ঢাকা ২৫ কার্তিক ১৪৩১, রোববার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সমীক্ষা পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষক

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪০ এএম
আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৫ এএম
পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষক
ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিক অঞ্চলে পেঁয়াজ ট্রাকে তুলছেন শ্রমিকরা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে ক্রেতারা বাজার থেকে শাকসবজি ও ফল কেনার জন্য যে অর্থ ব্যয় করেন, তার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই পকেটে ঢোকান পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা। এতে ভোক্তাপর্যায়ে ব্যয় বাড়লেও পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) এক সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

শাকসবজি, ডাল ও ফলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে আরবিআইয়ের পরিচালিত সমীক্ষা অনুযায়ী, তিনটি প্রধান শাকসবজি- টমেটো, পেঁয়াজ ও আলুর (টিওপি) ক্ষেত্রে ক্রেতারা যেই দাম দিয়ে পণ্য কেনেন তার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ পান কৃষকরা। সমীক্ষা অনুযায়ী, টমেটোর ক্ষেত্রে কৃষকরা পান খুচরায় বিক্রি করা দামের প্রায় ৩৩ শতাংশ, পেঁয়াজের ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ এবং আলুর দামের ক্ষেত্রে ৩৭ শতাংশ।

রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গবেষণাপত্র অনুযায়ী, দেশীয় মূল্য শৃঙ্খলে কলার জন্য কৃষকদের অংশ ৩১ শতাংশ, আঙুরের জন্য ৩৫ শতাংশ এবং আমের জন্য ৪৩ শতাংশ। রপ্তানি মূল্য শৃঙ্খলে আমের ক্ষেত্রে কৃষকদের অংশ বেশি হলেও আঙুরের ক্ষেত্রে কম, যদিও প্রাপ্ত মূল্য দেশীয় মূল্য শৃঙ্খলের চেয়েও বেশি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, দুগ্ধজাত পণ্যের মতো অন্য খাতে দেশটির কৃষকরা চূড়ান্ত দামের প্রায় ৭০ শতাংশ পেলেও, বাকি অংশ পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের মাঝে ভাগ হয়ে যায় বলে ওই গবেষণায় উঠে এসেছে।

ডাল জাতীয় পণ্যের মধ্যে ছোলার (চনা বুট) ক্ষেত্রে ভোক্তা যে অর্থ খরচ করেন, তার প্রায় ৭৫ শতাংশ কৃষকদের কাছে আসে। মুগডালের ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ৭০ শতাংশ এবং তুরের (অন্য নাম অড়হর ডাল) জন্য ৬৫ শতাংশ।

আরবিআইয়ের গবেষণা অনুযায়ী, শস্য ও দুগ্ধজাত পণ্যের মতো যেখানে সংগ্রহ ও বিপণন ব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে উন্নত, সেখানে টিওপি সবজির ক্ষেত্রে দক্ষ মূল্য শৃঙ্খল ব্যবস্থার অভাব রয়েছে। এই অবস্থার প্রধান কারণ হলো এই ফসলের নষ্ট হওয়ার প্রবণতা, আঞ্চলিক ও মৌসুমি ঘনত্ব, পর্যাপ্ত সঞ্চয় সুবিধার অভাব এবং বেশিসংখ্যক মধ্যস্থতাকারীর উপস্থিতি।

কোভিড-১৯ মহামারি এবং তার পরে দেশব্যাপী লকডাউন ২০২০ সালে দেশের টিওপি সবজির সরবরাহ শৃঙ্খল ও বিপণন অবকাঠামোতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো প্রকাশ করেছে। গবেষণা অনুযায়ী, ভরা মৌসুমেও যখন দাম উৎপাদন খরচের অনেক নিচে নেমে যায়, তখন কৃষকরা প্রায়ই তাদের ফসল ফেলে দিতে বা দুর্দশায় পড়ে খুবই কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন।

