ঢাকা ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫
English

সালাম আদান-প্রদানের সুন্নত ও আদব

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আপডেট: ১১ মে ২০২৪, ০২:২৮ পিএম
সালাম আদান-প্রদানের সুন্নত ও আদব
আরবিতে আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহস লেখা ছবি

প্রথমে সালাম দেওয়া উচিত: সাহাবিদের সঙ্গে দেখা হলে রাসুলুল্লাহ (সা.) আগে সালাম দিতেন। মোসাফাহা করে তাদের জন্য দোয়া করতেন। অন্যজন হাত না ছাড়লে তিনি হাত ছাড়াতেন না। (তিরমিজি, ৩৫০২; নাসায়ি, ১০২৩৪)

কথা বলার আগেই সালাম দেওয়া উচিত : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে প্রথমে সালাম দেয়। (আবু দাউদ, ৫১৯৭)
সালাম না দিলে, কথা বলার অনুমতি দিতে নিষেধ করেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি আগে সালাম দেয় না; তোমরা তাকে (কথা বলার) অনুমতি দিও না। (সহিহাহ, ৮১৭; সহিহুল জামে, ৭১৯০)

সশব্দে সালাম ও উত্তর দেওয়া উচিত: সশব্দে সালাম ও সালামের উত্তর দিতে হবে, যাতে অন্যরা শুনতে পায়। তবে কোথাও ঘুমন্ত মানুষ থাকলে এমনভাবে সালাম দেবে, যাতে শুধু জাগ্রত ব্যক্তি শুনতে পায় এবং ঘুমন্ত ব্যক্তির কোনো অসুবিধা না হয়।
মিকদাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনি (রাসুলুল্লাহ) রাতে এসে এমনভাবে সালাম দিতেন, যাতে নিদ্রারত ব্যক্তি উঠে না যায় এবং জাগ্রত ব্যক্তি শুনতে পায়। (মুসলিম, ২০৫৫; মুসনাদে আহমাদ, ২৩৮৬৩)

ইশারার মাধ্যমে সালাম দেওয়া যাবে না: বোবা কিংবা দূরে অবস্থানকারী হলে অথবা বধির ব্যক্তিকে মুখে উচ্চারণসহ ইশারায় সালাম বা উত্তর দেওয়া যেতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা ইহুদি-নাসারাদের সালামের মতো সালাম দিও না। কারণ তারা হাত দ্বারা ইশারার মাধ্যমে সালাম দেয়। (সহিহুল জামে, ৭৩২৭; সহিহাহ, ১৭৮৩)

সালাম দেওয়ার সময় কারও সামনে মাথা অবনত করা বা ঝোঁকানো যাবে না: আনাস বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোনো এক সময় এক ব্যক্তি প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের কোনো ব্যক্তি তার ভাই কিংবা বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার সময় সে কি তার সামনে ঝুঁকে (নত) যাবে? তিনি বললেন, না। ব্যক্তিটি আবার প্রশ্ন করল, তা হলে সে কি তাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাবে? তিনি বললেন, না। এরপর সে আবার জিজ্ঞাসা করল, তা হলে সে কি তার সঙ্গে মোসাফাহা (করমর্দন) করবে? তিনি (রাসুলুল্লাহ) বললেন, হ্যাঁ। (তিরমিজি, ২৭২৮)

সালামে যথাসম্ভব শব্দ বাড়িয়ে বলা: সালামে যত শব্দ বাড়িয়ে বলা হবে, আল্লাহতায়ালা তত বেশি সওয়াব বাড়িয়ে দেবেন। ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে এক ব্যক্তি বলল, আসসালামু আলাইকুম। তিনি (রাসুলুল্লাহ) বললেন, ১০ নেকি। এরপর এক ব্যক্তি এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। তিনি (রাসুলুল্লাহ) বললেন, ২০ নেকি। এরপর আরেক ব্যক্তি এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতু। তিনি (রাসুলুল্লাহ) বললেন, ৩০ নেকি। (তিরমিজি, ২৬৮৯; আবু দাউদ, ৫১৯৫)

কে কাকে সালাম দেবে: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আরোহী ব্যক্তি পদাতিক ব্যক্তিকে, চলমান ব্যক্তি বসা ব্যক্তিকে এবং কম সংখ্যক মানুষ অধিক মানুষকে সালাম প্রদান করবে। (বুখারি, ৬২৩২) অন্য এক বর্ণনায় তিনি বলেছেন, ছোটরা বড়দের সালাম দেবে। (বুখারি, ৬২৩১) তবে রাসুলুল্লাহ (সা.) চলার পথে শিশুদের আগে সালাম দিতেন। (বুখারি, ৬২৪৭)

