
আগুনে লাল গায়ের রং, বাঁকা ও পুরু ঠোঁট, সরু গলা, অস্বাভাবিক লম্বা পা- দারুণ আকর্ষণীয় এই পাখিটির নাম ফ্লেমিঙ্গো। ক্যারিবিয়ান থেকে দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের মিঠা বা নোনাপানিতে বাস করে ওরা। ক্রান্তীয় অঞ্চলের উষ্ণ পরিবেশ বসবাসের জন্য প্রথম পছন্দ ফ্লেমিঙ্গোর।
গোলাপি পালকের জন্য ফ্লেমিঙ্গো বিখ্যাত হলেও সব সময় পালক কিন্তু গোলাপি হয় না! সাদা, কমলা বা লালও হতে পারে। একটি ফ্লেমিঙ্গো কী খাবার খাচ্ছে এবং সেই খাবারে কোন পিগমেন্ট বেশি- তার ওপর নির্ভর করে পালকের রং কেমন হবে। বাচ্চা ফ্লেমিঙ্গো গোলাপি রং নিয়ে জন্মায় না। দুই-তিন বছর লেগে যায় খেয়েদেয়ে এদের গোলাপি হতে।
সাধারণত ফ্লেমিঙ্গোর নিয়মিত খাদ্যতালিকায় থাকে শৈবাল আর চিংড়ি। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন থাকে। এই বিপুল পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন তাদের শরীরকে লাল বা গোলাপি বানিয়ে দেয়। বিটা ক্যারোটিনের জন্যই টমেটো লাল আর গাজর কমলা হয়!
ফ্লেমিঙ্গো যদি বিটা ক্যারোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেয়, তাহলে এদের গোলাপি পালকগুলো ঝরে যায়। নতুন গোলাপি পালক আর তৈরি হয় না। তখন এদের শরীর সাদা বা ধূসর দেখায়।
একটি প্রাপ্তবয়স্ক ফ্লেমিঙ্গো তিন থেকে চার ফুট উঁচু হয়। ওজন হয় ৯ পাউন্ড। গ্রেটার ফ্লেমিঙ্গো সবচেয়ে লম্বা হয়, প্রায় পাঁচ ফুট। আর লেসার ফ্লেমিঙ্গো সবচেয়ে ছোট আকারের, তিন ফুটের মতো।
ফ্লেমিঙ্গোকে সব সময় এক পায়ের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এরা ঘুমায়ও এভাবে! শরীরের তাপমাত্রা বাঁচাতে যখন এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, তার আরেকটি পা তখন থাকে পালকাচ্ছাদিত শরীরের উষ্ণতায়। মাঝে মাঝে পা বদল করে দাঁড়ায় সে। ফ্লেমিঙ্গোর পায়ের ওপরের দিকে হাঁটু থাকে, একটু বাঁকানো কালো জায়গা। এরা সাঁতরাতে, দৌড়াতে ও উড়তে পারে।