের মতে, সড়কে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এখন সড়কে গতিসীমা নীতিমালা করতে যাচ্ছে বিআরটিএ। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমরাও সড়কে যান চলাচলের গতিসীমা বাড়াতে বিনিয়োগ করেছি। এখন গতি নিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গ এনে নীতির বিষয়ে প্রশ্নই সামনে আনা হচ্ছে।’

সড়ক যেন ‘ধান মাড়াইয়ের উঠান’

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
সড়ক যেন ‘ধান মাড়াইয়ের উঠান’
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া-শিবগঞ্জ সড়কের ওপর ধানের খড় শুকানো হচ্ছে। খবরের কাগজ

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন সড়ক দখল করে চাষিরা বোরো ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর কাজ করছেন। এতে যানবাহনের চালক ও পথচারীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ওই সড়কে চলাচলকারীরা বলছেন, রাস্তার ওপর ধান শুকানোর কারণে গাড়ি ধীরে চালাতে হয়।

এতে তাদের ট্রিপের সংখ্যা কমায় আগের তুলনায় আয় কমেছে। পাশাপাশি রয়েছে ছোট-বড় দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা। তারা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। অধিকারকর্মীর ভাষ্য অনুযায়ী, বাড়িতে উঠান ছোট থাকার মতো ঠুনকো কারণকে সামনে এনে অনেকে রাস্তার ওপর ধান শুকাচ্ছেন। এগুলো বন্ধ করা প্রয়োজন। 

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের পাশেই শ্যালোচালিত ইঞ্জিন দিয়ে ধান মাড়াই করা হচ্ছে। মাড়াই শেষে সড়কের ওপরেই সেগুলো শুকানো হচ্ছে। অনেকে ধান বাড়ি নিয়ে গেলেও খড় শুকানোর জন্য সড়কের ওপরই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছেন। শুকানো শেষ হলে সড়কের পাশেই সেগুলো স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

ফুলবাড়িয়া-শিবগঞ্জ সড়কে অটোরিকশা চালান আকরাম হোসেন। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘সড়কে ধান মাড়াইয়ের আগে প্রতিদিন গড়ে ১৩০০ টাকার ভাড়া উঠত। ৮০০ টাকা অটোরিকশার মালিককে দেওয়ার পরও ৫০০ টাকা থাকত। কিন্তু বর্তমানে সড়ক দখল করে ধান মাড়াইয়ের কারণে গাড়ি ধীর গতিতে চালাতে হয়। এতে ট্রিপের পরিমাণ কমে আসছে। এ জন্য প্রতিদিন ৭ থেকে ৮শ টাকার বেশি ভাড়া ওঠে না। ফলে মালিককে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেওয়ার পর নিজের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

সিএনজিচালিত অটোরকিশার চালক সেলিম মিয়া বলেন, ‘কিছুদিন আগে যাত্রী নিয়ে শিবগঞ্জ বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম। পথে ধান-খড়ে চাকা পিছলে সিএনজি উল্টে যায়। এতে তিন যাত্রী আহত হন। সড়কে ধান মাড়াই করার কারণে সবসময় ধীর গতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়েও গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

ফুলবাড়িয়া পৌর এলাকার বাসিন্দা খোকন মিয়া বলেন, ‘উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি সড়ক দখল করে ধান মাড়াই ও খড় শুকানো হচ্ছে। দেখে মনে হবে বাড়ির উঠান। বৃষ্টি হলে ওই খড় সড়কে কর্দমাক্ত অবস্থা ধারণ করে। পরে সেগুলো আর সরানো হয় না। ধীরে ধীরে এগুলো পচে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে থাকে। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।’

উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের পানজানা গ্রামের কৃষক চান মিয়া বলেন, আমি ৯ একর জমিতে ধান আবাদ করেছি। অনেক ধানসহ খড় বাড়ির উঠানে শুকানো সম্ভব হয় না। এ জন্য সড়কে এসেছি।