অনুরূপ বা উত্তমরূপে সালামের উত্তম দেওয়া: এ ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, আর যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হয়, তখন তোমরাও তা অপেক্ষা উত্তম অভিবাদন করবে অথবা অনুরূপই করবে। (সুরা নিসা, ৮৬)

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

যেসব পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৬:০০ পিএম
যেসব পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়
গরুর ছবি । সংগৃহীত

বারা ইবনে আযেব (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, চার প্রকারের পশু কোরবানি করা জায়েজ নয়। যথা : পশুর উভয় বা কোনো এক চোখের দৃষ্টিহীনতা স্পষ্ট হলে, কোনো এক পা খোড়া হলে, অতি রুগ্ন হলে এবং এত শীর্ণ পশু, যার অস্থিমজ্জা সারশূন্য হয়ে পড়েছে। (ইবনে হিব্বান, ৫৯২১; আবু দাউদ, ২৮০২; নাসায়ী, ৪৩৬৯; ইবনে মাজাহ, ৩১৪৪)
আলি ইবনে আবি তালেব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কানের অগ্রভাগ কাটা প্রাণী, কানের গোড়া থেকে কেটে ঝুলে আছে এমন প্রাণী, কান ফেটে দ্বিখণ্ডিত হয়ে যাওয়া প্রাণী, কানে গোল ছিদ্রবিশিষ্ট প্রাণী ও কান বা নাক একেবারে কেটে গেছে- এমন প্রাণী কোরবানি করতে নিষেধ করেছেন। (ইবনে মাজাহ, ৩১৪২; মুসনাদে আহমাদ, ৬০৯)

 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

 

জবাইয়ের সময় ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার’ বলা কেন জরুরি?

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
জবাইয়ের সময় ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার’ বলা কেন জরুরি?
পশু জবাইয়ের পূর্বের ছবি । সংগৃহীত

ঈদুল আযহা এলে মুসলিম উম্মাহ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে পশু কোরবানি করে থাকেন। এই মহান ইবাদত পালনের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম-কানুন রয়েছে, যা মেনে চলা আবশ্যক। এর মধ্যে অন্যতম হলো পশু জবাইয়ের সময় বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার বলা। এটি কেবল একটি বাক্য নয়, বরং মহান আল্লাহর নাম ও মহিমা ঘোষণার মাধ্যমে এই ইবাদতকে পূর্ণাঙ্গ করার একটি অপরিহার্য অংশ।

হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন বড় শিংবিশিষ্ট সাদা-কালো বর্ণের দুটি নর দুম্বা কোরবানি করতেন, তখন তিনি বিসমিল্লাহ, আল্লাহু আকবার বলতেন। বর্ণনাকারী আরও বলেন, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে পশুর ঘাড়ের ডানপাশে পা রেখে নিজ হাতে যবাই করতে দেখেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, ১১৯৬০, ১২১৪৭)। এই হাদিস থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, কোরবানি বা যেকোনো হালাল পশু যবাইয়ের পূর্বে আল্লাহ তায়ালার পবিত্র নাম উচ্চারণ করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা এবং এর মাধ্যমে যবাইকৃত পশু হালাল হয়।

বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার বলার অর্থ হলো, আল্লাহর নামে শুরু করছি, আল্লাহ মহান। এর মাধ্যমে একজন মুসলিম আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং স্বীকার করে যে, এই কোরবানি কেবল তাঁরই জন্য। এটি শুধু পশু জবাইয়ের একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং একটি আত্মিক সংযোগের বহিঃপ্রকাশ। যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এই তাসমিয়া (বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার) বাদ দেয়, তবে সে পশু হালাল হবে না বলে অধিকাংশ ফকিহগণ অভিমত দিয়েছেন।

কাজেই, কোরবানির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত পালনের সময় আমাদের সকলের উচিত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করা এবং পূর্ণাঙ্গ সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে সঠিক নিয়ম মেনে বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার বলে পশু কোরবানি করা। এটি শুধু কোরবানিকে বৈধই করে না, বরং ইবাদতের মান ও গুরুত্বকেও বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

ঈদের দিনে মোরগ কোরবানি করার শরয়ী বিধান কী?

