প্লুটোয় হার্ট বা হৃৎপিণ্ডের আকৃতি কোথা থেকে এল? । খবরের কাগজ
ঢাকা ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

প্লুটোয় হার্ট বা হৃৎপিণ্ডের আকৃতি কোথা থেকে এল?

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩১ পিএম
প্লুটোয় হার্ট বা হৃৎপিণ্ডের আকৃতি কোথা থেকে এল?

নাসার মহাকাশ যান নিউ হরাইজনস বামন গ্রহ প্লুটোর পাশ দিয়ে ২০১৫ সালে উড়ে যায়। এ সময় মহাকাশ যানটি বামন গ্রহ প্লুটোর একটি বিস্ময়কর ছবি তুলে পাঠায়। ওই ছবিতে গ্রহটির পৃষ্ঠে হার্ট বা হৃৎপিণ্ড আকৃতির একটি ভৌগলিক গঠন পরিলক্ষিত হয়, যা গ্রহের বিশাল নিম্ন অঞ্চল। এটির নাম স্পুটনিক প্ল্যানিটিয়া। মেক্সিকোর আকারের এই অঞ্চল প্লুটোর একটি গোলার্ধজুড়ে বিস্তৃত। স্পুটনিক প্ল্যানিটিয়া সম্ভবত কোনো ধাক্কার ফলে তৈরি হয়েছে। এই আবিষ্কার নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি হয় মানুষ ও বিজ্ঞানীদের মাঝে। গবেষকরা মনে করেন, তারা এই মহাজাগতিক ভালোবাসার চিহ্নের উৎপত্তি উদ্ঘাটন করেছেন। চলতি মাসের ১৫ তারিখে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ন্যাচার অ্যাস্ট্রোনমিতে এ সম্পর্কিত গবেষণা দলের অনুসন্ধানটি প্রকাশ পেয়েছে।

‘টমবাঘ রেজিও’ নামে পরিচিত এ চিহ্নটি আংশিকভাবে ‘স্পুটনিক প্ল্যানিটিয়া’ নামের অঞ্চল নিয়ে গঠিত, যা দেখতে একটি বিশালাকার পানির ফোটার মতো। আর এর আকার ইউরোপ বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় এক চতুর্থাংশের সমান।

প্লুটোতে এ অনন্য ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য কীভাবে তৈরি হলো? সে বিষয়টি জানতে সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব বার্ন ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার গবেষকরা উন্নত কম্পিউটার সিমুলেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন।

এর আগে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের সমান কোনো বস্তুর সঙ্গে সংঘর্ষে স্পুটনিক প্ল্যানিটিয়া অঞ্চলটি তৈরি হয়েছে। এ ঘটনা প্লুটোর আদিকালে ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়। যার সঙ্গে এর বর্তমান রূপেও অনেক সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

ওই ঘটনা কোনো সোজা সংঘর্ষ নয় বরং আঁচড় কেটে যাওয়ার মতো আঘাত থেকে এসেছে। এর থেকে ধারণা পাওয়া যায়, কেন স্পুটনিক প্ল্যানিটিয়ার দীর্ঘ আকৃতি ও এটি বিষুবরেখা বরাবর আছে। বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ প্রতিবেদনে লিখেছে, যে বস্তুটি প্লুটোকে আঘাত করেছিল তা কোণ ঘেঁষে ও তুলনামূলক ধীরে, যা প্লুটোকে খুব গভীরে আঘাত না করে বা এর বরফের ভূত্বক না গলিয়ে, প্লুটোর সঙ্গে একেবারে মিশে গিয়েছে।

অনুসন্ধানটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি প্লুটোর ভেতরের অবস্থা নিয়ে আগের বিভিন্ন প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। এতদিন বিজ্ঞানীদের প্রচলিত ধারণা ছিল, প্লুটোর বরফ থাকা পৃষ্ঠের নিচে মহাসাগর লুকিয়ে থাকতে পারে। ঠিক যেমনটি ধারণা করা হয় দূরের বিভিন্ন মহাকাশীয় বস্তুর ক্ষেত্রে।

নতুন এ গবেষণায় আরও ধারণা পাওয়া যায়, প্লুটোতে যদি আসলেই মহাসাগর থেকে থাকে, তবে এই সাগরের আকার অনেক ছোট বা এর অস্তিত্ব না থাকার মতোই। গ্রহটির সিংহভাগ পৃষ্ঠ মিথেন বরফে আবৃত হলেও স্পুটনিক প্লানিটিয়া মূলত ঢেকে আছে নাইট্রোজেন বরফে। এলাকাটির উচ্চতাও এর আশপাশের এলাকাগুলোর চেয়ে চার কিলোমিটার কম। যার প্রভাবে সেখানে নাইট্রোজেন বরফ জমা হতে পারে।

