ঢাকা ২৮ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

বন্ধুদের সঙ্গে সমুদ্রে নেমে নিখোঁজ কিশোর

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৪, ০৫:০৫ পিএম
আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম
বন্ধুদের সঙ্গে সমুদ্রে নেমে নিখোঁজ কিশোর
মোহাম্মদ তারেক

কক্সবাজারে ঈদের ছুটিতে বন্ধুদের সঙ্গে সমুদ্রে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ মোহাম্মদ তারেক (১৫) নামে এক কিশোর।

সোমবার (১৭ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে সমুদ্র সৈকতের কলাতলী পয়েন্টে গোসলে নেমে সে নিখোঁজ হয়। 

জেলা প্রশাসনের সৈকতকর্মীদের সুপারভাইজার মাহবুবুর রহমান বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেছেন। 

নিখোঁজ তারেক কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার শাহ ফকির বাজার এলাকার মোহাম্মদ জয়নালের ছেলে। 

তারেকের বন্ধুদের বরাত দিয়ে মাহবুবুর রহমান খবরের কাজকে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার বেড়াতে আসে ছয় বন্ধু। দুপুর ১টার দিকে তারা গোসলে নামে কলাতলী পয়েন্টে। দেড়টার দিকে পাঁচ বন্ধু ওঠে এলেও উঠেনি তারেক। জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। অনেক খোঁজাখুজির পরও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।’ 

মুহিববুল্লাহ মুহিব/পপি/

পদত্যাগ করা শিক্ষককে ফেরাতে ‘অর্থের বিনিময়ে’ বিক্ষোভ

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
পদত্যাগ করা শিক্ষককে ফেরাতে ‘অর্থের বিনিময়ে’ বিক্ষোভ
নারায়নগঞ্জ

প্রভাব বিস্তার, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পদত্যাগে বাধ্য হন রূপগঞ্জের ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল মোল্লা। টাকার বিনিময়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী তার পক্ষ নিয়ে আন্দোলন করেন।

মঙ্গলবার ( ১২ নভেম্বর) দুপুরে পদত্যাগ করা ওই শিক্ষকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থী স্থানীয় লোকজন নিয়ে স্কুলের ভেতরে আন্দোলনের চেষ্টা করে। এর আগে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিতব্য দশম শ্রেণির প্রাক-নির্বাচনি পরীক্ষার্থীদের ভয়-ভীতি ও গালিগালাজ করে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে দেয় তারা। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারেনি।

ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীন বলেন, ‘গত ১৮ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও ভুলতা স্কুলের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষক আব্দুল আউয়াল মোল্লা পদত্যাগ করেন। এর পর থেকে বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে নানা চক্রান্ত শুরু করেন তিনি।

এলাকার লোকজনসহ শিক্ষার্থীদের টাকা দিয়ে আন্দোলনসহ নানা অপকর্ম করাচ্ছেন আব্দুল আউয়াল মোল্লা। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে দশম শ্রেণির পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের ৬ থেকে ৭ জন শিক্ষার্থী অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মেয়েদের অশ্লীল কথা বলে হল থেকে বের করে দেন। এ নিয়ে হট্টগোল সৃষ্টি হলে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।’

খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল আলম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, বিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় উত্তেজিত কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। এক পর্যায়ে আব্দুল আউয়াল মোল্লার চক্রান্তের বিষয়টি বেরিয়ে আসে।

তিনি আরও বলেন, ‘আউয়াল মোল্লা স্কুলের ভেতরে ক্যান্টিন ও টেইলার্স ভাড়া দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যালয়ের আয়ের প্রায় ১৯ কোটি টাকা নয়ছয় করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও জানা গেছে, আব্দুল আউয়াল মোল্লা, উমা ম্যাডাম, আক্তার মোল্লা, আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সাবেক এমপির প্রভাব খাটিয়ে জোর করে ও স্বাক্ষর জাল করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হচ্ছে।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল মোল্লা পদত্যাগ করেছেন। তার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আন্দোলন সংগ্রাম করে কোনো লাভ হবে না।’

কীর্তনখোলা থেকে পুলিশের স্ত্রীর লাশ উদ্ধার

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ এএম
কীর্তনখোলা থেকে পুলিশের স্ত্রীর লাশ উদ্ধার
পুলিশ পরিদর্শকের স্ত্রী আলো রানি মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের কাশিপুরের ভাড়া বাসা থেকে নিখোঁজের এক দিন পর আলো রানি মজুমদার নামে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে নৌপুলিশ।

