খুদে উদ্যোক্তাদের বিশ্বসেরা মঞ্চে বাংলাদেশ । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

খুদে উদ্যোক্তাদের বিশ্বসেরা মঞ্চে বাংলাদেশ

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৪, ১১:৩৩ এএম
খুদে উদ্যোক্তাদের বিশ্বসেরা মঞ্চে বাংলাদেশ

ওদের বয়স ১৩-১৮ এর মধ্যে। স্কুলে যাতায়াতের পথে নিত্য সড়ক দুর্ঘটনা দেখেন। সেই সড়ক দুর্ঘনায় প্রাণ বাঁচাতে নতুন কিছু উদ্ভাবনে জোট বাঁধে পাঁচ কিশোর। ভাবনার শুরুটা আসে চাঁপাই নওয়াবগঞ্জের হরিমোহন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. ত্ব-সীন ইলাহীর মাথা থেকে। স্বপ্নপূরণের সেই ভাবনায় যুক্ত হন নাটোর সরকারি বালক বিদ্যালয়ের মাহ্দী বিন ফেরদৌস, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের মো. নুর আহমাদ, নওগাঁর নাজিপুর সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের নাদিম শাহরিয়ার অপূর্ব এবং নরসিংদীর ছেলে, রাজধানীর ধানমন্ডির লরেটো স্কুলের এ লেভেল পড়ুয়া মো. সানজিম হোসেন। তাদের উদ্ভাবনে সহযোগী ছিলেন ডুয়েটের যন্ত্রপ্রকৌশল বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান।

প্রতিযোগিতায় এ বছর রেকর্ড ৩৪০০ জন অংশ নেন। যেখানে প্রায় শত শত টিম ছিল। এর মধ্যে পুরো বিশ্ব থেকে ৪ ক্যাটাগরিতে ১০টি দলকে বিশ্ব সেরা ঘোষণা করা হয়। তাদের মধ্যে এই টিম একটি। এই দলের গল্প শোনাচ্ছেন হৃদয় তালুকদার

মো. ত্ব-সীন ইলাহি
দলনেতা 
এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জের হরিমোহন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। নাসা কনরেড চ্যালেঞ্জের জয়ী Not a Boring Team-এর অধিনায়ক।

মো. ত্ব-সীন ইলাহির জন্ম ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে। বাবা-মার চাকরির সুবাদে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেড়ে ওঠে। বাবা মো. ইসাহাক আলী ও মা মোসা. মাসুমা আক্তারের একমাত্র ছেলে ত্বসীন। ২০১৮ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে পিইসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় সে।

ছোটবেলা থেকে ইলেকট্রনিক্স জিনিসের প্রতি তার বেশ ঝোঁক ছিল। রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি ভেঙে মোটর বের করে ফ্যান, লাইট বানাত। এভাবেই তার প্রজেক্ট বানানোর যাত্রা শুরু। ২০১৮ সালে একদিন স্কুলে সমাবেশ করার পর তার এক বন্ধু এসে বলল ও নাকি একটি এটিএম বানিয়েছে। ত্বসীন চমকে গিয়ে জানতে চাইল যে ওটা সে কীভাবে বানাল। ত্বসীনের বন্ধু বলল ইউটিউব দেখে এসব শেখা যায়। তারপর থেকেই মূলত তার রোবোটিক্সে যাত্রা শুরু। নতুন কিছু আবিষ্কার করার ইচ্ছা, অজানাকে জানার কৌতূহল তাকে সবসময় অনুপ্রেরণা দিয়েছে। সবাই একাডেমিক রেজাল্ট, জিপিএ ফাইভ, এ প্লাস নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও সে সব সময় ব্যতিক্রমী চিন্তা করে।

ফিজিক্স অলিম্পিয়াড, গণিত অলিম্পিয়াড, রোবট অলিম্পিয়াড ইত্যাদিতে আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পায় সে। তাছাড়া বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেটও রয়েছে তার ঝুলিতে। সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ, জাতীয় শিশু পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছে সে। বর্তমানে তার ঝুলিতে ৭০টি সার্টিফিকেট রয়েছে।

একবার পরিচিত হলো রাজশাহী বিভাগের সেরা কিছু খুদে রোবটবিদের সঙ্গে। তারপর তাদের দলে যুক্ত হলো সে। এরপর একদিন নাসা কনরেড চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে পারল। বিষয়টা গ্রুপে জানানোর পর সবাই অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিল। মূলত তাদের গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে তাদের কাজ শুরু হয়।

ত্বসীনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গবেষণার দিকে নজর দেওয়া। সে পদার্থবিজ্ঞানের গবেষক হতে চায়। নতুন কিছু আবিষ্কার করে মানবজাতির কল্যাণ করতে চায়।

মাহ্দী বিন ফেরদাউস
কো-অর্ডিনেটর 
জন্ম ২০০৮ সালে রাজশাহীতে। বাবার চাকরির সুবাদে বেড়ে উঠেছেন টাঙ্গাইল শহরে। তারপর নাটোরে এসে এখন নাটোর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।

বাবা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের শিক্ষক হওয়ায় ইলেকট্রনিক্স-এর প্রতি প্রবল আগ্রহী হয়ে ওঠে। বাবার ছাত্রদের সাহায্য, ইউটিউব এবং নিজের ইচ্ছা থেকেই ইলেকট্রনিক্সের সামগ্রী বানানোর কৌশল আয়ত্ত করে। ছোট ছোট ইলেকট্রনিক্সসামগ্রী বানিয়ে সহপাঠী ও শিক্ষকদের দেখাত। সেই থেকেই শিক্ষকরা তাকে বিজ্ঞানী বলে ডাকতেন।