তবে ঠিক কী কারণে স্পুটনিক প্ল্যানিটিয়া অঞ্চলটি প্লুটোর বিভিন্ন মেরুর দিকে প্রবাহিত না হয়ে বিষুবরেখার কাছে অবস্থান করছে, তা বিজ্ঞানীদেরও ধাঁধার মধ্যে ফেলেছে।

এ.জে/জাহ্নবী

মৃত্যুর আগেই ফিরে আসে স্মৃতি

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০২:৩২ পিএম
মৃত্যুর আগেই ফিরে আসে স্মৃতি
ছবি: সংগৃহীত

ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া রোগের সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণা বলছে, মৃত্যুর কিছুদিন আগে এই রোগে আক্রান্ত অনেকেই তাদের স্মৃতিশক্তি ফিরে পান। সায়েন্স অ্যালার্টে গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।

যখন ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্মৃতিশক্তি ফিরে পান- সে পরিস্থিতিকে চিকিৎসকরা বলেন ‘লুসিডিটি’। এ সময় রোগীরা তাদের প্রিয়জনের কথা মনে করতে পারেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাছের মানুষের সঙ্গে তারা রসিকতাও করেন এবং অর্থপূর্ণ আলাপেও অংশ নেন। যেসব স্মৃতি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছিল বলে মনে করা হয়- সেগুলোও ফিরে আসতে থাকে।

কিন্তু চিকিৎসা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, লুসিডিটি দেখা দিলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪৩ শতাংশ রোগীর মৃত্যু হয় এবং ৮৪ শতাংশ রোগী মারা যায় এক সপ্তাহের মধ্যে। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম ঘটে। এমনও আছে যে লুসিডিটির ছয় মাস পরেও রোগী দিব্যি বেঁচে আছেন।

তবে কেন লুসিডিটি ঘটলেই মৃত্যু ঘনিয়ে আসে- এর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি। কারণ ডিমেনশিয়াতে মস্তিষ্কের নিউরনের যে ক্ষয় হয়, তা পূরণ হওয়া আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব একটি ঘটনা। তাই হঠাৎ হারানো স্মৃতি ফিরে আসার ঘটনাটিকে প্যারাডক্স হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

এরপরেও লুসিডিটিকে যারা কাছ থেকে দেখতে পান, তাদের জন্য এটি নিঃসন্দেহ চমৎকার এবং মূল্যবান একটি অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও তারা রোগাক্রান্ত হওয়ার আগের ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে হলেও ফিরে পান এবং চিরচেনা মানুষকে চূড়ান্ত বিদায় দেওয়ার সুযোগও পেয়ে যান।

ডিমেনশিয়া একটি নিউরোডিজেনারেটিভ একটি রোগ। অর্থাৎ এই রোগে মস্তিষ্কের নিউরনগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি পুরোনো স্মৃতি ক্রমেই ভুলে যেতে থাকে এবং এক সময় সাধারণ কাজকর্ম করার সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে। শিশুর মতো নতুন এক অস্তিত্বে পরিণত হয়। পুরোনো ব্যক্তিসত্ত্বাকে হারিয়ে ফেলার কারণে এই রোগকে ‘দীর্ঘ বিদায়’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। কারণ এই রোগ একবার হলে সাধারণভাবে পুনরুদ্ধারযোগ্য নয় বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে।

সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

মহাকাশে বোয়িংয়ের প্রথম ক্যাপসুল

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ০২:৩১ পিএম
মহাকাশে বোয়িংয়ের প্রথম ক্যাপসুল
ছবি : সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি এভিয়েশন কোম্পানি বোয়িং তাদের প্রথম মনুষ্যবাহী ক্যাপসুল পাঠানোর মিশন শুরু করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এরই মধ্যে ক্যাপসুলবাহী রকেট কক্ষপথের উদ্দেশে পাড়ি দেওয়ার কথা।

স্টারলাইনার নামের সেই ক্যাপসুলটি আগেই নাসার থেকে মনুষ্য মিশন পরিচালনা করার জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।