অন্যদিকে মন্দা বা টান মৌসুমে ভোক্তারা উচ্চমূল্যের চাপের সম্মুখীন হন। এই বুম-অ্যান্ড-বাস্ট (উত্থান-পতন) চক্রটি অকার্যকর বিপণন ব্যবস্থা, কৃষকরা যেই অর্থ পান তা এবং পণ্যের বিপরীতের ভোক্তারা যে অর্থ ব্যয় করেন তার মধ্যে একটি বিস্তৃত ব্যবধানসহ সুসংহত মূল্য শৃঙ্খলের অভাবের কারণে।

এর আগে গুলাটি ও সাইনির (২০১৩) গবেষণায় উচ্চফলনশীল বীজ, সেচ, লজিস্টিকস, প্রক্রিয়াকরণ কারখানা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নে (আরঅ্যান্ডডি) ব্যাপক বিনিয়োগ বরাদ্দ করে সরবরাহ প্রতিক্রিয়া বাড়ানো এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে অসংগতিগুলো সংশোধন করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া গাঙ্গুলি ও গুলাটির (২০১৩) আরেকটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, বাড়তি চাহিদার ফলে উচ্চমূল্যের পণ্যের দাম বাড়ার চাপকে সরবরাহ শৃঙ্খলকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মাধ্যমে সংশোধন করা যেতে পারে।

সবজির মধ্যে টমেটো, পেঁয়াজ ও আলু, উৎপাদন ও খরচের দিক থেকে ভারতের তিনটি প্রধান ফসল। গত কয়েক বছরে এই তিনটি ফসলের উৎপাদন ব্যাপক হারে বেড়েছে।

গবেষণার পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, ২০২২-২৩ সালে টমেটো, পেঁয়াজ ও আলুর উৎপাদন ছিল যথাক্রমে ২ কোটি ৪ লাখ টন, ৩ কোটি ২ লাখ টন এবং ৬ কোটি ১ লাখ টন।

এতে আরও বলা হয়, ভারত এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম টমেটো ও আলু উৎপাদক দেশ। এখানে দেশটির অবদান যথাক্রমে বিশ্ব উৎপাদনের ১১ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ। ২০২১ সালে ভারত চীনকে ছাড়িয়ে বিশ্বের বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদক দেশ হয়ে ওঠে এবং ২০২২ সালে বিশ্ব উৎপাদনে ২৮ দশমিক ৬০ শতাংশ অবদান ছিল ভারতের। ২০১৩-১৪ থেকে ২০২১-২২ মৌসুম পর্যন্ত ভারতের পেঁয়াজ উৎপাদনে সবচেয়ে তীব্র বৃদ্ধি দেখা গেছে, যা ছিল বিশ্ব উৎপাদনের প্রায় ৬৩ শতাংশ।

তরকারির চাহিদা মেটাচ্ছে কুমড়ো বড়ি

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম
তরকারির চাহিদা মেটাচ্ছে কুমড়ো বড়ি
নাটরে কুমড়ো বড়ি তৈরি করে বাজারজাতকরণের জন্য শুকানো হচ্ছে। ছবি: খবরের কাগজ

চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মাঝে যখন মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে, তখন তাদের জন্য এক স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে নাটোরের অ্যাংকার ডালের কুমড়ো বড়ি। কম দামে এই কুমড়ো বড়ি বিক্রির মাধ্যমে একদিকে যেমন ভোক্তাদের চাপ কমছে, তেমনি পরিবারগুলোর জন্য এটি হয়ে উঠেছে একটি সহায়ক উপকরণ। এটি তরকারির চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। 

বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে কুমড়ো বড়ি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এর কদর অনেক বেশি। কুমড়ো বড়ি সাধারণত শীতকালে তৈরি করা হয়। সঠিকভাবে তৈরি ও সংরক্ষণ করলে এটি সারা বছর খাওয়া যায়। জানা গেছে, কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত কুমড়োতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা ও ফাইবার, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এ ছাড়া এটি হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্নায়ুবিক সমস্যা যেমন: সিজোফ্রেনিয়া, হিস্টিরিয়া ইত্যাদি মোকাবিলায় কার্যকরী হতে পারে।

