ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিশু দিবস দেশে দেশে

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৪, ১১:২৪ এএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৪, ১১:৩৪ এএম
শিশু দিবস দেশে দেশে
শিশুদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু

দুনিয়ার অনেক দেশেই ঘটা করে শিশু দিবস পালিত হয়। আর অস্ট্রেলিয়ায় শিশু দিবস নয়, পালিত হয় শিশু সপ্তাহ। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের পুরোটাই ওরা শিশু সপ্তাহ হিসেবে পালন করে। যদিও ওদেশে ১৯৫৪ সাল থেকেই শিশু দিবস পালন হচ্ছিল। তবে শিশু সপ্তাহ পালিত হচ্ছে ১৯৭৭ সাল থেকে। পুরো সপ্তাহ শিশুদের যত্নআত্তি করার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও প্রাদেশিক সরকার। একটা সময় অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় শিশু দিবস পালিত হতো। তবে ১৯৮৪ সাল থেকে পুরো অস্ট্রেলিয়া একই সময়ে শিশু সপ্তাহ ও শিশু দিবস পালন করে। ওদিকে বুলগেরিয়ায় সচেতনতা তৈরির কাণ্ডটা আরো মজার। ওই দেশে শিশু দিবস পালিত হয় পয়লা জুন। এ দিন পরিবারের কাছ থেকে বিশেষ আদর আর ভালোবাসা পায় শিশুরা। জন্মদিনের মতো বিভিন্ন উপহারও পায়।

দারুণ মজার নিশ্চয়ই। আরো মজা আছে। আমাদের দেশে কেবল রাতের বেলা গাড়ির হেডলাইট জ¦ালানো হয়। কিন্তু বুলগেরিয়ায় দিন-রাত সবসময় হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। শিশুদের আলাদা গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই এ নিয়ম চালু হয়। অনেক আগে কেবল শিশুদিবসে নিয়মটা ছিল। এখন সারাবছর। বুলগেরিয়ায় শিশুদিবস পালন হয়ে আসছে ১৯২৫ সাল থেকে।

ওদিকে কানাডায় যেদিন শিশু সুরক্ষা আইন নামে একটি আইন পাশ হলো, সেদিনটাকেই ওরা শিশু দিবস হিসেবে পালন করে। তারিখটা হচ্ছে ২০ নভেম্বর। চিলিতে শিশু দিবসের দিন শিশুদের খেলনা উপহার দেওয়ার রেওয়াজ চালু আছে। ওরা শিশু দিবস পালন করে আগস্টের দ্বিতীয় রবিবার। চীনের শিশুরাও শিশুদিবসে উপহার পায়। তবে উপহারটা দেয় সরকার। সকল শিশুকে পয়লা জুন শিশু দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে সরকার উপহার পাঠায়। তবে সেটা যাদের বয়স ১৪ বছর পর্যন্ত তাদের জন্য। চীনে শিশু দিবস পালন শুরু ১৯৪৯ সাল থেকে। ওই সময় শিশুদিবসে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় আধাবেলার পর ছুটি হয়ে যেত। ১৯৫৬ সাল থেকে পুরো দিনের ছুটির রেওয়াজ চালু হয়। এদিন কোনো প্রবেশ মূল্য ছাড়াই চীনের ঐহিত্যবাহী রাজকীয় প্রাসাদ ফরবিডেন সিটির সদর দরজা সকল শিশুর জন্য খোলা থাকে।

ইসরাইলের শিশুদিবসে হয় আরো মজা। বড়োরা এদিন শিশুদের মতো সাজগোজ করে। আর শিশুরা সাজগোজ করে বড়দের মতো। ভেবে দেখো ছোটরা বড়োদের মতো গম্ভীর হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছ, আর বড়োরা ছোটদের মতো ললিপপ মুখে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে!

