ঢাকা ১৬ বৈশাখ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

তারুণ্যের সংকেত

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৯ পিএম
তারুণ্যের সংকেত

টিনএজারদের নিজস্ব কিছু ভাষা আছে। এসব ভাষা তাদের হাতের ইশারায়, নানান ভঙ্গিতে প্রকাশ পায়। তেমনি কিছু হাতের ভাষা

শান্তি সংকেত
জগতে এমন অনেক কিছুই আছে, যা কখনো বদলায় না। এই যেমন অনেক অনেক দিন ধরে শান্তির বার্তা প্রকাশ হয়ে আসছে এরকম ভাবে। আর এখন? প্রায় সব টিনএজই সেলফি তোলার সময় এই সংকেত দেখায়। এটা কি বড়দের প্রতি টিনএজারদের কোনো বার্তা? যে বার্তায় প্রকাশ পায়, শান্তি চাই, শান্তি।

এটি
চিহ্নটি যদিও অর্থহীন,তবু টিনএজাররা এই চিহ্ন দিয়ে ‘এটি’ বোঝায়। এটা একটা মজার সংকেত। এবং মজা হিসেবেই সংকেতটি ব্যবহৃত হয়।

দুই আঙুলের অভিবাদন
এটা দেখতে অনেকটা শান্তি সংকেতের মতোই। তবে ভালো মতো খেয়াল করলে দেখা যাবে, এখানে দু আঙুলের পেছনের দিক থাকবে দর্শকের দিকে, আর সামনের দিক নিজের দিকে। তবে দেশভেদে অভিবাদনের এই ভঙ্গি ভিন্নরকম। যেমন ব্রিটেনে দুই আঙুলের বদলে তিন আঙুল, যুক্তরাষ্ট্রে এক 
বা এককাধিকবার দেখানো হয়।

জাহ্নবী

উদ্যোক্তা যখন টিনএজার

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম
উদ্যোক্তা যখন টিনএজার

সফলতার পথে বয়স কোনো বাধা নয় নানা সময় নানা দেশে কথা প্রমাণ করেছে অনেক টিনএজার বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত এমন কয়েকজন টিনএজার উদ্যোক্তার কথা জেনে নাও আজকের লেখায়।

ড্যানি ড্যারেনবার্গ

যুক্তরাজ্যের টিনএজার ১৭ বছর বয়সী ড্যানি ড্যারেনবার্গডগ অ্যাডভাইজরসংস্থার প্রতিষ্ঠাতা একদিন পথ চলতে চলতে ড্যানির বন্ধু জানায় সে রাস্তায় একটি কুকুর ছানা কুড়িয়ে পেয়েছে কুকুরটি সঙ্গে তুলে আনলেও কীভাবে তার যত্ন করবে বুঝে উঠতে পারছে না বন্ধুর এমন প্রশ্নে ড্যানির মাথায় আসে যারা নতুন নতুন কুকুর পালছেন তাদের অনেকেই হয়তো বুঝে উঠতে পারেন না ঠিক কীভাবে যত্ন নেবেন অনেক সময় মালিকের অজ্ঞতার কারণে ছোটখাটো অসুখে অকালে প্রাণ হারাতে দেখা যায় অনেক কুকুরকে তাই মানুষের চারপেয়ে এই বন্ধুর জন্য ড্যানি শুরু করেন কুকুরের লালন-পালন সম্পর্কিত ওয়েবসাইট ওয়েবসাইট তৈরির পর থেকে ডগ অ্যাডভাইজার কুকুরের যত্ন, লালন-পালন নিয়ে ১০০টিরও বেশি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে ডগ অ্যাডভাইজরের সাপ্তাহিক পাঠক ছাড়িয়েছে হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ছাড়া তার উদ্যোগে তৈরি একটি এআই চ্যাটবট কুকুর মালিকদের জন্য তাৎক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে থাকে ২০২৪ সালে ডগ অ্যাডভাইজর সর্বাধিক পোষ্য পণ্য বিভাগে ইউকে বিজনেস অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে

আলফোনস কোলম্যান

১৪ বছর বয়সী আলফোনস কোলম্যানের যাত্রা শুরু হয় স্কুল কার্যক্রম থেকে স্কুল প্রজেক্ট হিসেবে কোলম্যান তৈরি করেছিলেন পরিবেশবান্ধব মোমবাতি নারকেল থেকে তৈরি মোমবাতিগুলো পরবর্তী সময়ে বিক্রি করেন হাজার ইউরো মূল্যে কোলম্যান বলেন, মোমবাতি নিয়ে তার মা বেশ শৌখিন তার মা সব সময় সাশ্রয়ী, সুন্দর ঘ্রাণযুক্ত মোমবাতি খুঁজতেন মায়ের সহযোগিতায় প্রাকৃতিক পণ্য দিয়ে তিনি এমন মোমবাতি তৈরি করে ফেলেন যেগুলো পুনর্ব্যবহারযোগ্য পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরির জন্য কোলম্যান ১৪ বছর বয়সেই উদ্যোক্তা বৃত্তি পায় কিশোর এই উদ্যোক্তা মনে করে, কোনো কাজ সম্পাদনের জন্য বুড়ো হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে নেই বরং আপনার যা আছে তা দিয়েই কাজ চালিয়ে যান

 

জাচ ইয়াদেগারি

প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের প্রতি জাচের ছিল ছোটবেলা থেকেই আলাদা ভালোবাসা মাত্র সাত বছর বয়সেই কোডিং আয়ত্ত করে ফেলেন জাচ কোডিং শেখার কিছু সময় পর যাচ তৈরি করে ফেলেন টোটালি সায়েন্স নামে একটি গেমিং ওয়েবসাইট কৈশোরের শুরুতেই চড়া মূল্যে নিজের গেমিং ওয়েবসাইট বিক্রি করেন জাচ ১৭ বছর বয়সে জাচ সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তৈরি করেন পুষ্টি ট্র্যাকিং অ্যাপ্লিকেশন ক্যাল এআই মাত্র ১০ মাসের ভেতর তার এআই অ্যাপ্লিকেশনটি . মিলিয়ন ডাউনলোড এবং বার্ষিক ৩০ মিলিয়ন ডলার আয় করে

 

 

জোসেপ সিতাম

১৯ বছর বয়সী জোসেপ সিতাম পুরুষদের জনপ্রিয় ফ্যাশন অনুষঙ্গ গহনা বিক্রির -কমার্স প্রতিষ্ঠান আইসকার্টেলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছোটবেলা থেকেই ফ্যাশন, ব্র্যান্ডিং নিয়ে আলাদা আগ্রহ ছিল জোসেপের সেই আগ্রহ কাজে লাগিয়ে ছয় বছর ধরে গড়ে তুলেছে আন্তর্জাতিক মানেই -কমার্স ব্র্যান্ড বর্তমানে আইসকার্টেলের বাৎসরিক আয় ছয় অঙ্কের রাজস্বে পৌঁছেছে জোসেপ মনে করেন, ব্র্যান্ডিং মোটেই সহজ কাজ নয় তবে সৃজনশীল পণ্য, ভোক্তাদের মন সমসাময়িক বাজার বুঝতে পারলে সফলতা অনেকটা সহজেই
ধরা দেয়

 

ত্বক সুন্দর রাখতে

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩০ পিএম
ত্বক সুন্দর রাখতে
মডেল: ফারিয়া ছবি: আদিব আহমেদ

নিজেকে সুন্দর দেখতে কে না চায়! সময়টা যখন কৈশোর সেই চাওয়া যেন আরেকটু বেশি। টিনএজাররা তো সাদাসিধাভাবেই সুন্দর। এই বয়সে অতিরিক্ত সাজগোজ না করতেই পরামর্শ দেন সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞরা। বরং পরিমিত খাবার গ্রহণ, শরীরের সুস্থতা আর ত্বকের যত্ন ধরে রাখলেই টিনএজারদের বেশ প্রাণবন্ত দেখায়।