বিজ্ঞান মেলায় গিয়ে বিভিন্ন স্টলের প্রজেক্ট দেখত আর তাদের কাছে নানান কিছু জানতে চাইত। করোনাকালীন রোবোটিক্স নিয়ে মাথা ঘামায় এবং আরডুইনোর সঙ্গে পরিচিত হয়। প্রথমে লাইন ফলোয়ার বানায় কিন্তু সফল না হওয়ায় তা ছেড়ে দেয়। পরে ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করে কিন্তু পরে সেখান হতে সরে আসে। এর পর নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় আবার প্রজেক্ট কম্পিটিশনে ২০২২ সালের 6th RUSC Science fest থেকে যাত্রা শুরু। এ পর্যন্ত ২৫টিরও বেশি প্রতিযোগিতায় আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যাযয়ে পুরস্কার পায়।

২০২৩ সালে এসএমসি মনিমিক্স প্লাস খুদে বিজ্ঞানী অ্যাওয়ার্ড পায়। এবং BCSIR, বিজ্ঞান চিন্তা, বিজ্ঞান উৎসব, IUT, RCNSF-সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়। এই প্রতিযোগিতায় অনেকের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে এবং ইনোভেশন টিম গঠন করে।

এসএসসি টেস্ট পরীক্ষার পর তারা জীবনের সব অভিজ্ঞতা এই Conrad চ্যালেঞ্জ-এর জন্য কাজে লাগায়। এটাই জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা এবং প্রথম অংশ নিয়েই বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। দলের কো-অর্ডিনেটর হয়ে সে খুবই আনন্দিত।

ভালো মানুষ হওয়ার পাশাপাশি টেসলার মতো বিজ্ঞানী হওয়ার ইচ্ছে তার। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশ থেকে পড়াশোনা শেষে নিজের দেশে টেকনোলজি কাজে লাগিয়ে দেশকে স্মার্ট করতে সাহায্য করা।

নাদিম শাহরিয়ার অপূর্ব
ইনোভেশন ও হার্ডওয়্যার 
নাদিমের জন্ম ২০০৮ সালে নাটোরে। বাবা চক্ষু ডাক্তার। ছোট থেকে ৯ বছর পর্যন্ত তার বাবার কাজের সূত্রে নাটোরেই ছিল। তারপর থেকে সপরিবারে ঢাকায় কিছুদিন থাকার পরে নওগাঁ। নজিপুর সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয় থেকে বর্তমানে সে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। তার নানা পল্লী বিদ্যুতের বোর্ড সভাপতি ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই নানার ইলেকট্রিক্যাল কাজকর্ম দেখতে দেখতে নাদিমের ইলেকট্রিক্যাল কাজের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় কিছু সাধারণ জিনিসপত্রের মাধ্যমে নাদিম কাজ শুরু করে বিভিন্ন ধরনের কাজ শেখে এবং রোবোটিক্সের দিকে এগোয়।  
সপ্তম শ্রেণিতে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতার জন্যে প্রথম রোবটিক্স প্রজেক্ট তৈরি করে। যদিও করোনা মহামারির কারণে অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়নি। তবে করোনা মহামারির সময়ে রোবোটিক্সের মাধ্যমে নিজের অবসর সময় কাজে লাগাত। নবম শ্রেণি থেকে নাদিম বিভিন্ন রোবটিক্স কম্পিটিশনে অংশ নেওয়া শুরু করে এবং এখন পর্যন্ত ২৫টিরও বেশি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করে। ২০২২ সালে এসএমসি মনিমিক্স প্লাস খুদে বিজ্ঞানী অ্যাওয়ার্ড পায়। ২০২৩ সালে রোবটিক্স অলিম্পিয়াডে প্রথম এবং ন্যাশনাল টেকনোলজি ফেয়ারে দ্বিতী হয়। এসব প্রতিযোগিতা থেকেই সবার সঙ্গে পরিচয় এবং দল গঠন করে নাদিম।

এটি তাদের দলের প্রথম এবং প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া। দলের এক্সিকিউটিভ এবং ফাউন্ডিং মেম্বার হিসেবে নাদিম গর্বিত। নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চায় নাদিম। BUET-এ পড়ার মাধ্যমে প্রকৌশলী হয়ে দেশের জন্য কাজ করার স্বপ্ন কার।

মো. সানজিম হোসেন
রিসার্চ এবং অ্যানালাইসিস 
দলের রিসার্চ এবং অ্যানালাইসিস মো. সানজিম হোসেনের জন্ম নরসিংদী জেলায়। বাবা মো. সোহরাব হোসেন এবং মা শারমিন সুলতানা। বিদেশে পড়ার স্বপ্ন থাকায় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াশোনা করছে। গবেষণাবিষয়ক কাজ করতে তুমুল আগ্রহী। এই আগ্রহের কারণে 
সহপাঠীদের সঙ্গে বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেয় নিয়মিত। পরে পরিচিতির কারণে টিম আপ করে অনেক দলের সঙ্গে। সে নরসিংদী সায়েন্স অ্যান্ড রোবোটিক্স ক্লাবের সদস্য। সেই ক্লাবের হয়ে ৪৪তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলাতে প্রথম স্থান অধিকার করে।

এর পরে সে মালয়েশিয়ায় হওয়া WICE-এ বেস্ট প্রজেক্ট অ্যাওয়ার্ড, গোল্ড মেডেলসহ আরও পুরস্কার পেয়ে দেশের সুনাম বাড়িয়ে তোলে। এর পর পরই সে কনরেড-এ অংশ নেয়। রিসার্চ পেপার নিয়ে অনেক কাজ করেছে সে। এই দক্ষতা এবং প্রবল আগ্রহ তাকে এত দূর নিয়ে এসেছে। এর পেছনে একটা বিশাল অবদান আছে তার বাবা মায়ের। বাবা মা তাকে সব সময় সব দিক থেকে সমর্থন দিচ্ছেন। ভবিষ্যতে সে গবেষক হতে চায়। বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করার স্বপ্ন দেখে সানজিম।

মো. নূর আহমাদ
এমবেডেড সিস্টেম 
জন্ম ২০০৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাজশাহীর সদর উপজেলায়। বাবা শফিকুল ইসলাম ও মা নুরজাহান বেগম। পরিবারের দুই সন্তানের মধ্যে নূর ছোট। ২০১৯ সালে পিএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় এবং বর্তমানে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র।

ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তার ভালো লাগত। মা তাকে অনেক আগ্রহ ও সাহস জোগান। বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতাতেও ছিল তার সুনাম। বিভিন্ন ধরনের খেলনা খুলে তৈরি করত ওয়াটার বোর্ড, মোটর ফ্যান ও হরেক রকম জিনিস। ২০১৯ সাল তার বড় ভাই গোলাম মোর্শেদের বানানো বিভিন্ন রোবট ও গেম তাকে আকৃষ্ট করে। তখনই কিছু উদ্ভাবন করার ইচ্ছে জাগে। ভাইয়ের কাছে শিখতে চাইলে তাকে সি প্রোগ্রামিং শেখান এবং পরবর্তী পথের রাস্তা দেখিয়ে দেন। প্রোগ্রামিং-এর প্রতি তার ভালো লাগা গভীর হতে শুরু করে। সময় যেতে না যেতেই দেশজুড়ে লকডাউন হয়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ সময় কাটত প্রোগ্রামিং নিয়ে। সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি আয়ত্ত করে পাইথন ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট। ফ্রিল্যান্সিংয়েও রয়েছে তার অভিজ্ঞতা। বর্তমানে মেশিন লার্নিং-এর মতো কমপ্লিকেটেড সিস্টেমের সঙ্গে কাজ করছে সে।

২০২২ সালে রোবটিক্স নিয়ে যাত্রা শুরু করে সে। নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নানা ধরনের রোবট আবিষ্কার করে। অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। তার পাঁচটি ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডসহ (বিসিএসআইআর, রোবকার্নিভাল, ফিজিক্স অলিম্পিয়াড, ইউএসসি সায়েন্স অলিম্পিয়াড, কনরাড চ্যালেঞ্জ) চল্লিশটিরও বেশি সনদ রয়েছে।

বিভিন্ন বিভাগীয় ও জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের দল গড়ে ওঠে।

নূর আহমাদ নেক ও আদর্শ মানুষ হতে চায়। স্কলারশিপ নিয়ে দেশের বাইরে থেকে পড়া শেষ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।


এ আয়োজনে যেভাবে গেছে দলটি

প্রতিযোগিতার আয়োজক কনরেড ফাউন্ডেশন নামক একটি সংস্থা। ২০০৮ সাল থেকে প্রতিযোগিতাটি প্রত্যেক বছর আয়োজন করা হয়।  বর্তমানে নাসা, ডেল টেকনোলজিস এবং বিশ্বের অনেক নামিদামি টেকজায়ান্ট কোম্পানি এ প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত আছে।

এটি মূলত একটি উদ্ভাবনী এবং বিজনেস কনটেস্ট। এখানে একটি দলকে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর কাজ করতে হয়। কোনও একটা ফিল্ডের সমস্যা সমাধান করতে হয়। তারপর সেটার মডেল বানাতে হয়। সমাধানটা বাস্তব জীবনে কীভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরতে হয়। উদ্ভাবন করার পর এই প্রজেক্টকে প্রোডাক্ট এ রূপান্তর করে এর একটি বিজনেস মডেল প্রস্তুত করতে হয়। মূলত উদ্ভাবন এবং পরবর্তীতে বিজনেস রিলেটেড বিষয় সময় নিয়ে কাজ করতে হয়।

এক কথায় এটা খুদে উদ্যোক্তাদের মিলনমেলা। ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী বিশ্বের যে কেউ এতে অংশ নিতে পারে। খুদে উদ্যোক্তাদের বিশ্বসেরা মঞ্চ বলা হয় এটিকে। মোট ৪ ধাপে প্রতিযোগিতাটি সম্পন্ন হয়।

এর মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো তৃতীয় স্টেজ পার করতে পেরেছে। এর আগে ২০১৫ সালে একটি দল প্রথমবারের মতো এ প্রতিযোগিতার ফাইনাল স্টেজে গিয়েছিল। নয় বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো এই তৃতীয় স্টেজ পার করে বর্তমানে অল্টারনেটিভ ফাইনালিস্ট হিসেবে অবস্থান করছে বাংলাদেশের নট এ বোরিং টিম।

তৃতীয় স্টেজে পুরো বিশ্ব থেকে ২৫০ এরও বেশি দল প্রতিযোগিতা করে। যেখানে এই দল বিশ্বের মধ্যে দশম হয় Energy and Environment ক্যাটাগরিতে।

তারা যেটা নিয়ে কাজ করেছে সেটা হচ্ছে মূলত পরিবেশ এবং শক্তি ক্যাটাগরি। পরিবেশ বাঁচাতে পারে এবং শক্তি সংরক্ষণ করতে পারে এরকম কোনও সমস্যা সমাধানের কাজ করতে হয়েছে। দলটি সড়ক দুর্ঘটনার ফলে পরিবেশ এবং শক্তির কী ক্ষতি হয় সেটি তুলে ধরেছিল এবং সেটার জন্য একটি সমাধানও বের করেছে।

জাহ্নবী

মেঘের অনেক গুণ

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১২:৪৯ পিএম
মেঘের অনেক গুণ
দুর্দান্ত ঢাকার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে মেঘ। সাকিব দম্পতির মাঝে ছোট্ট মেঘ

মেঘের অনেক গুণ। আঁকিয়ে, ডিজাইনার। তবে গুণ থাকলেই তো আর হয় না, সে গুণের প্রকাশ যেমন করতে হয়, তেমনি কদরও করতে হয়। মেঘের গুণের কদর করেছে দুর্দান্ত ঢাকা। দুর্দান্ত ঢাকাকে মনে আছে তো! এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ১২ ম্যাচের ১১টিতেই হেরেছে যদিও, তবে অন্য সব দলের চেয়ে একটা দিকে অন্তত এগিয়ে আছে দলটি। আর সেটা হলো গুণের কদর করা। দুর্দান্ত ঢাকার জার্সির ডিজাইন করার দায়িত্ব পেয়েছিল সতের বছর বসয়ী এই গুণী টিনএজ মেঘ।