জাপানে শিশু দিবস পালিত হয় বছরে দুদিন। একদিন ছেলে শিশুদিবস আরেকদিন মেয়েশিশু দিবস। মেয়েশিশু দিবসের দিন আবার পুতুল উৎসবও হয়। মার্চের ৩ তারিখ মেয়েশিশু দিবস। আর মার্চের ৫ তারিখ ছেলেশিশু দিবস। দক্ষিণ কোরিয়ায় শিশুদিবস পালিত হয় ৫ মে। সেদিন সরকারি ছুটি থাকে। বাবা-মায়েরা এদিন শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান। শিশুদের নিয়ে ঘুরতে বের হন। চিড়িয়াখানা, জাদুঘর, শিশুপার্কগুলো এদিন শিশুদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে। ওদিকে মালদ্বীপেও বেশ ঘটা করে শিশুদিবস পালিত হয়। স্কুলে স্কুলে নানান রকম খেলা ও প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকে। যাতে শিশুরা তাদের জন্য নির্দিষ্ট দিবসটি পালনের কথা মনে রাখে সারাজীবন। মেক্সিকোতেও একই রকমভাবে শিশুদিবস পালন করা হয়। যদিও মালদ্বীপের মতো অতোটা ঘটা করে নয়। থাইল্যান্ডের শিশুদিবসকে ওরা বলে ওয়ান ডেক। ওয়ান ডেক পালিত হচ্ছে ১৯৫৫ সাল থেকে জানুয়ারির দ্বিতীয় শনিবার। থাইল্যান্ডের রাজা এদিন শিশুদের জন্য উপদেশমূলক ভাষণ দেন। সরকারি বাসভবন, সংসদভবন, বিভিন্ন মিলিটারি সংস্থাসহ শিশুদের ঘুরে বেড়ানোর জন্য এদিন থাইল্যান্ডের বিভিন্ন সরকারি অফিস খোলা থাকে। রাজকীয় থাই এয়ারফোর্স এদিন বিভিন্ন এয়ারক্রাফট দেখার জন্য শিশুদের বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানায়। আমন্ত্রিত শিশুদের বই, খাতা, পেন্সিলও উপহার দেয়। চিড়িয়াখানা খুলে দেওয়া হয় প্রবেশমূল্য ছাড়াই। বাসে চড়তেও শিশুদের ভাড়া দিতে হয় না এদিনটাতে। থাইদের কথা হচ্ছে-শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। বুদ্ধিমান শিশুরা দেশের সম্পদ।

আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের শিশুদিবস পালিত হয় চাচানেহরুর জন্মদিনে। চাচা নেহরুর মানে হচ্ছে জওহরলাল নেহরু। ১৪ নভেম্বর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেহরুর জন্মদিন। ১৯৬৪ সাল থেকে পালিত শিশুদিবসে ভারতে সরকারি ছুটির দিন। স্কুল, বিভিন্ন অফিস ও প্রতিষ্ঠান নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শিশুদিবসে। নানান জায়গায় শিশু চলচ্চিত্র দেখানোরও উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। অন্যদিকে পাকিস্তানের শিশুদিবস পালিত হয় শোক পালনের মধ্য দিয়ে। ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে ১৫০জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মারা যায়। তাদের স্মরণে পালিত হয় শিশুদিবস। এর আগে অবশ্য ১ জুন শিশুদিবস পালিত হতো।

পাকিস্তানের কাছ থেকেই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের প্রাণ পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনিই বাংলাদেশের জাতির পিতা। তাঁর জন্মদিনটাই এদেশের জাতীয় শিশুদিবস। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে কিন্তু জাতীয় শিশুদিবস ছিল না। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ থেকে পালিত হচ্ছে জাতীয় শিশুদিবস। বঙ্গবন্ধু কিন্তু শিশু বয়স থেকেই ছিলেন পরোপকারী। অসহায় দরিদ্র শিশুদের জন্য কাজ করেছেন স্কুলে পড়া অবস্থাতেই। সবচেয়ে বড় কথা এ দেশের শিশুদের জন্য তিনি একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। তবে এ দেশে শিশুদিবসটা আরো জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করা দরকার। আরো মজা, আরো আনন্দ। একেবারে শিশুদের মতো করে। শিশুরা যা পছন্দ করে, যা খেতে ভালোবাসে-সব এদিন শিশুরা পাবে। নিজেদের ইচ্ছেগুলো পূরণ করতে পারবে।

