সড়ক দুর্ঘটনায় দুই সহপাঠী নিহতের ঘটনায় বিচার দাবিতে ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা। আর এই ১০ দফা বাস্তবায়নের জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে তারা। একই সঙ্গে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে তারা।
১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১. পলাতক চালক ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং তাদেরসহ শাহ আমানত বাস কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এর সঙ্গে ভুক্তভোগীদের পরিবারকে যথার্থ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিতে বাধ্য থাকবে শাহ আমানত বাস কর্তৃপক্ষ এবং এ ব্যাপারে চুয়েট কর্তৃপক্ষকে বাদী হয়ে মামলা করতে হবে।
২. চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের দ্রুত প্রশস্তকরণ (৬ লেনের রাস্তা) কার্যক্রম শুরু এবং এই রুটে দূরপাল্লার বাস ব্যতীত সব লোকাল বাস (এবি ট্রাভেলস, শাহ আমানত ও অন্যান্য) চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে। বিআরটিসিকে এদের সব প্রকার লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।
৩. চুয়েট মেডিকেল সেন্টারে সব ধরনের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা, এক্সরে, ইসিজি ইত্যাদি আধুনিক যন্ত্রপাতি নিশ্চিতকরণ এবং এই মুহূর্ত থেকে সব অ্যাম্বুলেন্সে অক্সিজেন পূর্ণ সিলিন্ডার, শ্বাস প্রদান যন্ত্রের ব্যবস্থাসহ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। মেডিকেল সেন্টারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যায়ের চিকিৎসক দিয়ে সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা শিক্ষার্থী সংখ্যার অনুপাতে অপ্রতুল হওয়ায় অতি দ্রুত শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত কমপক্ষে ৪টি অ্যাম্বুলেন্স নিশ্চিত করতে হবে। কোনো প্রকার অ্যাম্বুলেন্স রোগী ব্যাতীত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী বা যেকোনো স্টাফ ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে পারবে না।
৫. শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য চুয়েট বাস সংখ্যা বৃদ্ধি (কমপক্ষে আরও ৫টি) এবং বিআরটিসি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহনব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, বাসের শিডিউল পুনর্নির্ধারণ করতে হবে।
৬. প্রতিটি পয়েন্টে ট্রাফিক বক্স ও সড়ক পুলিশের অবস্থান নিশ্চিতকরণ এবং সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। লাইসেন্স চেকসহ মনিটরিং ব্যবস্থার মাধ্যমে পুরো সড়ক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এ ছাড়া রোড ডিভাইডার, স্পিড ব্রেকার, সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ করে গাড়ির স্পিডলক ও স্পিড মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. আন্দোলনকালীন শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক সব কার্যক্রম (টার্ম ফাইনাল ও শর্টের পরীক্ষা, ভাইভা) রিশিডিউল করতে হবে।
৮. এখন থেকে সব শিক্ষার্থীর যেকোনো প্রয়োজনে ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকতে হবে এবং এ ব্যাপারে ছাত্রকল্যাণ পরিষদের প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের কাছে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
৯. আগামী তিন কর্মদিবস বা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই দাবিগুলো অবশ্যই মানতে হবে ও কার্যক্রমগুলোর ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং ঠিক কতদিনের মধ্যে কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়িত হবে তা নিশ্চিত করতে হবে। দাবিগুলো আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টার্ম ফাইনাল ও শর্টের পরীক্ষাসহ সব ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম বর্জন করবে।
১০. ছাত্রদের বিরুদ্ধাচরণে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় ড. সুমন দেকে শিক্ষার্থীদের কাছে গণক্ষমা চাওয়া পরবর্তী পদত্যাগ করতে হবে।
আবদুস সাত্তার/সালমান/