ত্বকের ধরন জেনে নাও

টিনএজ বয়স হলো নিজেকে জানা ও বোঝার সময়। নিজের অনুভূতি, দক্ষতা সম্পর্কে বুঝে ওঠার পাশাপাশি এ সময় থেকে সচেতন হয়ে ওঠে নিজের শারীরিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেও। এ সময় হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে টিনএজ ত্বক কখনো শুষ্ক, কখনো তৈলাক্ত আবার কখনোবা মাঝামাঝি হয়। তাই ত্বকের আসল ধরন কোনটি বোঝা দায়! তবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে এর ধরন বুঝেই। তাই সুন্দর থাকতে প্রথম ধাপ তোমার ত্বকের ধরন কেমন নিশ্চিত হওয়া। এর জন্য প্রথমে ডাবল ক্লিনজিংয়ের মাধ্যমে মুখ ধুয়ে হালকাভাবে মুছে নাও। এরপর ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করো। এই অবস্থায় ত্বকের ধরন যেমন দেখতে পাও এটিই তোমার ত্বকের বৈশিষ্ট্য। ত্বকের ধরন বুঝেই ক্রিম ও অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার করো।

মুখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকো

টিনএজ বয়সে মুখে ব্রণ কিংবা দাগ হওয়া স্বাভাবিক। অনেককেই আনমনে ব্রণ ও দাগের ওপর খোঁচাতে দেখা যায়। ত্বকের জন্য এটি ক্ষতিকর। এতে দাগ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ে। আবার কেউ কেউ কোনো কারণ ছাড়াই মুখে হাত দেয়। এতে আঙুলের মাধ্যমে জীবাণু মুখের ত্বকে প্রবেশ করে। তাই টিনএজ বয়সে এমন অভ্যাস থাকলেও বিরত থাকার চেষ্টা করো।

হাইড্রেটেড থাকো

সুস্থ ও সুন্দর ত্বক মানেই যেন হাইড্রেটেড ত্বক। তবে ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে বিশেষ কিছু করার প্রয়োজন নেই। এর জন্য নিয়মিত ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করার অভ্যাস করো। পাশাপাশি সবুজ শাকসবজি ত্বককে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন নিয়মিত যেকোনো একটি ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে পার। ত্বকের ধরন তৈলাক্ত হলে পাতলা ঘনত্বের ক্রিম বেছে নাও।

সানব্লক ক্রিম ব্যবহার করো

পরিবারের বড় সদস্যদের মতো টিনএজ সদস্যদেরও প্রায় নিয়মিত বাইরে চলাফেরা করতে হয়। সূর্যের অতিবেগুনি আলোক রশ্মি কিন্তু সব বয়সী মানুষের জন্যই ক্ষতিকর। তাই কৈশোর কাল থেকে বাইরে বের হওয়ার আগে নিয়মিত সানব্লক ক্রিম ব্যবহার করো। এতে ত্বকের স্বাভাবিক রং ও কমনীয়তা প্রাপ্তবয়স্ক পর্যায়েও নষ্ট হবে না। আমাদের দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী ৩০ থেকে ৪০ এসপিএফ মাত্রার ক্রিম ব্যবহার করতে পারো। বাইরে যাওয়ার ২০ মিনিট আগে উন্মুক্ত ত্বকে ক্রিম ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবে।

মেকআপ ব্যবহারে সচেতন হও

প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় টিনএজ ত্বক অনেকটাই অপরিপক্ব। তাই ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থ ও মেকআপ সরঞ্জাম অনেক সময় টিনএজ ত্বক রুক্ষ করে তোলে। বাজারে টিনএজারদের উপযোগী বিভিন্ন নন-টক্সিক মেকআপ সরঞ্জাম পাওয়া যায়। তাই নিজের বয়স অনুযায়ী মেকআপ সরঞ্জাম কেনার চেষ্টা করো। নিজেকে ভিন্নভাবে প্রকাশ করতে মেকআপের প্রতি টিনএজারদের ঝোঁকই বেশি। মেকআপ করাই যে টিনএজ ত্বকের জন্য ক্ষতিকর এমনটাও নয়। তবে এ বয়সে ত্বককে সুরক্ষা দিতে বিশেষ উপলক্ষ ছাড়া নিয়মিত মেকআপ এড়িয়ে চলো।