একসময় শীত শুরু হলেই নাটোরের বিভিন্ন গ্রামে কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজ শুরু হতো। তবে তা ছিল শুধু ঘরোয়া প্রেক্ষাপটে। কিন্তু গত কয়েক বছরে এই খাবারটি বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি হতে শুরু করেছে। এর ফলে অনেক পরিবার আজকাল জীবিকার জন্য কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজকে নিজের পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছে। এতে তারা নিজেদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করেছে। কুমড়ো বড়ি তৈরির এই প্রক্রিয়া ও ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রামীণ অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে।

নাটোরে কুমড়ো বড়ি তৈরি হয় দুটি প্রধান উপাদান দিয়ে। একধরনের কুমড়ো বড়ি তৈরি হয় মাষকলাই দিয়ে। আর অন্য ধরনের কুমড়ো বড়ি তৈরি হয় অ্যাংকার ডালের সঙ্গে কুমড়ো ও অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে। এর মধ্যে মাষকলাইয়ের কুমড়ো বড়ি বেশি দামী। কারণ এতে ব্যবহৃত উপকরণগুলোও দামী। কিন্তু অ্যাংকার ডালের কুমড়ো বড়ি তৈরি করার জন্য কম দামী উপকরণ প্রয়োজন, যার ফলে এই ধরনের কুমড়ো বড়ির দামও তুলনামূলকভাবে কম। তাই বর্তমানে অ্যাংকার ডালের কুমড়ো বড়ির চাহিদা অনেক বেশি।

সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের পুণ্ডরী গ্রামে সবচেয়ে বেশি কুমড়ো বড়ি তৈরি হয়। এই গ্রামে প্রায় ১৫-১৬টি পরিবার কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকে। এখানকার একজন কুমড়ো বড়ির কারিগর আলামিন শাহের স্ত্রী রাশেদা বেগম জানান, তিনি ছোটবেলায় তার বাবার বাড়ি সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলায় কুমড়ো বড়ি বানানো শিখেছিলেন। বিয়ের পরও তিনি এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। 

এখন তার পুরো পরিবার এই কাজে সম্পৃক্ত। রাশেদা বেগম জানান, এক কেজি অ্যাংকার ডাল ব্যবহার করে প্রায় পৌনে এক কেজি শুকনো কুমড়ো বড়ি তৈরি করা যায়। প্রতিদিন তিনি ২০-৩০ কেজি কুমড়ো বড়ি তৈরি করেন। সপ্তাহে ৩৫০ কেজি কুমড়ো বড়ি বিক্রি করেন, যার মাধ্যমে গড়ে প্রতিদিন ৩০০-৩৫০ টাকা আয় হয়। তার স্বামী ভ্যান চালিয়ে অতিরিক্ত আয় করেন। এতে পরিবারে সংসরার ভালোভাবে চলছে।

অ্যাংকার ডালের কুমড়ো বড়ি এখন নাটোরের বিভিন্ন হাটবাজারসহ বগুড়া, রাজশাহী, পুঠিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। অনেক ব্যবসায়ী এসব কুমড়ো বড়ি সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য অন্য জেলা থেকে কিনে নিয়ে যান। 

নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া এলাকার গৃহিণী মাসৌরা বেগম, ভাটোদাড়া গ্রামের বাসিন্দা জামিল ও করিম জানান, তারা নিয়মিত এই কুমড়ো বড়ি কিনে থাকেন। কারণ এর স্বাদ খুবই ভালো এবং দামও সাশ্রয়ী।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ জানান, জেলায় গত কয়েক বছরে অ্যাংকার ডালের কুমড়ো বড়ি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দাম কম হওয়ায় অনেকে পরিবারের তরকারির চাহিদা মিটছে। দিন দিন কুমড়ো বড়ির উৎপাদন বাড়ছে। এটি গ্রামীণ জনগণের জীবনে নতুন এক দিগন্তের সূচনা করেছে। যেখানে তারা সস্তায় ভালো খাবারের সঙ্গে একটি ভালো উপার্জন করতে পারছেন।

ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না কৃষক

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৮ পিএম
ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না কৃষক
জয়পুরহাটের সদরে ঘোনাপাড়া এলাকায় ধান কাটছেন কৃষকরা। ছবি: খবরের কাগজ

জয়পুরহাটে আগাম জাতের রোপা আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলার বিভিন্ন মাঠে কৃষকরা ধান কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে অতিবৃষ্টির কারণে কিছু জাতের ধান পচনরোগে আক্রান্ত হয়েছে এবং ফলন কমে গেছে। অন্যদিকে ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না কৃষকরা। এতে সরকারের কাছে ধানের ন্যায্যমূল্য ও কৃষি সহায়তার দাবি জানান তারা।

জানা গেছে, প্রতিবছর জয়পুরহাটে কৃষকরা আবাদি জমির বেশির ভাগ অংশে রোপা আমন ধান চাষ করে থাকেন। জেলার প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের ধান রয়েছে প্রায় ২১ হাজার হেক্টর। ইতোমধ্যে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। তবে কিছু কৃষকের অভিযোগ, এবারের ফলন ভালো না হওয়ায় তারা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।  

তথ্য অনুযায়ী, বিঘাপ্রতি কৃষকদের খরচ হয়েছে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। কিন্তু বিঘাতে ফলন হয়েছে ১২ থেকে ১৫ মণ।

স্থানীয় সোটাহার ধারকী গ্রামের কৃষক তোতা মিয়া বলেন, ‘আমি ৬ বিঘা জমিতে ধানী গোল্ড ধান চাষ করেছি। কিন্তু এবারের বৃষ্টির কারণে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১৪ মণ ফলন হয়েছে। এখন বাজারে  প্রতিমণ ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে ধানের উৎপাদন ওঠবে না।’

সিঅ্যান্ডবি চারমাথার কৃষক আইনুল হক জানান, এলাকায় আগাম জাতের সতেরো, পঁচাত্তর ও ধানী গোল্ড ধান চাষ হয়েছে। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় ধানগাছে পচনরোগ হয়েছে। এতে জমিতে ফলন কমে গেছে। সতেরো ও ধানী গোল্ড ধান বিঘাপ্রতি ১৮-২০ মণ থেকে ১২-১৪ মণে নেমে এসেছে।  

ঘোনাপাড়া গ্রামের কৃষক বুলু মিয়া বলেন, ‘এবার ধানী গোল্ড ও সতেরো ধান বিঘাপ্রতি সর্বোচ্চ ১৫ মণ উৎপাদন হয়েছে। এর বাজার দরও অনেক কম। ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২৬০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। আগামীতে ধানের দাম আরও কমলে আমাদের অনেক লোকসান হবে।’ ধান ব্যবসায়ী মো. হাসান জানান, বর্তমান সতেরো, পঁচাত্তর ও ধানী গোল্ড জাতের ধানের দাম কৃষকদের জন্য মোটেও সন্তোষজনক নয়।   এদিকে সরকারের কাছে ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি উৎপাদন খরচ কমানো ও কৃষি সহায়তার দাবি জানান কৃষকরা

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) সাদিয়া সুলতানা জানান, এবার জয়পুরহাটে মোট ৬৯ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের ধান চাষ হয়েছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তা অব্যাহত রেখেছি। এ ছাড়া চলতি বছর চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ৬৪২ টন।  

সবজি বীজের দাম দ্বিগুণ

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৯ পিএম
সবজি বীজের দাম দ্বিগুণ
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে শিবপুর উপজেলার কুন্দারপাড়া গ্রামে পলিথিনে মোড়ানো বীজতলা। ছবি: খবরের কাগজ