কীর্তনখোলা নদীর চরমোনাই এলাকা থেকে গতকাল মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় এই লাশ উদ্ধার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নৌপুলিশের সদর থানার ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার। আলো রানি মজুমদার (৩৭) বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার নরেরকাঠি গ্রামের কৃষ্ণকান্ত মজুমদারের মেয়ে। তার স্বামী অনুপ রায় পটুয়াখালী জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। তারা নগরীর কাশিপুর পাসপোর্ট অফিসের পাশে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। স্বজনরা জানান, আলো রানি মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন।

বরিশাল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘৯৯৯-এ খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে শেরেবাংলা মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। সুরতহাল রিপোর্টে নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

বরিশাল সদর নৌ-থানার এসআই মো. আসাদুল আল গালিব জানান, সোমবার রাতে বরিশাল নৌবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় এমভি সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ। রাতে খবর পেয়েছেন, লঞ্চ থেকে এক নারী নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে।

পড়ে আছে আড়াই শ কোটির রেলপথ

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৫ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ এএম
পড়ে আছে আড়াই শ কোটির রেলপথ
আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ। ছবি: খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফ

আন্তদেশীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য প্রায় আড়াই শ কোটি টাকা ব্যয়ে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বহুল কাঙ্ক্ষিত এই রেলপথ উদ্বোধনের এক বছর পেড়িয়ে গেলেও এখনো ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি!

এ ছাড়া রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে কবে নাগাদ এ পথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হবে তাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। যদিও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, এই রেলপথ চালু হলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বেশি লাভবান হবেন। এ ছাড়া আখাউড়া স্থলবন্দরের রপ্তানি বাণিজ্যে ভাটা পড়তে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। আন্তদেশীয় এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। ২৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ অংশের নির্মাণকাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। করোনা মহামারিসহ নানা সংকটে দেড় বছরের এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে ছয় বছরেরও বেশি।

জানা গেছে, রেলপথ পুরোপুরি প্রস্তুত থাকায় কয়েক দফা ট্রায়াল রান শেষে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই রেলপথের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তখনো ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবন, প্ল্যাটফরম এবং সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এরই মধ্যে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এই রুটে ভারত থেকে অর্ধশতাধিক পণ্য আমদানি এবং সব ধরনের পণ্য রপ্তানির সুযোগ ছিল বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের।

অবশেষে চলতি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখন প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ভাস্কর বকশি জানান, বিভিন্ন সংকটে প্রকল্পটি বিলম্বিত হয়েছে। এখন কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। ফলে প্রকল্পটি সরকারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ সংক্রান্ত চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে রেলপথটি নির্মিত হলেও কার্যত এটি ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হবে। উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে কলকাতা বা অন্য রাজ্যগুলোর দূরত্ব অনেক বেশি। ফলে পণ্য পরিবহনে সময় বেশি লাগার পাশাপাশি খরচও বেশি হয়। মূলত ভারতীয় ব্যবসায়ীরা এই রেলপথ দিয়ে নিজেদের পণ্য পরিবহন করবেন। এতে করে তাদের ব্যবসায়ীরা বেশি লাভবান হবেন। এ ছাড়া আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে তখন ভারতে পণ্য রপ্তানির পরিমাণও কমে যাবে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায়ী রাজীব ভূঁইয়া মনে করেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের পণ্য রপ্তানি কমেছে। বর্তমানে যে কয়েকটি পণ্য নিয়মিত রপ্তানি হয় তার মধ্যে রড ও সিমেন্ট অন্যতম।

‘মূলত ত্রিপুরার ব্যবসায়ীদের এ দুই পণ্য ভারতের অন্য রাজ্য থেকে আনতে খরচ বেশি পড়ে। তাই তারা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করেন। তবে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ চালু হলে তারা কম খরচে রড ও সিমেন্টের মতো চাহিদাসম্পন্ন পণ্যগুলো পরিবহন করতে পারবেন। এতে স্থলবন্দরের রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে’, বলেন রাজীব ভূঁইয়া।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাসিবুল হাসান বলেন, ‘রেলপথ দিয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য খুব বেশি বাড়বে না। তবে পণ্য আমদানির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব হবে। যদি সব ধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়- তা হলে যখন যে পণ্যের চাহিদা, সেই পণ্য রেলে কম খরচে আমদানি করে ব্যবসায়ীরা মুনাফা করতে পারবেন। এতে সরকারেরও রাজস্ব বাড়বে।’