মাহির সারোয়ার মেঘের জন্ম ঢাকায়, ২০০৬ সালে। প্রয়াত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির সন্তান মেঘ। ছোটবেলা থেকেই আঁকতে ভালোবাসেন মেঘ এবং ক্রিকেট নিয়েই তার ধ্যানজ্ঞান। নিয়মিত অনুশীলন করেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে। নিজেকে পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে গড়ে তুলতে প্রচেষ্টারও কমতি নেই। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটোরিয়াল থেকে ও লেভেলে পড়াশোনা শেষ করেছেন ১৭ বছর বয়সী মেঘ।

আঁকতে ভালো লাগে বলেই জার্সির ডিজাইন নিয়ে মেঘ কাজ করছেন অনেক আগে থেকেই। ২০১৫ সালে ৯ বছর বয়সে মেঘ অংশ নিয়েছিলেন রবির লোগো ডিজাইন হান্টে। সে সময় এ ফোর পেপারে লোগো ডিজাইন করেই সাফল্য পান মেঘ। এরপর থেকে মেঘের স্বপ্ন আরও উঁচুতে উঠতে থাকে। মেঘ প্রতিযোগিতা শুরু করেন নিজের সঙ্গে। নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। পরিশ্রম যে কাউকে হতাশ করে না তার উদাহরণ মেঘ। তিনি জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ফুটবল জার্সির ডিজাইন করার সুযোগ পান এবং সুযোগটাও কাজে লাগিয়ে ফেলেন।

দেশের ক্রিকেটের অন্যতম বড় ফ্র্যাঞ্জাইজি টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ শেষ হয়েছে সেই কবে। তবে বিপিএল শুরুর আগে ট্রফি নিয়ে অফিসিয়াল জার্সি পরে ফটোশুট করেছেন সাত দলের ক্রিকেটাররা। বিশেষভাবে নজর কেড়েছে দুর্দান্ত ঢাকার জার্সি। নীল রঙের বিভিন্ন শেড দিয়ে করা এই জার্সিতে ফুটে উঠেছে পদ্মা সেতু ও ঢাকার মেট্রোরেল। এই জার্সির রূপকার মাহির সারোয়ার মেঘ।

বিপিএলে তার ডিজাইন করা জার্সি দিয়ে খেলা হবে এটা ছিল মেঘের কাছে স্বপ্নের মতো। নিজের ডিজাইন করা জার্সিটা মামার মাধ্যমে দুর্দান্ত ঢাকা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেন। অপেক্ষার পালা শেষ হয় কয়েকদিন পর। ঢাকার কর্তৃপক্ষ জানায় মেঘের জার্সি তাদের পছন্দ হয়েছে। খবর শুনে মেঘ এতটাই উৎফুল্ল হয়েছিলেন যে, তার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল। এরপর সেই জার্সি পরেই অধিনায়কদের ফটোসেশন করেছেন ঢাকার অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

মেঘের ডিজাইন করা জার্সিতে তুলে ধরা হয়েছে ইতিহাসের বিখ্যাত ঢাকা নগরীর নানা ইতিহাস ও স্থাপনা। মেঘ জানান, ‘আমাদের ঢাকা অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নগরী। এখানকার শহিদ মিনার, সংসদ ভবন, লালবাগ কেল্লা ইত্যাদি তুলে ধরেছি। ঢাকার অন্যতম বাহন মেট্রোরেলও তুলে ধরেছি। আমি অনেক দিন থেকেই এসব ডিজাইন নিয়ে কাজ করি, এবার বড় পরিসরে সেটা প্রকাশ হলো। এর আগেও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের জার্সি করেছি। এটা আমাকে ভবিষ্যতে আরও অনেক দূরে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছে।’

মাহির মেঘকে নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেছে দুর্দান্ত ঢাকা। সেখানে মেঘের ছবি দিয়ে তারা লিখেছে- আমাদের দলের আইকনিক লুকের শিল্পী। আমাদের জার্সি ডিজাইনার মাহির সরওয়ার মেঘ! সেই পোস্ট শেয়ার করে মেঘ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একজন জার্সি ডিজাইনার হিসেবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অর্জন, ধন্যবাদ সবাইকে।’ দুরন্ত ঢাকার জার্সি করার পর মেঘ দেখা করেছেন দুর্দান্ত ঢাকার খেলোয়াড়দের সঙ্গে। সবাই তাকে উৎসাহ জানিয়েছেন এবং প্রশংসা করেছে বলে জানিয়েছে মেঘ।

জাহ্নবী

মেরি ত্যুসোর জাদুঘর

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১২:৪৬ পিএম
মেরি ত্যুসোর জাদুঘর

প্রায় ২০০ বছর আগের কথা। ১৭৭৭ সালে ১৬ বছর বয়সী এক টিনএজার বানিয়ে ফেললেন ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ারের মোমের মূর্তি। আর ১৮৮ বছর আগে ১৮৩৫ সালের ২২ মে সেই মোমের মূর্তিগুলো নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হলো অন্য রকম এক জাদুঘর। এই টিনএজারের নাম মেরি ত্যুসো। আর সেই থেকে শুরু, বিস্তারিত টিনএজপ্লাস ডেস্ক থেকে...

১৮ মে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস। পৃথিবীতে কত রকমের জাদুঘর রয়েছে। তবে ১৮৮ বছর আগে ১৮৩৫ সালের ২২ মে ইংল্যান্ডের লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার শহরের মেরিলবোন রোডে প্রতিষ্ঠিত হয় ব্যতিক্রম এক জাদুঘরের। এর প্রতিষ্ঠাতা এক টিনএজার। নাম তার মেরি ত্যুসো। কে ছিলেন মেরি ত্যুসো?

