শ্রীমঙ্গলে হিমযাপন । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

শ্রীমঙ্গলে হিমযাপন

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:২৪ পিএম
শ্রীমঙ্গলে হিমযাপন

চায়ের রাজধানী নামে বিখ্যাত শ্রীমঙ্গল জেলা বিগত কয়েকবছর ধরে সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

জ্যৈষ্ঠের কাঠফাটা গরমে কিংবা শ্রাবণে বৃষ্টিস্নাত লেবুপাতা, চা বাগানভর্তি সবুজ দেখে চোখের শান্তি যেমন মিলবে আবার শীতে কুয়াশার চাদরে মুড়ে থাকে ছোট্ট শহরটাও সমান উপভোগ্য হবে।

ঢাকা থেকে মাত্র ৪ ঘণ্টার দূরত্বে মৌলভীবাজারের কোলঘেঁষে এই জেলাটি। অজস্র চা বাগানের সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়, বিল, হাওর দিয়ে ঘেরা সবুজ মায়ার জায়গা।

আকাশ বেয়ে নেমে আসা এমনি এক ধূসর কুয়াশা দিনে ঢাকায় শীতের আভাস না পেয়ে শীতযাপনের জন্য গিয়েছিলাম শ্রীমঙ্গল।

করোনা মহামারির পরপরই এক দুপুরে ট্রেনে চেপে বসেছিলাম কমলাপুর স্টেশন থেকে। অনলাইনে টিকিট পেতে যে ঝক্কি হয়েছিল, তা ভোলা কঠিন হবে।

অবশ্য সে কষ্ট নিমেষেই মিইয়ে গেছিল ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ বাদে। মাইলের পর মাইল হলুদখেত, সর্ষেফুলের পাতা ঝরে বেশ ডাগর হয়ে উঠেছে।

কেটে নেয়া ধান খেতের ওপারে মলিন সূর্যটাও ট্রেনের সঙ্গে ঝিকঝিক করে আগাচ্ছিল। একরাশ ভালোলাগায় মন উদ্বেলিত হয়ে ভুলে গেলাম শহরের যান্ত্রিক জীবন। ট্রেনভর্তি মানুষ, পাশে পরিবারের প্রিয়জনরা এর মাঝেও কোথা থেকে শীতের দুষ্টু বাতাসের মতো একফালি বিষণ্ণতা ঢুকে পড়ে মনে।

চোখের আরাম দেয়া সন্ধ্যার লালিমা ধরা আকাশের ওইপার থেকে কে যেন ডাকে নাম ধরে! যাপিত এই জীবনে নিজেকে বড় বেমানান লাগে।

আমার যেন অন্য কোথাও থাকার কথা ছিল। কথা ছিল এই প্রকৃতির মাঝে বিলীন হয়ে বাঁচার। উদাস হওয়ার বিলাসিতাটুকু ঝেড়ে ফেলে আবার পার্থিব জগতে ফিরতেই হয়। বোধহয় একেই বলে নিয়তি!

এশার আজানের কিছুক্ষণ পরে ট্রেন থামে আমাদের গন্তব্য শ্রীমঙ্গল স্টেশনে। সেখানে আমাদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন সাজিদ ভাই। শ্রীমঙ্গলের স্থানীয় অটোচালক ভাইটি এই অঞ্চলে আমাদের একমাত্র ভরসার জায়গা।

তাই এখানে এলেই ওনাকে ফোন দেওয়া হয়। লাগেজ টানাটানি থেকে শুরু করে হোটেল বুকিং, প্রতিবার নতুন জায়গায় ঘোরাঘুরি, কার কী লাগবে সব দায়িত্ব হাসিমুখে নিজ কাঁধে তুলে নেন সাজিদ ভাই।

বরাবরের মতো উনার হাতে সব ছেড়ে দিয়ে অটোতে চড়ে বসি হোটেলের উদ্দেশে। চিরচেনা চা বাগানের ঘ্রাণসমেত বাতাস নিতে ফুসফুস ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

ঠাণ্ডা বাতাসের এই মিঠেকড়া অনুভূতি ঝিরঝিরি বৃষ্টির মতো মনে হয়। এখানে সন্ধ্যাটাও ভোরের কুয়াশার মতো বাতাস মিষ্টি লাগছে।

চা বাগান আর বাঁশ বনের জোছনা গায়ে মাখতে পৌঁছে যাই হিমাচল রিসোর্টে। এখানে আমাদের জন্য রুম বুকিং দেওয়া ছিল আগে থেকেই। 

রাতের খাবারের পর বেশ আয়েশ করে এক কাপ চা পান করলাম। যাত্রার ক্লান্তি কাটিয়ে অরণ্য গহিনে ভোর দেখার আশায় একুট আগেই ঘুমিয়ে গেলাম।

ভোরে ঠিকঠাক সময়েই ঘুম ভাঙল। জ্বলজ্বলে মুক্তার মতো কুয়াশার চাদর বিছিয়ে আছে বাইরে। হোটেলটার ঠিক সামনেই একটা চা বাগানের টিলা।

গায়ে একটা শাল পেঁচিয়ে উঠে গেলাম ওপরে। দেবদারু গাছের ফাঁকে প্রথম সূর্যের লাল আভা উঁকি দিয়ে যেন আমাকেই ডাকছে। শহরের কাঠিন্যে ক্লান্ত চোখ শান্ত হলো।

হঠাৎ একটা বনমোরগ ঝাঁপ দিল বুনো ঝোপের আড়ালে। অদ্ভুত নির্জন বাতাসের সঙ্গে পৌষের সকালটা শুরু হলো আমার। কোথাও কেউ নেই।

দূরে ঝাপসা সবুজ মাঠ ঝিলমিল করে আড়মোড়া ভাঙছে। বেশ কিছুক্ষণ নির্জনতায় নিজেকে খুঁজে ফিরে এলাম খাবারের টানে। হোটেলে নাশতা সেরে সাজিদ ভাই আসতেই প্রথম দিনের যাত্রা শুরু হলো।

উদ্দেশ্য পদ্মছড়া নামের এক ছোট পাহাড়। সে পাহাড় নাকি পুরোটাই লালমাটি আর তার নিচের নদী নীল সিলেটের লালাখালের মতো। ফিনলে চা বাগানের ভেতর দিয়ে, দুধারে গাছের সুড়ঙ্গ চিরে এগিয়ে যাচ্ছে অটোরিকশা।

চা বাগানের শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম পদ্মছড়া। সত্যিই রুক্ষ এক লাল পাহাড় সেটি। পাহাড় বেয়ে ওপরে উঠছি আর লালমাটির ধোঁয়া উড়ছে।

পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে একটা দুইটা গাছ, তাও তার পাতা ধুলায় ময়লা হয়ে রয়েছে। জায়গায় জায়গায় চা চাষের অবশিষ্টাংশ অবহেলা আর অযত্নে বেড়ে উঠছে। হাঁটতে হাঁটতে উঠে গেলাম টিলার চূড়ায়।

