নিউরালিংকের মতো ডিভাইস তৈরি করল চীনের প্রতিষ্ঠান । খবরের কাগজ
ঢাকা ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

নিউরালিংকের মতো ডিভাইস তৈরি করল চীনের প্রতিষ্ঠান

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪০ পিএম
নিউরালিংকের মতো ডিভাইস তৈরি করল চীনের প্রতিষ্ঠান
ছবি : সংগৃহীত

চীনের একটি কোম্পানি ইলন মাস্কের ব্রেইন চিপ নির্মাতা কোম্পানি নিউরালিংকের মতোই ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) তৈরির কাজ শুরু করেছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে বেইজিং সিংহুয়া নিউরোটেকনোলজি নামের কোম্পানিটি বানরের মাথায় তাদের বিসিআই ডিভাইস স্থাপনে সফল হয়েছে।

চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের তৈরি বিসিআই ডিভাইসের মাধ্যমে রোবোটিক হাত নিয়ন্ত্রণ করতেও সক্ষম হয়েছে বানরটি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই প্রযুক্তিটির উন্নয়ন বেইজিং সিংহুয়া নিউরোটেকনোলজি স্বাধীনভাবে করেছে এবং এটি বেশ উচ্চ-কর্মক্ষমতা সম্পন্ন।

তবে নিউরালিংকের সাফল্য স্পর্শ করতে হলে এখনো বেইজিং সিংহুয়া নিউরোটেকনোলজি কোম্পানিকে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হবে।

নিউরালিংক কোম্পানি বানর ও শূকরের মাথায় সফল স্থাপনের পর চলতি বছর মানুষের মস্তিষ্কেও নিউরালিংক ডিভাইস স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি দশকেই বাণিজ্যিকভাবে বিসিআই ডিভাইস উৎপাদনের আশা করছে নিউরালিংক।

বিসিআই কী?
ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) বা ব্রেইন মেশিন ইন্টারফেস (বিএমআই) হলো এমন প্রযুক্তি যা সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জৈব সংকেতকে কম্পিউটারের পাঠযোগ্য ভাষায় রূপান্তরের প্রযুক্তি। বিশ্বের বেশ কয়েকটি কোম্পানি এই ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে ইলন মাস্কের নিউরালিংক কোম্পানিকে এই প্রযুক্তিতে সবচেয়ে অগ্রসর হিসেবে ধরা হয়।

জিন থেরাপি চিকিৎসায় কানে শুনল জন্মবধির শিশু

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৪, ১০:৫৪ এএম
জিন থেরাপি চিকিৎসায় কানে শুনল জন্মবধির শিশু

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো এক বধির শিশু জিন থেরাপির মাধ্যমে শুনতে সক্ষম হয়েছে। বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটিই বলা হয়েছে। ওপাল স্যান্ডি নামের শিশুটি জিনগত উত্তরাধিকার সূত্রে বধির হয়ে জন্ম নিয়েছিল। পরে জিন থেরাপির মাধ্যমে তার কানের ত্রুটিপূর্ণ ডিএনএ প্রতিস্থাপন করা হয়। তার মা জো ও বাবা জেমস ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ার থেকে বলেছেন, চিকিৎসার ফলাফল তাদের মন ছুঁয়ে গেছে।

এই থেরাপিতে রোগীর জিনোম কাঠামো পরিবর্তনের জন্য একটি কার্যকরী অনুলিপি সরবরাহ করা হয়। আর এই অনুলিপিটি পাঠানো হয় নিরীহ ও মানবদেহে প্রভাব বিস্তার করতে অক্ষম ভাইরাসের মাধ্যমে।

