খেলনার বাক্সে কোটি টাকার মাদক আসছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে । খবরের কাগজ
ঢাকা ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

খেলনার বাক্সে কোটি টাকার মাদক আসছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৫ পিএম
খেলনার বাক্সে কোটি টাকার মাদক আসছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে
ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে বাংলাদেশের ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায় শিশুদের খেলনার বাক্সে পার্সেলের মাধ্যমে আসছে উচ্চ মূল্যের মাদক। এসব মাদক তরুণ বয়সী একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনই একটি চক্রের সদস্যদের প্রায় কোটি টাকার মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক (ডিজি) মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী। 

এর আগে গতকাল সোমবার (২২ এপ্রিল) অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয় টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত কুশ (বিশেষ ধরনের গাঁজা) ও গাঁজার তৈরি চকলেট ও কেক। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিএনসির ঢাকা মেট্রোপলিটন কার্যালয় (উত্তর) মাদকসহ তাদের আটক করে।

ডিএনসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া থেকে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায় খেলনার বাক্সের একটি পার্সেল আসে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পার্সেলটি জব্দ করা হয়। পরে বাক্সটি খুলে দেখা যায়, খেলনার বাক্সে উচ্চমূল্যের মাদক টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত কুশ, গাঁজার চকলেট ও কেক রয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকা।

পার্সেলে একটি ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দেওয়া ছিল। তবে ঠিকানাটা ছিল ভুল। তাই মোবাইল নম্বর ধরে অভিযান চালায় ডিএনসি। পরে সাভার আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্ট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- মো. রাসেল মিয়া (২০), রমজান মিয়া (২১) ও মো. ইমরান ওরফে রাজ (২০)।

মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী বলেন, পল্টনের পুরোনো ডাক ভবনের বৈদেশিক ডাকের সিইডি/ডিসিএল শাখা থেকে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে খেলনার বাক্সে করে আসা প্রায় কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করা হয়। পার্সেলের ভেতরে ছয়টি প্যাকেটে ছিল টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত কুশ (আমেরিকার তৈরি), যার ওজন এক কেজি ৩০০ গ্রাম। এ ছাড়াও আমেরিকার তৈরি গাঁজার ৯টি চকলেট ও গাঁজার ১০টি কেক।

পার্সেলে থাকা মোবাইল নম্বর ধরে প্রযুক্তির সহায়তায় আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে রাসেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, পার্সেলটি তিনি ডেলিভারি নেবেন। পরে তার কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে রিসিভ করার কথা ছিল রমজান মিয়ার। এর পর আশুলিয়ার আমতলা এলাকা থেকে রমজানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রমজানকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তাকে টাকার বিনিময়ে পার্সেলটি রিসিভ করতে বলেন মো. ইমরান ওরফে রাজ। এরপর আমতলা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় রাজকে। তারা দুজন বন্ধু।

তিনি আরও বলেন, যে প্যাকেটে করে মাদকগুলো যুক্তরাষ্ট্রের থেকে বাংলাদেশে এসেছিল সেগুলো ছিল বাচ্চাদের খেলনার প্যাকেট। এটা করার কারণ যাতে কেউ বুঝতে না পারে এসব প্যাকেটে মাদক রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে বিদেশ থেকে গাঁজার কেক, কুশ ও চকলেট এনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছিল।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ায় এ মাদক বৈধ বা অবৈধ সেটি বিষয় নয়। বাংলাদেশে এই মাদক অবৈধ। তাই বাংলাদেশে এই মাদক পাঠানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বাংলাদেশে এটা অবৈধ জেনেই তারা বাচ্চাদের খেলনার প্যাকেটে মাদক পাঠিয়েছে। এই পার্সেলটি যে কোনো যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকই পাঠিয়েছেন বিষয়টি এমন নয়। সেখানে বসবাসরত অন্য কোনো দেশের নাগরিকও পাঠাতে পারেন।

ইসির ওয়েবসাইট থেকে ভুয়া এনআইডি সরবরাহ করত তারা

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৪, ১২:০৪ এএম
ইসির ওয়েবসাইট থেকে ভুয়া এনআইডি সরবরাহ করত তারা
ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইট থেকে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি ও সংশোধন করে আসছিল একটি চক্র। এ ছাড়া চক্রটি মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এনআইডি, জন্মনিবন্ধন ও কোভিড-১৯ টিকার জাল সনদ সরবরাহ করে আসছিল।