মেরি ত্যুসোর জন্ম ১৭৬১ সালের ১ ডিসেম্বর ফ্রান্সের স্ট্রসবার্গে। বাবা জোসেফ ছিলেন সৈনিক। মায়ের নাম অ্যানে মেরি ওয়েল্ডার। মেরির জন্মের দুই মাস আগেই বাবা মারা যান। ছয় বছরের মেরিকে নিয়ে তার মা চলে আসেন সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে। এখানকার স্থানীয় ডাক্তার ফিলিপ কার্টিয়াসের বাড়ি দেখাশোনার কাজ নেন। ডাক্তার ফিলিপ খুব ভালো মোমের মূর্তি বানাতে পারতেন। তার কাছেই মোমের মূর্তি বানানোর কৌশল শিখে নিলেন মেরি ত্যুসো। ওই সময় মোমের মূর্তি বানানোর কাজ ছিল ভীষণ জনপ্রিয় ব্যাপার।

এর মধ্যে মোমের মূর্তি বানিয়ে বেশ সাড়া ফেলেন দেন ত্যুসো। ১৭৮০ থেকে ১৭৮৯ সাল পর্যন্ত ফরাসি বিপ্লব চলতে থাকে। ১৭৮৭ সালে ফ্রান্সের বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে ত্যুসোকেও গ্রেপ্তার করে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়। ফরাসি বিপ্লবের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাকে গিলোটিনে হত্যা করার দাবি ওঠে। এ জন্য তার মাথাও মুড়িয়ে ফেলা হয় গিলোটিনে হত্যার প্রস্তুতি হিসেবে। তবে টানা ছয় বছর বন্দি থাকার পর ১৭৯৩ সালে ত্যুসো মুক্তি পান। ১৭৯৪ সালে মৃত্যুর আগে ডাক্তার কার্টিয়াস তার বানানো সব মোমের মূর্তির স্বত্ব মেরি ত্যুসোকে দিয়ে যান। ১৭৯৫ সালে ফ্রান্সিস ত্যুসোর সঙ্গে মেরির বিয়ে হয়।

১৮০২ সালে মেরি ত্যুসো লন্ডনে আসেন তার পোর্ট্রেটগুলোর প্রদর্শনী করার জন্য। ৩৩ বছর ধরে ব্রিটেনের নানান জায়গায় প্রদর্শনী শেষে ১৮৩৫ সালে লন্ডনের বেকার স্ট্রিটে একটি স্থায়ী প্রদর্শনী গড়ে তোলেন মেরি। সেই জায়গাটাই একসময় ধীরে ধীরে মাদাম ত্যুসোর জাদুঘরে পরিণত হয়েছে। 
১৯৭০ সালে মাদাম ত্যুসোর জাদুঘরের বিদেশি শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয় নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে সামান্য মোমের মূর্তি গড়া এক টিনএজারের মোমের জাদুঘর এরপর ছড়িয়ে পড়তে লাগল পৃথিবীর নানা দেশে, নানা শহরে। এশিয়ার বেইজিং, হংকং, টোকিও, দুবাই, ব্যাংকক, দিল্লিসহ ১০টা, ইউরোপের ভিয়েনা, ইস্তাম্বুল, বার্লিনসহ ৮টা, উত্তর আমেরিকার হলিউড, নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটনসহ ৭টা এবং অস্ট্রেলিয়ার সিডনিসহ দুনিয়ার চার মহাদেশের ২৬টি শহরে মাদাম ত্যুসোর জাদুঘর রয়েছে।

জাহ্নবী

অস্ট্রেলিয়ার টিনএজার

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১২:৪৫ পিএম
অস্ট্রেলিয়ার টিনএজার

অস্ট্রেলিয়ার টিনএজারদের জীবন অন্যান্য উন্নত দেশের টিনএজারদের মতোই। অন্যান্য দেশের মতো অস্ট্রেলিয়ায় ১২-১৭ পর্যন্ত বয়সী ছেলেমেয়েদের টিনএজার হিসেবে ধরা হয়। এই বয়সে তারা হাইস্কুলে যায়। এরপর তারা গ্র্যাজুয়েট হয় এবং ১৮ বছরে পড়লেই প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে স্বীকৃতি পায়। তখন সে ভোট দিতে পারে, মদ এবং সিগারেট কিনতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যেক প্রদেশে ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষাব্যবস্থা বিদ্যমান।

তবে ছেলেমেয়েদের এক বছরের বাধ্যতামূলক প্রাক-বিদ্যালয় সময়সহ ১৩ বছরের স্কুল জীবন পার করতে হয়। ছয় বছর থেকে শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনা, চলতে থাকে এর পরের সাত বছর। আট বছর বয়স থেকে শুরু হয় হাইস্কুল। এই পর্ব চলতে থাকে পরের চার বছর। অস্ট্রেলিয়ায় স্কুল জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে নভেম্বর বা ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে। সাধারণত একটি বছর বড়ো দুটি ভাগে বিভক্ত থাকে। এগুলোকে সেমিস্টার বলে। আবার বড়ো ভাগগুলো ছোট দুই ভাগে ভাগ হয়। ছোট ভাগের মধ্যে অল্প সময়ের ছুটি থাকে এবং বড় সেমিস্টারের  মধ্যে বেশি সময়ের জন্য ছুটি দিয়ে ভাগ করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষই সিদ্ধান্ত দেয় একজন ছাত্র কয়টা বিষয় পড়তে পারবে। তবে এই সংখ্যা পাঁচ থেকে সাতের মধ্যে হয়। ইংরেজি এবং অঙ্ক সব প্রদেশেই স্কুলপর্যায়ে ছাত্রদের জন্য  বাধ্যতামূলক। একটা সুযোগ আছে, স্কুল যদি পড়তে না দেয় তবে কোনো ছাত্র নিজের ইচ্ছামতো কোনো বিষয় দূর-শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় পড়তে পারে। দেখা গেছে, শতকরা ৮০ ভাগ অস্ট্রেলিয়ান সাগরপাড়ের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে। তাই সাগরপাড়ে বেড়াতে যাওয়ার বিষয়টি খুবই উপভোগ করে। সাগরপাড়ে বেড়াতে যাওয়া মানেই প্রচুর আনন্দ। সেখানে প্রাইমারি পর্যায় থেকে হাইস্কুল অবধি ছেলেমেয়েদের সাঁতার শেখার  প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কেউ কেউ সাঁতারে দুরন্ত হয়ে ওঠে প্রতিযোগিতার জন্য আবার কেউ শুধু জলে পড়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য সাঁতারটা শিখে রাখে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষই বাধ্যতামূরকভাবে সাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে।   

গ্রামের দিকের স্কুলগুলো সাধারণত ছোট আকারের হয়ে থাকে। এক কি দুই রুমের। শিক্ষকও হয়তো দুই কী একজন। এসব স্কুলে শিক্ষক পাওয়া খুব মুশকিল হয়। কারণ শিক্ষকরা গ্রামের দিকে মাস্টারি করতে আসতে চান না। গ্রামে কে থাকবে শহরের বিলাসী জীবন ছেড়ে?