এভাবে সড়কে ধান মাড়াই করলে যানবাহনের যাত্রী, চালকসহ পথচারীদের সমস্যা হচ্ছে জানালে তিনি বলেন, ‘জানি সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সবারই কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। খুব দ্রুতই ধান-খড় সড়ক থেকে সরিয়ে বাড়িতে নেওয়া হবে।’

একই গ্রামের গৃহিণী আছমা খাতুন বলেন, আশপাশে ধান-খড় শুকানোর মতো কোনো মাঠ নেই। কয়েক বছর আগে বাড়ির উঠান বড় থাকলেও ভাগাভাগির কারণে উঠান ছোট হয়ে গেছে। তাই জমি থেকে ধান কেটে আনার পর মাড়াই ও শুকানোর যাবতীয় কাজ সড়কেই করা হচ্ছে।

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের (নিসচা) ময়মনসিংহের সভাপতি আব্দুল কাদের চৌধুরী মুন্না বলেন, সবারই যে উঠান নেই, বিষয়টি এমন নয়। অনেকের উঠান থাকা সত্ত্বেও ভালোভাবে সহজে রৌদ্রে মাড়াই করতে সড়কে নিয়ে আসেন। সড়কে চলাচলকারীদের ঝুঁকি এড়াতে ধান মাড়াই কিংবা খড় শুকানো একেবারেই উচিত নয়।

এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী জালাল বলেন, সড়ক দখল করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বেআইনি। জনস্বার্থে সড়কে ধান মাড়াই বন্ধ করা হবে।

‘মোরা না খাইয়া কষ্টে দিন কাডাব, ভারতীয়রা তো ঠিকই মাছ ধইরা নেবে’

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৯:২৩ এএম
‘মোরা না খাইয়া কষ্টে দিন কাডাব, ভারতীয়রা তো ঠিকই মাছ ধইরা নেবে’
ছবি : খবরের কাগজ

‘৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় মোরা সাগরে মাছ ধরতে না গেলেও ভারতীয়রা তো ঠিকই মাছ ধইরা নেবে। এই সময় মোরা না খাইয়া কষ্টে দিন কাডাইলেও ভারতের ট্রলারগুলা ঠিকই মাছ ধরবে। এই ৬৫ দিনে আমাগো হাজার হাজার জেলে কর্মহীন হইয়া পড়বে। এ চিন্তায় জাইল্লা পল্লিগুলা আন্ধার ইইয়া যাইতাছে।’

রবিবার (২০ মে) বিকেলে কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদর উপজেলার গোরাপদ্মমা এলাকার জেলে মো. দুলাল হাওলাদার।
 
দেশের মৎস্য সম্পদ সুরক্ষা ও মাছের বংশবিস্তারে সাগরে মাছ ধরার ওপর রবিবার মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকারি আইন মেনে উপকূলীয় বরগুনার বেশির ভাগ জেলে ট্রলার ঘাটে ফিরলেও নিষেধাজ্ঞার এই সুযোগে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা দেশের জলসীমানায় ঢুকে ইলিশ শিকার করে নিয়ে যায় বলে দাবি মো. দুলাল হাওলাদারসহ স্থানীয় জেলেদের। এ ছাড়া এ সময়ে সরকারের দেওয়া খাদ্যসহায়তাও অপ্রতুল বলে দাবি জেলেদের।

জানা যায়, বরগুনায় ২৭ হাজার ২৫০ জন সমুদ্রগামী জেলে রয়েছে। এসব জেলের জন্য প্রথম ধাপে সহায়তার চাল বিতরণ করতে গত ২৯ এপ্রিল ১ হাজার ৫শ ২৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। 

জেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, জেলে পল্লিতে জেলে পরিবারগুলোতে কর্মহীন হয়ে যাওয়ার চিন্তা বিরাজ করছে। অভাব অনটনে কাটবে এই ৬৫ দিন।

