মাইনুল এইচ সিরাজী এর 'মধ্যরাতের আতঙ্ক' । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

মাইনুল এইচ সিরাজী এর 'মধ্যরাতের আতঙ্ক'

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫১ পিএম
মাইনুল এইচ সিরাজী এর 'মধ্যরাতের আতঙ্ক'

আজ আমি বাসায় একা।
এটা আমার জন্য অভূতপূর্ব। ভয়েরও। আমি জানি না রাতটা কীভাবে কাটবে। কোন আতঙ্ক অপেক্ষা করছে আমাকে কাবু করে দেওয়ার জন্য!

আমি অতটা ভিতু নই। কিন্তু আমার ছোট্ট এই জীবনে এমন কিছু ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি যে, ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক ছিল। এখন হঠাৎ হঠাৎ সময়ে-অসময়ে সেসব ঘটনা মনে হলে আমি আঁতকে উঠি। আর ভয় পেলে বোধ হয় মানুষের গলাও শুকিয়ে যায়। গলা শুকানোর সঙ্গে আমার আরেকটা উপসর্গ যোগ হয়-মেরুদণ্ড বেয়ে শীতল একটা অনুভূতি খেলা করে। যেন একটা সাপ আমার পিঠ বরাবর নামছে-উঠছে।
আজ রাতে আমি একা। সেই অনুভূতিগুলো আস্তে আস্তে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
বেশির ভাগ আতঙ্কের সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটেছে হোস্টেলে। আমাদের কলেজটা পাহাড়ি এলাকায়। হোস্টেলের অবস্থান কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বেশ খানিকটা দূরে। তখন আমি মাত্র হোস্টেলে উঠেছি। বেশি কিছু জানা ছিল না। 
একদিন শহর থেকে ফিরতে রাত হয়ে গিয়েছিল। হোস্টেল গেটের অন্তত আধা কিলোমিটার আগে রিকশা ছেড়ে দিয়েছি। এই জায়গাটা বেশ উঁচু। রিকশা উঠতে চায় না। আমি হাঁটা ধরলাম। মিনিট বিশেক হাঁটলেই হোস্টেলে পৌঁছে যাব।
শীতকাল। ঘন কুয়াশায় ছেয়ে গেছে চারপাশ। মাফলারটা মাথায় আর গলায় ভালো করে পেঁচিয়ে নিলাম। অন্ধকারে সাবধানে হাঁটছি। একটু ভয়ও করছে। কিছুটা সামনে রাস্তার পাশে একটা আগুনের কুণ্ডলী দেখা গেল। নিশ্চয়ই কেউ আগুন পোহাচ্ছে। নিমেষেই ভয় দূর হয়ে গেল আমার। আমি এগিয়ে গেলাম কুণ্ডলীর দিকে।
ভাপা পিঠার দোকান। এক বৃদ্ধ মহিলা মাটির চুলায় পিঠা বানাচ্ছেন। পাটালি গুড়ের ঘ্রাণ আর পিঠার ভাপে মুগ্ধ হয়ে আমি দাঁড়িয়ে গেলাম।
মহিলা জিজ্ঞেস করলেন, ‘পকেটে কত টাকা আছে?’
আমি বললাম, ‘আছে। পিঠার দাম কত?’
‘একটা দশ টাকা।’
‘আমাকে একটা দেন।’
‘দাঁড়াও, বানিয়ে দিচ্ছি।’
মাটির পাত্রে পিঠার উপকরণ সাজালেন মহিলা। চালের গুঁড়া, নারকেল আর পাটালি গুড়। আমি বললাম, ‘গুড় একটু বাড়িয়ে দিয়েন।’ আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন তিনি। আমার বুকটা ধক করে উঠল। এই হাসিটা অন্য রকম। স্বাভাবিক নয়। চোখ-মুখ কিছুই স্বাভাবিক নয়।
হঠাৎ আমার মনে হলো, মহিলা এতক্ষণ যে পিঠাগুলো বানালেন সেগুলো কই? আশপাশে কোনো ক্রেতাকে তো দেখছি না! ঝোঁকের বশে আমি বলেই ফেললাম, ‘আপনার আগের পিঠাগুলো কই?’
মহিলা আবার অস্বাভাবিক মুচকি হেসে বললেন, ‘বেচা হয়ে গেছে। দশ টাকা করে।’
একটা ঢোক গিলে আমি বললাম, ‘কারা কিনল?’
রাস্তার পাশের জঙ্গলের দিকে তর্জনী নির্দেশ করে মহিলা বললেন, ‘ওরা।’
সঙ্গে সঙ্গে ঝম ঝম শব্দ শুনতে পেলাম আমি। জঙ্গলের দিক থেকে আসছে। যেন নূপুর পরে হেঁটে যাচ্ছে কেউ।
এখানে অতিপ্রাকৃত কিছু একটা ঘটছে- এটা মনে হতেই আমি লক্ষ করলাম, চুলায় ফুঁ দিচ্ছেন তিনি, মুখ থেকে আগুন বেরিয়ে জ্বলে উঠছে চুলা! 
আমি বোধ হয় একটা চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু চিৎকারটা বের হয়েছে বলে মনে হয়নি। পিঠের ওপর সাপের আনাগোনাও টের পেয়েছি। 
রাতে সিকিউরিটির লোকজন রাস্তার পাশ থেকে আমাকে উদ্ধার করেছে। পরদিন সকালে এই ঘটনা ঘটার কারণ আদ্যোপান্ত জানতে পারলাম।
আমাদের হোস্টেল ডাইনিংয়ের বাবুর্চি ছিলেন এই মহিলা। দুই পায়ে নূপুর পরতেন। মৃগী রোগ ছিল তাঁর। হোস্টেলের ছাত্রদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে ওষুধ কিনতেন। সাহায্য নেওয়ার ধরনটা ছিল ব্যতিক্রম। দশ টাকা নিতেন। কমও না, বেশিও না।
কিন্তু তিনি বাঁচতে পারেননি। রান্না করার সময় হঠাৎ মৃগী রোগ দেখা দিয়েছিল। আগুনে পুড়ে মারা যান তিনি।
এরপর হোস্টেলের আশপাশে তাঁকে অনেকেই দেখেছে নানান বেশে। বেশির ভাগ সময় ভাপা পিঠা বানান তিনি। একাকী পথ চলার সময় তিনি দেখা দেন। নূপুরের শব্দও শোনা যায়। ঝম ঝম।
আমাদের হুজুর স্যার বলেন, এটা আসলে জিন। জিনেরা নানান আকৃতি ধারণ করতে পারে-মানুষ, বিড়াল, কুকুর, সাপ। এই জিনটা বাবুর্চি মহিলাকে বেছে নিয়েছে। জিনেরা বাস করে পাহাড়ে, গর্তে, খোলা মাঠে, তিন রাস্তার মোড়ে আর মানুষের বাসাবাড়িতে। ভালো জিন ছাদে অবস্থান করে মানুষকে পাহারা দেয়। খারাপ জিন থাকে বাথরুমে।