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি বলেন, ‘কখন রেলপথ দিয়ে ট্রেন চলবে সেটি সরকারি সিদ্ধান্ত। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্য শুরুর বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি হস্তান্তর করলে তখন বাণিজ্য শুরুর বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হবে।’

ঝুঁকিতে খাগড়াছড়ির নান্দনিক সড়ক,সংস্কারে নেই উদ্যোগ

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২০ এএম
ঝুঁকিতে খাগড়াছড়ির নান্দনিক সড়ক,সংস্কারে নেই উদ্যোগ
খাগড়াছড়ির জালিয়াপাড়া-সিন্দুকছড়ি সড়কের ধুমনীঘাট এলাকার সড়কের পাশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। ছবি: খবরের কাগজ

গত বর্ষা মৌসুমে কয়েক দফায় ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ি বেশকিছু এলাকায় ভূমি ও পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে ভূমি ধসের কারণে খাগড়াছড়ির সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৪ কিলোমিটারের এই নান্দনিক সড়কের মোট ৩০টি পয়েন্টে মাটি ধসে গেছে।

সড়কের পাশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। এতে দৃষ্টিনন্দন হিসেবে পরিচিত এই সড়কটি ঝুঁকিতে পড়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙনকবলিত অংশগুলো সংস্কার করা না হলে আরও ঝুঁকির মুখে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। আগামী বর্ষার আগে ভেঙে যাওয়া অংশে স্থায়ী প্রতিরক্ষা দেয়াল তৈরি করা না গেলে সড়কটি পুরোপুরি ধসে যেতে পারে বলে ধারণা করছে ওই সড়কে চলাচলকারীরা।

জালিয়াপাড়া-সিন্দুকছড়ি সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী বর্ষণ চাকমা বলেন, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও কৃষিজীবীসহ স্থানীয়দের জন্য সড়কটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া ছাড়াও সিন্দুকছড়ি সড়ক হয়ে মহালছড়ি উপজেলার বাসিন্দারা সহজে কম সময়ে চট্টগ্রাম, ফেনী ও ঢাকা যেতে সড়কটি ব্যবহার করেন।

তবে বর্ষায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করা না হলে এই সড়কে চলাচলকারীদের ভোগান্তি বাড়বে। এখনই উদ্যোগ না নিলে সড়কটি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যান চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে। অথচ এই সড়কটি সংস্কারে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের কার্যকরী কোনো উদ্যোগ নেই। সওজ কেবল রাস্তা থেকে ধসে পড়া মাটি সরানোর কাজ করছে। কিন্তু ভাঙন রোধে কোনো উদ্যোগ নেই তাদের।
 
এদিকে সড়কের বিভিন্ন অংশে পাহাড় থেকে মাটি ধসে পড়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। চালক ও যাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন। অপরদিকে সড়ক থেকে মাটি সরাতে আরও অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছে সওজ বিভাগ। সড়কটি সংস্কারে এখন পর্যন্ত কার্যকরী কোনো উদ্যোগ না নিলেও সড়কটি রক্ষায় ইতোমধ্যে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সওজের কর্মকর্তারা।

সওজের খাগড়াছড়ি বিভাগের কার্যসহকারী মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘এখানে ভারী বর্ষণে ৩০টি পয়েন্টে মাটি ধস হয়েছে। আমরা মাটি সরানোর কাজ করছি। এটি শেষ করতে আরও অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগবে।’

সওজের রাঙামাটি সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোফাজ্জল হায়দার বলেন, ‘যেহেতু এখানে বড় ধরনের ধস হয়েছে, সেহেতু ভাঙনগুলো দেখে করণীয় ঠিক করা হবে। আমরা চেষ্টা করব সড়কটি যেন শুষ্ক মৌসুমের মধ্যেই সংস্কার করা যায়। ইতোমধ্যে পরামর্শকও নিয়োগ করা হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি রক্ষা করা হবে।’

কুমিল্লা এখন ‘অটোরিকশার নগরী’

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৪ এএম
কুমিল্লা এখন ‘অটোরিকশার নগরী’
কুমিল্লা শহর। ছবি: খবরের কাগজ

ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত ত্রিশ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং ইজিবাইক কুমিল্লা নগরে চলাচল করে। লাইসেন্সবিহীন তিন চাকার এসব যানের কারণে নগরে যানজটের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে নগরবাসীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

