গত বুধবার মধ্যরাত থেকে চলছে মৃদু বৃষ্টিপাত। বিরতিহীন বৃষ্টিপাতের কারণে ফরিদপুরে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। তবে কৃষি অফিস বলছে, মাঠে জমে বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে গেলে ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন মাঠের বেশিরভাগ ফসলি জমিতে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। এতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও হালি পেঁয়াজের বীজতলা তলিয়ে গেছে। কিছু এলাকায় ধানের খেতও তলিয়ে যেতে দেখা গেছে।
সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের পুরুরা সাধুপাড়া গ্রামের কৃষক শরৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, গত বুধবার দিনভর শ্রমিক দিয়ে আমি এক বিঘা জমিতে হালি পেঁয়াজ রোপণ করেছি। ওইদিন রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে আমার পেঁয়াজখেত তলিয়ে গেছে। শ্যালো মেশিন দিয়ে জমির পানি নামানোর চেষ্টা করছি। এতে পেঁয়াজের গাছ পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মো. ওমর মোল্যা নামে আরেক কৃষক বলেন, আমার পৌনে এক বিঘা জমির পেঁয়াজের বীজতলা তলিয়ে গেছে। দ্রুত খেতের পানি না শুকালে বীজতলার চারা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে ২৬ শতাংশ জমির পাকা ধান কেটে খেতে রাখি। টানা বৃষ্টির পানিতে ওই খেত তলিয়ে যাওয়ায় কাটা ধান ঘরে তুলতে পারছি না।
আটঘর ইউনিয়নের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, হালি পেঁয়াজের চারা রোপণের জন্য দুই বিঘা জমি চাষ দিয়ে সাজিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টির পানি জমে যাওয়ায় খেতের মাটি সমান হয়ে গেছে। এখন পানি শুকানোর পর নতুন করে জমি চাষ করে পেঁয়াজের চারা রোপণ করতে হবে।
ফরিদপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ফরিদপুরে এবার ৫৩০০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। আর হালি পেঁয়াজের বীজতলায় চারা আবাদ করা হয়েছে ৩০০০ হেক্টর জমিতে। এ থেকে প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আশা করা হচ্ছে। তবে এসব বীজতলা উঁচু জমিতে থাকায় তেমন ক্ষতি না হলেও যেখানে কৃষক হালি পেঁয়াজ চাষ করবেন সেখানে পানি জমে কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকরা। তবে অনেকে নিজেরাই নিচু জমি থেকে পানি সরিয়ে নিচ্ছেন মেশিন দিয়ে। এতে তারা পেঁয়াজ দ্রুত লাগাতে পারবে। এ ছাড়া যেসব মুড়িকাটা পেঁয়াজের জমিতে পানি জমেছে, সেগুলো কৃষকরা মেশিন দিয়ে সরিয়ে নিচ্ছেন। আশা করি তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।
তিনি আরও বলেন, খেতের পানি দ্রুত নামিয়ে ফেলতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদি আর বৃষ্টি না হয়, তা হলে তেমন ক্ষতি হবে না। আর বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সঞ্জিব দাস/জোবাইদা/