এই চক্রের মূল হোতা ও নির্বাচন কমিশনের এক ডেটা অপারেটরসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) টিম।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, চক্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হারানো এনআইডির কপি উত্তোলন, এনআইডি সংশোধন, জন্ম নিবন্ধনের ডিজিটাল কপি ও নাম সংশোধন এবং কোভিড-১৯ টিকার কপি ও টিন সার্টিফিকেটের কপি সরবরাহের বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করতো। গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দীর্ঘদিন ধরে এসব কাজ করে আসছিল এ চক্রের সদস্যরা। গত বুধবার পাবনা থেকে লিটন মোল্লা (২৩) ও বাগেরহাট থেকে থানা নির্বাচন কমিশন অফিসের ডেটা অপারেটর মো. জামাল উদ্দিনকে (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার লিটনের বরাত দিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, লিটন ভুয়া এনআইডি ও এ সংক্রান্ত তথ্যাবলি নির্বাচন কমিশনে কর্মরত মো. জামাল উদ্দিনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন অফিসের সার্ভার থেকে সংগ্রহ করতো। এসব কাজের জন্য তারা গ্রাহকদের সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অর্থ লেনদেন করতো। এছাড়া চক্রটি জাল এনআইডি তৈরি ও সংশোধন, সিমকার্ড রেজিস্ট্রেশনের তথ্য ও এর বিপরীতে রক্ষিত এনআইডির পূর্ণাঙ্গ বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান, ভুয়া কোভিড-১৯ টিকা কার্ড, জন্ম নিবন্ধন সনদ ও টিন সনদ তৈরি করে দিত। এভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে চক্রের হোতা লিটন কোটি টাকা আয় করেছে। গ্রেপ্তার জামাল নির্বাচন কমিশনের সার্ভারের মাধ্যমে সহযোগিতা করে অবৈধভাবে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে সিটিটিসির প্রধান বলেন, এই প্রতারক চক্রের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্তরত কিছু অসাধু কর্মচারী জড়িত আছে। এছাড়া আর কারা কারা চক্রের সঙ্গে জড়িত, তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

খাজা/এমএ/

 

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ২৬

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ০৬:১৭ পিএম
রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ২৬
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) বিভিন্ন অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১ হাজার ৩৭৯ পিস ইয়াবা, ৩২ গ্রাম হেরোইন, ৩ কেজি ৮৩০ গ্রাম গাঁজা ও ৭৯ বোতল দেশি মদ জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকালে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডিএমপি জানায়, পুলিশের নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২২টি মামলা দায়ের হয়েছে।

বাড়ি থেকে ডেকে পাহাড়ে নিয়ে হত্যা

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ০৪:৪৭ পিএম
বাড়ি থেকে ডেকে পাহাড়ে নিয়ে হত্যা
ছবি : খবরের কাগজ

কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়ায় মোটরসাইকেল চালক আবুল কাসেম (৩৫) রাতে পরিবারের সঙ্গে ঘুমিয়েছিলেন। রাত দুইটার দিকে একদল সন্ত্রাসী তাকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায় পাহাড়ে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকালে গর্জনিয়া ইউনিয়নের নারিমমা ঝিরি পাহাড় থেকে তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ দেখতে পান কাঠুরিয়ারা। পরে পরিবার গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

নিহত কাসেম গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল এলাকার মৃত আলী আহমেদের ছেলে। পেশায় তিনি মোটরসাইকেল চালক।

নিহত কাসেমের ছোট ভাই শহিদুল্লাহ খবরের কাগজকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে ৪০ জনের মতো সন্ত্রাসী তাকে গরু খোঁজে দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর সকাল ৬টার দিকে নারিমমা ঝিরি পাহাড়ে কাঠুরিয়ারা তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। তারপর আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়াও ওই পাহাড়ে পুলিশের একটি টিম আসামিদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে।

মুহিববুল্লাহ মুহিব/অমিয়/

বিদেশ থেকে ফিরেই গ্রেপ্তার ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁর মালিক

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৮:১৫ পিএম
বিদেশ থেকে ফিরেই গ্রেপ্তার ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁর মালিক
বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবন। ছবি : খবরের কাগজ

রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে আগুনের ঘটনায় করা মামলায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। গতকাল মঙ্গলবার (৭ মে) মালয়েশিয়া থেকে ফিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর পরই গ্রেপ্তার করা হয় ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁর মালিক সোহেল সিরাজকে।

অভিবাসন পুলিশ তাকে আটকের পর মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে তুলে দেয়। অগ্নিকাণ্ডের পর তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