অধিকার কর্মীরা যখন এক সুতোয় গাঁথা

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪১ পিএম
অধিকার কর্মীরা যখন এক সুতোয় গাঁথা
কোপেনহেগেন পিপল পাওয়ার সম্মেলনে প্রাপ্তি তাপসী(বা থেকে চতুর্থ)

অ্যাকশন এইড ডেনমার্ক আয়োজিত কোপেনহেগেন পিপল পাওয়ার সম্মেলন বিশ্বব্যাপী অধিকারকর্মীদের এক মিলনমেলা। গত ৮ থেকে ১০ এপ্রিল ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এ সম্মেলনে নিজেদের কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে অংশ নেন বিভিন্ন দেশের নবীন-প্রবীণ অধিকারকর্মীরা। বাংলাদেশি তরুণ অধিকারকর্মী হিসেবে সেখানে আমন্ত্রণ পান তাপসী দে প্রাপ্তি। সেই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন আজকের লেখায়।

কোপেনহেগেন পিপল পাওয়ার সম্মেলনে এ বছর অংশ নেন বিশ্বের ২৭টি দেশের ৩ শতাধিক অধিকারকর্মী। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল শান্তির জন্য সামাজিক আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে অধিকারকর্মীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত হয় প্রায় ২৪টি বৈঠক। বৈঠকে আমরা অধিকারকর্মীরা কীভাবে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে পারি, সাম্রাজ্যবাদ ও স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার বিপরীতে যেভাবে সামাজিক আন্দোলন শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে, বৈশ্বিক ক্ষমতা নির্দিষ্ট কিছু দেশ ও নীতিনির্ধারকের হাতে কুক্ষিগত না হয়ে যেভাবে সর্বজনীন হয়ে উঠতে পারে এমন সব বিষয় উঠে আসে পারস্পরিক আলোচনায়। আবার আমাদের দেশের মতো পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে নানা সময় ঘটে গেছে বিপ্লব, গণ-অভ্যুথান। বিভিন্ন দেশের ছাত্র-জনতার বিপ্লবের কৌশল, সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা ভাগাভাগি করে নেওয়ার সুযোগ হয় সম্মেলনে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ছিল ‘ডে আফটার টুমোরো’ শীর্ষক বৈঠক। বিশ্বের যেসব দেশে সম্প্রতি ঘটে গেছে গণ-অভ্যুথান, সেসব দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন বৈঠকে। গণ-অভ্যুথান-পরবর্তী বাংলাদেশের কথা জানাতে তরুণ প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিই প্যানেলিস্ট হিসেবে। প্যানেলে আরও ছিলেন শ্রীলঙ্কা ও সার্বিয়ার প্রতিনিধিরা। সেখানে বাংলাদেশের ওপর গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী অর্থনৈতিক চাপ, বিভিন্ন বিষয়ে বহির্বিশ্বের অযাচিত চাপ, গুজব প্রচার প্রসঙ্গে মতামত প্রকাশের সুযোগ হয় সবার সঙ্গে। আবার একই সঙ্গে বাহরাইন, সিরিয়ার মতো দেশগুলোর প্রতিনিধিদের কাছেও জানতে পারি তারা কীভাবে যুদ্ধাবস্থায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এবং সেগুলো সামাল দিচ্ছে।
সম্মেলনজুড়ে মনে হয় ইউক্রেন থেকে মায়ানমার, ফিলিস্তিন থেকে সার্বিয়া প্রতিটি দেশের সাধারণ মানুষের যুদ্ধটা যেন একই সূত্রে গাথা। দেশ, জাতি ভিন্ন হলেও শোষণের বিরুদ্ধে সবার গল্প অনেকটা একইরকম। আবার ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে অনেকেই বলে থাকেন, দীর্ঘ সময় নিপীড়নে জর্জরিত ফিলিস্তিনের মানুষ সুখ চায়। তবে সম্মেলনে ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর মনে হয়েছে, ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ সুখের চেয়েও বেশি স্বাধীনতা চায়। 
সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের নারী অধিকারকর্মীরা। আফগানিস্তান, ইরানের মতো রক্ষণশীল দেশের নারীরা কীভাবে আজও স্বাভাবিক জীবন যাপন এবং মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য লড়ছেন, সে গল্প উঠে আসে মুখোমুখি। মনে হয়, বিশ্বব্যাপীই নারীদের অধিকারের স্বাধীনতা ও অধিকারের লড়াইটা সহজ নয়। বরং সমতার জন্য এই লড়াই আরও সময়সাপেক্ষ। পৃথিবীর যেসব দেশে যুদ্ধ চলছে সেখানে নারী ও শিশুদের অবস্থা আরও নাজুক। তবে সেখানে অসীম সাহসিকতায় কীভাবে নারীরা লড়াই করে চলছেন, সে অভিজ্ঞতাও জানান দেন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের নারী অধিকারকর্মীরা।
এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য সব দেশের মানবাধিকারকর্মীকে একই সুতোয় গাঁথা। সম্মেলন শেষে দেশে ফিরেও নিয়মিত যোগাযোগ হয় ভিনদেশি অধিকর্মী বন্ধুদের সঙ্গে। পৃথিবীটা যেন এভাবেই আরও ছোট হয়ে এসেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লড়াই, বিপ্লবের প্রক্রিয়া একেক রকম। সম্মেলনে একে অন্যের অভিজ্ঞতায় পেয়েছি সাহস ও ঋদ্ধতা।

