![প্রেমে বিসিএসের হামলা](uploads/2024/02/13/1707812413.rong-jabe.jpg)
তখন আমি হাইস্কুলে পড়ি, কাদের ভাই পড়েন কলেজে। বয়সের বেশ পার্থক্য থাকলেও আমরা বন্ধু হিসেবেই চলাফেরা করতাম। এজন্য কাদের ভাই নিজেই বেশ আগ্রহী ছিলেন। কারণ আমার ক্লাসমেট জিনিয়াকে কাদের ভাই খুবই পছন্দ করতেন। জিনিয়াকে পটানোর হাতিয়ার হিসেবে কাদের ভাই আমাকে ব্যবহার করতে চাইতেন। কিন্তু আমি যে সে হাতিয়ার না, বুমেরাং হাতিয়ার। দিনে দিনে আমি নিজেই কাদের ভাইয়ের জন্য ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠছিলাম। কারণ বান্ধবী আমার চূড়ান্ত রকমের সুন্দরী এবং আমি নিজেই চান্স নিতে চাচ্ছিলাম।
জিনিয়াকে পটানোর জন্য কাদের ভাই আমার মাধ্যমে বিভিন্ন গিফট দিতেন, চিঠিপত্র দিতেন। আমি সেই চিঠি নতুন করে ভাষা ঠিক রেখে আমার নামে লিখে গিফটসহ জিনিয়াকে দিয়ে তার কাছে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করলাম। এভাবে দিনে দিনে জিনিয়া আমার দিকে হেলে পড়তে লাগল। কাদের ভাই কীভাবে যেন ব্যাপারটা আঁচ করতে পারলেন।
ফেব্রুয়ারির এক পড়ন্ত বিকেলে ছুটির সময় স্কুলগেটে তিনি আমাকে ক্যাক করে ধরলেন। তার সামনেই জিনিয়াকে বলতে হবে কাদের ভাই তাকে পছন্দ করে। আমি পড়লাম ফাঁদে। কাদের ভাইয়ের কথামতো কাজ করলে জিনিয়াকে হারাব আর না করলে পিটুনি খাব। এমন উভয় সংকট পরিস্থিতিতে আমি কূটনৈতিক দক্ষতা দিয়ে সামলে উঠলাম।
জিনিয়ার কাছে গিয়ে কাদের ভাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে বললাম, ‘শোন জিনিয়া, কাদের ভাই তোকে খুব পছন্দ করে।’
এরপর নিচু স্বরে বললাম, ‘উনি বলেছেন, তুই রাজি না হলে নাকি তোর চুল ছিঁড়ে দেবে।’ এমন হুমকিতে জিনিয়া মারাত্মক ক্ষেপে গেল। রেগে বইপত্র ফেলে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে গেল। আমি ওর বইপত্র গুছিয়ে পিছে পিছে ছুটলাম আর কাদের ভাই হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন।
পরে কাদের ভাইকে বললাম, সামনে ভ্যালেন্টাইন ডে, আপনি একটা ফুলের তোড়াসহ কিছু গিফট রেডি করেন। আশা করি ভ্যালেন্টাইন ডে-তে জিনিয়াকে পটিয়ে ফেলব।
কাদের ভাই ভ্যালেন্টাইন ডে সকালে এক তোড়া ফুল এবং চকলেট আইসক্রিম হাবিজাবি সব র্যাপিং পেপারে মুড়িয়ে ওপরে ওনার নাম লেখা কার্ডসহ আমাকে পৌঁছে দিলেন। আমি রেডি হয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগেই নাম লেখা কার্ড ফেলে দিয়ে সেখানে নিজের নাম লিখে নিলাম।
জিনিয়াদের বাড়িতে গিয়ে শুনলাম, ও নাকি কোচিংয়ের এক্সট্রা ক্লাসে গেছে। আমি ছুটলাম কোচিং সেন্টারের দিকে। গিয়ে দেখি, কোচিংয়ের নিরিবিলি রুমে জিনিয়া আর রাকিব স্যার চকলেট এবং কেক দিয়ে মাখামাখি অবস্থা।
আমাকে দেখে জিনিয়া বলল, ‘শোন হাসিব, এবার বিসিএসের আবেদন ফরম পূরণ করেছে। তাই ট্রিট দিচ্ছি। ক্যাডার হলে বিয়ে করে নেব। তুই তো গিটফও নিজের টাকায় কিনতে পারিস না, সব কাদেরের দেওয়া। আর এসব যদি আমার বাড়িতে বলিস তাহলে তোর চিঠিগুলো দেখিয়ে দেব।’
কলি