বরগুনার ঢলুয়া এলাকার নাসির নামের এক জেলে বলেন, ‘৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময়ে আমরা ৪০ কেজি চাল পাই। এ ছাড়াও যারা জেলে না, তারাও চাল পায়। কিন্তু আমাদের জন্য বরাদ্দ ৮৬ কেজি চাল আমরা পাই না। এই দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞায় ৪০ কেজি চালে আমাদের পরিবার চালানো কষ্ট হয়।’ 

পাথরঘাটার জেলে মো. সালাম বলেন, ‘এ সময়ে নদীতে ও সাগরে তেমন মাছও নেই। থাকলে পুঁজি করে কিছু টাকা রাখতে পারতাম। ধারদেনা করে জীবন চলে। আর অন্য কোনো কাজের ব্যবস্থা নেই যে সামনের ৬৫ দিন কাজ করে খাব।’

বরগুনা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের অনেকটাই কষ্টে কাটবে। এই ৬৫ দিনের জন্য জেলেদের বিকল্প কোনো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেওয়ার দাবি জানাই সরকারের কাছে। পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশ একই সময়ে সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সমুদ্রগামী জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত এসব চাল আমরা পেয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলেদের কাছে বরাদ্দকৃত চাল পৌঁছে দিতে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, ‘নিবন্ধনের বাইরে থাকা জেলেদের তালিকা করার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে তালিকার কাজ চলছে। এ ছাড়া সরকারিভাবে অন্য কোনো সহায়তা বৃদ্ধি করলে তা জেলেদের কাছে পৌঁছে দেব।’

ডলারের সরবরাহ বাড়াতে নানামুখী কৌশল

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ০২:২০ পিএম
ডলারের সরবরাহ বাড়াতে নানামুখী কৌশল
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

আড়াই বছর ধরে চলে আসা ডলারসংকট এই মুহূর্তে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্যে এক অস্থিরতা তৈরি করেছে। এর প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্ষয় হয়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। আর এ ক্ষয় ঠেকাতে আমদানি ব্যয়বহুল ও নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। ফলে বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। এ ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের মুনাফা প্রত্যাবাসন করতে পারছেন না এবং নতুন বিদেশি বিনিয়োগপ্রবাহে ভাটা পড়েছে। এ সমস্যাকে এক্সটার্নাল সেক্টর ভলাটিলিটি বা বৈদেশিক খাতের অস্থিরতা নাম দিয়ে এটিকে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখতে শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ডলারসংকটের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজার, শিল্প, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন জোর করে টাকার দর ধরে রাখা হয়েছিল। ভারতের মতো স্থিতিশীল অর্থনীতিতে যেখানে দরপতন হয়েছে ঢের বেশি, সেখানে বাংলাদেশে টাকার মান জোর করে ধরে রাখার পরিণতিতে বর্তমান দুঃসময় এসেছে।

এদিকে শীর্ষ অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মনে ডলারসংকট নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে কৌতূহল। সরকারের শীর্ষ পর্যায়েও নীতিনির্ধারণীতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে সার্বিক পরিস্থিতি। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরকালে গত বুধবার এ ব্যাপারে জানতে চান কবে নাগাদ তার দেশের ব্যবসায়ীরা এ দেশে আয়ের অর্থ নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করতে পারবেন। 

এ সমস্যা থেকে উত্তরণে সরকার কর্তৃক রেমিট্যান্সের দেওয়া প্রণোদনার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকেরও সমপরিমাণ প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ব্যাংকগুলো তাদের অফশোর হিসাবে সঞ্চিত ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রেখে টাকা নিতে পারার সুবিধা সৃষ্টি যা টাকা-ডলার বিনিময় করার মাধ্যমে তারল্য সুবিধা দেওয়া, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালার উদারীকরণ এবং সর্বশেষ ডলারের দর ৭ টাকা অবমুল্যায়ন করা হয়।

নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এসব ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের সরবরাহ বাড়াতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার গত বৃহস্পতিবার এফবিসিসিআই নেতাদের বলেছেন যে ডলার সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। তবে সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত। 

শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম খবরের কাগজকে গতকাল শনিবার বলেন, ‘আমরা গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানিয়েছি যে ডলারের সংকটে ব্যবসা ও বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি (গভর্নর) আমাদের বলেছেন, আগামী ডিসেম্বর নাগাদ ডলার সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।’

এক প্রশ্নের উত্তরে মাহবুবুল আলম মন্তব্য করে বলেন, ‘আমি মনে করি এসব ব্যবস্থা কাজে আসবে এবং আগামী দিনে ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে।’

পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালের মে-জুন সময়ে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৬৩৯ কোটি বা ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। এরপর ২০২২ সালের মে-জুনে ওই রিজার্ভ কমে হয় ৪ হাজার ১৮২ কোটি বা ৪১ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের মে-জুনে এসে রিজার্ভ কমে হয় ৩ হাজার ১২০ কোটি বা ৩১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের মে মাসে এসে রিজার্ভ আরও কমে গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অর্থাৎ ১ হাজার ৮২৩ কোটি বা ১৮ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলারে এসে ঠেকেছে। শতকরা হিসাবে রিজার্ভ ক্ষয় হয়েছে ৬০ শতাংশের বেশি।

এ সময়ে ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতনের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালের মে-জুন মাসে প্রতি ১ ডলার পাওয়া যেত ৮৬ টাকায়। পরের বছর ২০২২ সালের মে-জুনে সেই দর বেড়ে হয় ৯৩ টাকা, ২০২৩ সালের একই সময়ে তা বেড়ে হয় ১০৮ টাকা এবং ২০২৪ সালের মে মাসে এসে ডলারের দর আরও বেড়ে হয় ১১৭ টাকা। শতকরা হিসাবে দরপতনের এ হার ২৭ শতাংশের মতো।

এতদিন এ পরিস্থিতিতে অংশীজনদের (স্টেকহোল্ডার) সঙ্গে নিয়ে শুধু নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কাজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তা পুরোপুরি কাজে আসেনি। এবার ডলার সংগ্রহে সরাসরি অভিযানে নেমেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে এ লক্ষ্যে অফশোর ব্যাংকিং নীতিতে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ লক্ষ্যে বিশেষ অ্যাসাইনমেন্টে দেশের শীর্ষ ব্যাংকারদের সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। এর একটি অনুষ্ঠান হলো অফশোর ব্যাংকিং জনপ্রিয় করার উদ্যোগ। আগামী ২৫ ও ২৬ মে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট (ওবিইউ) হিসাবে আমানতে উৎসাহিত করতে আয়োজিত ‘রোড শো’তে যোগ দেবেন তারা।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের আয়োজনে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধসংক্রান্ত অপর একটি কর্মসূচিতেও যোগ দেবেন বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যাংক কর্মকর্তারা। শীর্ষ ব্যাংক নির্বাহীরা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে পাচার হওয়া অর্থ নির্ভয়ে দেশে ফেরত আনতেও ক্যাম্পেইন চালাবেন।

দেশের প্রচলিত সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনার মাধ্যমে ডলারের সরবরাহ বাড়াতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উৎসাহিত করার বিষয়টিও এ সফরে গুরুত্ব পাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমান এ দুটি কর্মসূচিতেই উপস্থিত থাকবেন। 

ডলারসংকট নিরসনে প্রথম উদ্যোগটি নেওয়া হয় গত বছরের (২০২৩ সালের) অক্টোবরে। এ সময় অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) মাধ্যমে রেমিট্যান্স আয় কিনতে আগে থেকে সরকারের দেওয়া আড়াই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোও সমপরিমাণ বা ক্ষেত্রবিশেষে আরও বেশি প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে ডলার সরবরাহ কিছুটা বাড়ে। কিন্তু ওই ব্যবস্থা টেকসই হয়নি। আবারও ভাটা পড়ে প্রবাসী আয়ে। দেশের বাজারে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার অনেকটা দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠে। মানি চেঞ্জারদের কাছেও ডলার দামি হয়ে ওঠে। কালো বা খোলাবাজারে ডলারের দর আরও বৃদ্ধি পায়। একপর্যায়ে খোলাবাজারে ১ ডলারের ক্রয়মূল্য হয় ১২৭-১২৯ টাকা পর্যন্ত। আমদানিতে প্রতি ডলার বেচাকেনা হয় ১২২-১২৩ টাকায়। 