আজ সব কথা আমার হুড়মুড়িয়ে মনে আসছে। আজ রাতে বাসায় আমাকে একা থাকতে হবে।
বাবার এক বন্ধু মারা গেছেন সকালে। তাঁর বড় ছেলে বিদেশ থেকে আসতে রাত হবে। সকালে জানাজা। মা-বাবা গেছেন ও বাড়িতে। একা থাকতে যে আমার এত ভয়, মা-বাবা তো জানেন না। আমিও-বা কী করে বলি। কলেজে পড়ি আমি। এসব কথা কি বলা যায়?
দোয়া-দরুদ যা মুখস্থ আছে, সব পড়ে শুয়ে পড়লাম। ঘুম আসবে না জানি। তবু চেষ্টা করতে থাকলাম। প্রথম চেষ্টা উল্টো থেকে ভেড়া গোনা-দশ, নয়, আট...।
না, ঘুম আসছে না। এপাশ-ওপাশ করছি। খাটের শব্দেও আঁতকে উঠছি। বাথরুমে যাওয়া দরকার। কিন্তু হুজুর স্যার যে বললেন বাথরুমে খারাপ জিন থাকে!
উপায় নেই। বিসমিল্লাহ পড়ে বাথরুমের লাইট জ্বালালাম। আয়নায় নিজেকে দেখে চমকে ওঠার জোগাড়। আচ্ছা, এটা আমি তো! নাকি জিন! আমাদের বাড়িতে জিন থাকার সম্ভাবনা কতটুকু? ভাবতে ভাবতে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আবার শুয়ে পড়লাম। এবার মনে পড়ল, আমাদের বাড়িটা তিন রাস্তার মোড়ে! সর্বনাশ, জিন তো থাকবেই! ফ্যানের স্পিড বাড়িয়ে আপাদমস্তক কাঁথায় ঢেকে ফেললাম নিজেকে।একটু তন্দ্রা এসেছিল মনে হয়। খস খস শব্দে সেটাও ছুটে গেল। খাটের নিচ থেকে শব্দটা আসছে। কেউ যেন পা ঘষে ঘষে হেঁটে যাচ্ছে। আমার গা কাঁটা দিয়ে উঠল। কী হতে পারে? ইঁদুর-বিড়াল তো এভাবে হাঁটে না। বিড়াল! জিনেরা বিড়ালের বেশ ধরতে পারে। কাঁথা মুড়িয়ে নিজেকে আরও লুকানোর চেষ্টা করলাম। না, বিড়াল হতে পারে না। বিড়াল নিঃশব্দে হাঁটে। অন্য কিছু। সাহস করে উঠে লাইট জ্বালালাম। দুরু দুরু বুকে উঁকি দিলাম খাটের নিচে। নিজেকে বোকা মনে হলো। ফ্যানের বাতাসে ফুলে ওঠা একটা পলিব্যাগ এদিক-ওদিক ছুটছে।
মনে মনে হাসলাম কিছুক্ষণ। মনের বাঘকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। বাসায় কি লেবু আছে? দরকার। গলা শুকিয়ে এসেছে। লেবুর শরবত খাওয়া দরকার। আরও একটা কারণে লেবু থাকা উচিত। বাসায় লেবু থাকলে জিন আসে না। হুজুর স্যার বলেছেন।