অন্যদিকে ব্যাটারিচালিত এসব যান নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হিমশিম খায় পুলিশ। ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সমন্বিত পরিকল্পনা না করলে তিন চাকার এসব যান নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা নগরীতে ১০ হাজার ৫৩০টি প্যাডেলচালিত রিকশার লাইসেন্স দেয় নগর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্যাডেলচালিত রিকশা বিলুপ্ত হয়ে এখন কুমিল্লা নগরীর রাস্তায় চলছে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা। অবৈধ এসব যানের লাইসেন্স নেওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকায় যে যেভাবে পাড়ছেন রাস্তায় রিকশা নামাচ্ছেন।

বর্তমানে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকায় অন্তত ৪০ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা, ইজিবাইক চলাচল করে। ১০ হাজার রিকশার ধারণক্ষমতার কুমিল্লা নগরীর রাস্তায় এখন অতিরিক্ত আরও ৩০ হাজার ব্যাটারিচালিত যান চলাচল করছে। এতে যানজটের কারণে নগরবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের লাইসেন্স ও রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, অটোরিকশা কিংবা ইজিবাইকের কোনো বৈধ লাইসেন্স দেওয়ার এখতিয়ার তাদের নেই। তবে এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে একাধিকবার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তা বারবার ভেস্তে যায়। শুধু অটোরিকশার কারণে সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে।

অন্যদিকে ছয় সিটের অটোরিকশা-ইজিবাইক আটকে জরিমানা করাকে ‘অমানবিক’ উল্লেখ করে লাইসেন্সের দাবিতে সম্প্রতি বিক্ষোভ করেছেন চালকরা। তারা জানান, জরিমানার জন্য যে টাকা আদায় করা হয় তা পুরোটাই বহন করতে হয় চালকদের। একবার পুলিশের হাতে অটোরিকশা আটকে গেলে তা ছাড়িয়ে আনতে যে অঙ্কের জরিমানা গুনতে হয়; তা তাদের মতো নিম্নবিত্ত মানুষের পক্ষে খুবই কষ্টকর। সব মিলিয়ে ‘অটোরিকশার নগরী’তে পরিণত হওয়া কুমিল্লার সড়কে বিশৃঙ্খলার চিত্র এখন নিত্যদিনের।

কুমিল্লা জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ৪০ হাজারেরও বেশি অটোরিকশা-ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করে। যা কুমিল্লা নগরীর সড়কের ধারণক্ষমতার তুলনায় অতিরিক্ত। এসব যানবাহন বিভিন্ন গ্যারেজ থেকে পরিচালিত হয়। লাইসেন্স না থাকায় ট্রাফিক পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন সময় এগুলোকে আটক করা হয়। তবে জরিমানা ও আটক করেও এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার জানান, অবৈধ অটোরিকশা বৈধ করার কোনো সুযোগ নেই। একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার আগে এগুলোর বিকল্প ভাবতে হবে। কুমিল্লা নগরীর যানজট নিরসন নিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের সঙ্গে কথা হয়েছে। এসব নিয়ে একটি পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান জানান, নিবন্ধিত প্যাডেলচালিত রিকশার জন্য বছরে ১৩০ টাকা করে আদায় করা হতো। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ১০ হাজার ৫৩০টি লাইসেন্স নবায়ন করা হয়। তবে এখন আর পায়েচালিত রিকশা নেই। এ কারণে টু-সিটার ইজিবাইকের লাইসেন্সের সার্ভে করা হয়েছিল। ১০ হাজার ফরম বিক্রি করা হয়েছে। ৯ হাজার চারটি জমা পড়েছে। এসব ইজিবাইকের জন্য বছরে পাঁচ হাজার টাকা আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে সবকিছুই পরিকল্পনা করে আবার বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অটোরিকশা-ইজিবাইকগুলো লাইসেন্স ছাড়াই নগরীর রাস্তায় চলাচল করছে।

টোকেন কিংবা রশিদ দিয়ে এসব যানবাহন চালানোর বিষয়ে রাজস্ব কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কোনো রশিদ কিংবা টোকেন দিয়ে যানবাহন পরিচালনা করি না। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার নামে এতদিন এসব অটোরিকশা-ইজিবাইকের টোকেন-বাণিজ্য চলে আসছিল। এটা সবাই জানে। এসব এখন বন্ধ করে নগরীর সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।’

জেলা ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাফি জানান, অবৈধ অটোরিকশাগুলোকে বিভিন্ন সময় আটক করার পাশাপাশি জরিমানা করা হয়। এসব জরিমানার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়। সমন্বিত পরিকল্পনা না করলে এসব অটোরিকশা-ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।