এপ্রিলে ঈদুল ফিতরের পর ডলারের দরে তেজিভাব সামান্য কমে ১১৫ টাকায় নেমে আসে। কিন্তু ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে নিত্যপণ্য আমদানি ও বেসরকারি খাতের প্রয়োজনীয় শিল্প আমদানি বাড়ায় ডলারের দর আবারও বাড়তে থাকে। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রলিং পেগ-ব্যবস্থা প্রবর্তন করে এবং ১১০ টাকার নির্ধারিত মূল্যের ডলার একসঙ্গে ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। অর্থাৎ প্রতি ডলারের ক্রয়মূল্য হবে ১১৭ টাকা। এর সঙ্গে সরকারের দেওয়া প্রণোদনা যোগ করলে রেমিট্যান্স ডলারের দর হয় ১২০ টাকা। এ বাড়তি দরের প্রভাব হিসেবে রেমিট্যান্স আয় বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

মানি চেঞ্জারদের জন্য নির্দেশনা

বাংলাদেশ ব্যাংক গত মঙ্গলবার মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দকে ডেকে বলে দিয়েছেন, নির্ধারিত ১১৭ টাকার সঙ্গে সর্বোচ্চ ১ টাকা ৫০ পয়সা যোগ করে ডলারের দর সর্বোচ্চ ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা আদায় করতে পারবে। এর বেশি হলে লাইসেন্স বাতিল করার মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলেছেন, দেশের বিমানবন্দরগুলোতে প্রতিদিন প্রায় দুই-তিন হাজার প্রবাসী যাতায়াত করে থাকেন। তারাই একটি বড় অংশের বৈদেশিক মুদ্রা স্থানীয় বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে সরবরাহ করেন। এভাবে প্রাপ্ত ভাসমান ডলারের প্রভাব মুদ্রাবাজারে বিস্তর। এর প্রভাবেই বিনিময় হারের ওঠানামা হয় বারবার। যখন যেমন চাহিদা, তেমন দর।

অফশোর ব্যাংকিং উদারীকরণ 

অফশোর ব্যাংকিং হিসাবে আমানত রাখা হলে তা করমুক্ত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে অফশোর ব্যাংকিংয়ের আওতায় বিভিন্ন মেয়াদি স্থায়ী আমানতের সুদহার ৬ দশমিক ৮ থেকে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ পর্যন্ত। 

অফশোর আমানতের সম্ভাবনা

বাংলাদেশের দেড় কোটি বা ১৫ মিলিয়ন প্রবাসী অফশোর হিসাবে অর্থ আমানত রাখতে পারেন। এটিকে বড় সম্ভাবনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেনসহ সরকারের সমালোচনা করা অর্থনীতিবিদরা সর্বশেষ ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতনকে একটি বাজারমুখী উদ্যোগ হিসেবে ইতিবাচক বলে বর্ণনা করেছেন। তারা আরও বলেছেন, এ উদ্যোগ আরও আগে দরকার ছিল। দেরিতে হলেও এটি মন্দের ভালো।

আইএমএফের সুপারিশ মানলে শিল্পে উৎপাদন খরচ বাড়বে

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ০১:২৩ পিএম
আইএমএফের সুপারিশ মানলে শিল্পে উৎপাদন খরচ বাড়বে