 

হুলি কিশোরদের ব্যতিক্রমী উইগ স্কুল

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম
হুলি কিশোরদের ব্যতিক্রমী উইগ স্কুল
ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীজুড়ে কত রং, কত বৈচিত্র্য। ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিশ্বাস আর ভৌগোলিক অবস্থান ভেদে প্রত্যেকের সংস্কৃতি ভিন্ন। তাই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কিশোর-কিশোরীদের বেড়ে ওঠার ধরন, জীবনযাপনও একরকম নয়।

প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনির নাম হয়তো তোমরা শুনেছ। সে দেশের হেলা প্রদেশের তাগারি নদী অববাহিকায় বাস করে এক আদিম অধিবাসী। তাদের নাম হুলি জাতি। আধুনিক পৃথিবীর সভ্যতা, সংস্কৃতি ও জীবনযাপন থেকে হুলি জাতি পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন, আলাদা।

বিশেষত বয়ঃসন্ধিতে পা দিলে হুলি কিশোরদের জন্য রয়েছে বিশেষ এক নিয়ম। পৃথিবীর আর দশজন সাধারণ টিনএজারের মতো প্রাতিষ্ঠানিক স্কুলে যাওয়ার রীতি নেই হুলি কিশোর-কিশোরীদের। তবে এই জাতির প্রথা অনুযায়ী ছেলেরা সাবালক হলে বা ১৪ বছর বয়সে পা দিলে বাধ্যতামূলক অংশ নিতে হয় ব্যতিক্রমী এক উইগ স্কুলে।

হুলি গোষ্ঠীর সমাজে পুরুষদের রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। সেখানে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের মাথায় লক্ষ করা যায় কয়েক বছর ধরে যত্নে তৈরি করা উইগ বা পরচুলা। এই উইগকে ধরা হয় পুরুষদের শক্তি, গৌরব ও হুলিদের সাংস্কৃতিক প্রতীক হিসেবে।

হুলি নারী ও পুরুষদের বসবাসের জায়গা আলাদা। ছেলেরা সাধারণত ১০ বছর বয়সে পা দিলেই মাকে ছেড়ে চলে যেতে হয় পুরুষদের আস্তানায়। সেখানে বয়স্ক পুরুষেরা তাদের শেখাতে শুরু করে শিষ্টাচার, সামাজিক রীতি-নীতি ও আদব কায়দা। ১৪ বছর বয়স থেকে ছেলেদের সাবালক ধরা হয় হুলি সমাজে। কেউ ১৪ বছর বয়সে পা দিলে তাকে পাঠানো হয় উইগ স্কুলে। উইগ স্কুলে থাকেন একজন বয়োজ্যেষ্ঠ উইগ মাস্টার। তার নেতৃত্বে নিজেদের মাথার চুল বড় করে, বিভিন্ন আকৃতি দিয়ে নিজেদের উইগ তৈরি করে স্কুলে অধ্যয়নরত প্রত্যেক কিশোর। বিশেষ আকৃতির এই উইগ তৈরিতে সাধারণত ব্যয় হয় কয়েক বছর। উইগ মাস্টার সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেই কৃতিত্বের সঙ্গে স্কুল জীবন শেষ করতে পারে কিশোররা। এর মধ্য দিয়ে হুলি কিশোররা সমাজে স্বীকৃতি পায় প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে।

