কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আবাসিক হল নিয়ে উসকানিমূলক ও মানহানিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে উপাচার্যকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়ার দাবি করেছেন তারা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে প্রশাসন বরাবর চিঠি দিয়েছেন পাঁচ শিক্ষার্থী। গতকাল রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী বরাবর এই চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলগুলো বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসিক হল বন্ধের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ‘আবাসিক হলগুলোতে প্রচুর অস্ত্র ঢুকতেছে এবং শিক্ষার্থীদের টাকা দেওয়া হচ্ছে।’ আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা এতে বিস্মিত ও হতভম্ব হয়ে পড়েন। উপাচার্যের এ দাবি আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য সামাজিকভাবে অপমানজনক। আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষগণও এ ধরনের মন্তব্যকে অনৈতিক বলে মনে করেন। এ ধরনের মন্তব্যের কারণে সারা দেশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রাধ্যক্ষরাও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্যকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ৯৩তম সিন্ডিকেটের দাবি প্রত্যাহার করতে হবে। দ্রুতই প্রজ্ঞাপন জারি করে আবাসিক হলগুলো খুলে শিক্ষার পরিবেশ ও মান সমুন্নত করতে হবে।
শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী লাবিবা ইসলাম বলেন, ‘গত ৩০ এপ্রিল জরুরি সিন্ডিকেট সভায় উপাচার্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং হলগুলো বন্ধের নির্দেশ দেন। তার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, হলে প্রচুর পরিমাণে অবৈধ অস্ত্র এবং অর্থ ঢুকছে। এ মন্তব্য করে তিনি কী বুঝিয়েছেন? আমরা আবাসিক শিক্ষার্থীরা টাকার কাছে বিক্রি হয়েছি। আমাদের হাতে যে কেউ টাকা, অস্ত্র ধরিয়ে দিলে আমরা বিক্রি হয়ে যাব, কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়া এমন ভিত্তিহীন মন্তব্য একজন উপাচার্যের মুখে মানায় না। তিনি তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের হেয় করেছেন, আমাদের অপমান করেছেন।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘সিন্ডিকেটের সভায় অনেকে অনেক ধরনের কথা বলেন। যেখানে ফর্মাল-ইনফর্মাল অনেক কথাই থাকে। যে সিন্ডিকেট সদস্য ভেতরের কথা বাইরে বলে বেড়াচ্ছেন, তিনি সিন্ডিকেটের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছেন। এ ছাড়া সিন্ডিকেটের অফিশিয়াল বক্তব্যে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের কারণ হিসেবে এ কথা উল্লেখ করা হয়নি। বরং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।’