ডলারসংকট চলছে। চাহিদামতো এলসি খোলার সুযোগ পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীদের অনেকেই। শিল্প খাতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এ অবস্থায় শিল্পের বিভিন্ন খাতে রাজস্ব অব্যাহতি হ্রাস-বৃদ্ধির জন্য আইএমএফের চাপের বিরোধিতা করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, সর্বস্তরে রাজস্ব বাড়ানোর চাপ বাস্তবায়ন করা হলে দেশের শিল্প খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

শিল্প খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বাজেটে নেওয়া পদক্ষেপের কারণে রাজস্ব বাড়ানো হলে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশেষজ্ঞরাও একই মত জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, শিল্পের অনেক খাতেই রাজস্ব (কর, ভ্যাট ও শুল্ক) অব্যাহতি কমানো ও প্রত্যাহার করা হচ্ছে। আর এতে কর, ভ্যাট ও শুল্ক বেড়ে যাবে। 

দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আগামী বাজেটে শিল্প খাতে কর, ভ্যাট ও শুল্ক অব্যাহতি কমানো বা প্রত্যাহার করা হলে পণ্য আমদানিতে আগের চেয়ে ব্যয় বেশি হবে। শিল্পের উৎপাদন খরচ বাড়বে। ডলারসংকটের কারণে এরই মধ্যে দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা বিপাকে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে বাজেটে রাজস্ব আরও বাড়ানো হলে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হবে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেশের ব্যবসায়ীরা কী চান তা এফবিসিসিআই থেকে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠন থেকেও আলাদাভাবে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। আমি আশা করি বাজেটে তার প্রতিফলন থাকবে।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মো. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার অন্যতম শর্ত ছিল রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি। সরকার এ শর্ত মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার করে। এখন কর, ভ্যাট ও শুল্ক অব্যাহতি কমাতে হবে। আর এতে শিল্প উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। অনেক শিল্প লোকসানে পড়ার ঝুঁকিতে আছে।’

এরই মধ্যে ব্যবসায়ীরা আগামী অর্থবছরের বাজেটে কর, ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানোর বিপক্ষে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছেন বেশ জোরালোভাবেই। তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আবেদন করে রাজস্ব ছাড় সুবিধা বহাল রাখার অনুরোধ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসছে বাজেটে শিল্প খাতে গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, কর, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে রাজস্ব ছাড় কমানো হলেও অন্য কোনোভাবে যেন শিল্প রক্ষায় সুবিধা বহাল রাখা হয়। এনবিআর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সামনে রেখে এখন বাজেট চূড়ান্ত করার শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের বাজেট প্রস্তুত কমিটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খবরের কাগজকে বলেন, আসন্ন বাজেট নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে এনবিআরের কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। আইএমএফ থেকে কর, ভ্যাট ও শুল্ক অব্যাহতি কমিয়ে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। এনবিআর চেষ্টা করেছে এ প্রস্তাব না মানতে। অনেকটা নিরুপায় হয়ে এনবিআরকে এ পরামর্শ মানতে হচ্ছে। 

বর্তমানে কর অব্যাহতি অথবা হ্রাসকৃত হারে কর প্রদানের সুবিধা পাচ্ছে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কিছু ইলেকট্রনিকস পণ্য। ২২টি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০০৮-এর ১ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া আছে। আসন্ন বাজেটে রেফ্রিজারেটর, এসি, মোবাইল ফোন ও এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের মতো পণ্যের ভ্যাট সুবিধা কমানো হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত জুসের ওপর ভ্যাটের হার বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। বর্তমানে রেফ্রিজারেটর উৎপাদক পর্যায়ে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ, মূল্য সংযোজনের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে তা ২ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বিক্রয় পর্যায়ে ৫ শতাংশ। বর্তমানে এয়ার কন্ডিশনার উৎপাদন পর্যায়ে পুরোপুরি ভ্যাট অব্যাহতি আছে। এয়ার কন্ডিশনার উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ করা হতে পারে। রেফ্রিজারেটর ও মোবাইল ফোনসেটের ক্ষেত্রে ২ শতাংশের বেশি বাড়ানো হতে পারে। জুসের মতো পানীয়ের ওপর বিদ্যমান ভ্যাট হার ৫ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হবে। এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়ানো হবে। 