অস্ট্রেলিয়ার টিনএজাররা টাকা-পয়সার জন্য বাবা-মায়ের ওপর নির্ভর করা অপছন্দ করে। এজন্য তারা স্থানীয় সুপারমার্কেট অথবা রেস্তোরাঁয় কাজ করে পয়সাপাতি উপার্জন করে। ১৬ বছরের নিচে হলে সপ্তাহে ১২ ঘণ্টার বেশি কাজ করা নিষেধ এবং কাজ করতে হলে বাবা-মায়ের অনুমতি নিতে হয়। ১৬ বছর বয়স হলেই একজন টিনএজার নিজের ইনকাম ট্যাক্স ফাইল খুলতে পারে, তার নিজের চিকিৎসা কার্ড করাতে পারে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার টিনএজাররা বাস করে ফুটবল, ক্রিকেট আর সাঁতার নিয়ে। স্কুলের পর বেশির ভাগ টিনএজার ক্রিকেট বা কোনো খেলা খেলতে নেমে যায়। ছেলেদের প্রিয় হলো ক্রিকেট ও রাগবি এবং মেয়েদের প্রিয় খেলা হলো নেটবল, যা বাস্কেটবলেরই ক্ষুদ্র সংস্করণ। প্রদেশ বা শহরের মধ্যে প্রতিযোগিতার ব্যাপারটি অস্ট্রেলিয়ায় খুবই বেশি। এজন্য খেলার সময় দলের পতাকা বা ক্লাব বা দলের জন্য কোনো নির্দিষ্ট গান স্টেডিয়ামে গাওয়া নিষেধ। দেখা গেছে, এতে দলীয় টান এতই বেড়ে যায় যে শেষতক হাতাহাতি থেকে মারামারিতে গড়ায়।

অস্ট্রেলিয়ার টিনএজারদের জীবন অন্যান্য উন্নত দেশের টিনএজারদের মতোই। তারা এখন বেশির ভাগ সময় বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে চ্যাটিং করে কাটাতে পছন্দ করে। এখন তাদের কাছে পরিবারটা আসে বাইরের জগতের পরে। এতে পরিবারের সঙ্গে টিনএজারদের ব্যবধানও বাড়ছে। সময় কাটানোর জন্য আছে অনেক ব্যবস্থা। যেমন বাইকারদের জন্য আছে ভিন্ন রোড ট্র্যাক। আছে স্কেটিং বাউল, শপিং সেন্টার, বলঅ্যালি, মুভি থিয়েটার, লেজার ট্যাগ ইত্যাদি। এসব স্থানে টিনএজাররা সহজেই সময় কাটাতে পারে। তবে শতকরা ১০ ভাগ টিনএজার কিন্তু শনি ও রবিবার ছুটির আগের রাত শুক্রবার থেকেই পার্টি করা শুরু করে। মদ পান করে ও গাঁজা সেবন করে। বাবা-মায়ের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার সঙ্গে জড়িত ছেলেমেয়ের সংখ্যা শতকরা ৫০ ভাগ! অস্ট্রেলিয়ার টিনএজাররা মোটামুটি ১৫ বছর বয়সেই যৌনতার স্বাদ পেয়ে যায়। যদিও অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের নিচে কারও সঙ্গে সম্মতি থাকলেও যৌন সম্পর্কে জড়িত হওয়া আইনের দৃষ্টিতে গর্হিত অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। উচ্চ আয়ের দেশ হওয়া সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ার টিনএজারদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকেই ডাকাতি, গাড়ি চুরি, ছিনতাই ইত্যাদিতে জড়িয়ে পড়ছে। পুলিশ প্রতিবেদন অনুযায়ী যেখানে ২০১৯ সালে এই অপরাধগুলো সংগঠিত হয়েছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ, সেখানে গত বছর এই হার ১৫ শতাংশেরর ওপর। সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয় এ ধরনের অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে ১০- ১৭ বছর বয়সী টিনএজাররা! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব অপরাধ থেকে টিনএজারদের ফিরিয়ে আনার জন্য এখনই দরকার কোনো জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া। আবার কেউ বলছেন, টিনএজারদের লালন-পালন করার জন্য আমাদের উচিত পুরনো দিনের নিয়মকানুনগুলো ফিরিয়ে আনা। নিয়মকানুন মানে ল্যাঠ্যাষৌধের কথা বলছেন কি না কে জানে!

তবে যারা অস্ট্রেলিয়ায় নতুন আসে সেই সব টিনএজারের জন্য নতুন পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়ানোটা খুব শক্ত। কারণ নতুন পড়ালেখার পদ্ধতি, নতুন বন্ধু জোটানো এবং পরিবারকে বাইরের অনেক কিছুকে বোঝানো। ফেলে আসা নিজের সংস্কৃতির সঙ্গে নতুন সংস্কৃতিকে মেলানো, এসবই অস্ট্রেলিয়ায় নতুন আসা টিনএজারদের জন্য সমস্যাবহুল।

এতসবের পরও অস্ট্রেলিয়ানরা বলে থাকে পরিবার হচ্ছে পরিবার, এর সঙ্গে কোনো কিছুরই তুলনা হয় না। এখনো তারা অনুগত পরিবার ও আত্মীয়-পরিজনদের নিয়েই ভবিষ্যতের দিকে এগোতে চায়।

জাহ্নবী

 

মায়ের জন্য

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৪, ০৩:১৪ পিএম
মায়ের জন্য
ফরাসি আর্টিস্ট উইলিয়াম অ্যাডফ বাগরো এবং পিয়েরে অগ্যস্ত রনোয়ার এর আঁকা মা ও শিশু