জাহ্নবী

আমরা আঁকি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
আমরা আঁকি

দেবনীল চেীধুরী
কেজি ওয়ানৎ স্কলার্সহোম প্রিপারেটরি
পাঠানটুলা, সিলেট।
/আবরার জাহিন

 

আমরা আঁকি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
আমরা আঁকি

নাজিবাহ ইবনাত প্রান্তি
নবম শ্রেণি 
আটি পাঁচদোনা উচ্চ বিদ্যালয়
কেরানীগঞ্জ, ঢাকা

/আবরার জাহিন

নীল সাগরের তিমি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
নীল সাগরের তিমি

ইউরোপের একটি ছবির মতো সুন্দর দেশ নরওয়ে। মানুষগুলো ছিমছাম, নির্ভেজাল ও হাসিখুশি। নরওয়ের রয়েছে বিশাল সমুদ্র উপকূল। এ দেশের অনেক মানুষ তাই মাছ ধরে। এজন্য নরওয়েকে জেলেদের দেশ বলা হয়।

নরওয়ের খোলা সাগরে ভেসে বেড়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে তিমির দল। মাঝে মাঝে উপকূলে ঢু দিয়ে যায়। তারা সমুদ্রে খেলা করে। অবাক করার মতো হলেও এটা সত্যি যে, তারা গানও গায়। সে গান অন্য তিমিরাও শুনতে পায় বহু বহু  দূর থেকে। বিজ্ঞানীরা তো এ-কথাও বলেন যে, তিমিদের নিজস্ব ভাষাও আছে। তারা সে ভাষায় নিজেদের মধ্যে কথাও বলে। আর যখন তখন সমুদ্রের বুকে ডিগবাজি খায়। 9তিমিরা দল বেঁধে চলে। অবাক করার মতো কথা হলো, তাদের পরিবারও আছে। মা তিমি তার সন্তানকে পনেরো বছর পর্যন্ত নিজের কাছে রাখে। তার পর ছেড়ে দেয় স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করার জন্য।

তো আমাদের এ গল্পের তিমি শিশুটির নাম অ্যাবে। তার মা সিলোনি তাকে খুব আদর করত। খুব ভালোবাসত। কিন্তু যখন অ্যাবের বয়স পনেরো হয়ে গেল, তখন তার মা সিলোনি তাকে স্বাধীন করে দিল। সত্যি সত্যিই, সিলোনি এটা চায়নি। কিন্তু সমাজের নিয়ম বলে কথা! তাই ছেলেকে না ছেড়ে তার উপায় ছিল না। অ্যাবে কয়েকদিন কান্না করতে করতে সমুদ্রে ভেসে বেড়াল। ধীরে ধীরে সমুদ্রের নানা রকম মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণীর সঙ্গে তার পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়ে গেল। তাদের সঙ্গে ভেসে বেড়িয়ে, গল্প করে তার সময় ভালোই কাটতে লাগল। ভালো লাগল সমুদ্রের প্রাণীদের সঙ্গে খেলা করতে। এমনি করতে করতে একদিন একটা রে-ফিসের সঙ্গে সাঁতরাতে সাঁতরাতে সে চলে এল নরওয়ের সমুদ্র উপকূলের খুব কাছে। সেখানে নরওয়ের রাজা হ্যানসনের রাজকীয় জাহাজ এমভি মার্টিনা নোঙর করা ছিল। রাজা এই জাহাজে চড়ে তার ভীষণ অসুস্থ ছেলে হ্যানসনকে নিয়ে ইংল্যান্ডে যাবেন উন্নত চিকিৎসা করাতে।