প্রথম মিশনে স্টারলাইনারে চড়ে আইএসএসে যাচ্ছেন মহাকাশচারী বুচ উইলমোর ও সুনীতা উইলিয়ামস।

সোমবার (৬ মে) স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩৪ মিনিটে নাসার কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস সেন্টার থেকে অ্যাটলাস ভি রকেটে করে যাত্রা শুরু করার কথা তাদের। এই রকেটটি আবার যৌথভাবে তৈরি করেছে ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্স ও বোয়িং-লকহিড মার্টিন।

দুই নভোচারীর মধ্যে সুনীতা উইলিয়ামস এর আগেও আইএসএসে দুই দফা মিশনে ছিলেন। সব মিলিয়ে তিনি সেখানে কাটিয়েছেন ৩২২ দিন। এমনকি সাতবারে ৫০ ঘণ্টারও বেশি স্পেসওয়াক করেছেন তিনি। স্টারলাইনারে চড়ে আইএসএসে আবার যাওয়া নিয়ে সুনীতা বলেন, ‘আমি যখন মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছাব, আমার মনে হবে আমি নিজের বাড়িতে ফিরে এলাম।’

তবে বোয়িংয়ের আগে আইএসএসে প্রথম বেসরকারি কোম্পানি হিসেবে ক্যাপসুল পাঠিয়েছিল ইলন মাস্কের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেসএস। তাদের ‘ক্রু ড্রাগন’ ক্যাপসুল এখন পর্যন্ত মহাকাশে বহু মনুষ্যবাহী ও কার্গো মিশন পরিচালনা করেছে। সূত্র: নাসা

রকেট উৎক্ষেপণে কেন দরকার ৩০ লাখ লিটার পানি

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ০১:২৭ পিএম
রকেট উৎক্ষেপণে কেন দরকার ৩০ লাখ লিটার পানি

রকেট উৎক্ষেপণ একটি আকর্ষণীয় ও রোমাঞ্চকর ঘটনা। রকেট উৎক্ষেপণের সময় আগুনের শিখা ও ধোঁয়া সবার নজর কাড়ে। তবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রচুর পরিমাণে পানিও ব্যবহার করা হয়, যা অনেকের নজর এড়িয়ে যায়। জেনে হয়তো অবাক হবেন, এই প্রক্রিয়ায় প্রায় ৩০ লাখ লিটার পানি ব্যবহৃত হয়।

এমনই একটি ভিডিও শেয়ার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। শুধু নাসায় নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণা স্টেশনে রকেট উৎক্ষেপণের সময় প্রচুর পরিমাণে পানি ব্যবহার করে থাকে।

পানি ব্যবহার করা হয় কেন?
নাসা তার ইউটিউব চ্যানেলে কেনেডি স্পেস সেন্টারের একটি ভিডিও শেয়ার করেছে। এই ভিডিওতে লঞ্চপ্যাড ওয়াটার ডিলিউজ সিস্টেম পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার সময় প্রায় ৩০ লাখ লিটার পানি ব্যবহার করা হয়েছে।

রকেট উৎক্ষেপণের সময় বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের দল প্রস্তুত থাকে। উৎক্ষেপণের সময় রকেটের চারপাশে পানির প্রবল ঝরনা শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই রকেটের চারপাশে ৩০ লাখ লিটার পানির বিশাল ঝরনা তৈরি হয়। রকেটের সফল উৎক্ষেপণের জন্য এই পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আসলে রকেটটি যখন লঞ্চপ্যাড ছেড়ে যায়, তখন প্রচুর শব্দ হয়। একটি এসএলএস রকেট ১৭৬ ডেসিবেল শব্দ তৈরি করতে পারে। এটি জেটলাইনারের চেয়ে বেশি শব্দ তৈরি করে। একসঙ্গে লক্ষাধিক লিটার পানি ঝরলে রকেটের আওয়াজের সমানই হয়। এভাবে প্রচুর পরিমাণে পানি ঝরিয়ে রকেটের শব্দ অনেকাংশে কমিয়ে দেওয়া হয়।

এই পানি শুধু রকেটের আওয়াজই কমায় না, আগুন ও ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। রকেট ছেড়ে দিলে প্রচুর আগুন ও ধোঁয়া বের হয়, যা মোবাইল লঞ্চারের ক্ষতি করতে পারে। পানি ঝরিয়ে এই আগুন ও ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে রাখা হয় এবং মোবাইল লঞ্চারকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করা হয়। রকেট উৎক্ষেপণের সময় প্রচণ্ড কম্পন তৈরি হয়। পানি ঝরিয়ে এই কম্পন নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।

রকেট উৎক্ষেপণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। রকেটের সফল উৎক্ষেপণের জন্য শব্দ, আগুন, ধোঁয়া ও কম্পন নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কাজগুলোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে প্রচুর পরিমাণে পানি।

এ.জে/জাহ্নবী

 

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্য কোনটি?