বুধবার (৮ মে) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) নিজামউদ্দিন ফকির এসব তথ্য জানান।

এসআই নিজামউদ্দিন বলেন, বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় করা মামলায় সোহেল সিরাজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের আটতলা ভবনে আগুন লাগে। ওই ভবনের দোতলায় ছিল বিরিয়ানির দোকান কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁ। এ ছাড়া ভবনটির অন্যান্য তলায়ও ছিল অনেক খাবারের দোকান। সাপ্তাহিক ছুটির আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়া আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন না ও ৮ শিশু ছিল। তারা সবাই খাবার খেতে ভবনটির বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।

‘এসএনসি’ নামে নকল স্যালাইন তৈরি, গ্রেপ্তার ৬

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৮:১২ পিএম
‘এসএনসি’ নামে নকল স্যালাইন তৈরি, গ্রেপ্তার ৬
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর পুরান ঢাকায় সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানির (এসএমসি) সঙ্গে মিল রেখে ‘এসএনসি’ নামে তৈরি করা হতো নকল স্যালাইন। তাপপ্রবাহের মধ্যে শ্রমজীবী মানুষকে টার্গেট করে দেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে এই নকল স্যালাইন ছড়িয়ে দিয়েছে একটি চক্র। এই ধরনের নকল স্যালাইন পানে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যাসহ মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হতে পারে। একই সঙ্গে জুসসহ নানা ভেজাল শিশুখাদ্য তৈরি করে সারা দেশে সরবরাহ করত চক্রটি। এই চক্রের ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ উত্তর।

গ্রেপ্তাররা হলেন- আনোয়ার হোসেন (৩৮), শাহ নেওয়াজ খান (৩৩), মোরশেদুল ইসলাম (৫১), সবুজ মিয়া (২৩), আরিফ (২৩) ও হানিফ মিয়া (৩০)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে নকল স্যালাইনসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরির মেশিন, স্যালাইন, নকল কোমল পানীয়, নকল ড্রিংকো উদ্ধার করা হয়।

বুধবার (৮ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, নকল পণ্য তৈরি চক্রটি একদিকে পুরান ঢাকায় বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়া স্যালাইনের নকল প্যাকেট বানাচ্ছে, অপর দিকে লবণ চিনি দিয়ে স্যালাইন বানাচ্ছে। কোটি কোটি নকল স্যালাইন তৈরি করে তারা রাজধানীসহ সারা দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে। বর্তমানে ধান কাটার সিজন, আরেক দিকে নির্বাচন। ফলে বাজারে স্যালাইনের প্রচুর চাহিদা। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে সবাইকে গ্রেপ্তার করেছি। তারা নকল স্যালাইনের পাশাপাশি ভেজাল কোমল পানীয়, ম্যাংগো জুস তৈরি করত। নামিদামি ব্র‍্যান্ডের মোড়কে কেমিক্যাল দিয়ে শিশুখাদ্য, কোমল পানীয়, ম্যাংগো জুস তৈরি করত।

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, চক্রের সদস্যরা আগে বিভিন্ন ব্যবসা করত। আনোয়ার হোসেন এক সময় সেলুন ব্যবসা করত, হানিফ মিয়া বিক্রি করতো শনপাপড়ি। তারা এখন নকল টেস্ট স্যালাইনের কারখানার মালিক। পুরান ঢাকার কদমতলি থানা এলাকায় ভাড়া বাসায় এসব নকল পণ্য তৈরি করা হতো। এই চক্রের মূল হোতা হলেন আনোয়ার হোসেন।

অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, এই চক্রটি বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়া নকল পণ্য তৈরি করে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমিশন দিয়ে বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে বিশেষ করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে ডিলার নিয়োগ দিত। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমিশন দেওয়ার পরেও তাদের অনেক টাকা লাভ হতো। আসলে তাদের তেমন কোনো উৎপাদন খরচ নেই। কোনো ভ্যাট দিতে হয় না। সোডিয়াম, স্যাকারিন, আর্টিফিশিয়াল ফ্লেভার, মানহীন কেমিক্যাল দিয়ে এসব ভেজাল পণ্য তৈরি করতেন আনোয়ার। এসব কাজে তাকে সহায়তা করতেন শাহনেওয়াজ ও মোর্শেদ। শাহনেওয়াজ প্রাণ কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটর। প্রাণ কোম্পানির পাশাপাশি নকল শিশুখাদ্য বিক্রি করতেন তিনি। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।