![ইসলামে প্রথম ৫](uploads/2023/11/19/1700381524.first.jpg)
ইসলামের শেষ নবী মোহাম্মদ (সা.)-এর সৌরভে বদলে গেছে পৃথিবী। দূর হয়েছে অন্ধকার। সভ্য হয়েছে মানুষ। সুন্দর হয়েছে পরিবেশ। যেখানেই তিনি গিয়েছেন, সভ্যতা ও পবিত্রতার বীজ বপন করেছেন সেখানে। তাঁর হাত ধরে ইসলামে বিভিন্ন আমল-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও স্থাপনার সূচনা হয়েছে। ইসলামের প্রথম এমন কিছু বিষয় সম্পর্কে এখানে তথ্য তুলে ধরা হলো—
প্রথম সাল গণনা : ইসলাম আসার আগে আরবে সুনির্দিষ্ট কোনো সন-তারিখ গণনার প্রচলন তেমনটা ছিল না। প্রসিদ্ধ ঘটনার নামে বছরগুলোর নামকরণ করা হতো। উমর (রা.)-এর শাসনামলে বহু দূর-দূরান্ত পর্যন্ত নতুন নতুন রাষ্ট্র ও ভূখণ্ডে ইসলামের প্রবর্তন ঘটে। রাষ্ট্রের জরুরি কাগজপত্রে সন-তারিখের উল্লেখ না থাকায় অসুবিধায় পড়তে হতো। পরে হিজরতের ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মারক বানিয়ে উমর (রা.) হিজরি নববর্ষের গোড়াপত্তন করেন। (ফাতহুল বারি : ৭/২৬৮)
প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান : রাসুলুল্লাহ (সা.) তিন বছর গোপনে ইসলামের পথে দাওয়াত দিয়েছেন। ততদিনে কিছু মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছে। আরকাম ইবনে আবুল আরকাম (রা.)-এর বাড়িটিকে দ্বীনি দাওয়াত, কোরআন শিক্ষা ও তালিমের জন্য নির্বাচন করলেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। সাফা পাহাড়ের কাছেই ছিল তার বাড়িটি। ‘দারুল আরকাম’ই ইসলামের আনুষ্ঠানিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। (সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া, ৩৮-৩৯)
প্রথম খুতবা : রাসুলুল্লাহ (সা.) শুক্রবার দিন মদিনায় আগমন করেন। কুবায় মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করে মদিনায় যাত্রা করেন। বনু সালেম গোত্রের কাছে জোহর নামাজের সময় হলে জুমা আদায় করেন এবং নামাজের আগে যে খুতবা প্রদান করেছিলেন, ইসলামের ইতিহাসে সেটিই প্রথম খুতবা হিসেবে বিবেচিত। (আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ২১৩)
প্রথম লিখিত সংবিধান : রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় অবস্থান করে মুসলমান ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সম্প্রীতি স্থাপন, পরস্পর বিরোধ নিরসন করে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনের চেষ্টা করেছিলেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি মদিনায় বসবাসরত সব জাতির জন্য ৬২২ খ্রিস্টাব্দে একটি লিখিত সংবিধান প্রণয়ন করেন। যা বিশ্ব ইতিহাসে মদিনা সনদ নামে পরিচিত। এটিই ইসলামের প্রথম লিখিত সংবিধান। (আরব জাতির ইতিহাস, পৃষ্ঠা : ৩৫-৩৬)
প্রথম তারাবি : রমজান মাসের বিশেষ ইবাদত হলো তারাবি নামাজ। রমজানের চাঁদ দেখা গেলে রোজার আগের দিন থেকেই তারাবি নামাজ আদায় করতে হয়। তারাবি অর্থ বিশ্রাম নেওয়া, প্রশান্তি লাভ করা। দ্বিতীয় হিজরিতে রমজানের রোজা ফরজ হলে তারাবি নামাজের প্রচলন শুরু হয়। এ বছরের রমজানের তারাবির নামাজকে ইসলামের ইতিহাসে প্রথম তারাবি নামাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। (আল মাজমুআ, খণ্ড : ৬, পৃষ্ঠা : ২৫০)
লেখক : খতিব, বঙ্গভবন জামে মসজিদ