একজোড়া বটগাছ ঠায় দাঁড়িয়ে ডালপালা মেলে আকাশের সঙ্গে গম্ভীর বাতচিতে ব্যস্ত যেন। পাহাড়ের ওপরে পৃথিবী অন্যরকম। নিচে ছোটছোট লোকজন দেখা যাচ্ছে, ছোট ঘরবাড়ি, অদূরে ফিনফিনা এক নদী আঁকাবাঁকা।

ততক্ষণে রোদ উঠে গিয়েছে। চিকচিক করে কই জানি একটা হরিয়াল ডাকে। বটের ছায়ায় বসে কিছুক্ষণ আকাশ দেখলাম।

এলোমেলো ভাবনায় আসল, এই সময়টুকু বন্দি করে রাখা যায় না? এই ঝলমলে আদুরে রোদ, গায়ে না লাগা পাতার বাতাস, টিয়াপাখি টিংবা নতুন দূর্বাঘাসের মতো সবুজের ছড়াছড়ি চারদিকে, ঘাসফড়িং…

সব ফেলে চলে যেতে হবে! কেন হাতের মুঠোয় ঝরেপড়া বালির মতো সময়গুলো চলে যায়? সাজিদ ভাই তাড়া দিতেই ঘোর ভাঙল।

পরের গন্তব্য লাউয়াছড়া উদ্যান। লাউয়াছড়া যাওয়ার পথটি আরেক আশ্চর্য সুন্দর। পাহাড়ি পথের দুপাশে বড় গাছ আর জঙ্গলে ঘেরা উঁচুনিচু রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলছিল।

বারবার এসেও এই চমৎকার রাস্তাটি প্রথম পরিচয়ের মতো মুগ্ধ করে। পথের শেষে সংরক্ষিত উদ্যানে প্রবেশ করলাম টিকিট কেটে। বড় বড় গাছ।

নানা প্রজাতির গাছের মাঝে বাঁধানো পায়ে হাঁটার পথ। বিরল সব প্রজাতির গাছের দেখা মিলবে এখানে। একটু সামনে গেলেই দেখতে পাবেন রেললাইন।

এখানেই হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র ‘আমার আছে জল’এর শুটিং হয়েছিল। রেললাইনের বাম পাশ দিয় সামনে গেলেই দেখা মিলবে গবেষণা কেন্দ্র।

রেললাইন ছাড়ালে ধীরে ধীরে জনকোলাহল কমতে থাকে। যত ভেতরে যাবেন, ততই প্রকৃতি আর নির্জনতার রাজত্ব। নাম না জানা সব বুনোপাখি আর জন্তুর হাঁকডাক চলতেই থাকবে।

জঙ্গলে হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে ফেরার পথ ধরলাম। এবারের মতো বেড়ানো শেষ। ফিরতে হবে শহুরে জীবনে। আবার সেই ছুটে চলা। পথ চলতে চলতে ভাবলাম, মানব জীবন এমনই।

এই সুখী ঘরকন্না আর সবসময় চাওয়া সুখের সখ্য কোনোদিনও চলমান হবে না। দিনমান বয়ে চলা অক্লান্ত নদীর মতো, শত বছর ধরে গম্ভীর সময়ের সাক্ষী সমান্তরাল রেললাইনের মতোই থাকবে।

পাহাড়ি ঝরনা যেমন দুরন্ত, নেমে এলে ছুটে যায় তার মতো করে, তেমনি উদাসীনতা আর রোজকার জীবনযাপন দুয়ের মিলন অসম্ভব। জীবিকার তাগিদে ফিরতেই হয়।

পরতে হয় একেকদিন একেক চরিত্রের মুখোশ। আপনারা যদি একদিনের অবকাশে বেড়াতে চান সেক্ষেত্রে শ্রীমঙ্গলের চেয়ে ভালো গন্তব্য আর নেই।

রাতের গাড়িতে এসে অটো ভাড়া করে একদিনেই ঘোরা যাবে ছিমছাম এই শহরটি। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) থেকে যাত্রা শুরু করে একে একে দেখবেন ফিনলের চা-বাগান, ভানুগাছ সড়কের টি-রিসোর্ট, জেরিন টি-এস্টেট।

এরপর লাউয়াছড়ার আগে হাতের ডানে জঙ্গলঘেরা পথটি চলে গেছে নূরজাহান টি-এস্টেটের দিকে। এ পথে দেখা মিলবে আরও বেশ কিছু বাগান।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান দেখা শেষ করে কমলগঞ্জের পথ ধরে আরও পাঁচ কিলোমিটার গেলে পাহাড়ঘেরা চা-বাগানের মধ্যে বিশাল মাধবপুর লেক। পড়ন্ত বিকেলটা লেকে কাটিয়ে ফেরার পথ ধরুন।

কলি

 

 

সৌন্দর্যের হাতছানি মহামায়া লেকে

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০২:৫৬ পিএম
সৌন্দর্যের হাতছানি মহামায়া লেকে

মহামায়া লেক দেশের পর্যটকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদীঘি বাজার থেকে ২ কিলোমিটার দূরে ১১ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে মহামায়া লেক বিস্তৃত। লেকের স্বচ্ছ জল ছাড়াও রয়েছে পাহাড়ের মাঝে একটি গুহা, কিছু প্রাকৃতিক ঝরনা এবং কিছু রাবার ড্যাম। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী সেখানে ভ্রমণে যান। এক দিনেই আপনি মহামায়া লেক ভ্রমণ করতে পারবেন, তাও আবার খুব কম খরচে। মহামায়া লেক বেড়ানোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ তুলে ধরেছেন মারজানা আলম 

এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন ও শুষ্ক মৌসুমে কৃষি খাতে সেচ সুবিধার লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড মহামায়া সেচ প্রকল্প চালু করেন। এর অংশ হিসেবে ১৯৯৯ সালে মহামায়া খালের ওপর স্লুইস গেট স্থাপন করে। এভাবেই সৃষ্টি হয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম মহামায়া লেক। ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত এই মহামায়া লেক দেখলে বিশ্বাসই হবে না এটি কৃত্রিমভাবে গঠিত। একে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হয়েছে ইকোপার্ক।

মহামায়ার নীলাভ জলরাশি, দুই পাশে উঁচু উঁচু পাহাড়, পাহাড়ের কোলঘেঁষে স্বচ্ছ পানিতে তাকাতেই দেখা যায় নীলাকাশ। পূর্ব দিগন্তের সারি পাহাড়ের বুক চিরে যেতে যেতে একসময় হারিয়ে যেতেও মন চাইবে কল্পনায়। মনে হবে এক অন্য রকম সৌন্দর্য রচিত হয়েছে। নৌকা দিয়ে কিছু দূর এগোলেই লেকের মাঝে বেশকিছু ছোট ছোট দ্বীপ দেখা যায়। কোনোটিতেই স্থায়ী মানুষের বাস নেই। আপনি চাইলে নৌকা দিয়ে লেকে ঘোরাঘুরির পাশাপাশি, নিরিবিলি স্থানে বসে ছিপ দিয়ে মাছ ধরতে পারবেন। অবশ্য এজন্য আপনাকে ছিপ আগে থেকে নিয়ে যেতে হবে। লেকের পাড়ের নির্মল আর বিশুদ্ধ বাতাস আপনার শরীর ও মনকে মুহূর্তেই সতেজ করে তুলবে। লেক পার হয়ে একটু ভেতরে গেলেই দেখা মিলবে ঝরনার। ঝরনার শীতল জলে গা ভিজিয়ে মনটাকে শান্তিময় করে তুলতে পারবেন অনায়াসে।

লেকের পানিতেও সাঁতরে বেড়াতে পারবেন ইচ্ছামতো। লেকের শেষ প্রান্ত সেখানেও রয়েছে ঝরনাধারা। পর্যটকদের দারুণ অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ দিতে এখানে রয়েছে কায়াকিংয়ের ব্যবস্থা। চারদিকে পাহাড় আর সবুজ ঘেরাও লেকের স্বচ্ছ জলে কায়াকিংয়ের আনন্দ নিতে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক ভিড় জমান এখানে। চাইলে পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে পারেন। সেখান থেকে দেখা যায় দূরের পথ। এক কিলোমিটার দূরের মহাসড়ক, তার অর্ধেকের রেলপথ, ট্রেনের ছুটে চলা, কৃষানির ধান মাড়ানো, কৃষকের ফলন, কিশোরের দুরন্তপনা এসবই দেখা মিলবে চূড়া থেকে।

যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে যেতে হলে কমলাপুর, আরামবাগ বা সায়েদাবাদ থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে টিকিট কাটতে হবে। নামতে পারেন বারইয়ারহাট, মিরসরাই বা বড়তাকিয়া স্টেশনে। বারইয়ারহাট, মিরসরাই বা বড়তাকিয়া যেখানেই নামেন না কেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা অন্য কোনো বাহনে ঠাকুরদীঘি বাজারে এসে পূর্ব দিকের রাস্তা দিয়ে মহামায়ায় প্রবেশ করতে হবে। নিজস্ব যানবাহন নিলে একেবারেই মহামায়ার গেটে নামতে পারবেন। আবার চট্টগ্রাম নগরের অলংকার সিটি গেট থেকে কিছু লোকাল বাসে করে ৪০ থেকে ৬০ টাকা ভাড়ায় মিরসরাই থানার ঠাকুরদীঘি যাওয়া যায়। ঠাকুরদীঘি থেকে জনপ্রতি ১৫-২০ টাকা সিএনজি ভাড়ায় চলে যেতে পারবেন মহামায়া ইকোপার্কের মেইন গেটে। অথবা সিএনজি রিজার্ভ করে (ভাড়া ৮০-১২০ টাকা) চলে আসবেন মহামায়া ইকো পার্ক। এই ইকো পার্কের ভেতরেই মহামায়া লেকের অবস্থান।

কোথায় খাবেন
পার্কে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা নেই। খাবার নিয়ে যেতে হবে। ইচ্ছা করলে সেখানেই আয়োজন করতে পারেন পিকনিকের। সবাই মিলে রান্না করে খাওয়ার জন্য এটি হতে পারে দারুণ জায়গা। ঠাকুরদীঘি বাজারে ছোট হোটেল আছে দেশি খাবার খেতে পারবেন। মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড বাজারে গেলে মোটামুটি মানের আরও কিছু খাওয়ার হোটেল পাবেন সেখান থেকে খেয়ে নিতে পারবেন। 

যেখানে থাকবেন
মহামায়া লেকের আশপাশে থাকার তেমন কোনো সুব্যবস্থা নেই। আপনি চাইলে চট্টগ্রামের স্টেশন রোডে অবস্থিত হোটেল প্যারামাউন্ট কিংবা হোটেল এশিয়ান এসআরএতে থাকতে পারেন। আগ্রাবাদে হোটেল ল্যান্ডমার্ক ও নিজাম রোডে অবস্থিত হোটেল সাকিনাও উন্নতমানের। লেকে প্যাকেজে তাঁবুতে রাত্রি যাপন করা যায়। দুই বেলার খাবারসহ তাঁবুতে রাত্রি যাপন করার খরচ জনপ্রতি ৭৫০ টাকা।

সতর্কতা
সাঁতার না জানলে পানিতে না নামাই ভালো। লেকের পানিতে প্লাস্টিকের বোতল কিংবা অপচনশীল দ্রব্য ফেলবেন না।

 কলি

মাকে নিয়ে ঘুরে আসুন সৌদির এই চার জায়গা

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৪, ০৩:০২ পিএম
মাকে নিয়ে ঘুরে আসুন সৌদির এই চার জায়গা

চলতি বছর মা দিবস পালন করা হবে আগামী ১২ মে। বিশেষ দিনটিতে মায়ের জন্য ভ্রমণের ব্যবস্থা হতে পারে একটি অনন্য উপহার। আর গন্তব্য হিসেবে পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকতে পারে সৌদি আরব। কারণ, দেশটিতে আছে বেশকিছু রোমাঞ্চকর, চমকপ্রদ ও ঐতিহাসিক স্থান। স্পা ট্রিটমেন্ট ও নানা ধরনের খাওয়া-দাওয়ার সুযোগ থেকে শুরু করে আছে চমৎকার দর্শনীয় স্থান, বুটিক ও শপিংমল। পর্যটকদের নতুন আকর্ষণীয় দেশটিতে চমকে দিতে পারেন আপনার মাকে। 

নতুন পৃথিবীর সন্ধানে: আকাশে উড়ুন আলউলায়
সৌদির প্রথম কোনো স্থান হিসেবে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যে স্বীকৃতি পেয়েছে আলউলা। বালু ও পাথুরে ভূমির এই বাদামি উপত্যকায় আছে সৌদির অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের এক অনন্য ব্যবস্থা। বেলুনে চড়ে আকাশে ভেসে এই উন্মুক্ত জাদুঘরের স্বাদ নেওয়া যাবে হেগরা থেকে এলিফ্যান্ট রক পর্যন্ত। দেখা মিলবে ২ লাখ বছরেরও আগের ইতিহাসের।

দেখুন পুরোনো ইতিহাস ও ঐতিহ্য: আল বালাদের রাস্তায়
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত আরেক শহর আল বালাদ। জায়গাটি বেশি পরিচিত ‘ঐতিহাসিক জেদ্দা’ বা ‘পুরোনো শহর’ নামে। জেদ্দার আল বালাদ জেলায় দেখা যাবে সপ্তম শতকের স্থাপত্য। এই চমৎকার স্থাপত্যগুলো পর্যটকদের নিয়ে যায় কয়েক হাজার বছর পেছনে। আগ্রহী ক্রেতাদের জন্য এই শহরের বিভিন্ন রাস্তায় কেনাকাটার সুযোগ আছে নানা ধরনের মসলা, গয়না, টেক্সটাইল ও পারফিউমসহ অনেক কিছু। স্মৃতি হিসেবে নেওয়ার জন্য পাওয়া যাবে হরেক রকম স্যুভেনির। রাস্তার পাশের এসব দোকান ছাড়াও বিশেষ কিছু আকর্ষণ আছে এই জায়গায়। যেমন- সুন্দর গয়নার জন্য যাওয়া যাবে আল বালাদ গোল্ড মার্কেটে; আর লেখকদের লেখা ফিকশন কিংবা ঐতিহাসিক বইয়ের জন্য যেতে পারেন আওয়ার ডেইজ অব ব্লিস বুকশপে।  

লোহিত সাগরের তীরে আরামদায়ক স্পা: সিক্স সেন্সেস সাউদার্ন ডুনস
পরিপূর্ণ অবকাশ যাপনের জন্য সোজা চলে যাওয়া যায় সিক্স সেন্সেস সাউদার্ন ডুনস স্পাতে। সৌদির লোহিত সাগর উপকূলের বালিয়াড়িতে অবস্থিত এই স্পাতে আছে অসাধারণ সব অন্দরসজ্জা। সৌদির পরিবেশের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে সেখানে। স্পা জুড়ে বিরাজ করা স্নিগ্ধ সুগন্ধ এই অঞ্চলের ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দেবে। স্পাতে থাকা চমৎকার আয়োজন ও অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আরবের সুস্থতার ঐতিহ্য ফুটে ওঠে। এ ছাড়া আছে হাতে-কলমে শেখার ব্যবস্থা বা কর্মশালা। সেখানে মসলা ও সুগন্ধি থেকে স্কিনকেয়ার পণ্য তৈরি করা শেখানো হয়। শত শত বছর আগে আরবের প্রাচীন নাবাতেন জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বাণিজ্যের মাধ্যমে এসব মসলা ও সুগন্ধি এই অঞ্চলে প্রবেশ করে।

রিয়াদে বিলাসবহুল অভিজ্ঞতা: ভিআইএ রিয়াদে কেনাকাটা ও খাওয়া-দাওয়া 
বিলাসবহুল অভিজ্ঞতার সঙ্গে কেনাকাটা ও বিনোদনের জন্য চমৎকার ওয়ান-স্টপ গন্তব্য হতে পারে ভিআইএ রিয়াদ। স্থানীয় ঐতিহ্যের ছাপ রয়েছে জায়গাটিতে। বেলুচ্চি, ডলচে অ্যান্ড গ্যাবানা, টম ফোর্ড, ব্র্যান্ডন ম্যাক্সওয়েলসহ বেশ কয়েকজন বিখ্যাত ডিজাইনারের ব্র্যান্ড স্টোরও রয়েছে এখানে। সারা দিনের কেনাকাটা শেষে আপনার মাকে নিয়ে যেতে পারবেন সুন্দর কোনো রেস্টুরেন্টে। সুস্বাদু এশিয়ান খাবার বা ফরাসি ক্যাফে— সব ধরনের এবং সবার পছন্দের খাবারই এখানে আছে। স্বাচ্ছন্দ্যময় দুর্দান্ত সব অভিজ্ঞতা নিতে যাওয়া যাবে রেনেসাঁ সিনেমায়। সৌদি সরকার দেশটিতে ভ্রমণ এখন অনেক সহজ করেছে। ভিসা প্রক্রিয়া ক্রমাগত উন্নত করা হচ্ছে। এখন বিশ্বের ৬৩টি দেশ ই-ভিসা প্রোগ্রামের আওতায় আছে, সঙ্গে আরও আছে ৯৬ ঘণ্টার ফ্রি স্টপওভার ভিসা।

ভিজিট সৌদি: 
সারা বিশ্বের সামনে সৌদি আরবকে তুলে ধরা এবং ভ্রমণকারীদের দেশটির অনন্য দিকগুলো উপভোগ করার জন্য স্বাগত জানাতে কাজ করছে কনজিউমার ব্র্যান্ড ভিজিট সৌদি। সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দেশের পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য। পর্যটকদের ভ্রমণ পরিকল্পনা ও উপভোগে সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যও দেয় তারা। পৃথিবীর দ্রুততম বর্ধনশীল গন্তব্য হিসেবে সৌদি আরব এখন পরিণত হয়েছে সারা বছর ঘুরতে যাওয়ার মতো একটি গন্তব্যে।

আরও জানতে এবং আপনার ট্রিপের পরিকল্পনা করতে ভিজিট করুন http://www.visitsaudi.com

কলি

সুন্দরবনে দুই রাত

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৩ পিএম
সুন্দরবনে দুই রাত
ওপারে সুন্দরবন। এপারে পিয়ালী। মাঝে ঢাংমারী। ছবি:কামাল খান

যাব সুন্দরবন। অনেকের তুমুল আপত্তি। এই গরমে! যাব তো ঘুরতে, তাও আবার সুন্দরবন। গরমকে থোড়াই কেয়ার। পাত্তা না দিলেই হলো। গরমটা আর মাথায় চড়ে বসতে পারবে না। তাই ঈদুল ফিতরের ঠিক এক দিন পর সকাল সাড়ে ৭টায় মোংলাগামী বাসে আমরা চড়ে বসলাম। আমরা সাতজন। যাত্রার ঠিক আগে পরিচিত হলাম নুরুল ইসলাম খানের সঙ্গে। পরিবার নিয়ে তিনিও চলছেন সুন্দরবন। একই বাসে এবং একই রিসোর্টে।

পদ্মা সেতু হওয়ার পর এই প্রথম ওই পথে আমাদের যাত্রা। অসাধারণ সড়কের কারণে যাত্রাপথ ছিল ভীষণ আরামদায়ক। নন-এসি বাসের খোলা জানালা দিয়ে ভারী বাতাস এসে আমাদের রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছিল। দুপাশের দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা মোংলা পৌঁছে গেলাম দুপুরের শুরুতেই। ওখানে রিসোর্টের বোট আমাদের অপেক্ষা করছিল। তারপর চড়ে বসলাম বোটে। মাথার ওপর সূর্য তখন খাড়া হয়ে আলো ও উত্তাপ দুটোই বিলিয়ে যাচ্ছিল অকাতরে। কিন্তু গরমে আমরা কাতর হতে গিয়েও হইনি। নদীর হাওয়া। পশুর নদী পাড়ি দিয়ে কিছুটা দক্ষিণে এগিয়ে ইউটার্ন নিয়ে বোট ঢুকল ঢাংমারীতে।

সুন্দরী ফুল

সুন্দরী ফুল

ঢাংমারী কি নদী? এলাকার মানুষজন নদী বলেই ডাকে। যদিও কাগজে-কলমে ওটাকে খাল হিসেবেই অভিহিত করা হয়েছে। ঢাংমারী দিয়ে এগোতে লাগলাম পশ্চিমে। বেশ কিছু বাঁকও পেরোলাম। আমাদের বামে তখন সুন্দরবন। আর ডানে ঢাংমারী গ্রাম। কিন্তু সবার দৃষ্টি বামে। কঠিন দৃষ্টি। যদি কোনো বাঘ চোখে পড়ে!
কিন্তু কোথায় বাঘ! এত সহজেই যদি বাঘের দেখা মিলত তবে সুন্দরবন ভ্রমণ এতটা রোমাঞ্চকর লাগত না। তবে ডলফিন চোখে পড়েছে। নদীতে নয়, ঢাংমারী যেখানে পশুর নদীর সঙ্গে মিলেছে, সেখানে। আর কুমিরের দেখা মিলেছে ঢাংমারীতেই। জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ দেখার জন্যই তো সুন্দরবনে আসা। ফিফটি পার্সেন্ট দেখা মিলেছে, মানে কুমিরের দেখা মিলেছে, এখন বাকি ফিফটি পার্সেন্ট...

প্রায় ঘণ্টা দু-এক পর রিসোর্টের জেটিতে বোট ভিড়ল। পিয়ালী ইকো রিসোর্ট ও কালচারাল সেন্টার। রিসোর্টের ওপারেই মূল সুন্দরবন। মাঝে ঢাংমারী। মোংলা থেকে রিসোর্টকর্তা কামাল খান আমাদের সঙ্গেই ছিলেন। আসার পথেই দুপুরের খাবারের মেন্যুও জানিয়েছিলেন- পারশে মাছ, সবজি, চিংড়ি দিয়ে মিষ্টিকুমড়ার ঝোল, ঘন ডাল, ঢ্যাঁড়শ ভাজি। একসময় নাকি সুন্দরবনে হাতি ছিল। কিন্তু অনেক বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। দীর্ঘ যাত্রা ও নদীর বাতাসে সেই হাতি এসে আমাদের পেটের ভেতর নাচানাচি শুরু করে দিয়েছে তখন।

পিয়ালীর জেটি দিয়ে অভ্যর্থনা ঘরে ঢোকার সময় ফুল, শরবত আর চৈত্র সংক্রান্তির ভাত দিয়ে স্বাগত জানানো হলো। হাতির নাচন অনেকটাই কমে এল। এরপর যার যার ঘরের চাবি দেওয়া হলো। কাঠ আর গোলপাতা দিয়ে বানানো ঘরে ঢুকে প্রাণ জুড়িয়ে গেল।

হাত-মুখ ধুয়ে খাবার ঘরে এলাম। খেয়ে দেয়ে বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে চলে গেলাম পাঁচ কিলোমিটার দূরে, যেখানে চৈত্রসংক্রান্তি মেলা হচ্ছিল। গ্রামীণমেলা। যদিও গ্রামের সেই ঐতিহ্যের ছোঁয়া মেলায় দেখা গেল না। তবু মেলা তো! অনেক মানুষ! একসময় নাকি এই গ্রামগুলোতেও বাঘের উৎপাত ছিল। তবে এখন আর নেই। বিদ্যুতের কারণে গ্রামগুলোও এখন ঝলমলে হয়ে উঠেছে। কাঁচামাটির সড়কে চলছে বাংলার টেসলা- বৈদ্যুতিক অটোরিকশা। সুন্দরবনে সে রাতের অনুভূতি ছিল অন্যরকম।

পরদিন সুন্দরবনের ভেতরে ঢুকলাম আমরা। এ জন্য বন বিভাগের অনুমতি নিতে হয়েছিল। অনুমতি নেওয়ার কাজটা রিসোর্টই করে দিয়েছে। এজন্য জনপ্রতি নির্ধারিত ফি জমা দিতে হয়েছে।

পিয়ালীর কটেজ

বিকেল পেরিয়েছে অনেকক্ষণ আগেই। একটু দেরিতে বেরোনোর কারণ গরম। বৈঠাচালিত নৌকায় করে আমরা ঢুকলাম সুন্দরবনের ভেতরে। ঢুকতে ঢুকতে দেখতে লাগলাম নানান গাছপালা। বেশির ভাগ গাছপালা তখন ফুলে ফুলে সুরভিত। বসন্তের শেষেই নাকি সুন্দরবনে ফুলের সমারোহ বেশি দেখা যায়। আর এ কারণে এটাই হচ্ছে সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুম। কেওড়া ফুলের কলি হয়েছে শুধু, তখনো ফুল ফোটেনি। তবে ছৈলা, খলিশা, কাঁকড়া ও সুন্দরীদের ফুলগুলো ফুটে আছে। ফুলের ওপর মৌমাছি, প্রজাপতি- একের পর এক ছবি তুলতে লাগলেন কামাল খান। আর খাল দিয়ে গহীনে অনেকটা পথ যাওয়ার পর হঠাৎ...

বোঁটকা একটা গন্ধ এসে আমাদের সবার নাকেই ঝাপটা মারল। মুহূর্তে পুরো শরীর সচকিত হয়ে ওঠল। এ কীসের গন্ধ? আমাদের কৌতূহলী মন জবাব খুঁজে বেড়াচ্ছে। বাঘেরা নাকি সন্ধ্যার সময় শিকারের খোঁজে বেরোয়। তখন তো ঠিক সেরকমই সন্ধ্যা ছিল। তবে কি আমাদের আশপাশে কোথাও আছে? আমাদের লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে?

আরও গহীনে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু কে জানে, তখনই কেন আমাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াল একটা গরান গাছ। যদিও তখনই সন্ধ্যা হয় হয়। আমরা ফিরতি পথ ধরলাম।

ততক্ষণে জোয়ার শেষ হয়ে ভাটা শুরু হয়ে গেছে। ঢাংমারীর দুপাশে জেগে উঠেছে গাংপালংয়ের মাথা। আঁখি আপা (আঁখি সিদ্দিকা, লেখক) গাংপালং তোলার জন্য হাত বাড়িয়ে দিলেন। পরদিন দুপুরের খাবারে ছিল এই গাংপালং শাক। অসাধারণ স্বাদ। ফেরার সময় কামাল খান বেশ কিছু শাক দিয়েছিলেন আমাদের। আর মধুর মৌসুমে সুন্দরবন থেকে মধুছাড়া ফিরব? হতেই পারে না। ওপাশের গ্রাম থেকে পাকা তেঁতুলও এনেছিলাম আমরা। আর সঙ্গে এনেছি চমৎকার এক ভ্রমণস্মৃতি। বর্ষায় নাকি সুন্দরবন অপূর্ব সন্দর!

যেকোনো সৃজনশীল কাজের জন্য পিয়ালী ইকো রিসোর্টে রয়েছে বিশেষ ডিসকাউন্ট সুবিধা। তবে সে কাজটা পিয়ালী রিসোর্টে থেকে করতে হবে এবং কাজটা যে করা হয়েছে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এরকম সৃজনশীলবন্ধব রিসোর্ট বাংলাদেশে আর কোথাও আছে কি না জানা নেই। নিরিবিলিতে সৃজনশীল কাজে কিংবা অবসর উপভোগ করতে যাবেন নাকি পিয়ালীতে, সুন্দরবনে?

যেভাবে যাবেন: পর্যটক আরমান পরিবহন, বিএমলাইনসহ সায়েদাবাদ থেকে মোংলার সরাসরি বাস আছে। নন-এসি ভাড়া ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। মোংলায় থাকার জন্য পর্যটনের মোটেল আছে। রুমভাড়া দুই হাজার থেকে শুরু। মোংলা থেকে নানান বোটে সুন্দরবন ঘুরে এসে আবার মোংলায় থাকা যায়। অথবা যদি সুন্দরবনের কাছে রাত কাটাতে চান, তাহলে পিয়ালীর মতো বেশ কিছু রিসোর্ট আছে।

কোথায় থাকবেন: পিয়ালী ইকো রিসোর্ট ও কালচারাল সেন্টার, পশ্চিম ঢাংমারী, বানিশান্তা, দাকোপ, মোংলা। মোবাইল: ০১৯১১০৪০৪৬৩
ওয়েবসাইট: www.pealyresort.com

কলি

সৌন্দর্যে ভরা রাশিয়া

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৮ পিএম
সৌন্দর্যে ভরা রাশিয়া
ছবিটি রাশিয়ার সোচি শহরের

আয়তনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়া। প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর বিশাল এই দেশ সম্পর্কে খুব কম জানি আমরা। সম্প্রতি রাশিয়া ঘুরে এসেছেন সাবিতা বিনতে আজাদ। তার যাত্রাটা ছিল মূলত বিশ্ব যুব উৎসবে অংশগ্রহণ করা। রাশিয়ার বিখ্যাত বিশ্বকাপ করা হোস্টিং সিটি সোচিতে কনফারেন্সে যোগ দিতে। কনফারেন্সের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার পর ছয় মাস ধরে দফায় দফায় বিভিন্ন আপডেট আর আপলোড চালিয়ে কনফারেন্স কনফারমেশন মেইল পেয়েছিলেন। দু-তিন দফা রাশিয়ান অ্যাম্বেসিতে গিয়ে ভিসাও পেয়েছিলেন। তবে পর্যটক হিসেবে রাশিয়ার ভিসাপ্রাপ্তি আর ভ্রমণ তেমন জটিল কোনো কিছু নয়। নিয়মানুযায়ী আবেদন করলে সহজেই ট্যুরিস্ট ভিসা পাওয়া যায়। এসব নিয়ে লিখেছেন সাবিতা বিনতে আজাদ

সোচি শহর
কল্পনার মতো করে শহরটা সাজিয়েছে রুশ সরকার। মূলত শহরটা তৈরি হয়েছে ৫০ হাজারের ওপর অতিথির হোস্টিংয়ের জন্য। কৃষ্ণ সাগরের পাশে এই শহর, সবুজ আর শান্ত। সমুদ্রপ্রেমী ও ক্রীড়ামোদী পর্যটকদের কাছে এই শহর অনেক পছন্দের। রাশিয়ার জাররা এ শহরে অবসর সময় কাটাতে আসতেন। গ্রীষ্মে এ শহরে পর্যটকদের ঢল নামে। মূল শহর বেশ গোছানো। বাস, ট্রেন, ট্রাম সবকিছুই নাগালের মধ্যে। মোবাইল অ্যাপস ধরে, ক্যাশ কিংবা কার্ডে পেমেন্ট করে অনায়াসে আপনি ভ্রমণ করতে পারবেন। রুশ সরকার আমাদের ফ্রি সিম আর ব্যাংক কার্ডের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তবে আপনি সহজেই পাসপোর্ট আর মাইগ্রেশন কার্ড দিয়ে সিম এবং ব্যাংক কার্ড করতে পারবেন। সোচি ভ্রমণ খুব আরামদায়ক ছিল, আরও ছিল

চমৎকার খাবার আর আয়েশি হোটেল। অফুরন্ত ইভেন্ট আর এডুকেশনাল সেশন চোখের পলকে শেষ হয়ে গিয়েছিল। সোচি থেকে বিমানযোগে মস্কো চলে গিয়েছিলাম। মস্কো থেকে একদম পৃথিবীর শেষের শহর মুরমাস্ক। সেখান থেকেই শুরু হয় আমার একক যাত্রা। 

মুরমাস্ক শহর

পৃথিবীর শেষ গ্রাম আর নিয়ন আলোর নর্দার্ন লাইট হান্টিং- মস্কো শহর থেকে বিমানযোগে চলে গিয়েছিলাম মুরমাস্ক। এখানে পৃথিবীর শেষ গ্রাম টেরিবার্কা গিয়েছিলেন। অসাধারণ সে অনুভূতি। মূলত চারজন রুশ মেয়ের সঙ্গে মিলে গ্রামে গিয়েছিলাম। কী অপূর্ব সুন্দর এই গ্রাম! সেখানে গিয়ে দেখেছি সি গাল, গ্রিক মিথিওলজির রেইন্ডার, স্লেজ গাড়ি টানা হাস্কি কুকুরের ফার্ম। টেরিবারকা থেকে আর্কটিক সাগরের অপরূপ সৌন্দর্য মুগ্ধ হয়েছি বারবার। ঠাণ্ডা এত বেশি ছিল যে, ৫-৬টা লেয়ারের জামা কাপড় পরেও জমে গিয়েছিলাম। 

নর্দার্ন লাইট
এই শহরেই আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর জিনিস দেখেছি। আমি প্রফেশনাল একজন গাইড বুক করেছিলাম, আমার পরিচিত এক ভাইয়ের রেফারেন্সে যারা খুব আগ্রহী, নর্দার্ন লাইট হান্টিং করে। আমার গাইড ইয়োরাস্লভের ডেডিকেশনের গল্প বললে কম হয়ে যাবে। সারা রাত ধরে আমাদের নর্দার্ন লাইট হান্টিং চলে। রাতের আকাশে নিওন লাইটের দেখা পাওয়া মার্চ মাসে এত সহজ নয়। আমরা ২০-২১ বার গাড়ি থেকে নেমেছি। মাইলের পর মাইল ছুটেছি। অবশেষে ধাপ করে নেমে এল বরফ রাজ্যে আকাশ থেকে সেই সবুজ নিয়ন আলো। আমি তাকিয়ে দেখলাম বরফ সবুজ হয়ে গেছে, পাইন বনে নেমে এসেছে নর্দার্ন লাইট। মস্কো ফিরে সিদ্ধান্ত নিলাম, বিমানের টিকিট পরিবর্তন করে পেছাব। সেন্ট পিটার্সবাগ যাব।

সেন্ট পিটার্সবার্গ 
মস্কো এসে চলে গেলাম সেন্ট পিটার্সবাগ। ইতালির ভেনিসের মতো সুন্দর এই শহর। এখানকার সবকিছু ৩০০ বছর আগের করা। এখনো অনেক আধুনিক। যা দেখি তাতেই অবাক হয়েছি। জারদের কী স্থাপত্যশৈলী! কী সেই রাজপ্রাসাদ। স্টেট হেরমিটেজ, কাজান ক্যাথেড্রাল, চার্চ অব দ্য সেভিয়ার অন ব্লাড, কি অবাস্তব স্থাপত্য তবু কত বাস্তব। নদীগুলোর বরফ ভাঙতে শুরু করেছে। আমার মনেও গ্রীষ্মের উষ্ণতা লেগেছে। নিজেকে বহমান নদী মনে হচ্ছে। আমি রাস্তায় ঘুরতাম, ঘুরতাম নদীর ধারে, বাসে, ট্রামে। আর মেট্রো! সে এক এলাহিকাণ্ড। পৃথিবীর গভীরতম মেট্রো বোধহয় এই সেন্ট পিটার্সবার্গে। 

মস্কো 
সব শেষে আসি মস্কো ভ্রমণে। আমি দফায় দফায় মস্কো এসেছি এই ভ্রমণে, মস্কো ছিল আমার বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা। মস্কোর মেট্রো সিস্টেম আমার মাথা খারাপ করে ছেড়েছে। একবার এক ঘণ্টার জন্য হারিয়েও গিয়েছিলাম। লোকজনকে জিজ্ঞেস করে হোস্টেলে ফিরেছি। পুরো শহর যেন পাতালপুরী। মাটির ওপরে যত না কিছু মাটির নিচে তার কয়েকগুণ বেশি এলাহিকাণ্ড! কী নেই! শপিংমল থেকে শুরু করে সবকিছুই। পরে জানতে পারলাম মেট্রোগুলো এত গভীরে করেছে। যাতে যুদ্ধ লাগলে এগুলোকে বাংকার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। মস্কোর আকাশ খুব সুন্দর আর পরিষ্কার। 

কোথায় থাকবেন
আমার মতো বাজেট ট্রাভেলার হলে থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা হলো হোস্টেল। বেশ সস্তা। সব সুযোগ-সুবিধা পাশাপাশি একটা রান্নাঘরও পেয়ে যাবেন। সবচেয়ে দারুণ কথা এখানে আপনি একা নন। দুনিয়াজুড়ে দেশ-বিদেশের বন্ধু বানানোর চমৎকার জায়গা এই হোস্টেলগুলো। আমি যেহেতু বেশির ভাগ একাই ভ্রমণ করেছি তাই আমি হোস্টেলগুলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছি। এগুলো নিরাপদ, সস্তা আর মূল শহরেই হয়। 

কীভাবে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাবেন
যদি আপনার একটা ফোন থাকে আর তাতে ইন্টারনেট থাকে, সঙ্গে রাশিয়ান একটা কার্ড পান তাহলে এ দেশ আপনার! যেকোনো জায়গায় কার্ড দিয়েই পেমেন্ট করে বাসে, ট্রামে, মেট্রোতে প্লেনের টিকিট কেটে চলতে পারবেন। আর ফোনে অ্যাপস আছে ট্রান্সলেটর, ম্যাপ, ট্যাক্সির ম্যাপ। সব ব্যবহার করে আপনি আরামে থাকতে পারবেন। 

সতর্কতা
রাশিয়ার ইমিগ্রেশন শেষে তারা একটা মাইগ্রেশন কার্ড দেয়। এটা হারিয়ে গেল পাসপোর্ট হারানোর মতোই কঠিন অবস্থা হবে। এটা একদম শেষ পর্যন্ত আপনার সঙ্গে থাকা লাগবে। রাশিয়ার মানুষ দারুণ। ভাষা না বোঝা একটা সমস্যা, এক্ষেত্রে গুগল ট্রান্সলেটর আপনাকে সাহায্য করবে। ভ্রমণে আপনি মানেই বাংলাদেশ, এমন কিছু করবেন না যেটা আপনার দেশকে হেয় করে। রাশিয়ানরা বাংলাদেশিদের খুব ভালোবাসে।

কলি

 

ঈদে ঢাকাবাসীর ঘুরে বেড়ানো

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম
ঈদে ঢাকাবাসীর ঘুরে বেড়ানো

ঈদের ছুটিতে বেশির ভাগ মানুষই গ্রামে চলে যায় বলে ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা থাকে। তাই ঈদের ছুটিতে ঢাকায় বেড়ানোর ভালো সুযোগ। ঢাকা বা এর আশপাশে একাধিক জনপ্রিয় বেড়ানোর স্থান রয়েছে, ঈদের দিন অথবা পরের যেকোনো দিন চাইলেই আপনি পরিবার নিয়ে ঘুরতে পারবেন। জেনে নিন প্রিয় মানুষকে নিয়ে যেতে পারেন এমন কিছু জায়গার অবস্থান ও পরিচিতি। বিস্তারিত জানাচ্ছেন সৈয়দ শিশির 

ঈদের ছুটিতে বিশেষ করে বিকেলে ফাঁকা ঢাকায় পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন নগরবাসী। আমাদের প্রিয় রাজধানীতে আছে ঘুরে বেড়ানোর জন্য সুন্দর ও নির্মল কিছু জায়গা। দূরে কোথাও না গিয়ে অনেকেই খুঁজেন আশপাশে অবসর কাটানোর ঠিকানা। তেমনি কয়েকটি দর্শনীয় স্থানের কথা জেনে নেওয়া যাক-

ফ্যান্টাসি কিংডম
রাজধানীর অদূরে সাভারের ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কের পাশে জামগড়া এলাকায় অবস্থিত ফ্যান্টাসি কিংডম পার্ক। প্রায় ২০ একর জায়গায় স্থাপিত এটি। পার্কটিতে ওয়াটার কিংডম, ফ্যান্টাসি কিংডম, রিসোর্ট আটলান্টিকা, এক্সট্রিম রেসিং (গো-কার্ট) ও হেরিটেজ কর্নার নামে বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। দুরন্ত গতিতে ছুটে চলা রোমাঞ্চকর অনুভূতি ও শিহরণ জাগানো রাইড রোলার কোস্টার এ পার্কের জনপ্রিয় রাইডগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। হেরিটেজ কর্নারে রয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোর রেপ্লিকা। এখানে রয়েছে তিন তারকা মানের রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফে। সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এবং অন্যান্য দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পার্কটি খোলা রাখে। চাইলে মতিঝিল থেকে মঞ্জিল পরিবহন ও হানিফ মেট্রো সার্ভিসে যেতে পারেন।

নুহাশ পল্লী
নুহাশ পল্লী ঢাকার অদূরে গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামে ৪০ বিঘা জমিতে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের নির্মিত বাগানবাড়ি। এটি নুহাশ চলচ্চিত্রের শুটিং স্পট ও পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র। এখানে ঢুকে নামাজের ঘরের পাশেই দেখবেন তিনটি পুরোনো লিচুগাছ নিয়ে একটি ছোট্ট বাগান। এর উত্তর পাশে জাম বাগান আর দক্ষিণে আম বাগান।

এখানকার নানা স্থাপনা আর অসংখ্য ফলজ ও বনজ গাছের গায়ে সেটে দেওয়া আছে পরিচিতি ফলক, যা দেখে গাছ চেনা যাবে সহজেই। উদ্যানের পূর্ব দিকে রয়েছে খেজুর বাগান। বাগানের এক পাশে ‘বৃষ্টি বিলাস’ নামে একটি বাড়ি রয়েছে। নুহাশ পল্লীর আরেক আকর্ষণ ‘লীলাবতী দীঘি’। এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নুহাশ পল্লী দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন খোলা থাকে। ১২ বছরের উপরে জনপ্রতি টিকিট লাগবে ২০০ টাকা। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গুলিস্তান থেকে প্রভাতী-বনশ্রী বাসে হোতাপাড়া বাজারে নেমে সেখান থেকে টেম্পুতে করে যেতে পারবেন এ পল্লীতে।

জাতীয় চিড়িয়াখানা 
ঢাকার যেসব দর্শনীয় স্থান রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিনোদন কেন্দ্র হচ্ছে জাতীয় চিড়িয়াখানা। ঈদ এলেই এখানে প্রাণীপ্রেমীদের ভিড় লেগে যায়। তাই ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানায়। চিড়িয়াখানায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, সিংহ থেকে শুরু করে চেনা-অচেনা বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেখতে পাবেন। দুই বছরের ঊর্ধ্বের বয়সী সবাইকে ৫০ টাকার টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হবে। আর চিড়িয়াখানার ভেতরে অবস্থিত প্রাণী জাদুঘরে প্রবেশমূল্য ১০ টাকা।

আহসান মঞ্জিল
ঢাকার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি স্পট আহসান মঞ্জিল। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত ঢাকার নবাবদের আবাসিক ভবনগুলোর মধ্যে বিখ্যাত স্থান এটি। ওয়াইজঘাটে এসে বুলবুল ফাইন আর্টস একাডেমির সামনে গেলেই ঐতিহাসিক ভবনটি নজর কাড়বে। এটি ব্রিটিশ ভারতের উপাধিপ্রাপ্ত ঢাকার নবাব পরিবারের বাসভবন ও সদর কাচারি ছিল। ঢাকা মহানগরীর উন্নয়ন ও রাজনৈতিক ক্রমবিকাশের বহু স্মরণীয় ঘটনাসহ অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্মৃতি বিজড়িত এ ‘আহসান মঞ্জিল’। এর তোষাখানা ও ক্রোকারিজ কক্ষে থাকা তৈজসপত্র এবং নওয়াব এস্টেটের পুরোনো অফিস অ্যাডওয়ার্ড হাউস থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন নিদর্শন সংরক্ষণ করে প্রদর্শন করা হয়েছে আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে।

লালবাগ কেল্লা
মুঘল আমলে নির্মিত একটি অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিত লালবাগ কেল্লা। প্রতিদিন হাজারো মানুষের ভিড়ে মুখরিত থাকে লাল ইটের দর্শনীয় এ কেল্লা। এর তিনটি বিশাল দরজার মধ্যে যে দরজাটি বর্তমানে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত- সেটি দিয়ে ঢুকলে বরাবর সোজা চোখে পড়বে পরী বিবির সমাধি। এর চত্বরে আরও রয়েছে দরবার হল ও হাম্মামখানা, উত্তর-পশ্চিমাংশে শাহি মসজিদ। ঢাকায় এত পুরোনো মসজিদ খুব কমই আছে। গ্রীষ্মকালে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এটি খোলা থাকে। গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজার থেকে টেম্পুযোগে যাওয়া যায় লালবাগ কেল্লায়। এ ছাড়া নিউমাকের্ট এলাকা থেকে সরাসরি রিকশায় যাওয়া যায় লালবাগ কেল্লায়।

জিন্দা পার্ক 
পূর্বাচল হাইওয়ের কাছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত জিন্দা পার্কে সারা দিন সবুজের মধ্যে ঘোরাঘুরি করে ফিরে আসতে পারেন কিংবা থেকে যেতে পারেন রাতেও। প্রায় ১৫০ একর জমির ওপর অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা জিন্দা পার্ক। পার্কটি গাছপালা, পাখপাখালি, জলাধারে ভরপুর। এটি এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে গড়ে উঠেছে। জিন্দা পার্কে বিশাল লেকে নৌবিহারেরও ব্যবস্থা ছাড়াও রয়েছে বিশাল লাইব্রেরি, ট্রি হাউস। জলাধারের ভেতর ঘুরে বেড়ানোর জন্য এই পার্কে আছে পরিবেশবান্ধব সাঁকো। জিন্দাপার্কের ভেতরে খাবারের সুব্যবস্থা রয়েছে। কুড়িল বিশ্বরোডে পূর্বাচল হাইওয়ে অর্থাৎ ৩০০ ফিট রোড দিয়ে গেলে সবচেয়ে সহজ উপায়ে যেতে পারবেন এ পার্কে। চাইলে ঢাকা থেকে কাঁচপুর ব্রিজ পাড় হয়ে ভুলতা যাবেন তারপর বাইপাস হয়ে জিন্দা পার্ক যেতে পারেন। প্রতিদিন সকাল ৯টায় খোলা হয় এ পার্ক এবং সপ্তাহে প্রতিদিনই খোলা থাকে।

বিশেষ পরামর্শ
সাধারণত সরকারি ছুটির দিনগুলোয় এসব স্থান খোলা থাকে। তবে সংস্কার কাজ ও অন্যান্য সমস্যার কারণে অনেক সময় কর্তৃপক্ষ সেগুলো বন্ধ রাখতে পারে। তাই বাসা থেকে বের হওয়ার আগে খোলা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নেবেন।ৎে

বেড়াতে যাওয়ার আগে একটা বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন- নিজের এবং প্রিয়জনদের নিরাপত্তা সবার আগে। কোনো নিরিবিলি এলাকায় গেলে চেষ্টা করুন সন্ধ্যার আগেই চলে আসতে।

কলি