![কোনো কিছু বারবার চাওয়া যাবে কি?](uploads/2024/05/14/87-1715670068.jpg)
রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের উপার্জনের প্রতি গুরুত্বারোপ করতেন। এমনকি কিভাবে তারা সসম্মানে উপার্জন করতে পারে, সে ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দিতেন। প্রয়োজনে লাকড়ি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করার তাগিদ দিতেন, যা তখনকার যুগে সবচেয়ে সহজ মাধ্যম ছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে লোকসকল, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং উত্তম পন্থায় জীবিকা অন্বেষণ করো। কেননা কোনো ব্যক্তিই তার জন্য নির্ধারিত রিজিক পূর্ণরূপে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করবে না, যদিও তার রিজিক প্রাপ্তিতে কিছুটা বিলম্ব হয়। আর তাই তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং উত্তম পন্থায় জীবিকা অন্বেষণ করো, যা হালাল তাই গ্রহণ করো এবং যা হারাম তা বর্জন করো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২১৪৪)
কেউ কারও কাছে হাত পাতবে; রাসুলুল্লাহ (সা.) এটা পছন্দ করতেন না। তিনি চান, মানুষ নিজে উপার্জন করুক। সে আত্মবিশ্বাসী হোক। তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, মানহানি ঘটে, এমন কাজ না করুক। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা মানুষের কাছে (সাহায্যের জন্য) হাত বাড়িয়ো না। আল্লাহর শপথ! তোমাদের কেউ যদি আমার কাছে কিছু চায় এবং আমার অপছন্দ হওয়া সত্ত্বেও তার সে প্রার্থনার কারণে আমি তাকে দিয়ে দিই, আমার এ দানে তার জন্য কোনো বরকত হবে না।’ (মুসলিম, হাদিস: ১০৩৮)
যেসব দরিদ্র মুমিন মানুষের কাছে হাত বাড়ায় না; বরং নিজের সম্মান রক্ষা করে চলে, তাদের প্রশংসা করে আল্লাহ বলেন, ‘তারা যেহেতু (অতি সংযমী হওয়ার কারণে কারও কাছে) চায় না, তাই অনবগত ব্যক্তি তাদের বিত্তবান মনে করে। তুমি তাদের চেহারার আলামত দ্বারা তাদেরকে (অর্থাৎ তাদের অভ্যন্তরীণ অবস্থা) চিনতে পারবে। কিন্তু তারা মানুষের কাছে নাছোড় হয়ে চায় না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৭৩)
কারও কাছে কোনো কিছু বারবার চাইতে থাকলে বরকত নষ্ট হয়ে যায়। হাকিম ইবনে হিজাম (রা.) বলেন, “আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে কিছু চাইলাম, তিনি আমাকে দিলেন। আবার চাইলাম, তিনি আবার দিলেন। আবার চাইলাম, তিনি আবার দিলেন। তারপর বললেন, ‘হে হাকিম, এই সম্পদ আকর্ষণীয় ও সুস্বাদু। যে ব্যক্তি প্রশান্ত অন্তরে (বিনা লোভে) তা গ্রহণ করে, তার জন্য তা বরকতময় হয়। আর যে ব্যক্তি অন্তরে লোভ নিয়ে তা গ্রহণ করে, তার জন্য তা বরকতময় করা হয় না। সে এমন ব্যক্তির মতো, যে খায় কিন্তু তার ক্ষুধা মেটে না। ওপরের হাত নিচের হাত থেকে উত্তম।” (বুখারি, হাদিস: ১৪০৩)