ওপাল তার ডান কানে এই থেরাপি পেয়েছে। আর এর কয়েক সপ্তাহ পরেই সে ডান কানে স্বাভাবিক মানুষের মতোই উচ্চমাত্রার শব্দ শোনা শুরু করে। আর ছয় সপ্তাহের মধ্যে কেমব্রিজের অ্যাডেনব্রুক হাসপাতালের ডাক্তাররা নিশ্চিত করেছেন যে, সে এখন খুব নরম ও ফিসফিস হওয়া শব্দও শুনতে পাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও স্পেন থেকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অংশ হিসেবে ওপালকে জিন থেরাপির চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে তার চিকিৎসা করাতে রাজি হওয়াটা খুব কঠিন একটা সিদ্ধান্ত ছিল বলেও জানিয়েছেন ওপালের বাবা-মা। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জো বলেন, ‘এটি সত্যিই ভীতিকর ছিল। তবে একই সঙ্গে আমি ভাবছিলাম, আমাদের জন্য এটি অনন্য সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’

ওপালের বড় বোন পাঁচ বছর বয়সী নোরার একই ধরনের বধিরতা রয়েছে। তবে ইলেক্ট্রিক কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্টের মাধ্যমে সে এখন কথা শুনতে পায়। তবে শ্রবণযন্ত্রের মতো উচ্চমাত্রার শব্দ শোনার পরিবর্তে সে শুধু শব্দের সংবেদনশীলতা গ্রহণ করতে পারে। সূত্র: বিবিসি

মঙ্গল গ্রহে যাত্রার প্রস্তুতি ৪৫ দিনের কৃত্রিম অভিযানে নাসার নতুন দল

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৪, ০২:২৮ পিএম
৪৫ দিনের কৃত্রিম অভিযানে নাসার নতুন দল
'মার্স ডুন আলফা' ধারণাগত মঙ্গল গ্রহের ভিজ্যুয়ালাইজেশন

চলতি মাসেই মঙ্গল গ্রহে কৃত্রিম অভিযানে যাত্রা করবে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার নির্বাচিত চার সদস্যের একটি দল। আসলে মঙ্গল গ্রহে না গিয়ে পৃথিবীতেই এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ৪৫ দিনব্যাপী এই অভিযানের মাধ্যমে মঙ্গলে কাজ ও বসবাসের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে এই স্বেচ্ছাসেবক দল।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের হিউস্টনে অবস্থিত নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে (জেএসসি) নির্মিত হয়েছে একটি বিশেষ আবাসস্থল। যেখানে এই কৃত্রিম মঙ্গল অভিযান পরিচালিত হবে। এই আবাসস্থল মঙ্গল গ্রহের পরিবেশের অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে। এখানে কাজ ও বসবাসের ক্ষেত্রে মহাকাশচারীদের সম্ভাব্য অবস্থার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরবে। নির্বাচিত দলটির সদস্যরা হলেন- জেসন লি, স্টেফানি নাভারো, শরিফ আল রোমাইথি ও পিজুমি উইজেসেকরা। আজ ১০ মে থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত তারা নাসার হিউম্যান এক্সপ্লোরেশন রিসার্চ অ্যানালগ (এচইআরএ) নামের এই কৃত্রিম আবাসস্থলে অবস্থান করবেন। এ ছাড়া এই অভিযানের জন্য দুজন বিকল্প সদস্যকেও বাছাই করা হয়েছে। তাদের নাম হলো- জোস বাকা ও ব্র্যান্ডন কেন্ট।

এই মিশন নাসার হিউম্যান রিসার্চ প্রোগ্রামের (এএইচআরপি) অংশ। এই প্রোগ্রামে মহাকাশ ভ্রমণে মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করার সর্বোত্তম উপায় নিয়ে গবেষণা করে। এই চার সদস্যের অভিযান বিজ্ঞানীদের মানুষের শরীরের ওপর বিচ্ছিন্নতা, আবদ্ধ থাকা এবং দূরবর্তী পরিবেশের প্রভাব সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে। ফলে ভবিষ্যতে মহাকাশ অভিযানের পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত মূল্যবান তথ্য দেবে।