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১২:০০ পিএম
ঈদের দিনে মোরগ কোরবানি করার শরয়ী বিধান কী?
মোরগের ছবি । সংগৃহীত

ঈদুল আযহা এলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কিন্তু আমাদের দেশের কিছু এলাকায় দরিদ্রদের মাঝে ঈদের দিন মোরগ কোরবানি করার একটি প্রচলন দেখা যায়, যা শরিয়তের দৃষ্টিতে না জায়েজ।

এখানে বিষয়টা হলো, ঈদের দিনে মোরগ জবাই করা নিষেধ নয়। আপনি প্রয়োজনে বা খাওয়ার উদ্দেশ্যে মোরগ জবাই করতেই পারেন। তবে এটিকে কোরবানির নিয়তে করা যাবে না। অর্থাৎ, ঈদের যে কোরবানি, যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা হয়, সেই ইবাদতের উদ্দেশ্যে মোরগ কোরবানি বৈধ নয়।

এর কারণ হলো, ইসলামে কোরবানির জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু পশুকে নির্ধারণ করা হয়েছে। যেমন- উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। এই পশুগুলোই কোরবানির জন্য নির্ধারিত এবং এগুলোর দ্বারাই কোরবানি আদায় হয়। মোরগ বা অন্য কোনো পাখি দ্বারা কোরবানি আদায় হয় না, এমনকি তা কোরবানির সওয়াবও বহন করে না।

অতএব, যদি কেউ কোরবানির সওয়াবের আশায় মোরগ জবাই করেন, তবে তিনি সওয়াব তো পাবেনই না, বরং একটি অননুমোদিত কাজ করার কারণে গুনাহগার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এই বিষয়ে আমাদের সকলের সতর্ক থাকা উচিত এবং শরীয়তের বিধান মেনেই কোরবানি করা উচিত। মনে রাখতে হবে, ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর নির্দেশ পালন এবং তার সন্তুষ্টি অর্জন।

 

লেখক: আলেম,গবেষক ও সাংবাদিক

 

অর্থসহ রাসুল (সা.)-এর সাহাবিদের নাম

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৮:৩০ এএম
আপডেট: ০২ জুন ২০২৫, ১১:৪২ এএম
অর্থসহ রাসুল (সা.)-এর সাহাবিদের নাম
এক বৃদ্ধার বই পাঠের ছবি । সংগৃহীত

সাহাবায়ে কেরাম রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গীগণ, ইসলামের ইতিহাসে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো। তাঁরা ছিলেন ইসলামের প্রথম অনুসারী, যারা নিজেদের জীবন, সম্পদ এবং সবকিছু আল্লাহর পথে উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁদের নামগুলো শুধু ঐতিহাসিক স্মারক নয়, বরং প্রতিটি নামেই রয়েছে এক গভীর অর্থ, যা তাঁদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, আত্মত্যাগ এবং ইসলামের প্রতি নিবেদিত প্রাণকে তুলে ধরে। এই বরকতময় নামগুলো আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কিছু প্রিয় সাহাবির নাম, তাঁদের আরবি উচ্চারণ, বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থসহ উল্লেখক করা হলো।

সাহাবিগণের বরকতময় নাম ও অর্থ

আরবি নাম

বাংলা উচ্চারণ

অর্থ

عياض

আইয়ায (রা.)

অধিক দানকারী

عوف

আওফ (রা.)

সিংহ, নেকড়ে, অতিথি

أوس

আওস (রা.)

উপহার, নেকড়ে

أقرع

আকরা (রা.)

টাকযুক্ত

عفرية

আকরাবা (রা.)

ঘোড়ার জিন বাঁধার হুক। উহুদযুদ্ধে শহিদ সাহাবি

 عاقل

আকেল (রা.)

বুদ্ধিমান

الأخش

আখনাস (রা.)

সিংহ, প্রত্যাবর্তনকারী। তিনি,তার পুত্র ও নাতি তিনজনই বদরযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন

ابن عجلان

ইবনে আজলান  (রা)   

দ্রুতগতিসম্পন্ন

عطية

আতিয়্যা (রা.)

দান

عدي

আদি (রা.)

আগ্রাসী

عنترة

আনতারা (রা.)

বীরত্ব

أنس

আনাস (রা.)

বন্ধু (নবিজির দীর্ঘদিনের সেবক)

أنسة

আনাসা (রা.)

ঘনিষ্ঠ হওয়া, পছন্দ হওয়া (নবিজির গোলাম, বদরি সাহাবি)

عبدة

আবদা (রা.)

ধার্মিক, পরিচারিকা

عبد الرحمن

আব্দুর রহমান (রা.)

করুণাময়ের বান্দা (জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জনের একজন)

عبد الله

আব্দুল্লাহ (রা.)