ফ্রিজ খুলে লেবু খুঁজছি। ঝুম ঝুম শব্দে কান খাড়া হয়ে গেল। নূপুরের শব্দ। কোত্থেকে আসছে?
ভয় ছাড়িয়ে চিন্তার জট লেগে গেল। মাথাটা ঘুরে উঠল হঠাৎ। তাল সামলানোর আগেই কলিংবেল বেজে উঠল। এত রাতে কে এল আবার। আমার চিন্তা কাজ করছে না। এলোমেলো পায়ে এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলাম। দুজন মানুষ দাঁড়িয়ে মুচকি হাসছেন। বাবার বন্ধু। যিনি আজ সকালে মারা গেছেন। আর বাবুর্চি মহিলাটা।
ঠাস করে দরজা বন্ধ করে দিলাম আমি। বাবা-মা উঠে এসে বললেন, ‘কী রে, এত রাতে দরজা খুলেছিস কেন?’

জাহ্নবী

কোনান ডয়েলের বিচিত্র জীবন

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০৩:২১ পিএম
কোনান ডয়েলের বিচিত্র জীবন
ছবি: সংগৃহীত


আর্থার কোনান ডয়েল। পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্র শার্লক হোমসের স্রষ্টা। জন্ম ১৮৫৯ সালের ২২ মে, স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে। পুরো নাম আর্থার ইগনেসিয়াস কোনান ডয়েল। তার পরিচয়ের পাল্লাও বেশ ভারি। তিনি একাধারে ছিলেন আত্মিকবাদী, ইতিহাসবিদ, তিমি শিকারি, ক্রীড়াবিদ, যুদ্ধ-সাংবাদিক, ডাক্তার, কবি, ঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার।

তার বাবা চার্লস আল্টামন্ট ডয়েল, মা মেরি।  পাঁচ বছর বয়সে তাদের পারিবারিক বন্ধন নড়বড়ে হয়ে যায়। যে কারণে এক বন্ধুর চাচি মেরি বার্টনের বাড়িতে বাস করতে শুরু করেন। পড়াশোনা করেন নিউইংটন অ্যাকাডেমিতে। তিন বছর পর পারিবারিক ঝামেলা মিটে গেলে আবার সবাই একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন। নয় বছর বয়সে এক ধনী চাচার সহায়তায় ইংল্যান্ডে গিয়ে লেখাপড়া শুরু করেন ডয়েল। প্রিপারেটরি স্কুল শেষ করে স্টোনিহার্সট কলেজে ভর্তি হন।