নাসা জানিয়েছে, যে জায়গাটি তৈরি করা হয়েছে তার নাম ‘মার্স ডুন আলফা’। মঙ্গল গ্রহের ধারণাগত ভিজ্যুয়ালাইজেশন হচ্ছে মার্স ডুন আলফা। যেখানে রয়েছে থ্রি-ডি-প্রিন্টেড থাকার জায়গা। প্রত্যেকের জন্য রয়েছে আলাদা ঘর ও রান্নাঘর। এ ছাড়া ছোট আকারের হাসপাতাল, খেলাধুলার জায়গা, শরীর চর্চার জন্য জিম, বাথরুম সবই আছে। সেখানে ফসল ফলানোর জায়গাও আছে। এমন ব্যবস্থাও থাকছে, কখনো যদি কোনো যন্ত্র বিকল হয় বা আবহাওয়াজনিত কারণে যদি কোনো বিপদে পড়তে হয়, তাহলে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাদের কী কী করতে হবে।

দেড় মাসের এই অভিযানে ক্রু সদস্যরা কেবলমাত্র গবেষণা চালানো ও বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করবেন না। তারা ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সাহায্যে মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে হাঁটার অভিজ্ঞতাও লাভ করবেন এবং মিশন কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। যেখানে মঙ্গল ও পৃথিবীর মধ্যে বার্তা আদান-প্রদানে প্রায় পাঁচ মিনিট সময় লাগবে, অর্থাৎ মঙ্গল থেকে কোনো বার্তা পাঠালে পৃথিবীতে সাড়ে পাঁচ মিনিট পরে পৌঁছায়। তেমনি পৃথিবী থেকে কোনো বার্তা পাঠালে মঙ্গলে সাড়ে পাঁচ মিনিট পরে পৌঁছায়। সেই পরিস্থিতিও এই অভিযানে অনুকরণ করা হবে।

তবে মঙ্গল থেকে পৃথিবীতে বার্তা পাঠানোর সময় নির্ভর করে দুটি গ্রহের মধ্যবর্তী দূরত্ব এবং বার্তা পাঠানোর পদ্ধতির ওপর। নাসা ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক (ডিএসএন) নামের বিশেষ অ্যান্টেনা ও যোগাযোগ সরঞ্জামের একটি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে মঙ্গলের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে পৃথিবী থেকে মঙ্গলে বার্তা পাঠাতে কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এই সময়গুলো কেবলমাত্র অনুমান। বাস্তব সময় বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থা, যন্ত্রপাতির ত্রুটি ও অন্য কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। ২০২৩ সালের ২ আগস্ট নাসার পারসিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল থেকে পৃথিবীতে একটি ছবি পাঠিয়েছে। রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে ছবিটি পৃথিবীতে পৌঁছাতে প্রায় ১৪ মিনিট সময় লেগেছে।

এইচআরপির মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্য নিয়েও গবেষণা চালানো হবে। এই গবেষণাগুলোয় প্রতিটি ক্রু সদস্যের শারীরিক, মানসিক ও আচরণগত প্রতিক্রিয়ার ওপর নজর থাকবে। এই গবেষণা মহাম্মদ বিন রাশিদ স্পেস সেন্টার (এমবিআরএসসি) ও ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ইসা)-এর সহযোগিতায় চলমান গবেষণাকে সহায়তা করবে। এটি মঙ্গলে প্রকৃত অভিযানের সময় মহাকাশচারীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য কেমন হবে, সে সম্পর্কে ধারণা দেবে। এই ধরনের কৃত্রিম অভিযানের মাধ্যমে গবেষকরা মহাকাশ অভিযানে মানুষ সামনে আসবে এমন সম্ভাব্য বাধাগুলো দূর করার উপায় আগে থেকে জানতে পারবেন।

এইচইআরএ মিশনটি মাত্র ৪৫ দিনের হলেও, নাসার আরও একটি চলমান গবেষণা প্রকল্প রয়েছে যার নাম ক্রু হেলথ অ্যান্ড পারফরম্যান্স এক্সপ্লোরেশন এনালগ (সিএইচপিইএ)। এই গবেষণায় মঙ্গলে পুরো এক বছর কাটানোর অভিজ্ঞতা কেমন হবে, সেটা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। সিএইচপিইএ মিশনের জন্য আলাদা একটি আবাসস্থল ব্যবহৃত হয়, যা এটিচইআরএ মিশনের আবাসস্থল থেকে আলাদা হলেও জনসন স্পেস সেন্টারেই অবস্থিত।