হুলিদের বাৎসরিক হেগেন উৎসবে নাচ, গান, খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি নতুন উইগ স্কুল পাস করা ছাত্রদের জানানো হয় বিশেষ অভ্যর্থনা। এদিন নিজেদের নতুন উইগের সঙ্গে রং আর নানা ধরনের গহনায় সেজে ওঠে সদ্য প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেরা। কৈশোরে মায়ের কাছ থেকে আলাদা হওয়া, কয়েক বছরব্যাপী গোপন স্কুলে কাটানো হুলি কিশোরদের জীবন অনেকের কাছে কঠিন, বিস্ময়কর। তবে আধুনিক পৃথিবীর কিশোরদের থেকে তারা আজও স্বকীয় জীবনধারায় নিরবচ্ছিন্ন।

 

টিন ফ্যাক্ট

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩০ এএম
টিন ফ্যাক্ট
ছবি: সংগৃহীত
  • বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক, মানসিক ও হরমোনাল বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত ক্যালরি খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত টিনএজ বয়সে মেয়েদের ২০০০ ক্যালরি এবং ছেলেদের ২৪০০ ক্যালরি পরিমাণ খাবার প্রয়োজন। তবে নিয়মিত খেলাধুলা বা কঠোর পরিশ্রম করলে এর প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ করতে বলেন পুষ্টিবিদরা।
  • টিনএজ বয়সে সাধারণত প্রাণিজ আমিষ ও রিচ ফুড-জাতীয় খাবার খেতেই বেশি ভালো লাগে। তবে এ সময় প্রতিদিনের খাবার তালিকায় দুই কাপ পরিমাণ ফলমূল এবং আড়াই কাপ 
    শাক-সবজি থাকা প্রয়োজন। 
  • হাড় ও মাংসপেশির গঠন ও উচ্চতা বৃদ্ধি পায় টিনএজ বয়সে। তাই টিনএজ ছেলের খাবারে ৫২ গ্রাম প্রোটিন ও মেয়ের খাবারে ৪৬ গ্রাম প্রোটিন দরকার হয় নিয়মিত।
  • টিনএজ বয়সে মস্তিষ্কের বিকাশ ও পরিপক্ব হওয়ার জন্য প্রচুর ক্যালরির প্রয়োজন হয়। তাই এ সময় আমরা যে খাবার খাই তার বেশির ভাগই ব্যবহার করে আমাদের ক্ষুধার্ত মস্তিষ্ক। শারীরিক বিকাশের জন্য বরাদ্দ থাকে তুলনামূলক কম পরিমাণে ক্যালরি। এ কারণে বয়ঃসন্ধিকালে ধীরে ধীরে সম্পন্ন হয় শারীরিক বিকাশ।
  • বিশ্বে ৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে স্থূলতার হার প্রায় শতকরা ৮ ভাগ। একবিংশ শতকের শুরু থেকে টিনএজারদের মধ্যে স্থূলতার হার দ্বিগুণেরও বেশি। কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক কার্যক্রম কমে যাওয়া, ফাস্টফুড, অতিরিক্ত গ্লুকোজ গ্রহণ এর অন্যতম কারণ।
  • বয়ঃসন্ধিকালে খাবারের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি কিংবা চরম অনীহা দুটিই দেখা যেতে পারে। এ সময় হরমোনাল পরিবর্তন, শারীরিক বৃদ্ধি ও জিনগত কারণে আহারজনিত নানারকম বদ অভ্যাস তৈরি হয়। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় এটিকে বলে ইটিং ডিজঅর্ডার। জীবনের যেকোনো বয়সেই ইটিং ডিজঅর্ডার হয়ে থাকলেও কৈশোরে এই রোগের হার সবচেয়ে বেশি।