কোনো অদক্ষ শ্রমিককে বিদেশে পাঠানো হবে না বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘অদক্ষ শ্রমিকরা বিদেশে গেলে অর্ধেক মজুরি পায়। অনেকে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফেরত আসে। তাই কোনো অদক্ষ শ্রমিক বিদেশে পাঠানো হবে না। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠানো হবে। তাতে দেশে রেমিট্যান্স বাড়বে।’
শনিবার (২৭ এপ্রিল) ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. আবদুর রহিম খানসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বিশ্বাস করে ও আস্থায় রেখে এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি সেই দায়িত্ব অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি। এই মন্ত্রণালয়ের চ্যালেঞ্জও মোকাবেলা করব। কোন ভুল ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করে আর্দশ মন্ত্রণালয় হিসেবে গড়ে তোলা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দায়িত্ব নিয়ে শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ শুরু করেছি। শ্রমিকদের স্বার্থে কাজ হচ্ছে বলেই এবারে ঈদে কোনো শ্রমিক অসন্তোষ হয়নি। কোনো গার্মেন্টস শ্রমিক বেতন বোনাস থেকে বঞ্চিত হননি। গার্মেন্টস মালিকদের কড়া হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছিলো যে শ্রমিকদের বেতন বোনাস দেওয়া না হলে লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এ রকম কড়া ম্যাসেজ দেওয়ার ফলেই তারা শ্রমিকদের স্বার্থ দেখেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকও শ্রমিকদের বেতন বোনাস দেওয়ার জন্য অর্থ ছাড় করেছে।’
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সাজেশন অনুযায়ী শ্রম আইন সংশোধন করে যুগপোযোগী করা হচ্ছে। আগামী সংসদে তা পাশ করা হবে। এরফলে তাদের সব শর্ত পূরণ হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, বাস্তবতার প্রয়োজনে শ্রম আইন প্রণয়ন ও সংশোধন করা হচ্ছে। শ্রম অধিকার ও মানবাধিকার মানা হচ্ছে বলেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে। শ্রমিকদের আইন মানা হচ্ছে। তা ঠিক আছে বলেই শ্রমিকরা এবারে ঈদে মাঠে নামেনি।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. আবদুর রহিম খান বলেন, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি নীতিমালা-২০১৩ অনুযায়ি ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২৮ এপ্রিল পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস পালন করা হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সুস্থ শ্রমিক, শোভন কর্মপরিবেশ, গড়ে তুলবে স্মার্ট বাংলাদেশ’।
আগামীকাল (২৮ এপ্রিল) ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস’ উদযাপন করা হবে।
এ উপলক্ষে রবিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর খামারবাড়ি খেজুর বাগান থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে শেষ হবে।
বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে ২৮টি গ্রিন ফ্যাক্টরিকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি থাকবেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
তাছাড়া বিজিএমইএর সভাপতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা উপস্থিত থাকবেন।
জাহাঙ্গীর আলম/অমিয়/