শিলাবৃষ্টিতে চারা নষ্ট হওয়ার পর দুই দফায় শীতের সবজি উৎপাদনে চারা তৈরি করছেন নরসিংদীর কৃষকরা। বাজারে ১ কেজি বীজ কিনতে লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। এদিকে বীজের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় চারা তৈরিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।কৃষি বিভাগ জানান, চারা উৎপাদনে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে শিবপুর উপজেলার কুন্দারপাড়া বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকায় মাঠজুড়ে সাদা পলিথিনে মোড়ানো বাঁশের ছাউনিতে ঢাকা বীজতলা। এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে চাষিরা এসে চারা কিনছেন। বীজতলার মালিকরা জমি থেকে চারা তুলে বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করছেন। আবার কেউ আগাছা পরিষ্কার করে পোকামাকড় দূর করতে ওষুধ ব্যবহার করছেন।

কৃষকরা জানান, সদর ও রায়পুরার বিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। তবে তার ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে শীতের সবজির আবাদের মৌসুম চলছে। কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ কাজ করছেন।

সবজিচাষি আবদুর রহমান বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে শিবপুর কুন্দারপাড়া গ্রামে এসেছি সবজি চারা কিনতে। এখানে ভালোমানের চারা পাওয়া যায়। এবার প্রায় ছয় বিঘা জমিতে চাষাবাদ করেছি। বেগুন, বাঁধাকপি ও মরিচসহ কয়েক জাতের সবজির চারা কিনেছি।’

দুই যুগ আগে মুদি দোকান ছেড়ে চাষাবাদ শুরু করেন মোশাররফ হোসেন ভূইয়া। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর প্রায় ৬ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করি। খরচ হয় ৩ লাখ টাকার ওপরে। আবাদ ভালো হলে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা আয় হয়। তবে এবার লাউসহ কয়েকটি সবজিতে লোকসান হয়েছে। তবে শীতের সবজি দিয়ে তা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, ‘এবার শীতের আগাম সবজির চারা সময়মতো বিক্রি করতে পারিনি। অনেক কৃষক বৃষ্টিতে চারা রোপণ করে লোকসান গুনেছেন। সময়মতো সবজি চারা না পাওয়ায় আবাদ কমেছে। আগে ১ কেজি বীজ ৫০ হাজার টাকায় পাওয়া যেত, এখন তা বেড়ে লাখ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রমিকসংকটও রয়েছে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘কৃষি কর্মকর্তারা বিগত পাঁচ বছর ধরে আমাকে কীটনাশক প্রয়োগের জন্য একটি চার্জের মেশিন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন, তা এখনো পাইনি। তারা মাঝে-মধ্যে আসেন, খেতের ছবি ও ভিডিও তুলে চলে যান, তারপর আর খবর নেন না।’

শিবপুরের পালপাড়া গ্রামের আমিরুল ইসলাম ও শফিক মিয়া বলেন, ‘শীতের আগাম সবজি লাউ, সিম, বেগুন, ফুলকপি বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবে তুলনামূলকভাবে চাষাবাদ কম হওয়ায় আবার নতুন করে চারা রোপণ করেছি। আগামী মাসের শেষের দিকে ফুলকপিসহ শীতের সবজি বাজারে আসবে। আমরা আশা করছি আগে বাজার ধরতে পারব।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘নরসিংদীতে অনেক জাতের বিষমুক্ত সবজি চাষ হয়। চলতি বছরে জেলার ৬টি উপজেলায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে শীতের সবজি চাষ হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে।’ তিনি আরও বলেন, সবজি চারা উৎপাদন লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা এতে বেশি ঝুকেছেন। কৃষি বিভাগ তাদের চারা উৎপাদনের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছে।