জাহাজটি এক সপ্তাহের মধ্যেই রওনা হবে। ছোট্ট তিমি অ্যাবে আগে কখনো জাহাজ দেখেনি। সে বিস্মিত হলো। আনন্দে সে বড় করে দম নিয়ে সমুদ্রে ডুব দিল, একটু পরেই ভুস করে ভেসে উঠে আকাশের দিকে লাফ দিল পানি ছিটাতে ছিটাতে। তখন অ্যাবেকে মনে হচ্ছিল একটা উড়ন্ত পানির ফোয়ারা। রাজপুত্র হ্যানসন তখন জাহাজের খোলা ডেকে দাঁড়িয়ে ছিল। খালাসিরা ছোটাছুটি করে জাহাজে প্রয়োজনীয় মালপত্র ওঠাচ্ছিল। হ্যানসন তিমিটাকে দেখে ফেলল আর ওকে খুব ভালোবেসে ফেলল। সে তিমিটার উদ্দেশে গান গেয়ে উঠল। গানটা কিন্তু ছোট্ট তিমি অ্যাবের খুব ভালো লাগল। সে প্রতিদিন রাজপুত্র হ্যানসনের সঙ্গে দেখা করতে আসতে লাগল।

একদিন রাজার সেনাপতি রবরয় তিমিটিকে দেখে ফেলল। সে হারপুন গান দিয়ে তিমিটির দিকে গুলি ছুড়ল। ছোট্ট তিমির চারপাশে রক্তে লাল হয়ে গেল পানি। ধীরে ধীরে সে সমুদ্রে তলিয়ে গেল। রাজপুত্র হ্যানসন ডেক থেকে সবকিছু দেখে চিৎকার করে সমুদ্রে দিল ঝাঁপ। সে সাঁতার জানত না, তাই সেও সমুদ্রে তলিয়ে গেল।

সমুদ্রে স্কুবা ডাইভার পাঠিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও রাজপুত্রকে আর পাওয়া গেল না। শোনা যায় আজও নরওয়ের জেলেরা যখন সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়, তখন তারা কখনো কখনো রাজপুত্রের করুন কণ্ঠের গান শোনে। জেলেদের মন তখন রাজপুত্রের কথা ভেবে বিষণ্ন হয়ে ওঠে।

/আবরার জাহিন

বৃষ্টিঝরা দিনে

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১১ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১১ পিএম
বৃষ্টিঝরা দিনে
ছবি: সংগৃহীত

মেঘ গুরগুর ডাকছে দেয়া
আকাশ কালো করে,
ঠাণ্ডা হাওয়ার ডানায় চড়ে
নামল বৃষ্টি জোরে।
তা-ধিন তা-ধিন সোনাব্যাঙে
নাচছে খালে বিলে,
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ভাঙা সুরেই
ডাকছে সবাই মিলে।
শিশু-কিশোর উঠোনজুড়ে
করছে লুটোপুটি,
কেউবা বিলে বড়শি পেতে
ধরছে ট্যাংরা পুঁটি।
কদম ফুলের পাপড়ি মেলে
বর্ষা ওঠে হেসে,
নদী-নালা পায় ফিরে প্রাণ
রূপসী বাংলাদেশে।

বাদলা দিনে

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৯ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৯ পিএম
বাদলা দিনে
ছবি: সংগৃহীত

ঝুপঝুপাঝুপ বৃষ্টি ঝরে 
ভরেছে ওই ঝিল,
শব্দ ঢেউয়ের ছলাৎ ছলাৎ 
নদী ও খালবিল!

জলের নাচন দেখবে খোকন 
ভাল্লাগে না ঘরে,
টইটম্বুর ডোবা পুকুর
জল থইথই করে!

বাদলা দিনে করতে মানা
এমন ছোটাছুটি,
ওই দেখো মা জলে ভাসে 
টেংরা, বেলে, পুঁটি!

শুনব না আজ কোনো বাধা 
ধরব মাগুর কই,
ধুম পড়েছে বিলের মাঝে
মাছ ধরার হইচই!