![দুষ্প্রাপ্য হলুদ শিমুল এল নার্সারিতে](uploads/2024/03/03/1709469431.yellow shimulkk1.jpg)
বসন্তের আগমনে স্বমহিমায় নিজেকে উজাড় করে তুলে ধরে প্রকৃতি। সবুজের পটভূমিতে লাল রঙের দ্যুতি ছড়িয়ে ফাল্গুনের শুরুতে শোভা ছড়ায় শিমুল ফুল। বসন্তে যতগুলো উজ্জ্বল ফুল ফোটে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য শিমুল ফুল। দেশে সাধারণত যে শিমুল গাছ দেখা যায়, তাতে ফুল ধরে লাল। ফলে শিমুল মানেই এদেশের মানুষের চোখে সহজেই জেগে ওঠে লাল শিমুলের ছবি। তবে হলুদ শিমুল বলেও কোন ফুল আছে এ খবর জানা নেই এদেশের সাধারণ মানুষের। দেশে বিরল হলুদ শিমুল গাছ রয়েছে দু'য়েকটি জায়গায়। দেশে এই হলুদ শিমুলের পরিচিতি বাড়াতে ও জনপ্রিয় করতে উদ্যোগি হয়েছেন রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ফয়সাল নার্সারির উদ্যক্তা ফয়সাল আহমেদ। এই নাসার্রিতে পাওয়া যাচ্ছে হলুদ শিমুল।
হলুদ শিমুল সাধারণ শিমুলেরই আলাদা রকমফের। ভিন্ন কোন প্রজাতি নয়। গাছের গড়ন, ফোটার সময় এবং ফুলের বিন্যাস একই রকম। ব্যতিক্রমী হলো রঙ। এর আগে নাটোরের একটি বাড়িতে সন্ধান পাওয়া যায় এই হলুদ শিমুলের। এছাড়াও জানা যায় মানিকগঞ্জে দু'টো আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দু'টো বড় হলুদ শিমুল গাছ রয়েছে। এর মধ্যে জাহাঙ্গীরনগরের একটি গাছ মারা গেছে। সুতরাং চোখ জুড়ানো এই হলুদ শিমুল বাংলাদেশে আছে মাত্র হাতে গুনে দুই-তিনটা।
নার্সারির মালিক ফয়সাল আহমেদ বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে দালানকোঠা, বাড়ি-ঘর। ফলে দিন দিন বনাঞ্চল হ্রাস পাচ্ছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু গাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে দেশে। যে কয়েকটি দুষ্প্রাপ্য গাছ এখনও দেশে আছে, সময়ের সঙ্গে এগুলো যেন হারিয়ে না যায় তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। আমরা এরই মধ্যে হলুদ শিমুলসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য গাছের কলম করে সংরক্ষণ করছি। আমরা চাই মানুষ যেন এই গাছগুলো নিজেদের সংরক্ষণে রাখতে পারে ও গাছগুলো ছড়িয়ে যায় পুরো দেশে। আমদের কলমের গাছ ছাঁদ বাগানে বেড়ে উঠার জন্য উপযুক্ত। আমাদের দেশে অনেক গাছই বিলুপ্তির পথে, এদের মধ্যে বৃক্ষ জাতীয় গাছগুলো বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছে। আমরা চাই বৃক্ষজাতীয় গাছগুলো সংরক্ষণ করে পুরো দেশে বাড়িতে বাড়িতে ছড়িয়ে দিতে। জীব বৈচিত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে আমরা সর্বদা সচেতন।
হলুদ শিমুল বাংলাদেশে দূর্লভ হলেও মালয়, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ চীন, হংকং এবং তাইওয়ানে ব্যাপকভাবে এ গাছের চাষ হয়। চীনের ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজ থেকে জানা যায় যে, ন্যাম ইউয়েতের রাজা চিউ তো খ্রীষ্ট-পূর্ব দ্বিতীয় শতকে হ্যান শাসনামলে সম্রাটকে প্রদান করেছিলেন। এ ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম হল ‘ককোসপারমাম রিলিজিওসাম’। এরা মালভেসি পরিবারের সদস্য। বাহিরের দেশে এই গাছকে বটারকাপ বা ইয়্যালো সিল্ক-কটন গাছ বলে ডাকা হয়।