বেতন পাচ্ছেন না ৯ হাজার শ্রমিক

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৭ পিএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৭ পিএম
বেতন পাচ্ছেন না ৯ হাজার শ্রমিক
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকায় নোঙর করা লাইটার জাহাজ। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে পণ্য পরিবহনকারী প্রায় ৭০০ লাইটারেজ জাহাজের শ্রমিকরা গত চার মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। আয় কমে যাওয়ার কারণে মালিকরা বেতন পরিশোধে সমস্যায় পড়েন।

তবে সিরিয়াল প্রথা পুনরায় চালু হওয়ায় শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। নতুন ভাড়া কাঠামো অনুযায়ী, লাইটারেজ জাহাজে পণ্য পরিবহনে খরচ কমানো হয়েছে, যা গত ৪ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।

জানা গেছে, বন্দরের বহির্নোঙর থেকে বছরে প্রায় ৯ থেকে ১০ কোটি টন পণ্য পরিবহন হয়। এর মধ্যে ৭০ ভাগ পণ্য বাল্ক জাহাজ থেকে ছোট ছোট লাইটারেজ জাহাজে খালাস করে ৩৮টি নৌরুটে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়। লাইটার জাহাজের ধারণ ক্ষমতা ১ হাজার থেকে ২ হাজার টন পর্যন্ত। বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ৮০০ লাইটার জাহাজ পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত রয়েছে। 

এ ছাড়া বাকি ৩০ ভাগ কনটেইনার পণ্য টাগবোটের সাহায্যে সরাসরি আনা হয় বন্দরের জেটিতে।

লাইটারেজ শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, বড় বড় শিল্পগ্রুপ ও বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন লাইটারেজ জাহাজ নৌপথে সারা দেশে পণ্য পরিবহন করে থাকে। এর মধ্যে শিল্পগ্রুপগুলোর অধীনে থাকা লাইটারেজ জাহাজের মালিকরা যথাসময়ে নাবিকদের বেতন পরিশোধ করে দিচ্ছেন। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানাধীন ১ হাজার ১০০ লাইটারেজ জাহাজের মধ্যে অন্তত ৭০০ জাহাজের শ্রমিকরা গত চার মাস ধরে বেতন পাননি। অনেক শ্রমিক সাত মাস ধরে বেতন না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে। 

শ্রমিক নেতারা হিসাব করে জানিয়েছেন, একটি লাইটারেজ জাহাজে গড়ে ১৩ জন নাবিক থাকেন। এর মধ্যে একজন মাস্টার, একজন ড্রাইভার, দুজন গ্রিজার, দুজন সুকানি, ছয়জন লস্কর ও একজন বাবুর্চি থাকেন। একজন মাস্টার ৪০ হাজার টাকা, একজন ড্রাইভার ৪০ হাজার টাকা, একজন গ্রিজার ১৮ হাজার টাকা, একজন সুকানি ১৮ হাজার টাকা, একজন লস্কর ১৬ হাজার টাকা ও একজন বাবুর্চি ১৬ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। 

আয় কমে যাওয়ায় গত চার মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন দিতে পারেননি লাইটারেজ জাহাজ মালিকরা। বর্তমানে ৭০০ জাহাজে কর্মরত অন্তত ৯ হাজার ১০০ নাবিক কোনো বেতন পাননি। অর্থের হিসাবে, প্রতিটি জাহাজে মাস শেষে মালিকের বেতন বাবদ ব্যয় হয় প্রায় ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। ৭০০ জাহাজে কর্মরত শ্রমিকরা গত চার মাসে বেতন বাবদ প্রায় ৭৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পান মালিকদের কাছে। 