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ০১:২৬ পিএম
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্য কোনটি?
দ্য স্ট্যাচু অব ইউনিটি

বিভিন্ন বিষয়ের প্রতীক হিসেবে ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। কখনো বিখ্যাত ব্যক্তিদের স্মরণে, ঐতিহাসিক ঘটনার উদযাপন কিংবা ধর্মীয় নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যম হিসেবে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য ভাস্কর্য। তবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্য কোনটি? যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৪৩ মিটার উচ্চতার স্ট্যাচু অব লিবার্টি ভাস্কর্য, মাইকেলএঞ্জেলোর ৫ মিটারের ডেভিড ভাস্কর্য অথবা রিও ডি জেনিরোর ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার- এসব ভাস্কর্য বিশ্বের কয়েকটি বিখ্যাত নিদর্শন। তবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্যগুলোর তুলনায় এগুলো অনেক ছোট। আসুন জেনে নেওয়া যাক, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্যগুলো কতটা উঁচু এবং কোথায় অবস্থিত। জানাচ্ছেন আবরার জাহিন

দ্য স্ট্যাচু অব ইউনিটি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্য ভারতের গুজরাট রাজ্যের কেভাদিয়া শহরে অবস্থিত। ‘দ্য স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ নামে পরিচিত ভাস্কর্যের উচ্চতা ১৮২ মিটার। এটি লন্ডনের ‘বিগ বেন’-এর চেয়ে দ্বিগুণ ও নিউইয়র্কের স্ট্যাচু অব লির্বাটির চেয়ে সাড়ে তিন গুণ উঁচু। যা প্রায় ৬০ তলা ভবনের সমান উঁচু।

দ্য স্ট্যাচু অব ইউনিটি ভাস্কর্যে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা সরদার বল্লভভাই প্যাটেলের প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দেশটিতে তিনি লৌহমানব হিসেবে পরিচিত। যিনি ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর দেশটির প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই বিশাল নির্মাণে প্রয়োজনীয় লোহা সংগ্রহের জন্য নানা ধরনের প্রচার কার্যক্রম চালানো হয়।

২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর ভাস্কর্যটির কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর বল্লভভাই প্যাটেলের ১৪৩তম জন্মদিনে এটির উদ্বোধন করা হয়। ভাস্কর্যটি একই বছরের ১ নভেম্বরে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

অতিকায় ভাস্কর্যটি তৈরিতে ১ হাজার ৭০০ টন ব্রোঞ্জ, ৫ হাজার ৭০০ টন স্টিল, ১৮ হাজার ৫০০ টন বিশেষ স্টিল বার এবং ২২ হাজার ৫০০ টন সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। খরচ হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ২ হাজার ৯৮৯ কোটি রুপি। দ্য স্ট্যাচু অব ইউনিটির ভাস্কর ভারতের ৯৩ বছর বয়সী শিল্পী রাম ভি সুতার।


স্প্রিং টেম্পল বুদ্ধ

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাস্কর্যটি চীনের হেনান প্রদেশের লুশান কাউন্টির জাউকুন শহরে অবস্থিত। স্প্রিং টেম্পল বুদ্ধ নামের এই মূর্তি বৈরোচন বুদ্ধকে চিত্রিত করেছে। এটি একটি উষ্ণ ঝরনার কাছে অবস্থিত বলে ‘স্প্রিং টেম্পল বুদ্ধ’ নামে পরিচিত। এই উষ্ণ ঝরনার নিরাময় ক্ষমতার জন্য খ্যাতি রয়েছে। এটি ১৯৯৭ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে নির্মিত হয়েছে। ২৫ মিটার (৮২ ফুট) উচ্চতার একটি পদ্ম সিংহাসনসহ ১২৮ মিটার উচ্চতার এই মূর্তিটি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভাস্কর্য।


বিশ্বাস স্বরূপম


বিশ্বাস স্বরূপম হলো ভারতের রাজস্থান রাজ্যের নাথদ্বারা শহরে নির্মিত হিন্দু দেবতা শিবের মূর্তি। ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবর ১০৬ মিটার উচ্চতার এই মূর্তি উন্মোচন করা হয়েছে। কংক্রিটের নির্মিত এই মূর্তিতে তামার প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু শিবমূর্তি।

