ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শেষ হলো ‘অ্যাডভান্সড কৃষি গবেষণা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪, ১০:২৭ এএম
আপডেট: ২৫ মে ২০২৪, ১১:৩৫ এএম
শেষ হলো ‘অ্যাডভান্সড কৃষি গবেষণা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন
ছবি: খবরের কাগজ

সিলেটে আয়োজিত প্রথম ‘অ্যাডভান্সড কৃষি গবেষণা’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শেষ হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ মে) ‘সম্ভাবনার উন্মোচন ও সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (সাউরেস) এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
 
এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৪৫টি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ছয় শতাধিক শিক্ষক, গবেষক ও বিজ্ঞানী অংশ নেন।

কৃষি সেক্টরের সব বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে প্রথমবারের মতো এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, চীন ও কেনিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ৪৫টি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।

সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সেরা ২৬ জন বিজ্ঞানী ও গবেষকদের হাতে সনদ তুলে দেওয়া হয়।

দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে আটটি সেশনে তিন শতাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। 

বাসযোগ্য বিশ্ব গড়তে কৃষি গবেষণার বিভিন্ন কৌশল উপস্থাপন করা হয় বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে।

সাউরেসের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মুহাম্মদ মাহমুদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষকের বক্তৃতায় সিকৃবির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে মানসম্পন্ন শিক্ষার্থী ও গবেষক তৈরি করতে হবে। স্বাধীনতার পর থেকে কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশ অসাধারণ উন্নয়ন সাধন করেছে কৃষিবিজ্ঞানীদের কল্যাণে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।’

সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিকৃবির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার, ইউজিসির পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ভেটেরিনারি, এনিম্যাল ও বায়োমেডিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. ছিদ্দিকুল ইসলাম ও সাউরেস পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ছফি উল্লাহ ভূঁইয়া।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীন দেশে ছয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হলেও বর্তমানে ৯টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৬০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।’

সিলেট ব্যুরো/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

কৃষিতে অবদানের জন্য এআইপি সম্মাননা পেলেন ২২ জন

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৪ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৪ পিএম
কৃষিতে অবদানের জন্য এআইপি সম্মাননা পেলেন ২২ জন
গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাইখ সিরাজের হাতে সম্মাননা তুলে দিচ্ছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ

কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ২২ গুণী ব্যক্তি ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি)’-২০২১ সম্মাননা পেয়েছেন। 

রবিবার (৭ জুলাই) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের কৃষকের কল্যাণ ও কৃষির উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। বৈশ্বিক নানা সংকটের কারণে কাঙ্ক্ষিত বাজেট বরাদ্দ করতে যত সমস্যাই থাকুক না কেন, সব সময়ই প্রধানমন্ত্রী কৃষিতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছেন। কৃষিকে সামনে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী সব সময় বাজেটে কৃষিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন, বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি অব্যাহত রেখেছেন।’

তিনি বলেন, ‘ত্যাগী কৃষকদের অবদানে আমাদের কৃষি এগিয়ে চলেছে। কৃষকের সামাজিক সুনাম ও সম্মান বাড়ানোর জন্যই এআইপি সম্মাননা। এআইপি সম্মাননা প্রদান তাদের কৃষিকাজে আরও উৎসাহিত করবে এবং কৃষির চলমান অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করবে।’ 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের কৃষিকাজের জন্য তাগিদ দেন এবং তিনি নিজেও গণভবনে কৃষিকাজ করেন। এই সরকার কৃষিকে প্রাধান্য দিয়েই দেশ পরিচালনা করছে।’

এআইপি সম্মাননাপ্রাপ্ত গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাইখ সিরাজ অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘এই এআইপি পুরস্কার পেয়ে আমি অনেক আনন্দিত। ছোট্ট একটা ভূখণ্ডের যে মানুষগুলো তাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান, গবেষণা, সম্প্রসারণ এবং মাঠপর্যায়ে কাজ করে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন তারা সব সময় অবহেলিত ছিলেন।’ 