মা যদি আমাদের ভালো না বাসতেন, আদর না করতেন, যত্ন না করতেন- তাহলে আমাদের জীবন এতটা সুন্দর ও মধুময় হয়ে উঠত না। কীভাবে? টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে বিস্তারিত জানাচ্ছেন আহমেদ রিয়াজ

মায়ের ভালোবাসা তুলনাহীন
এটা কেবল মানুষ নয়, প্রাণীদের বেলায়ও সত্যি। মানুষ থেকে হাতি (হাতিদের গর্ভধারণের সময় ২২ মাস), এমনকি ওরাংওটাংও (যারা সন্তান জন্মের চার মাস পর্যন্ত সন্তানকে চোখের আড়ালও করে না), মেরু ভালুক (যারা গর্ভধারণের সময় দ্বিগুণ ওজনের হয়ে যায় এবং আট মাস না খেয়ে থাকে), বাঘ, সিংহ, সিলমাছ, তিমিসহ প্রত্যেক প্রাণীর মায়েরা সন্তানদের জন্য কত কিছু যে করে। এই সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য মায়েদের কত রকমের শারীরিক ধকল যে সইতে হয় জীবনভর, তার হিসাব কি কেউ করেছি কখনো। সন্তানের প্রতি মায়ের এই ভালোবাসা তুলনাহীন।

মাতৃত্বে বদলে যায় মায়ের মস্তিষ্ক
এক গবেষণায় দেখা গেছে সন্তান জন্মের চার মাস পর মায়ের মস্তিষ্কে অনেক বেশি গ্রে ম্যাটার দেখায়। এই গ্রে ম্যাটার হচ্ছে মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডের মাঝামাঝি প্রয়োজনীয় এক ধরনের টিস্যু। এই টিস্যু মানসিক অবস্থা, শ্মরণশক্তি, আবেগ এবং চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস গর্ভাবস্থায় মস্তিষ্কে হরমোন প্রবাহের কারণে এটা ঘটে- যেমনটা টিনএজ হরমোনগুলো তাদের মস্তিষ্ক বিকাশের দিকে নিয়ে যায়।

সন্তানও মাকে আজীবনের সুরক্ষা দেয়
সন্তান জন্ম দেওয়ার মাধ্যমে মা ও সন্তানের শরীরের কোষ অদলবদল হয়। এবং মায়ের শরীরে এই কোষগুলো কয়েক দশক ধরে থাকে। গবেষকরা বলেন এসব কোষ কোনো নারীকে কয়েক ধরনের ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা দেয়। এর মধ্যে আলঝেইমার এমনকি হার্টের নানা রোগ থেকেও রক্ষা করে।

মা কাছে থাকলে মানসিক চাপ কমে যায়
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, মা কাছে থাকলে, এমনকি ফোনে মায়ের কণ্ঠ শুনলে অক্সিটসিন বেড়ে যায় এবং কর্টিসল স্তর কমে যায়- যা শিশুদের শান্ত করে দেয় এবং এমনকি টিনএজারদের আরও বেশি দায়িত্বশীল করে তোলে। তিন মাস বয়সী শিশুর সঙ্গে মায়ের হৃদস্পন্দনে সমন্বয় ঘটে, যখন মায়ের কাছ থেকে সামান্যতম আদরের ছোঁয়াও পায় শিশু- এমনকি মায়ের হাসিতেও।

জন্মের আগেই মায়ের কণ্ঠ চিনতে পারে শিশু
গবেষণায় দেখা গেছে গর্ভে থাকার সময় মায়ের কণ্ঠ শুনলে শিশুর হৃদস্পন্দর বেড়ে যায়, যেটা অন্য কারও কণ্ঠ শুনলে হয় না। মায়ের হৃদস্পন্দনের শব্দ এবং মায়ের কণ্ঠ শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে বিশেষ সহায়ক হয়, এমনকি জন্মের পরও।

সবার আগে
অন্য কেউ উপলব্ধি করার আগে মা তার সন্তানের কান্নার শব্দ টের পেয়ে যান, কারণ সন্তানের জন্মের পর মায়ের অক্সিটসিন স্তর বেড়ে যায়। এই পরিবর্তনের কারণ হচ্ছে সন্তানের শব্দ মায়ের শ্রবণ প্রক্রিয়া আরও বেশি অনুভূতিশীল হয়।

শিশুরা মায়েদের যে নামে ডাকে
ইংরেজ শিশুর কাছে ‘মম’, চাইনিজ শিশুর কাছে ‘মামা’, আইসল্যান্ডের শিশুর কাছে ‘মাম্মা’, হিব্রু শিশুর কাছে ‘এম’, ভিয়েতনামি শিশুর ‘মি’, ভারতীয় শিশুর কাছে ‘মা, বাংলাদেশের শিশুর কাছেও ‘মা’- ভাষার যত বৈচিত্র্যই থাকুক না কেন, যে কোনো শিশুর প্রথম শব্দই ‘মা’।

কঠোর মা বনাম কোমল মা
যেসব মা খুব বেশি কঠোর নন, তাদের কাছে শিশুরা অনেক বেশি মমতায় বেড়ে ওঠে। কঠিন শাসনে থাকা শিশুর চেয়ে, কঠিন শাসনে না থাকা শিশুদের সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক বেশি ভালো হয়।

অ্যান্টিবডি
শিশুর প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি মায়েরাই উৎপন্ন করেন। শিশুর শরীরে নানান রকম ব্যাকটিরিয়া অথবা ভাইরাস তৈরি হয়, মায়ের দুধে সেগুলোর ক্ষতিকর উপাদান সরিয়ে দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। এমনকি মা যখন শিশুকে আদরে চুমুও দেন, সেটাও শিশুর শরীরের ক্ষতিকর উপাদানগুলো হটিয়ে দেয়।