অন্যদিকে বর্তমানে এটি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ভাস্কর্য। মূর্তির ভেতরে একটি প্রদর্শনী হল রয়েছে। ২০ কিলোমিটার দূর থেকে স্পট দেখা যায়।


লায়কুন সেক্যা

মায়ানমারের খাতাকান তাউংয়ে অবস্থিত লায়কুন সেক্যা বুদ্ধমূর্তি অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য। লায়কুন সেক্যা ভাস্কর্যটি গৌতম বুদ্ধের একটি হেলান দেওয়া মূর্তির পাশে আরেকটি মূর্তি দাঁড়িয়ে থাকা গৌতম বুদ্ধকে চিত্রিত করেছে। এটি তুলে ধরে বৌদ্ধ ধর্মীয় ‘পরিনির্বাণ’। বৌদ্ধ চিন্তাধারায় নির্বাণ হলো মৃত্যু ও পুনর্জন্মের চক্র থেকে মুক্তি। পরিনির্বাণ হলো চূড়ান্ত নির্বাণ, যা জ্ঞানপ্রাপ্ত ব্যক্তির দেহের মৃত্যুর সঙ্গে ঘটে।

এটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৯৬ সালে এবং ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ সালে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। ২০০৮ সালে নির্মাণ সম্পন্ন হলে এই মূর্তি সাময়িকভাবে বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তির স্বীকৃতি লাভ করেছিল। তবে বর্তমানে এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ভাস্কর্য। গৌতম বুদ্ধের এই ভাস্কর্যটির উচ্চতা ১১৬ মিটার। এটি মায়ানমারের একটি আকর্ষণীয় স্থাপনা।

জাহ্নবী

যেমন ছিলেন নিয়ান্ডারথাল নারীরা

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ১২:১০ পিএম
যেমন ছিলেন নিয়ান্ডারথাল নারীরা
ছবি : সংগৃহীত

আধুনিক মানুষের খুবই নিকটাত্মীয় ৭৫ হাজার বছর আগের নিয়ান্ডারথাল এক নারীর মুখের অবয়ব পুনরায় তৈরি করেছেন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। সেই নারীর ছবি বৃহস্পতিবার (২ মে) বিবিসি এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি নিয়ান্ডারথাল এক নারীর মাথার খুলির ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া অংশ থেকে তৈরি করা হয়েছে। গবেষকরা শুরুতে হাড়ের অংশগুলোকে একত্রিত করেছেন। পরে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের জীবাশ্ম চিত্রশিল্পী এর ওপর ভিত্তি করে ত্রিমাত্রিক কাঠামো (থ্রিডি মডেল) তৈরি করেন।

যে মাথার খুলির ওপর ভিত্তি করে মডেলটি তৈরি করা হয়েছে, সেটি পাওয়া গেছে ইরাকের কুর্দিস্তানের শানিদার নামের এক গুহায়। ২০১৫ সালে কুর্দি কর্তৃপক্ষ ব্রিটিশ গবেষক দলকে আমন্ত্রণ জানালে তারা এই নিয়ান্ডারথাল নারীর কঙ্কালের সন্ধান পান। এর নাম দেওয়া হয়েছিল ‘শানিদার জেড’। এর আগে ১৯৫০-এর দশকে একই স্থানে ১০ জন নিয়ান্ডারথাল পুরুষ, নারী ও শিশুর দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল।

এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির জীবাশ্ম-নৃতত্ত্ববিদ ড. এমা পোমেরয় বিবিসিকে বলেন, ‘আমি মনে করি, নিয়ান্ডারথালরা আসলে কারা, তা বুঝতে সহায়তা করবে এ ছবি।’

আর এই পুরো চিত্রটি কীভাবে তৈরি করা হয়- তার ওপর নির্ভর করে বিবিসি স্টুডিও ‘সিক্রেটস অব দ্য নিয়ান্ডারথাল’ নামের একটি ডকুমেন্টারিও তৈরি করেছে। জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে এটি প্রকাশ করা হয়।

হোমো নিয়ান্ডারথাল হলো- আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্সের টিকে থাকা সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি বিবর্তনীয় কাজিন। ৪০ হাজার বছর আগে এই প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে। সূত্র: বিবিসি