ফরিদপুরের পেঁয়াজ বীজ চাষি শাহিদা বেগম এআইপি সম্মাননা পেয়ে বলেন, ‘কৃষিকাজে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করি। প্রধানমন্ত্রী কৃষিকে অনেক সম্মানের জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন। এআইপি সম্মাননার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। সারে ভর্তুকির কারণে অল্প দামে সার ক্রয় করতে পারছি এবং কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা সব সময় পাচ্ছি।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী।

কৃষিক্ষেত্রে ২২ জন পাচ্ছেন এআইপি সম্মাননা

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৭ এএম
আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫২ এএম
কৃষিক্ষেত্রে ২২ জন পাচ্ছেন এআইপি সম্মাননা

কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) সম্মাননা-২০২১ পাচ্ছেন ২২ জন। এআইপি নীতিমালা ২০১৯-এর আলোকে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ৫টি ক্যাটাগরিতে তারা নির্বাচিত হয়েছেন।

রবিবার (৭ জুলাই) সকাল ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২১ সালের এআইপি পুরস্কার দেওয়া হবে। 

এতে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ প্রধান অতিথি এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

 ২০২২ ও ২০২৩ সালের এআইপি নির্বাচনের কাজ চলমান আছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এআইপি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিবছর মোট ৫টি বিভাগে এআইপি সম্মাননা প্রদান করা হয়ে থাকে। এআইপি কার্ডের মেয়াদকাল হচ্ছে ১ বৎসর। এআইপিরা সিআইপিদের মতো সুযোগ-সুবিধা পান। এর মধ্যে রয়েছে মন্ত্রণালয় হতে একটি প্রশংসাপত্র, সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশ পাস, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ এবং বিমান, রেল, সড়ক ও জলপথে ভ্রমণকালীন সরকার পরিচালিত গণপরিবহনে আসন সংরক্ষণ অগ্রাধিকার। এ ছাড়া নিজের ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের কেবিন সুবিধা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার এবং বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার সুবিধা।

স্বীকৃত বা সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত কৃষি সংগঠন শ্রেণিতে ৩ জন
কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাইখ সিরাজ, পরিবেশবিষয়ক সংগঠক চট্টগ্রামভিত্তিক সংগঠন তিলোত্তমার প্রতিষ্ঠাতা সাহেলা আবেদীন ও সমবায় উদ্যোক্তা সাতক্ষীরার ধানদিয়া সিআইজি মহিলা সমবায় সমিতির সভাপতি শিখা রানি চক্রবর্তী।

জাত বা প্রযুক্তি উদ্ভাবন শ্রেণিতে ৪ জন
নির্বাচিত ব্যক্তিরা হলেন, এসিআই অ্যাগ্রিবিজনেসের প্রেসিডেন্ট এ কে এম ফারায়েজুল হক আনসারী, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বিষমুক্ত নিরাপদ সবজির কৃষি উদ্যোক্তা এম এ মতিন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য চুয়াডাঙ্গার জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. ওলি উল্লাহ এবং জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের জন্য বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাশ।

কৃষি উৎপাদন, বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প শ্রেণিতে ১০ জন
উন্নতজাতের ফলচাষের জন্য টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মো. ছানোয়ার হোসেন, পেঁয়াজ বীজ চাষের জন্য ফরিদপুরের খান বীজ ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী শাহীদা বেগম, সাথী ফসল উৎপাদন করে জমির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য খুলনার ডুমুরিয়ার কৃষি উদ্যোক্তা সুরেশ্বর মল্লিক, ফলচাষের জন্য চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের গ্রিন প্ল্যানেট অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী মো. রুহুল আমীন, জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করায় সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার অ্যাগ্রো বেইজড সোশিও ইকোনমিক্যাল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেসের চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেন, দুগ্ধ উৎপাদনে পাবনার ঈশ্বরদীর তন্ময় ডেইরি খামারের স্বত্বাধিকারী মো. আমিরুল ইসলাম, মাছ চাষে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আল বারাকা মৎস্য খামার অ্যান্ড হ্যাচারির স্বত্বাধিকারী মাছুদুল হক চৌধুরী, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মৌচাষি কৃষি উদ্যোক্তা মো. রফিকুল ইসলাম, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের ফলচাষী সিরাজ, বহুমুখী খামারের স্বত্বাধিকারী মো. সিরাজুল ইসলাম ও শেরপুর সদর উপজেলার ফলচাষী মা-বাবার দোয়া ফ্রুট গার্ডেন নার্সারি অ্যান্ড অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. হযরত আলী।

রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য উৎপাদন শ্রেণিতে ২ জন
বৃক্ষরোপণ ও বনসাই নার্সারির জন্য গাজীপুর সদর উপজেলার লিভিং আর্ট গার্ডেনের পরিচালক কে এম সবুজ ও বারোমাসি আম চাষি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মোহা. রফিকুল ইসলাম।

বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শ্রেণিতে ৩ জন
জৈবসার ও কেঁচোসার উৎপাদক নীলফামারীর ডোমার উপজেলার অন্নপূর্ণা অ্যাগ্রো সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী রাম নিবাস আগরওয়ালা, বাণিজ্যিক কৃষি খামারি হিসেবে ঢাকার নবাবগঞ্জের অমিত ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মায়া রানি বাউল ও সফল বীজ উৎপাদকারী পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা মো. আবদুল খালেক।

কৃষি মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। তার আলোকে ২০২০ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে এ সম্মাননা। ২০২০ সালে এআইপি পেয়েছিলেন ১৩ জন। খবর বাসসের।

শিবচরে কৃষকদের মাঝে বীজ-সার বিতরণ

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম
শিবচরে কৃষকদের মাঝে বীজ-সার বিতরণ
ছবি: খবরের কাগজ

মাদারীপুর জেলার শিবচরে কৃষকদের মাঝে পারিবারিক পুষ্টি বাগানের বীজ-সারসহ অন্যান্য উপকরণ বিতরণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। 

মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে শিবচর উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের তিন শ কৃষকের মাঝে এসব উপকরণ বিতরণ করা হয়।

শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিবচর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদৌস ইবনে রহিম।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙ্গিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় রবি মৌসুমে এ কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেক কৃষককে ৩ মৌসুমের ২১ ধরনের বীজ, ছয়টি ফলের চারা, একটি বীজ সংরক্ষণ পাত্র, ২০ কেজি জৈব সার, ১০ কেজি রাসায়নিক সার, নেট, ঝাঁঝরি ও সাইনবোর্ড প্রদান করা হয়।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. সাকিব খানসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা। 

রফিকুল ইসলাম/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

ঘূর্ণিঝড় রিমাল: বরিশালে কৃষিতেই ক্ষতি ৭২৫ কোটি

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ০১:৫০ পিএম
আপডেট: ৩০ মে ২০২৪, ০১:৫০ পিএম
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: বরিশালে কৃষিতেই ক্ষতি ৭২৫ কোটি
ছবি : খবরের কাগজ

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বরিশালে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে কৃষি খাতে। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় শুধু মাছের ঘের ও কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭২৫ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে ২১৭ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও ৫০৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকার ফসল নষ্ট হয়। এতে ১ লাখ ৮০ হাজার ৪৮১ কৃষক পরিবার ও ৩০ হাজার মৎস্যচাষি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মৎস্য অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীযয় উপপরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, ৬ হাজার ১৬১ হেক্টর আয়তনের ৮৬ হাজার ৯৭৬টি পুকুর, ২ হাজার ৮৯৭ হেক্টর আয়তনের ৬ হাজার ৯০৬টি ঘেরের মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। ৭ হাজার ৯২ টন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, ১৫৯ টন চিংড়ি ও ৬৯৬ লাখ পোনা মাছ রয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ২১৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া ১ হাজার ১৯টি নৌযান ও ৮৯৪টি জাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

এর মধ্যে বরিশাল জেলায় ৫৩ কোটি ১ লাখ টাকা, ঝালকাঠিতে ৯ কোটি ৪৬ লাখ, পিরোজপুরে ৬৪ কোটি ৬৩ লাখ, পটুয়াখালীতে ৩৪ কোটি ৫ লাখ, ভোলা জেলায় ২১ কোটি ১ লাখ ও বরগুনা জেলায় ৩৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে। 