জুস প্রস্তুতকারকদের বার্ষিক বিক্রি বা টার্নওভারের ওপরও ন্যূনতম করের হার বাড়নো হচ্ছে। 

রপ্তানিমুখী পোশাক খাতের জন্য সাড়ে ২৭ শতাংশ করপোরেট করের পরিবর্তে ১২ শতাংশ হারে কর সুবিধা আছে। পরিবেশবান্ধব কারখানা হলে এই হার ১০ শতাংশ। বিরাজমান এসব সুবিধা কমাতে চাপ দিয়েছে আইএমএফ। তবে কোন খাতে কতটা কমানো হবে, তা চূড়ান্ত করে সরকারের ওপর মহলকে জানিয়ে বাজেট প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ভ্যাট অব্যাহতি দাবি করলেও আমলে না এনে রিসাইকেল ফাইবার উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে তৈরি পোশাকশিল্পের বর্জ্য বা ঝুট স্থানীয়ভাবে সংগ্রহের জন্য ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ ও বাজারজাতকরণের জন্য ১৫ শতাংশ ভ্যাট বহাল রাখা হচ্ছে। 

সূত্র জানায়, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) কোনো শিল্পকারখানা স্থাপন করলে এলাকাভেদে ১০ বছর পর্যন্ত ২৫ থেকে ১০০ শতাংশ কর অব্যাহতির সুবিধা পায়। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্ক এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) প্রকল্পেও কর অবকাশ সুবিধা আছে। এসব ক্ষেত্রে নতুন করে রাজস্ব সুবিধা কমানোর হিসাব কষছে এনবিআর। শিল্প খাতের পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ, জ্বালানি, যোগাযোগ এবং অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় ৩৯ ধরনের ভৌত অবকাঠামো খাতে নির্মাণের পর ১০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন হারে কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিদ্যুৎ খাতেও বড় ধরনের কর অব্যাহতি সুবিধা আছে। যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের আয়, বিদেশি ঋণের সুদ, শেয়ার হস্তান্তরের ফলে মূলধনি মুনাফার ওপর অর্জিত আয়, রয়্যালটি, টেকনিক্যাল নো-হাউ ফি, টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফি এবং বিদেশি কর্মীদের আয়ের ওপর নির্দিষ্ট হারে কর ছাড় আছে। আসছে বাজেটে এসব খাতে রাজস্ব সুবিধা কমছে বলে সূত্র জানিয়েছে। 

আইএমএফ থেকে এনবিআরকে জানানো হয়েছে, দেশে আমদানি পণ্যের ৪৪ শতাংশের ওপর শুল্ক-কর আরোপ নেই। এ ছাড়া কিছু সরকারি প্রকল্পের পণ্য আমদানিতে শুল্ক-কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আবার কূটনীতিক এবং বিশেষ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক সংস্থার গাড়িসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা আছে। এনবিআর থেকে এরই মধ্যে এসব খাতে রাজস্ব সুবিধা কমিয়ে বাজেট প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করেছে।

এক বইয়ের রয়্যালটি ২৫ লাখ টাকা!

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪, ১২:৩০ পিএম
এক বইয়ের রয়্যালটি ২৫ লাখ টাকা!
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

অন্যকে বাঁচাতে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিয়ে দুর্নীতির মামলায় ফাঁসলেন ইমা প্রকাশনীর মালিক ও ঢাকার লালবাগ রসুলবাগের বাসিন্দা পারভীন হোসেন ভূঁইয়া। 