তিনি চিকিৎসা বিষয়ে লেখাপড়া শুরু করেন এডিনবার্গ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। একই সময়ে এডিনবার্গের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনে ব্যবহারিক উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়েও পড়াশোনা করেন। এই পড়াশোনার সময়ই ডয়েল ছোটগল্প লিখতে শুরু করেন। ব্ল্যাকউডস ম্যাগাজিনে গল্প পাঠালেও তা প্রকাশিত হয়নি। তার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৮৭৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর চেম্বার্স এডিনবার্গ জার্নালে। দক্ষিণ আফ্রিকার পটভূমিতে লেখা সে গল্পের নাম ‘সাসা উপত্যকার রহস্য’। ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় লেখা। ১৮৮০ সালে ‘হোপ অব পিটারহেড’ নামে গ্রিনল্যান্ডেরই এক জাহাজের চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন ডয়েল। ১৮৮১ সালে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিসিনের ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং সার্জারিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এসএস মিয়াম্বা নামের জাহাজের সার্জন হিসেবে পশ্চিম আফ্রিকার উপকূল ভ্রমণ করেন ডয়েল। ১৮৮৫ সালে তিনি ডক্টর অব মেডিসিন ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তবে ডাক্তার হিসেবে চরম ব্যর্থ ছিলেন ডয়েল।

এই ব্যর্থতা তাকে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করতে সহায়তা করে। মাত্র ২৭ বছর বয়সে ১৮৮৬ সালে লিখলেন ‘আ স্টাডি ইন স্কারলেট’। এটা ছিল শার্লক হোমস ও ওয়াটসনকে নিয়ে লেখা তার প্রথম কাহিনি। কিন্তু এই কাহিনি প্রকাশ করার মতো প্রকাশক পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল তাকে। শেষ পর্যন্ত ওয়ার্ড লক অ্যান্ড কো. নামের প্রতিষ্ঠান ১৮৮৬ সালের ২০ নভেম্বর মাত্র পঁচিশ পাউন্ডের বিনিময়ে পাণ্ডুলিপির সব স্বত্ব কিনে নেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে জোসেফ বেল নামে তার এক শিক্ষক ছিলেন। রোগী দেখার সময় নানারকম প্রশ্ন ও পর্যবেক্ষণ করে তিনি রোগ নির্ণয় করতেন। সেটা নজর এড়ায়নি ডয়েলের। আর সেই জোসেফ বেলের পর্যবেক্ষণ দক্ষতাকে তিনি ফুটিয়ে তোলেন শার্লক হোমসের কাহিনিতে।

কোনান ডয়েল দুবার ব্রিটেনের নির্বাচনেও দাঁড়িয়েছিলেন। এবং তিনি দুবারই হেরে যান। যদিও প্রতিবারই ভালো ভোট পেয়েছিলেন। স্যার আর্থার কোনান ডয়েল অনেক গল্প, কল্পকাহিনি, ইতিহাসভিত্তিক রোমাঞ্চ কাহিনি লিখলেও বিখ্যাত চরিত্র শার্লক হোমসকে নিয়ে লেখা কাহিনিগুলোই তাকে এনে দিয়েছে বিশ্বজোড়া খ্যাতি। শার্লক হোমসকে নিয়ে লেখা তার গল্পের সংখ্যা ৫৪টি, উপন্যাস ৪টি। একটা সময় শার্লক হোমসকে নিয়ে লিখতেও ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। সেই বিরক্তি থেকে ‘তার শেষ অভিবাদন’ (His Last Bow) নামক গল্পে হোম্‌সকে মেরে ফেলেন। তবে জনতার দাবির মুখে হোমসকে অলৌকিকভাবে বাঁচিয়ে তুলতে বাধ্য হন ডয়েল।

আর্থার কোনান ডয়েল নিজে গোয়েন্দা কাহিনির লেখক হলেও তিনি অতিপ্রাকৃত শক্তিতে অর্থাৎ জাদুবিদ্যায় বিশ্বাস করতেন। ১৯১৭ সালে ইংল্যান্ডের ব্র্যাডফোর্ড শহরের কটিংলিতে দুই বোন পাঁচটি ছবি তুলেছিল। সেই ছবিগুলোতে কিছু ছোট ছোট পরীও ছিল। ওদের বাবা ছিলেন শখের ফটোগ্রাফার। পরে ওদের বাবাই বলেছিলেন, বড় বোন এলসি ছবির কিছু কিছু কারিকুরি শিখেছিল। সম্ভবত এলসিই ছবিগুলোতে কারিকুরি করে পরী বানিয়েছিল। কিন্তু কোনান ডয়েল ছবিগুলোর সত্যতা মেনে নিয়েছিলেন। সেই ছবিগুলো নিয়ে তিনি রীতিমতো একটি বই-ও লিখেছিলেন। শুধু তাই-ই নয়, সে সময় হ্যারি হুডিনি নামের এক জাদুকর বেশ নাম করেছিল। বিশেষ করে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে বা অন্য কোনোভাবে তাকে বন্দি করে রাখার পর একাই বের হয়ে আসার খেলা দেখানো তিনিই শুরু করেন।

একবার তো জীবন্ত কবর দিয়ে দেওয়ার পর সেখান থেকেও বেরিয়ে আসেন তিনি। জাদুকররা তো মূলত কৌশলে জাদু দেখায়। এ তো আর সত্যি কিছু নয়। শেষ জীবনে সে কথা স্বীকারও করেছিলেন হ্যারি ‘হ্যান্ডকাফ’ হুডিনি। এ কথাও কিন্তু কোনান ডয়েল বিশ্বাস করতেন না! তার ধারণা ছিল, জাদুকররা সত্যিই জাদু জানে। তিনি জাদু জানেন না, কৌশলের মাধ্যমে জাদু দেখান- এটা স্বীকার করার পর হ্যারি হুডিনির সঙ্গে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের ইতি ঘটান আর্থার কোনান ডয়েল।

ব্রিটেনের রানির কাছ থেকে সম্মানসূচক উপাধি নাইটহুড উপাধি পেয়েছিলেন কোনান ডয়েল। সে কারণে তার নামের আগে ‘স্যার’ উপাধি লেখা হয়। তিনি নাইটহুড পেয়েছিলেন বোয়ার যুদ্ধের ওপর লেখা নন-ফিকশন রচনাগুলোর জন্য। আর্থার কোনান ডয়েলের জীবন ছিল বহুমাত্রিক এবং রোমাঞ্চপূর্ণ। বাস্তব জীবনে তিনি দু-দুবার গোয়েন্দাগিরি করে অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের নির্দোষ প্রমাণ করতে সফল হন। উন্মোচন করেছিলেন দুটি সত্যিকার রহস্য। বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন দুজনকে। প্রথম রহস্যটিতে ভুক্তভোগী ছিলেন জর্জ এডালজি নামের এক ভদ্রলোক। আরেকটিতে ভুক্তভোগী ছিলেন অস্কার স্ল্যাটার। জর্জ এডালজির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল পশু নির্যাতনের। পরে কোনান ডয়েল দেখালেন, এডালজির বিরুদ্ধে যেসব পশু নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে, সেসব পশুকে নির্যাতন করার মতো শারীরিক শক্তিই নেই এডালজির। 

তা ছাড়াও, তার বিরুদ্ধে যেসব প্রমাণ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোও ঠিক নয়। জর্জ এডালজির ভাগ্য ভালো ছিল, কোনান ডয়েলের বদৌলতে তিনি বেঁচে যান। তবে অস্কার স্ল্যাটারের ভাগ্য ততটা ভালো ছিল না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল এক মহিলাকে খুন করার। কোনান ডয়েল এখানেও দেখালেন, প্রমাণগুলো সবই ভুল। খুনের সময় তিনি অন্যত্র ছিলেন। কিন্তু ততদিনে স্ল্যাটারের রায় হয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত সাড়ে ১৮ বছর কারাভোগের পর ছাড়া পান স্ল্যাটার।

/আবরার জহিন

 

কোয়ারেন্টাইন

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম
কোয়ারেন্টাইন
ছবি: খবরের কাগজ

২১৩০ সাল। পৃথিবী একটি নির্জন বর্জ্যভূমি। শতাব্দীর দূষণে পৃথিবীর আবহাওয়া দূষিত। শত বছরের চলমান যুদ্ধে মানুষ বেঁচে নেই বললেই চলে। বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থার আওতায় কিছু মানুষ বেঁচে আছে। তবে তারা আইসোলেটেড। কোয়ারেন্টাইনে আছে। একে অপরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয় না। ভয়াবহ পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ করা হয়েছে। হিরোশিমা-নাগাশাকির মতো পুরো পৃথিবী বিধ্বস্ত। অ্যাটোম বোমার বিষক্রিয়া পুরো গ্রহে ছড়িয়ে পড়েছে।