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের বরিশাল খামারবাড়ি সূত্র জানায়, বিভাগের ৬ জেলায় ১৮ হাজার ২০৯ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। যার আর্থিক পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০৮ কোটি ৯৭ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪ হাজার ৬২০ হেক্টর জমির আউশ ধান, ২ হাজার ১৭১ হেক্টর বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১ হাজার ৪৯১ হেক্টর জমির পান, ৫৪৫ হেক্টর জমির কলা, ৩৮০ হেক্টর জমির পেঁপে ও ৪৮২ হেক্টরের জমির বিভিন্ন জাতের ফল নষ্ট হয়েছে। 

এর মধ্যে বরিশাল জেলায় ১১০ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা, পিরোজপুরে ৮৮ কোটি ২১ লাখ ৩৭ হাজার, ঝালকাঠি ৭০ কোটি ৭৯ লাখ ৬৫ হাজার, বরগুনায় ১৭ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার ও ভোলায় ৪৮ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এতে ১ লাখ ৮০ হাজার ৪৮১টি কৃষক ও কমপক্ষে ১০ হাজার মৎস্যচাষি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা এলাকার বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘৯০ জন সদস্য নিয়ে প্রায় চার একর জমির ওপরে মাছের ঘের করেছিলাম। চলতি মাসে ঘেরে প্রায় ২ কোটি টাকার পোনা ছেড়েছি। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঘেরের সব মাছ পানিতে ভেসে গেছে।’

কৃষি বিশেষজ্ঞ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক মুজিবুল হক মিয়া বলেন, ‘রিমালের আঘাতে কৃষক ও মৎস্যচাষিদের যে ক্ষতির হয়েছে তা পুষিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে।’

ফলন ভালো, তারপরও মজুতে ঘাটতি

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৪, ১২:৩০ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৪, ১২:৩০ পিএম
ফলন ভালো, তারপরও মজুতে ঘাটতি

দেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধানের ফলন ধারাবাহিকভাবে ভালো হলেও সরকার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। এর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যথাক্রমে সরকারের পরিকল্পনায় ঘাটতি, অপর্যাপ্ত ধান-চাল সংগ্রহ, সাইলো বা গুদামের সংকট এবং বাজারজাতকরণে ব্যবসায়ী-মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটের প্রভাব। এ ছাড়াও খরা ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা তৈরির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন অর্থনীতিবদরা। 

একটি দেশের সব নাগরিক নিজ নিজ সাধ্যের মধ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণকারী খাদ্যগ্রহণ করতে পারাকেই খাদ্য নিরাপত্তা বলা হয়। এ নিরাপত্তা তখনই নিশ্চিত হয় যখন সংশ্লিষ্ট দেশটির জনসংখ্যার চাহিদা অনুপাতে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্যের মজুত বা স্টক থাকে।

ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত সাম্প্রতিক এক আলোচনায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)র সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, আমাদের দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে। প্রধান কারণটি হলো অপর্যাপ্ত খাদ্য মজুত। এর ফলে বাজারে সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন তৈরি করে আর্থিক ফায়দা লুটতে সুযোগ নেয় ব্যবসায়ী ও মধ্যস্বত্বভোগীর সিন্ডিকেট। এর প্রভাবে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয় এবং দাম বেড়ে যায়। এতে করে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টিসম্মত খাদ্যগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণ তো রয়েছেই।

ড. দেবপ্রিয় আরও বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সরকারকে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য কিনে মজুত করতে হবে। এর বিকল্প নেই। আমি মনে করি, ধারাবাহিকভাবে লক্ষ্যমাত্রার বেশি ধানের ফলন একটি শক্তি। এ শক্তির যথাযথ ব্যবহার করলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। সরকার এবারের বোরো ফসল থেকে কমপক্ষে ২০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য সংগ্রহ করলে সারা বছর বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের (২০২৩-২৪ অর্থবছরে) বোরো আবাদের ফলন ২ কোটি ২২ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে। যা আগের বছর (২০২২-২৩ অর্থবছরে) ছিল ২ কোটি ১৫ লাখ মেট্রিক টন। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী খবরের কাগজকে বলেন, ধারাবাহিকভাবে বোরো আবাদের জমির পরিমাণ বছর বছর বাড়ছে।

গত অর্থবছরে ৪৮ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে আবাদি জমির পরিমাণ বেড়ে হয় ৫০ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর। 

