সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। বাংলাদেশ থেকে বেআইনিভাবে টাকা সরিয়ে সেখানে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্লুমবার্গসহ বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ হয়েছে। অথচ দেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এ বিষয়ে নিশ্চুপ।
সম্প্রতি একটি সংবাদপত্রে ‘সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্য যুক্তরাজ্যে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চেয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সালাউদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করা হয়েছে। এতে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সরকারকে বিবাদী করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিখ্যাত রিজেন্টস পার্ক এবং লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডের বেশ কাছে উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের আবাসিক এলাকার একটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি ২০২২ সালে ১ কোটি ৩৮ লাখ ডলারে (১৫২ কোটি টাকায়) বিক্রি হয়। সেখানকার একটি সম্পত্তি বিপণন কোম্পানির আলোকচিত্রে দেখা যায়, এ ধরনের বাড়ির মেঝে থেকে সিলিং পর্যন্ত জানালা, বেশ কয়েকটি ফ্লোরজুড়ে সর্পিল সিঁড়ি, রয়েছে থিয়েটার এবং ব্যায়ামাগার, বর্তমানে যার দাম ১৮০ কোটি টাকারও (১.৩ কোটি পাউন্ড) বেশি। ২০২২ সালে বাড়িটি কিনেছেন বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী দেশটির কোনো নাগরিক, বাসিন্দা এবং সরকারি কর্মচারী বছরে ১২ হাজার ডলারের (১৩ লাখ ১৭ হাজার টাকার) বেশি অর্থ দেশের বাইরে নিতে পারেন না। বাংলাদেশের আইনে করপোরেশনের বিদেশে তহবিল স্থানান্তরেও নানা বিধিনিষেধ রয়েছে। শুধু কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে অনুমতি দেওয়া হয়।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ গত জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সাল থেকে তার মালিকানাধীন কোম্পানি প্রায় ২০ কোটি ব্রিটিশ পাউন্ড (২৭৭০ কোটি টাকা) মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তি কিনে যুক্তরাজ্যে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা গড়ে তুলেছে। যুক্তরাজ্যের কোম্পানি হাউস করপোরেট অ্যাকাউন্ট, বন্ধকি চার্জ এবং এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি লেনদেনের ওপর ভিত্তি করে এ পরিসংখ্যান পেয়েছে বার্তা সংস্থা ব্লুমবার্গ।
ব্লুমবার্গের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্য লন্ডনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থেকে শুরু করে ইংল্যান্ডে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের বৃহত্তম আবাস টাওয়ার হ্যামলেটস এবং লিভারপুলে ছাত্রদের আবাসন পর্যন্ত বিস্তৃত সাইফুজ্জামানের সাম্রাজ্য। তার প্রায় ২৫০টি সম্পত্তি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রায় ৯০ শতাংশই নতুন অবস্থায় কেনা হয়েছে।