কৃত্রিম অভিযানে নাসার দলের সদস্যদের পরিচিতি


ইউনিভার্সিটি অব কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেকানিক্যাল, এয়ারোস্পেস এবং ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহযোগী অধ্যাপক জেসন লি এবার যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা ক্ষেত্রে নতুন নাম হয়ে উঠছেন। তিনি কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ের থার্মাল ফ্লুইড, ম্যানুফ্যাকচারিং এবং স্পোর্টস ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে শিক্ষাদান করছেন। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক প্রোগ্রামের পরিচালক এবং নাসার কানেকটিকাট স্পেস গ্রান্ট কনসোর্টিয়ামের ক্যাম্পাস পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এই দলটিতে আরও রয়েছেন মার্কিন বিমান বাহিনীর রিজার্ভের স্পেস অপারেশন্স অফিসার স্টেফানি নাভারো। মধ্যপাচ্যে নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনে সহায়তা করার জন্য অপারেশন ফ্রিডম সেন্টিনেল মিশনে নিয়োজিত হওয়ার আগে তিনি এয়ার ন্যাশনাল গার্ডে ১০ বছরেরও বেশি সময় কাজ করেছেন। তিনি তার বেসামরিক ক্যারিয়ার শুরু করেন মার্কিন সেনাবাহিনীর জন্য একজন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে। আমরিকার হাওয়াইয়ের তথ্য কেন্দ্রের আধুনিকীকরণ প্রকল্পে সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি নর্থরপ গ্রুম্যানে স্যাটেলাইট যোগাযোগ প্রোগ্রামে সিনিয়র সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছেন।

দলে আছেন শরীফ আল রোমাইথি, যিনি বিমান সংস্থায় চালক হিসেবে ১৬ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। তিনি একাধিক এয়ারবাস ও বোয়িং বিমানে ৯ হাজার ঘণ্টার বেশি সময় উড্ডয়ন করেছেন। বর্তমানে তিনি বোয়িং ৭৭৭ এবং ৭৮৭ বিমানের ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যা বিমান চালনা ক্ষেত্রে তার দক্ষতা এবং নেতৃত্বের স্বাক্ষর দেয়।

এ ছাড়া দলে রয়েছেন পিয়ুমি উইজেসেকারা, যিনি ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিতে অবস্থিত নাসা এমস রিসার্চ সেন্টারের রেডিয়েশন বায়োফিজিক্স ল্যাবরেটরিতে পোস্টডক্টরাল রিসার্চ সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। তার গবেষণা মহাকাশযান চলাকালীন আয়নাইজিং বিকিরণ ও চাঁদের ধূলিকণাসহ মহাকাশের চাপের প্রভাব মানব শ্বাসযন্ত্রের ওপর কীভাবে পড়ে, তা জানার জন্য টিস্যুর মডেল তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

জোস বাকা টেক্সাস এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। গবেষণার ক্ষেত্রে তিনি মডিউলার সিস্টেম ডিজাইন, ড্রোনসহ চালকবিহীন যানবাহনের কার্যকারিতা উন্নতকরণ ও জটিল পরিবেশে মাল্টি-রোবট দলের সমন্বয় সাধনের ওপর কাজ করেছেন।

ব্র্যান্ডন কেন্ট মেডিকেল পরিচালক হিসেবে ঔষধ শিল্পে কাজ করছেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের চিকিৎসায় নতুন থেরাপি উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী চলমান প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।

জাহ্নবী

 

মৃত্যুর আগেই ফিরে আসে স্মৃতি

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০২:৩২ পিএম
মৃত্যুর আগেই ফিরে আসে স্মৃতি
ছবি: সংগৃহীত

ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া রোগের সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণা বলছে, মৃত্যুর কিছুদিন আগে এই রোগে আক্রান্ত অনেকেই তাদের স্মৃতিশক্তি ফিরে পান। সায়েন্স অ্যালার্টে গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।