 এই বিষক্রিয়া এবং জীবাণু অস্ত্রের বিষক্রিয়া থেকে রক্ষার জন্য গ্রহের জীবিত মানুষ সাপ-ব্যাঙের শীতনিদ্রা যাপনের মতো কোয়ারেন্টাইনে আছে। পৃথিবী থমকে গেছে। অন্ধকারে ছেয়ে আছে একসময়কার আলোকোজ্জ্বল নগরীগুলো। যেখানে ছিল বিশাল বিশাল আকাশচুম্বী অট্টালিকা। সেখানে জমে আছে পাহাড়সমান উঁচু আবর্জনার স্তূপ। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে গেছে প্রশস্ত রাস্তাঘাট। অলিগলিতেও জীবিত প্রাণীদের চলাচল নেই। অর্ধভগ্ন যানবাহনগুলো কাত হয়ে পড়ে আছে এখানে সেখানে। মরীচিকারা তাদের শাসন করছে। ক্যানসারের জীবাণুরা মৃত্যুর হুলিয়া নিয়ে আকাশ-বাতাস কাঁপাচ্ছে। সবকিছু স্থবির। এই স্থবিরতা শত বছরের। জনমানবহীন ধ্বংসস্তূপের আড়ালে-আবডালে বিলুপ্তপ্রায় সভ্যতা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত বছর বয়সী ডালাপালাবিহীন পুড়ে যাওয়া বৃক্ষরাজি।

বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে মানবসভ্যতা পৌঁছেছিল উন্নতির চরম শিখরে। তারা গড়েছিল টাইপ-২ সভ্যতা। যে সভ্যতায় অধিবাসীরা গ্রহান্তরে আবাস গড়ে তোলে। তাদের নিজস্ব শক্তির আয়ত্তের পাশাপাশি টাইপ-২ সভ্যতার মানুষ যখন তখন মহাকাশ ভ্রমণে পারঙ্গম। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে তারা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষম। তারা অন্যান্য গ্রহকে টেরাফর্ম করার ক্ষমতা রাখে। আণবিক স্তরে পদার্থকে ম্যানিপুলেট করতে সক্ষম। এমনকি তারা জীবনের নতুন রূপ তৈরি করতে পারে। যুদ্ধের ভয়াবহতায় পৃথিবী ধ্বংসের আগে মানুষ সভ্যতার শীর্ষ বিন্দুতে আরোহন করেছিল।

চাঁদে মানুষের কলোনি রয়েছে। মঙ্গল গ্রহেও মানুষ আবাস গেড়েছে। মানবতা পৃথিবীর বাইরে প্রসারিত হয়েছে। চাঁদে এবং মঙ্গলে উপনিবেশ রয়েছে। বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপায় মানুষ ফাঁড়ি তৈরি করেছে। কিন্তু মানুষের কৃতিত্বের প্রকৃত শিখর ছিল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন, বা আইএসএস। যা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে।

ভয়ংকর মারণাস্ত্র ব্যবহারের আগে জনসংখ্যার অধিকাংশই অন্য গ্রহের উপনিবেশে পালিয়ে গেছে। কিন্তু যারা পৃথিবীতে থেকে গিয়েছিল তারা ছিল অভাবগ্রস্ত অথবা দুঃসাহসী। একসময়ের সমৃদ্ধ শহরগুলোর ধ্বংসাবশেষে নিজেদের তুচ্ছ অস্তিত্ব হিসেবে খুঁজে পেয়েছিল।

বেঁচে যাওয়া মানুষের মধ্যে এলিজা নামে এক তরুণী ছিল। সে এই ধ্বংসাবশেষ এবং বিপর্যস্ত পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছিল। কিন্তু সে আশা ছেড়ে দেওয়ার মানুষ নয়। এক প্রাণচঞ্চল তরুণী। পজিটিভ ভাবনার মানুষ। দুঃসাহসিক এক নারী। খাবারহীন থাকলেও রাতগুলো উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখে কাটায়।

একদিন একটি পুরনো গবেষণাগারের ধ্বংসাবশেষে এলিজার চোখ পড়ে অসাধারণ একটি মেশিনের ওপর। টাইম মেশিন। সে সায়েন্স ফিকশনের বইগুলোতে এ ধরনের ডিভাইস সম্পর্কে পড়েছিল। তবে কখনই এগুলো বিশ্বাস করত না। এমন আজব যন্ত্রের অস্তিত্ব যে আসলে পৃথিবীতে বিদ্যমান ছিল; এটি এর আগে সে আমলে নেয়নি। কিন্তু এখন সে বিভ্রান্তির দোলাচলে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। একটি মসৃণ রুপালি বাক্স। আবছা আলোতে মৃদুভাবে গুনগুন করছিল।

লোভ সামলাতে পারল না এলিজা। সে টাইম মেশিনের ভিতরে বসল। ২০৩০ সালের পৃথিবীকে সে নিয়ন্ত্রণ সেট করল। এমন একটি সময় যখন পৃথিবী ছিল অক্ষত। ছিল সমৃদ্ধ। আধুনিকতার সর্বোচ্চ পর্যায়। তখনকার প্রযুক্তি কেমন ছিল? মানুষের জীবনযাপন কেমন উন্নত ছিল? সে আসলে দেখতে চেয়েছিল পৃথিবী থেকে কী হারিয়ে গেছে? যা দেখে ভবিষ্যতের জন্য কিছু আশা-ভরসা মনেপ্রাণে ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করেছিল।

টাইম মেশিনটি শব্দ করল। এলিজার মনে আনন্দ উত্তেজনার ঢেউ খেলে গেল। সে চরম প্রশান্তি অনুভব করল। কারণ, তার সময় পরিভ্রমণ সঠিক ছিল। ১০০ বছর আগের পৃথিবীতে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু যখন সে এসেছিল তখন দেখতে পেল যে, পৃথিবী তার কল্পনার মতো নয়। হ্যাঁ, আকাশচুম্বী বিল্ডিংগুলো দাঁড়িয়ে ছিল। যেন সেই ইমারতগুলো আকাশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছিল। পৃথিবীর বাতাস দূষণমুক্ত ছিল। পানি বিশুদ্ধ ছিল। আলো নির্মল ছিল। তবে লোকেরা এলিজার নিজের সময়ের চেয়ে সুখী ছিল না। প্রকৃতপক্ষে, মানুষ লোভ এবং স্বার্থপরতায় ভরা ছিল। প্রযুক্তি তাদের এমনভাবে গ্রাস করেছিল যে, তারা ভোগ-বিলাসে হারিয়ে গিয়েছিল।

এলিজা তার নিজের সময়ে ফিরে যেতে চাচ্ছিল। সে পুরোপুরি হতাশ এবং মোহগ্রস্ত। সে সময় অ্যালেক্স নামে একজন সুদর্শন যুবকের সঙ্গে তার দেখা হয় । সে পার্কের বেঞ্চে বসে একটি বই পড়ছিল। বইটির নাম- সাইবার যুদ্ধের পাগলা ঘোড়া। এলিজা বইয়ের নাম দেখে চমকে উঠেছিল। যে যুদ্ধের ভয়াবহতায় একটি গ্রহ বিপর্যস্ত হতে পারে। একটি প্রতিষ্ঠিত সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ছেলেটি সেই যুদ্ধ বিষয়ক বই পড়ছে। এলিজা তার সম্পর্কে না জেনেই ফিরে যেতে চাইল। কিন্তু তার মধ্যে এমন কিছু ছিল যা এলিজাকে আকৃষ্ট করেছিল। সে দয়ালু এবং নম্রভদ্র ছিল। সে এলিজার মতোই আশাবাদী চোখ দিয়ে পৃথিবীকে ভাবত।

তারা এমনভাবে কথোপকথন শুরু করেছিল যেন অনেক আগে থেকেই একে অপরকে চিনত। যেন তারা অবিচ্ছেদ্য ছিল। অ্যালেক্স এলিজাকে বলল, ‘আমি অ্যালেক্স। তোমার নাম কী?’
এলিজা খানিক হেসে প্রশ্নের উত্তর দিল, ‘আমি এলিজা।’
অ্যালেক্স এলিজাকে বসতে ইশারা করল। অ্যালেক্স বলল, ‘দেখো আমাদের পৃথিবীটা কি সুন্দর! তোমাকে খুব চেনাচেনা লাগছে। আমাদের মধ্যে কি এর আগে দেখা হয়েছিল? আমরা কি ফেসবুক বন্ধু?’