মায়ের আদর
যে কারও জীবনে মায়ের আদর ও ভালোবাসা কেবল মানসিক নয়, শারীরিক সক্ষমতাও তৈরি করে। যে সক্ষমতার কারণে আজ যারা টিনএজার, হেসে-খেলে, দৌড়ে, ছুটে বেড়াচ্ছ, মায়ের অকৃত্রিম ভালোবাসা না পেলে কি সেটা সম্ভব হতো? আর এ থেকেই প্রমাণিত হয়, দুনিয়ায় মায়ের চেয়ে বড় বন্ধু আর কেউ নেই। কাজেই সন্তানের কাছ থেকে ভালোবাসা মায়ের প্রাপ্য- মা দিবস কেবল এক দিন নয়- প্রতিদিন।

জাহ্নবী

ফারিয়া হক তারুণ্যের অনুপ্রেরণা

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৪, ০৩:০৯ পিএম
ফারিয়া হক তারুণ্যের অনুপ্রেরণা

পড়াশোনার গণ্ডি এখনো তার শেষ হয়নি। লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি সলিউশনস ফার্স্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কো-ফাউন্ডার এবং সিওও। আবার এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর হিসেবে যুক্ত আছেন ওয়ান ওয়ে স্কুলের সঙ্গে। করছেন উপস্থাপনাও। কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া তার জন্য প্রায় নিয়মিত ব্যাপার। পড়াশোনা সামলে এমন সব সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে সবার নজর কেড়েছেন ফারিয়া হক। ফারিয়ার বাবা-মা দুজনই শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত। পরিবারে মা-বাবা ছাড়া আছে ছোট এক বোন। ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় বসবাস ফারিয়াদের।

ছোটবেলা থেকেই ফারিয়া নানা রকম সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। প্রাথমিক কিংবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কবিতা আবৃত্তি, কোরআন তিলাওয়াত, মেধা স্বীকৃতি, সৃজনশীল খেলায় তার স্থান থাকত প্রথম দিকে। উচ্চমাধ্যমিক পড়ার সময় কবিতা লেখার শুরু তার। পত্র-পত্রিকায় সেসব কবিতা ছাপাও হয়েছে। শিক্ষকের বিদায়ে মানপত্র লিখে তিনি সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন। ফারিয়া মনে করেন, প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে ২০২২ সালের ২৬ জুন ফারিয়া হক ‘ওয়ান ওয়ে স্কুল’ নামক ফ্রি ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হন।

ছোটবেলায় স্কুলের নানা প্রোগ্রামের উপস্থাপনা করতেন। তাই বড় হয়ে উপস্থাপনা ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি তার। কিন্নর কণ্ঠ, সুন্দর বাচনভঙ্গি, উপস্থিত বুদ্ধিমাত্রার কারণে তিনি উপস্থাপনায় সবার প্রশংসা পান। ‘স্পিচ মাস্টার্স বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘পাবলিক স্পিকিং অ্যান্ড প্রেজেন্টেশন’ ওয়ার্কশপে ক্যাজুয়াল উপস্থাপনা তার অনন্য অর্জন। শত মানুষের মধ্যে নিজেকে সাবলীলভাবে তুলে ধরেন তিনি। এ ছাড়া আইটিসহ নানা বিষয়ে নিয়ে ফেসবুক লাইভে তাকে আলোচনা করতে দেখা যায়। ফারিয়া বলেন, উপস্থাপনায় অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করে।

ন্যাশনাল টেক কার্নিভাল-২৩ অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে আইটি অভিজ্ঞ, সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। ৫০০ লোকের উপস্থিতিতে এই প্রোগ্রামে অর্গানাইজার টিমের সদস্য ছিলেন তিনি। তিনি এই প্রোগ্রামে ‘ওয়ান ওয়ে স্কুল’ সম্পর্কে প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সবার কাছে তুলে ধরেন। গোটা প্রোগ্রামে তার সাংগঠনিক মুনশিয়ানার পরিচয় মেলে। ওয়ান ওয়ে স্কুল সম্পর্কে ফারিয়া বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য বিনামূল্যে অদক্ষ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা। এর আগে তিনি Youth Against Hunger-এর কেন্দ্রীয় কমিটিতে কাজ করেছেন। যার উদ্দেশ্য তরুণদের হাত ধরে দেশের মানুষের নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও রূপান্তরের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা।

২০২৩ সালের ১০ আগস্ট ওয়ান ওয়ে স্কুল আয়োজিত ‘ন্যাশনাল ফ্রিল্যান্সার্স কার্নিভাল-২০২৩’-এ আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন ফারিয়া হক। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে আসন অলংকৃত করেছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, আরও উপস্থিত ছিলেন দেশ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ এবং সারা দেশ থেকে আগত শিক্ষার্থীরা। সফল ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব হবেন। এমন ভাবনা ফারিয়ার ছিল অনেক দিন আগে থেকেই। তিনি একজন আইটি উদ্যোক্তা। সফলভাবে পরিচালনা করছেন সলিউশনস ফার্স্ট নামক একটি প্রতিষ্ঠান।

কাজ করতে গিয়ে কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন জানতে চাইলে ফারিয়া বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সব কাজেই সফল। কখনো অনেক ধরনের প্রশ্ন আসে, যেহেতু আমাদের উদ্দেশ্য মহৎ তাই ততটা সমস্যা হয়নি এখনো। আনন্দময় অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেকটা মিটিং বা টিম অ্যানাউন্সমেন্টের আর্টিকেল লেখা কিংবা প্রজেন্টেশনের পর ‘ওয়ান ওয়ে স্কুল’ পরিবারের সদস্যরা যখন বলেন ‘আপু আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি- এর চেয়ে প্রশান্তির আর কিছুই নেই। এমন একটি টিম পেয়েছি যারা আপনালয় নিজের পরিবারের মতো, কাজের প্রাপ্তি হিসেবে সব সদস্যের দোয়া ও ভালোবাসা অতুলনীয়। সৎ পথে সর্বদা দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করা এবং নিজের ও তরুণদের দক্ষতা অর্জনে সোচ্চার ভূমিকা পালন করবেন। এমনটাই তার আগামী দিনের সংকল্প।

জাহ্নবী