যখন ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্মৃতিশক্তি ফিরে পান- সে পরিস্থিতিকে চিকিৎসকরা বলেন ‘লুসিডিটি’। এ সময় রোগীরা তাদের প্রিয়জনের কথা মনে করতে পারেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাছের মানুষের সঙ্গে তারা রসিকতাও করেন এবং অর্থপূর্ণ আলাপেও অংশ নেন। যেসব স্মৃতি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছিল বলে মনে করা হয়- সেগুলোও ফিরে আসতে থাকে।

কিন্তু চিকিৎসা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, লুসিডিটি দেখা দিলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪৩ শতাংশ রোগীর মৃত্যু হয় এবং ৮৪ শতাংশ রোগী মারা যায় এক সপ্তাহের মধ্যে। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম ঘটে। এমনও আছে যে লুসিডিটির ছয় মাস পরেও রোগী দিব্যি বেঁচে আছেন।

তবে কেন লুসিডিটি ঘটলেই মৃত্যু ঘনিয়ে আসে- এর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি। কারণ ডিমেনশিয়াতে মস্তিষ্কের নিউরনের যে ক্ষয় হয়, তা পূরণ হওয়া আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব একটি ঘটনা। তাই হঠাৎ হারানো স্মৃতি ফিরে আসার ঘটনাটিকে প্যারাডক্স হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

এরপরেও লুসিডিটিকে যারা কাছ থেকে দেখতে পান, তাদের জন্য এটি নিঃসন্দেহ চমৎকার এবং মূল্যবান একটি অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও তারা রোগাক্রান্ত হওয়ার আগের ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে হলেও ফিরে পান এবং চিরচেনা মানুষকে চূড়ান্ত বিদায় দেওয়ার সুযোগও পেয়ে যান।

ডিমেনশিয়া একটি নিউরোডিজেনারেটিভ একটি রোগ। অর্থাৎ এই রোগে মস্তিষ্কের নিউরনগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি পুরোনো স্মৃতি ক্রমেই ভুলে যেতে থাকে এবং এক সময় সাধারণ কাজকর্ম করার সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে। শিশুর মতো নতুন এক অস্তিত্বে পরিণত হয়। পুরোনো ব্যক্তিসত্ত্বাকে হারিয়ে ফেলার কারণে এই রোগকে ‘দীর্ঘ বিদায়’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। কারণ এই রোগ একবার হলে সাধারণভাবে পুনরুদ্ধারযোগ্য নয় বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে।

সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

মহাকাশে বোয়িংয়ের প্রথম ক্যাপসুল

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ০২:৩১ পিএম
মহাকাশে বোয়িংয়ের প্রথম ক্যাপসুল
ছবি : সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি এভিয়েশন কোম্পানি বোয়িং তাদের প্রথম মনুষ্যবাহী ক্যাপসুল পাঠানোর মিশন শুরু করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এরই মধ্যে ক্যাপসুলবাহী রকেট কক্ষপথের উদ্দেশে পাড়ি দেওয়ার কথা।

স্টারলাইনার নামের সেই ক্যাপসুলটি আগেই নাসার থেকে মনুষ্য মিশন পরিচালনা করার জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।

প্রথম মিশনে স্টারলাইনারে চড়ে আইএসএসে যাচ্ছেন মহাকাশচারী বুচ উইলমোর ও সুনীতা উইলিয়ামস।

সোমবার (৬ মে) স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩৪ মিনিটে নাসার কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস সেন্টার থেকে অ্যাটলাস ভি রকেটে করে যাত্রা শুরু করার কথা তাদের। এই রকেটটি আবার যৌথভাবে তৈরি করেছে ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্স ও বোয়িং-লকহিড মার্টিন।