ফেসবুকের কথা সে এই প্রথম শুনল। মনে মনে সে ভাবল ১০০ বছর আগে পৃথিবীতে নিশ্চয়ই এমন বন্ধুত্ব ছিল। 
এলিজা জানত যে, টাইম মেশিনের শক্তি ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই তার নিজের সময়ে ফিরে আসতে হবে। এলিজা তার নিজের সময়ে ফিরে এসেছে। 
তারপর, একদিন অলৌকিক কিছু ঘটেছিল। একদল বিজ্ঞানী কেবল মনের শক্তি ব্যবহার করে কোনো যন্ত্র ছাড়াই সময়ের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করার কৌশল আবিষ্কার করেছিলেন। এলিজা ছিল বিজ্ঞানীদের পরীক্ষার জন্য প্রথম স্বেচ্ছাসেবকদের একজন।

কিন্তু এর মধ্যে পৃথিবীতে বিশ্বযুদ্ধ শুরু গিয়েছিল। একটি বড় বিপর্যয় ঘটেছিল। যুদ্ধ বেশির ভাগ মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। টিকে থাকা মানুষদের দূষিত এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রামী করে রেখেছিল। এলিজা মরিয়া হয়ে অ্যালেক্সের খোঁজ করল, কিন্তু সে তাকে কোথাও খুঁজে পেল না।

তারপর, দূরে সে একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পেল। এটা অ্যালেক্স ছিল। সে এলিজাকে ডাকছিল। এলিজা তার দিকে ছুটে গেল। অ্যালেক্সকে দেখতে পেয়ে তার হৃদয় আনন্দে ভরে গেল। কিন্তু যখন সে কাছে এলো, সে দেখতে পেল যে, সে একা নয়। অ্যালেক্স একটি ছোট শিশুর হাত ধরেছিল। একটি মেয়ে। মেয়েটি দেখতে ঠিক তারই মতো।

/আবরার জহিন

স্বপ্ন-আশা

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০৩:০৯ পিএম
স্বপ্ন-আশা
ছবি: খবরের কাগজ

হারিয়ে গেল খেলার মাঠ
আকাশ ভরা তারার আলো,
মায়ের কাছে শেখা পাঠ
স্মৃতিগুলো বেজায় ভালো।
আকাশ আজও আলো-ভরা
নেই শুধু সেই চাঁদের বুড়ি,
চরকা কাটার গল্প-ছড়া
কোথায় রে আজ রঙিন ঘুড়ি!
সব হারানো রঙিন-রাখি
খুঁজে ফিরি তোমার মাঝে,
তোমরা শিশু আলোর পাখি
ছড়াও খুশি সবার কাজে।
যেদিন আমার হারিয়ে গেল
সেদিন এখন তোমার কাছে,
তোমায় দেখেই খুশি এলো
তোমার মাঝেই স্বপ্ন আছে।

/আবরার জাহিন

আম কুড়াতে

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০৩:০৬ পিএম
আম কুড়াতে
ছবি: খবরের কাগজ

ঝড়ের দিনে আম কুড়াতে
কার না ভালো লাগে
কাঁচা-পাকা আম কুড়াতাম
মনের অনুরাগে।

মধ্য রাতে ঝড়-বাদলে
পড়ত অনেক আম
ভোরের আলো ফোটার আগে
বেরিয়ে পড়তাম।

ভূতের ভয়ে এ ঘর থেকে
যেতাম না ও ঘরে
সেই আমিটাই ঘর থেকে বের
হতাম কেমন করে!

আবছা আলো উঠবে রবি
খানিক বাদে পুবে
আম কুড়াতাম, ভূতেরই ভয়
কোথায় যেত উবে?

/আবরার জহিন

 

কালবৈশাখী

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০২:৪৯ পিএম
কালবৈশাখী
ছবি: খবরের কাগজ

উড়ছে চালা উড়ছে পালা
কালবৈশাখী ভয়াল ঝড়ে,
উড়ছে ধূলি ঘুরছে কুলি
পথটা চলে ডরে ডরে।

মাছ যে লাফায় হাঁস যে লাফায়
উথাল গাঙে নেয়ে চলে,
ঝুপড়ি ভাঙে খুপরি ভাঙে
বিজলি জ্বলে গগনতলে।

কাঁপছে ছোটু ভাবছে ছোটু
গুড়ুম গুড়ুম হাঁক ছাড়ে কে?
টলছে চাষা টলছে আশা
শিল পড়ে হায় ধান ঝরে যে।

/আবরার জাহিন