তবে লাইটারেজ জাহাজ মালিকরা বলছেন, লাইটারেজ জাহাজে করে বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল, গম, সার, সিমেন্ট ক্লিংকার, পাথর, চিনি, সার, খাদ্যপণ্য, স্ক্র্যাপ, কয়লাসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করা হয়। এতদিন সিরিয়াল প্রথা না থাকা, নির্দিষ্ট ভাড়ার কাঠামো না থাকায় এ খাতে একটি অসম প্রতিযোগিতা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। আয় কমে যাওয়ায় শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন সব সমস্যার সমাধান হয়েছে। সামনে যথাসময়ে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন লাইটারেজ জাহাজ মালিকরা। 

বাংলাদেশ লাইটার শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মোহাম্মদ নবী আলম বলেন, ‘চার মাস নয়, কোনো কোনো জাহাজের শ্রমিক সাত মাস বেতন পাননি, এমন রেকর্ড রয়েছে। এতদিন ঠিকমতো আয় না আসায় মালিকরা বেতন দিতে পারেননি। মালিকপক্ষের আয় বৃদ্ধি ও শ্রমিকদের স্বার্থের দিকে তাকিয়ে সিরিয়াল প্রথা পুনরায় চালু করার বিষয়ে আমরা দাবি জানিয়ে আসছিলাম। আমাদের সবার প্রচেষ্টায় এখন সিরিয়াল প্রথা আবার চালু হয়েছে, ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। গত ৪ নভেম্বর থেকে তা বাস্তবায়ন হয়েছে।

আমরা সার্বিক বিষয় আগামী এক মাস পর্যবেক্ষণ করব। আমরা আশাবাদী, মালিকরা সামনে যথাসময়ে শ্রমকিদের বেতন দিতে পারবেন। এরপরও যদি সমস্যাটি থেকে যায় তখন পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।’

লাইটারেজ জাহাজ কাদিরিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক হাজী শফি বলেন, ‘আয় ঠিকমতো না আসায় গত ছয় মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। লোকসানে পড়ে অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। অনেকে জাহাজ বিক্রি করে দিয়েছেন। এ খাতে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান হয়েছে। আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।’

বাংলাদেশ কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিভোয়া) কোস্টাল ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (কোয়াব) এবং ইনল্যান্ড ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব চিটাগাং (আইভোয়াক) এর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল প্রতিষ্ঠা করা হয়। 

সংস্থাটি পরিচালনার জন্য ২০১৪ সালের ২১ মে সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ডব্লিউটিসি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সিরিয়াল প্রথা অনুসরণ করে অভ্যন্তরীণ নৌরুটে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য পরিবহন করা হতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে জাহাজ মালিকদের তিনটি সংগঠনের পরস্পর বিরোধী অবস্থানে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বন্ধ হয়ে যায় সিরিয়াল প্রথা। ফলে অভ্যন্তরীণ নৌরুটে জাহাজ চলাচলে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। এদিকে প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হওয়ায় জাহাজ ভাড়া তুলনামূলকভাবে অনেক কমে যায়। শ্রমিকদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন জাহাজ মালিকরা। 

বিষয়টি সমাধানে পুনরায় সিরিয়াল পদ্ধতিতে লাইটারেজ জাহাজ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিভোয়া), কোস্টাল ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (কোয়াব) এবং ইনল্যান্ড ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব চিটাগাং (আইভোয়াক)। 

এ নিয়ে এই তিন সংগঠনের মধ্যে গত ১ নভেম্বর নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় একটি হোটেলে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। একই সঙ্গে আগের তুলনায় ভাড়া কমিয়ে নতুন করে নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। 

বিডব্লিউসিসি জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ গন্তব্যে আগে ক্লিংকার পরিবহনে টনপ্রতি ভাড়া নেওয়া হতো ৫৭৪ টাকা, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৫০ টাকা। জিপসামে ৬০৬ টাকার ভাড়া এখন ৫৬৮ টাকা, বল ক্লের ভাড়া ৫৮৩ টাকার স্থলে ৫৫০ টাকা, টিএসপি বা ড্যাপের ভাড়া ৬৪১ টাকার স্থলে ৫৯৪ টাকা, লবণে ৭৪৯ টাকার ভাড়া ৬৭৫ টাকা, কয়লা ও চিনির (ব্যাগ) ভাড়া ৬৬৬ টাকার স্থলে ৬১২ টাকা, গমের ভাড়া ৬৬২ টাকার স্থলে ৬১০ টাকা, পাথরের (১০ মিমি) ভাড়া ৬২৫ টাকার স্থলে ৫৮১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