সম্প্রতি অবৈধ সম্পদের মামলায় ঢাকার জেলা রেজিস্ট্রার (বরখাস্ত) অহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিটে পারভীন হোসেন ভূঁইয়াকেও অভিযুক্ত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অহিদুল ইসলাম তার অবৈধ সম্পদ আড়াল করতে সম্পদ বিবরণীতে নিজের লেখা একটি বইয়ের রয়্যালটি হিসেবে পারভীন হোসেন ভূঁইয়ার কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। পারভীন হোসেনও দুদকে এসে লিখিতভাবে স্বীকারোক্তি দেন। কিন্তু দুদকের তদন্তে টাকা লেনদেনের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। 

দুদকে দেওয়া চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, নীলক্ষেতে ১৪৪-১৪৫ ইসলামিয়া মার্কেটের ইমা প্রকাশনীর মালিক আসামি পারভীন হোসেন ভূঁইয়া দুর্নীতি মামলার আসামি অহিদুল ইসলামকে বই প্রকাশের রয়্যালটি বাবদ ২৫ লাখ টাকা দিয়েছেন মর্মে বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু তদন্তকালে প্রকাশক পারভীন হেসেন ভূঁইয়া আসামি অহিদুল ইসলামের সঙ্গে করা বই প্রকাশের চুক্তিপত্র, কোন সালে কতসংখ্যক বই প্রকাশ ও বিক্রি করা হয়েছে এবং কী পরিমাণ লভ্যাংশ পাওয়া গেছে এ-সংক্রান্ত কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি। এমনকি আসামি অহিদুল ইসলামকে রয়্যালটি বাবদ দেওয়া টাকার ব্যাংক চেক, রেজিস্টার, গ্রহণযোগ্য ভাউচার বা অন্য কোনো প্রকার গ্রহণযোগ্য রেকর্ডপত্র এবং অন্য কোনো লেখককে রয়্যালটি দেওয়ার কোনো রেকর্ডপত্র দেখাতে পারেননি। এ ছাড়া পারভীন হোসেন ভূঁইয়া তার নিজ নামে কিংবা ইমা প্রকাশনীর নামে কোনো আয়কর নথি দেখাতে পারেননি এবং আসামি অহিদুল ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো লেখককে রয়‍্যালটি দেওয়ার কোনো রেকর্ডপত্রও দিতে পারেননি। শুধু তা-ই নয়, অহিদুল ইসলামের বই প্রকাশ হয়েছে ২০০০ থেকে ২০০২ সালে। অথচ রয়্যালটি লেনদেন দেখানো হয় ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৫-১৬ কর বছরে। ফলে অহিদুল ইসলামের অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ আড়াল করতে এবং অহিদুল ইসলামের অপকর্মে সহযোগিতা করতেই পারভীন হোসেন ভূঁইয়া দুদকে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে, যা দুদকের তফসিলভুক্ত দণ্ডবিধির ২০১ ও ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। 

এদিকে দুদকে দেওয়া পারভীন হোসেন ভূঁইয়ার ইমা প্রকাশনীর ঠিকানা নীলক্ষেতের ইসলামিয়া মার্কেটের ১৪৪-১৪৫ দোকানে গিয়ে দেখা যায়, সেখান মিঠু ল বুক হাউস নামের বইয়ের দোকান। দোকানের মালিক মিঠু খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি মার্কেটের শুরু থেকেই আমার এই দোকান চালাচ্ছি। ইমা প্রকাশনী নামে কোনো প্রতিষ্ঠান এই মার্কেটে নেই।’ 

এসব বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান খবরের কাগজকে বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি অপরাধীকে বাঁচানোর জন্য মিথ্যা তথ্য দিলে বা অপরাধের আলামত নষ্টের চেষ্টা কিংবা মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে কিংবা তা আদালতে প্রমাণ হলে তার কমপক্ষে তিন বছরের সাজা হতে পারে।’  

উল্লেখ্য, অহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মামলা করে দুদক। তার বিরুদ্ধে ১ কোটি ২১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৪৯ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৯৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। তদন্ত শেষে গত জানুয়ারি মাসে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। চার্জশিটে অভিযুক্তের তালিকায় পারভীন হোসেন ভূঁইয়াকে দুই নম্বরে রাখা হয়েছে।