আল্লাহর বান্দা

عبس

আবস (রা.)

ভ্রুকুটি করা (একজন বদরি সাহাবি)

     

أبو حبيب

আবু হাবিব (রা.)

বন্ধু

أبو حية

আবু হাব্বা (রা.)

শস্যদানা

أبو حرام

আবু হারাম (রা.)

সম্মানিত

     

أبو هريرة

আবু হুরাইরা (রা.)

বিড়াল পালক (সবচেয়ে বেশি হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি)

أبو حسين

আবু হুসাইন (রা.)

সুন্দর

أبو اليسر

আবুল ইয়াসার (রা.)

সহজ

أبو الهيثم

আবুল হাইসাম (রা.)

ইগল

عباد

আব্বাদ (রা.)

অধিক ইবাদতকারী

عباس

আব্বাস (রা.)

সিংহ, কঠোর (নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাচা)

عمرو

আমর (রা.)

দীর্ঘজীবী (শাম ও মিশর বিজয়ে নেতৃত্ব দানকারী)

عامر

আমের (রা.)

সভ্য

عمار

আম্মার (রা.)

ধর্মপরায়ণ

عائد

আয়িদ (রা.)

প্রত্যাবর্তনকারী

الأرقم

আরকাম (রা.)

কলম (ইসলাম প্রচারের প্রথম কেন্দ্র তাঁর ঘর)

علي

আলি (রা.)

মর্যাদাবান, মহৎ (ইসলামের চতুর্থ খলিফা)

أسعد

আসআদ (রা.)

অধিকতর ভাগ্যবান (আনসার সাহাবিদের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী)

عاصم

আসেম (রা.)

প্রতিরোধকারী

 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

কাজের লোককে কোরবানির গোশত দেওয়া যাবে কী?

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫, ১০:০০ পিএম
কাজের লোককে কোরবানির গোশত দেওয়া যাবে কী?
কাজের লোককে কোরবানির গোশত দেওয়ার ছবি। সংগৃহীত

কোরবানি ঈদে আমরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করি। এই কোরবানির গোশত বিতরণ ও ব্যবহারের নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন ইসলামে রয়েছে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, কোরবানির গোশত কাজের লোককে তাদের শ্রমের বিনিময়ে দেওয়া যাবে কিনা।

ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী, কোরবানির পশুর কোনো অংশ পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েজ নয়। এর মানে হলো, যারা কোরবানি প্রক্রিয়ায় সাহায্য করেন, যেমন—পশু জবেহ করা, চামড়া ছাড়ানো বা মাংস কাটায় যারা শ্রম দেন, তাদের এই কাজের বিনিময়ে কোরবানির মাংস, চামড়া বা অন্য কোনো অংশ পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া যাবে না। ফিকহের প্রসিদ্ধ গ্রন্থগুলোতে এই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা আছে, যেমন—আহকামুল কুরআন জাস্সাস (৩/২৩৭), বাদায়েউস সানায়ে’ (৪/২২৪), আলবাহরুর রায়েক (৮/৩২৬) এবং ইমদাদুল মুফতীন।

কোরবানি একটি খালেস ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হয়। এতে কোনো জাগতিক লেনদেনের উদ্দেশ্য থাকতে পারে না। পারিশ্রমিক হিসেবে কিছু দিলে তা ইবাদতের মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে।

তবে এর অর্থ এই নয় যে, কাজের লোকেরা কোরবানির গোশত থেকে বঞ্চিত হবেন। বরং, ঘরের অন্য সদস্যদের মতোই কাজের লোকদেরকেও কোরবানির গোশত খাওয়ানো যাবে। আপনি চাইলে তাদের মেহমান হিসেবে আপ্যায়ন করতে পারেন অথবা গরিব-মিসকিনদের অংশে বা নিজেদের অংশের যে কোনো গোশত তাদের উপহার হিসেবে দিতে পারেন। এখানে মূল বিষয়টি হলো, এটি তাদের শ্রমের বিনিময় নয়, বরং কোরবানির বরকত থেকে একটি উপহার।

কোরবানি ঈদে কাজের লোকদের প্রতি উদারতা দেখানো এবং তাদের আপ্যায়ন করা অত্যন্ত পুণ্যের কাজ। কিন্তু তাদের পারিশ্রমিক অবশ্যই আলাদাভাবে নগদ অর্থ বা অন্য কোনো বস্তুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। কোরবানির বিধান মেনে চলা আমাদের ইবাদতকে ত্রুটিমুক্ত করে।

 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক