নোয়াখালীতে প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক উপসহকারী প্রকৌশলীসহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার শিক্ষককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ ফজলে এলাহী ভূঁইয়া আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন হাতিয়া উপজেলার উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শরীফুল ইসলাম (৪০), একই উপজেলার জাহাজমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন (৫২), মধ্য রেহানিয়া আবদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানবীর (৩৫), ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিন্নাত আরা বেগম (৩৫) ও হাসান উদ্দিন বিপ্লব (৩৮) (সাময়িক বরখাস্ত)। এর মধ্যে প্রকৌশলী শরীফুল ইসলাম ও শিক্ষক জিন্নাত আরা বেগম স্বামী-স্ত্রী।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট গুলজান আহমেদ জুয়েল বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে বাদী মামুন অর রশিদের স্ত্রী নলুয়া রেহান আলী চৌধুরীহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকার মোবাইল থেকে ব্যক্তিগত আপত্তিকর ছবি হ্যাক করে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবিসহ অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব করেন। মামলার পর উচ্চ আদালতের জামিন শেষে মঙ্গলবার নিম্ন আদালতে জামিন চাইলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রেপ্তার শিক্ষকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ৫ মে নোয়াখালীর সুধারাম (সদর) থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ (আইসিটি) আইনে মামলা করেন হাতিয়ার ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মামুন অর রশিদ। ওই মামলার ১ নম্বর আসামি সদর উপজেলার মাইজভান্ডার শরীফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। দুই মাস কারাভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে তিনি বর্তমানে জামিনে আছেন। বাকি আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন শেষে মঙ্গলবার নোয়াখালী জজ আদালতে হাজির হন।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে গত ৫ জুন পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করা হয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি আমজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। বাকি আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন।’
এদিকে মামলার পর থেকে আসামিরা দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) মো. আবদুল জব্বার খবরের কাগজকে বলেন, ‘জামিন নামঞ্জুরের বিষয়ে আদালতের লিখিত কাগজ পেলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’