শুধু ঢাকা বা নারায়ণগঞ্জ নয়, নতুন তালিকায় মেঘনা, মুক্তারপুর, কাচপুর, আলীগঞ্জ, নিতাইগঞ্জ, বরিশাল, চাঁদপুর, খুলনা, মোংলা, নগরবাড়ী, টেপাখোলা, বাঘাবাড়ী, আশুগঞ্জ, ভৈরব, দাউদকান্দি, ঘোড়াশাল, পলাশ, রূপসী, সন্দ্বীপ, ভোলা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বসিলা, ছাতক, সুনামগঞ্জ, মোল্লারহাট, শরীয়তপুর, মাওয়া, ইটনা, বাবুগঞ্জ, বরগুনা, লালমোহন, পায়রা, আরিচা, মীরসরাই ইকোনমিক জোন, কক্সবাজারসহ চট্টগ্রামের বাঁশখালী, বাহারছড়া, গন্ডামারা, শিকলবাহা ও কালুরঘাট সেতুসহ বিভিন্ন গন্তব্যের ভাড়া কমানো হয়েছে। গত ৪ নভেম্বর থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর হয়েছে। 

‘পোশাকশিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধির রূপকল্প বাস্তবায়নে সচেষ্ট বাংলাদেশ’

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ এএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১১ পিএম
‘পোশাকশিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধির রূপকল্প বাস্তবায়নে সচেষ্ট বাংলাদেশ’
তাইওয়ান টেক্সটাইল ফেডারেশনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা করেন বিজিএমইএ'র প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন। ছবি: খবরের কাগজ

পোশাকশিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধির রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন।

শনিবার (৯ নভেম্বর) ঢাকার উত্তরার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তাইওয়ান টেক্সটাইল ফেডারেশনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। 

আনোয়ার হোসেন বলেন, বিজিএমইএ কটন থেকে নন-কটন পণ্য, বিশেষ করে ম্যান-মেইড ফাইবারভিত্তিক পণ্যে স্থানান্তরের মাধ্যমে এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তাইওয়ান নন-কটন টেক্সটাইল, উচ্চমূল্য সংযোজনকারী পোশাক, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল, ওভেন টেক্সটাইল ও পোশাক, দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্ভাবন ক্ষেত্রগুলোতে বাংলাদেশে বিনিয়োগে করতে পারে।

আলোচনায় সহযোগিতার মাধ্যমে পোশাক ও বস্ত্রশিল্পে প্রযুক্তি প্রয়োগ, দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্ভাবন, সম্পদ ব্যবহারে দক্ষতা ও সার্কুলারিটির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে জ্ঞান ও দক্ষতা ভাগাভাগি করে নেওয়ার বিষয়টি ওঠে আসে।
 
বৈঠকে উভয়পক্ষ পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে পারস্পরিক সুবিধা অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার আশা প্রকাশ করেন। 

এ সময় তারা তৈরি পোশাকের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি, বৈশ্বিক প্রবণতা, চ্যালেঞ্জ, সুযোগসহ বিভিন্ন বাণিজ্যসংক্রান্ত বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।

এ ছাড়া বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা এবং টেক্সটাইল ও পোশাক খাতে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে সহযোগিতার জন্য উভয়পক্ষ কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারে সে বিষয়েও আলোচনা করেন।

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন তাইওয়ান টেক্সটাইল ফেডারেশনের সভাপতি জাস্টিন হান। 

এ সময় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এবং বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

মেহেদী/অমিয়/