দুই নভোচারীর মধ্যে সুনীতা উইলিয়ামস এর আগেও আইএসএসে দুই দফা মিশনে ছিলেন। সব মিলিয়ে তিনি সেখানে কাটিয়েছেন ৩২২ দিন। এমনকি সাতবারে ৫০ ঘণ্টারও বেশি স্পেসওয়াক করেছেন তিনি। স্টারলাইনারে চড়ে আইএসএসে আবার যাওয়া নিয়ে সুনীতা বলেন, ‘আমি যখন মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছাব, আমার মনে হবে আমি নিজের বাড়িতে ফিরে এলাম।’

তবে বোয়িংয়ের আগে আইএসএসে প্রথম বেসরকারি কোম্পানি হিসেবে ক্যাপসুল পাঠিয়েছিল ইলন মাস্কের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেসএস। তাদের ‘ক্রু ড্রাগন’ ক্যাপসুল এখন পর্যন্ত মহাকাশে বহু মনুষ্যবাহী ও কার্গো মিশন পরিচালনা করেছে। সূত্র: নাসা

রকেট উৎক্ষেপণে কেন দরকার ৩০ লাখ লিটার পানি

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ০১:২৭ পিএম
রকেট উৎক্ষেপণে কেন দরকার ৩০ লাখ লিটার পানি

রকেট উৎক্ষেপণ একটি আকর্ষণীয় ও রোমাঞ্চকর ঘটনা। রকেট উৎক্ষেপণের সময় আগুনের শিখা ও ধোঁয়া সবার নজর কাড়ে। তবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রচুর পরিমাণে পানিও ব্যবহার করা হয়, যা অনেকের নজর এড়িয়ে যায়। জেনে হয়তো অবাক হবেন, এই প্রক্রিয়ায় প্রায় ৩০ লাখ লিটার পানি ব্যবহৃত হয়।

এমনই একটি ভিডিও শেয়ার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। শুধু নাসায় নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণা স্টেশনে রকেট উৎক্ষেপণের সময় প্রচুর পরিমাণে পানি ব্যবহার করে থাকে।

পানি ব্যবহার করা হয় কেন?
নাসা তার ইউটিউব চ্যানেলে কেনেডি স্পেস সেন্টারের একটি ভিডিও শেয়ার করেছে। এই ভিডিওতে লঞ্চপ্যাড ওয়াটার ডিলিউজ সিস্টেম পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার সময় প্রায় ৩০ লাখ লিটার পানি ব্যবহার করা হয়েছে।

রকেট উৎক্ষেপণের সময় বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের দল প্রস্তুত থাকে। উৎক্ষেপণের সময় রকেটের চারপাশে পানির প্রবল ঝরনা শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই রকেটের চারপাশে ৩০ লাখ লিটার পানির বিশাল ঝরনা তৈরি হয়। রকেটের সফল উৎক্ষেপণের জন্য এই পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আসলে রকেটটি যখন লঞ্চপ্যাড ছেড়ে যায়, তখন প্রচুর শব্দ হয়। একটি এসএলএস রকেট ১৭৬ ডেসিবেল শব্দ তৈরি করতে পারে। এটি জেটলাইনারের চেয়ে বেশি শব্দ তৈরি করে। একসঙ্গে লক্ষাধিক লিটার পানি ঝরলে রকেটের আওয়াজের সমানই হয়। এভাবে প্রচুর পরিমাণে পানি ঝরিয়ে রকেটের শব্দ অনেকাংশে কমিয়ে দেওয়া হয়।

এই পানি শুধু রকেটের আওয়াজই কমায় না, আগুন ও ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। রকেট ছেড়ে দিলে প্রচুর আগুন ও ধোঁয়া বের হয়, যা মোবাইল লঞ্চারের ক্ষতি করতে পারে। পানি ঝরিয়ে এই আগুন ও ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে রাখা হয় এবং মোবাইল লঞ্চারকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করা হয়। রকেট উৎক্ষেপণের সময় প্রচণ্ড কম্পন তৈরি হয়। পানি ঝরিয়ে এই কম্পন নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।

রকেট উৎক্ষেপণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। রকেটের সফল উৎক্ষেপণের জন্য শব্দ, আগুন, ধোঁয়া ও কম্পন নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কাজগুলোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে প্রচুর পরিমাণে পানি।

এ.জে/জাহ্নবী