এদিকে, খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (সংগ্রহ-চলতি দায়িত্ব) মো. মনিরুজ্জামান খবরের কাগজকে জানান, গত ২১ এপ্রিল খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার বোরো ধানের ফলন থেকে ১৭ লাখ টন ধান ও চাল কিনবে সরকার। এর মধ্যে ৫ লাখ টন ধান, ১১ লাখ টন সেদ্ধ চাল ও ১ লাখ টন আতপ চাল রয়েছে। এ ছাড়াও ৫০ হাজার টন গম সংগ্রহ করা হবে।

তিনি জানান, আগের বছর মোট সাড়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন ধান ও চাল সংগ্রহ করা হয়েছিল। সরকার তার সংগ্রহ করা খাদ্যশস্যের মজুত থেকে সবচেয়ে বেশি বিতরণ করে বিভিন্ন বাহিনীর মাসিক রেশনের চাল ও আটা। এ ছাড়া যেসব কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের জন্য খাদ্যশস্য বিতরণ করে সেগুলো হলো টেস্ট রিলিফ (টিআর), গ্র্যান্ট রিলিফ (জিআর), কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) এবং ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক কার্ডের বিপরীতে স্বল্পমূল্যে বিক্রি।

দেশে উৎপাদিত খাদ্যশস্যের তুলনায় সরকারের সংগ্রহের পরিমাণকে অপর্যাপ্ত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদগণ। খাদ্যশস্য সংগ্রহের এ স্বল্প পরিমাণের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় গুদাম বা সাইলোর অভাব। এদিকে, দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক গুদাম অব্যবহৃত বা পরিত্যক্ত করে রাখার অভিযোগও রয়েছে। 

খাদ্য অধিদপ্তরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ২০১৪ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে খাদ্য গুদাম নির্মাণ, পুরোনো ও জরাজীর্ণ হয়ে পড়া গুদাম সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। 

তিনি জানান, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাওরাঞ্চল, চর ও বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলোতে ৪ লাখ পরিবারকে পারিবারিক খাদ্যশস্য মজুতের জন্য ফুড গ্রেডেড প্লাস্টিকের তৈরি পাত্র বিতরণ করা হয়েছে। এটিকে ‍‍‍‘পারিবারিক সাইলো’ নাম দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে আপৎকালীন এক মাসের খাদ্যশস্য সংগ্রহ করে রাখা সম্ভব হবে। 

সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটির পরিচালক রেজাউল করিম শেখ খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এর উদ্দেশ্য হলো, বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘরবাড়ি ভেঙে বা বন্যায় ভেসে গেলেও ওই পাত্রটি বা প্লাস্টিকের সাইলোতে সংরক্ষিত খাদ্যশস্যের মান খাবার উপযোগী থাকবে। খাদ্যগুণ নষ্ট হবে না। এটিও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এক ধরনের প্রচেষ্টা। 

এ ছাড়াও সরকার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ও আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ আধুনিক ধানের সাইলো নির্মাণ করছে। প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত সচিব শহীদুল আলম এনডিসি জানান, ২০২১ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ২৪ জেলার মোট ২৯ উপজেলায় ৩০টি সাইলো নির্মাণাধীন রয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। 

কর্মকর্তারা জানান, সরকার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে গুদাম বা সংগ্রহশালার সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কাজ করছে। এসব অবকাঠামো নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হলে সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্য সংগ্রহের পরিমাণও বাড়বে।

এদিকে সরকার সেচের আওতা বৃদ্ধি, ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ ও কৃষি ঋণের প্রসারের মাধ্যমে প্রতি বছর খাদ্য শস্য উৎপাদনে আবাদি জমির পরিমাণ বাড়াতে চেষ্টা করছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট আবাদি জমির পরিমাণ রয়েছে ৮৮ লাখ ২৯ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে বিদ্যমান সেচ ব্যবস্থার আওতায় আছে ৭৮ লাখ ৭৯ হাজার হেক্টর জমি। বোরো আবাদে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ হেক্টর জমি ব্যবহৃত হয়। অবশিষ্ট জমি এখনো এক বা দুই ফসলি।